USA

বাবার প্রচারে নেই মেয়ে!

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আর বাকি মাত্র ছয় দিন। প্রধান দুই দল ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান পার্টির শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি কর্মী, ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা দিন-রাত নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত। শেষ মুহূর্তে তো বটেই, ট্রাম্পের এবারের পুরো প্রচারণায়ই তাঁর বড় মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্পকে কোথাও দেখা যায়নি।

২০২০ সালে এমনকি তার আগে ২০১৬ সালেও বাবা ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে সরব উপস্থিতি ছিল ইভাঙ্কার। এবার বাবার নির্বাচনী প্রচারে দেখা না গেলেও ইভাঙ্কাকে সমুদ্রসৈকতে সার্ফিং করতে, প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের সামনে ছবি তুলতে, মিয়ামিতে গাড়ি প্রতিযোগিতা ‘ফর্মুলা ওয়ানে’ দেখা গেছে। দেখা গেছে ক্যালিফোর্নিয়ার মালিবুতে সন্তানদের নিয়ে গরম পানিতে স্নান করতে, হলিউডের আলোচিত অভিনেত্রী ও টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব কিম কারদাশিয়ানের সঙ্গে ঘুরে বেড়াতে। গ্রিসের অ্যাক্রোপলিসে স্বামী জ্যারেড কুশনারের সঙ্গেও সম্প্রতি তাঁকে হাস্যোজ্জ্বল মুখে দেখা গেছে।

দেখা যায়নি শুধু ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে। কিন্তু কেন?

বাবার নির্বাচনী প্রচারে এবার নিজের অনুপস্থিত থাকার স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছেন ইভাঙ্কা। কিন্তু তিনি এ বিষয়ে যতই স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিন না কেন, ট্রাম্পের এবারের নির্বাচনী প্রচারে ইভাঙ্কার অনুপস্থিতি রাজনৈতিকভাবে কিছুটা রহস্যময়।

২০১৬ ও ২০২০ সালে ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় ইভাঙ্কার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। মাঠের নির্বাচনী প্রচার, টেলিভিশন বিজ্ঞাপন, দলের জাতীয় সম্মেলন—সবখানেই ইভাঙ্কা উপস্থিত ছিলেন। এসব কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে নারী ভোটারদের কাছে বাবা ট্রাম্পের জন্য তাঁর ভোট চাওয়ার বিষয়টি ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

কিন্তু প্রায় দুই বছর আগে যখন ট্রাম্প তৃতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার দৌড় শুরু করেন, তখন রাজনীতি থেকে দূরে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন ইভাঙ্কা। সঙ্গে তাঁর স্বামী ও ট্রাম্প সরকারের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনারও রাজনীতি থেকে দূরে থাকবেন বলে জানান তিনি। কারণ হিসেবে সন্তান ও পরিবারকে সময় দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন ইভাঙ্কা।

তখন ইভাঙ্কা বলেছিলেন, ‘ভবিষ্যতেও বাবার প্রতি আমার ভালোবাসা ও সমর্থন অব্যাহত থাকবে। তখন আমি রাজনীতিসংশ্লিষ্ট বিষয়ের বাইরে থেকে তাঁকে সমর্থন করব।’

তবে ইভাঙ্কার এই ব্যাখ্যাকে যথেষ্ট মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। ধারণা করা হয় যে পরিবারের মধ্যে তাঁর সঙ্গেই ট্রাম্পের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ট্রাম্পের রাজনৈতিক সহযোগী হিসেবেও তাঁর বড় ভূমিকা ছিল। অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে এটাই সম্ভবত ট্রাম্পের শেষ দৌড়। এ অবস্থায় ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণা থেকে ইভাঙ্কার দূরে থাকাটা গভীর কিছুর ইঙ্গিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

দুবছর আগে ইভাঙ্কার রাজনীতি থেকে দূরে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণার সময়কালটা পারিপার্শ্বিক ঘটনার কারণে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তখনই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চারটি ফৌজদারি মামলার তদন্ত শুরু হয়। মামলাগুলোর একটির সঙ্গে ট্রাম্প ও ইভাঙ্কার ম্যানহাটনের বাসার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। গত মে মাসে এই মামলার ৩৪টি অভিযোগে ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।

অন্যদিকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে হওয়া একটি অর্থ জালিয়াতি মামলায় চলতি বছরের শরৎকালে প্রতিনিধি পরিষদে জবানবন্দি দিয়েছিলেন ইভাঙ্কা। এ সময় তিনি বলেছিলেন, আমি তো আমার বাবার আর্থিক বিষয়ের ‘গোপন’ খবর রাখি না।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button