Bangladesh

বায়ু বিদ্যুতে কেন পিছিয়ে বাংলাদেশ?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উপকূলীয় কিছু কিছু এলাকায় বাতাসের ‘সম্ভাবনাময়’ গতি মিললেও তা কাজে লাগানো যায়নি সঠিক পরিকল্পনার অভাবে।

কক্সবাজারের খুরুশকুলে নির্মিত দেশের সর্ববৃহৎ বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে বিশ্ব যখন জীবাশ্ম থেকে সবুজ জ্বালানিতে ঝুঁকছে, সেই রূপান্তরে এখনও সেভাবে শামিল হতে পারেনি বাংলাদেশ। বর্তমানে দেশে ২৮ হাজার মেগাওয়াটের মত বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকলেও তাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির হিস্যা খুবই কম।

বিদ্যুৎ বিভাগের পাওয়ার সেলের গত বছরের সেপ্টেম্বরের তথ্য অনুযায়ী, তখন দেশে সৌর, পানি, বায়ু, বায়োগ্যাস ও বায়োমাস মিলিয়ে মাত্র ৯১১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ছিল, যার মধ্যে বায়ু বিদ্যুতের পরিমাণ মাত্র ২ দশমিক ৯ মেগাওয়াট।

গত ২ অগাস্ট গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে দেশের সবচেয়ে বড় সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র (২০০ মেগাওয়াট) তিস্তা সোলার লিমিটেড উদ্বোধন করা হয়েছে। আর মাস দুয়েক ধরে কক্সবাজারের খুরুশকুল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে ৩০ মেগাওয়াট বায়ু বিদ্যুৎ যোগ হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। সবমিলে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের সক্ষমতা ১০০০ মেগাওয়াটের কিছু বেশি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিকভাবে পরিকল্পনা করা হলে কেবল বায়ু বিদ্যুতই আরও বেশি উৎপাদন করা যেত। উপকূলীয় কিছু কিছু এলাকায় বাতাসের ‘সম্ভনাময়’ গতির প্রমাণ মিললেও তা এখনও কাজে লাগানো যায়নি।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিসের (আইইইএফএ) জ্বালানি বিশ্লেষক শফিকুল আলম বলেন, “৫/৬ বছর আগেও ধারণা করা হত, বাংলাদেশে বায়ু বিদ্যুতের সম্ভাবনা নাই। কিন্তু এনআরআইএল (যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল রিনিউয়েবল এনার্জি ল্যাবরেটরি) যখন গবেষণা করল, তখন বোঝা গেল যে আমরা উপকূলীয় অঞ্চলে বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারব। ওখানে যথেষ্ট উইন্ড স্পিড আছে, পটেনশিয়াল আছে; ৫ দশমিক ৭ মিটার পার সেকেন্ড।”

কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম মনে করেন, সরকারের সদিচ্ছার অভাবেই দেশে এতদিন বায়ু বিদ্যুৎ বা অন্যান্য নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন সেভাবে বাড়েনি।

সরকারের নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা অনুযায়ী ২০২০ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য খাত থেকে মেটানোর লক্ষ্যের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “তারা (সরকার) এটাকে বিকল্প জ্বালানি হিসাবে দেখে নাই। নামকাওয়াস্তে কিছু নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রকল্প রাখতে হয়, সেই হিসাবে রাখে। এর উৎপাদন বৃদ্ধি করে ১০ শতাংশ করতে হবে ২০২০ সালে, ১ শতাংশও করতে পারল না। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কোনো পরিকল্পনাই ছিল না।”

তবে বিদ্যুৎ বিভাগের নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যুগ্মসচিব নিরোদ চন্দ্র মণ্ডল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এতদিন বায়ু বিদ্যুতে বিশেষ অগ্রগতি হয়নি, কারণ হাতে কোনো ফিজিবিলিটি স্টাডি ছিল না। এখন সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। বেশ কিছু স্পটে সম্ভাবনা দেখার পর সরকারও কিছু প্রকল্প বাস্তবায়নে হাত দিয়েছে।”

বায়ু বিদ্যুতের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “যারা কনভেনশনাল ব্যবসার সাথে জড়িত, তারা কখনওই বলে নাই যে রিনিউয়েবলের পটেনশিয়াল আছে। সোলারের সময়ও তারা বলছে যে, ‘কী হবে এসব করে!’ কিন্তু আজকে সোলারের বড় প্রকল্পগুলোর ক্যাপাসিটি ৪৬১ মেগাওয়াট, বায়ু বিদ্যুতের ক্ষেত্রেও আমরা এমন কিছু আশা করছি।”

বিদ্যুৎ উৎপাদনের খসড়া মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা গড়ে তুলতে চায় সরকার।

এর মধ্যে কেবল সৌরবিদ্যুৎ থেকেই ২০৪১ সালের মধ্যে দেশে ২৭ হাজার ৪৩০ মেগাওয়াট এবং বায়ুশক্তি ব্যবহার করে কম করে হলেও ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব বলে সরকার মনে করছে।

খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলা

সরকারের টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৩০টি আবহাওয়া স্টেশন থেকে পাওয়া বায়ুর গতি প্রকৃতির তথ্যের ভিত্তিতে ১৯৮২ সালের একটি প্রাথমিক গবেষণা করা হয়। তাতে দেখা যায়, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলা বায়ু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত।

দুই দশকের বেশি সময় পর পাইলট প্রকল্প হিসেবে ২০০৫ সালে ফেনীর মহুরী নদীর তীর ও সোনাগাজী চরাঞ্চল ঘেঁষে ৬ একর জায়গায় স্থাপিত হয় দেশের প্রথম বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। আর ২০০৮ সালে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় নির্মাণ করা হয় আরেকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র।

কক্সবাজারেই দেশের সর্ববৃহৎ বায়ু বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরু হয় গত বছরের ৩১ মার্চ। সদর উপজেলার খুরুশকুলে সমুদ্র উপকূল ও বাঁকখালী নদীর তীরের এই কেন্দ্র থেকে ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ মিলবে।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত জুন থেকে পরীক্ষামূলকভাবে কেন্দ্রটির ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যোগ হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হলে এই কেন্দ্র থেকে মোট ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্মসচিব নিরোদ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, “বাংলাদেশে আরো বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকলেও সেগুলো ওভাবে হিসাবের মধ্যে নাই। কক্সবাজারে যেটা হচ্ছে, ওটাই প্রথম। এইটার উপর অনেককিছু নির্ভর করছে। এর ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই বাকিগুলো আসবে।”

কী বলছে বায়ু মানচিত্র

কোথাও বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করতে হলে সেখানকার ১০ বছরের বায়ুর গতিপ্রকৃতি যেমন দেখতে হয়, তেমনই পরের ১০ বছরের আবহাওয়ার সম্ভাব্য পরিবর্তন কেমন হবে, তাও যাচাই করতে হয়।

২০১৪ সালে বিদ্যুৎ বিভাগের উদ্যোগে প্রথমবারের মত আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে বায়ুবিদ্যুতের সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু হয়। ২০১৭ সাল পর্যন্ত নাটোরের লালপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, পারকি বিচ; ময়মনসিংহের গৌরীপুর, হবিগঞ্জের মাধবপুর টি এস্টেট, খুলনার দাকোপ, কক্সবাজারের ইনানী বিচ ও রংপুরের বদরগঞ্জে বায়ুর গতিবেগ পরিমাপ করে যুক্তরাষ্ট্রের এনআরইএল।

পরের বছর বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন উপস্থাপন করে এনআরইএল, পাশাপাশি একটি জাতীয় বায়ু মানচিত্র প্রস্তুত করে।

এনআরইএলের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা বিশেষ করে খুলনার দাকোপ, চট্টগ্রামের আনোয়ারা এবং চাঁদপুরের নদী মোহনায় ১০০ মিটার উচ্চতায় বাতাসের গড় বেগ প্রতি সেকেন্ডে ৬ মিটারের বেশি, যা বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনে ‘অত্যন্ত সম্ভাবনাময়’।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে প্রায় ২০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা রয়েছে, যেখানে বাতাসের বেগ প্রতি সেকেন্ডে ৫.৭৫ থেকে ৭.৭৫ মিটার, যার মাধ্যমে প্রায় ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব।

বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার জন্য ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে তিনটি পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির মাধ্যমে ‘স্পেসিফিক উইন্ড রিসোর্স অ্যাসেসম্যান্ট’ এর উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এর মধ্যে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল) দেখতে পায়, কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী দ্বীপে ১০০ মিটার উচ্চতায় বাতাসের গতিবেগ প্রতি সেকেন্ডে ৫ দশমিক ৭৬ মিটার।

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় বাতাসের গতিবেগ পরিমাপ করে ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ (ইজিসিবি), সেখানে ১০০ মিটার উচ্চতায় বাতাসের গতিবেগ মেলে সেকেন্ডে ৫ দশমিক ৩৮ মিটার।

আর নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির উদ্যোগে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় বায়ুর তথ্য সংগ্রহ করে চীনের একটি কোম্পানি। সেখানে ১২০ মিটার উচ্চতায় বাতাসের গতি মেলে প্রতি সেকেন্ডে ৫ দশমিক ৪৬৬ মিটার।

জ্বালানি বিশ্লেষক শফিকুল আলম বলেন, “২০১৫-১৬ সালের দিকে ধারণা করা হত যে আমাদের এখানে উইন্ডের কোনো পটেনশিয়াল নাই। পরে দেখা গেলো যে আমাদের কোস্টাল এরিয়াগুলাতে ভালো পটেনশিয়াল, মানে উইন্ড স্পিড আছে। আর এখন তো সরকার এটা নিয়ে আরও ডিটেইলড স্টাডি করছে।

“এই স্টাডি করতে করতেই আমাদের দেরি হয়ে গেছে। তবে যা হয়ে গেছে, তা তো হয়েই গেছে। এখন যদি আমরা এখানে মনোযোগ দেই, তাহলে ভালো ফল সম্ভব।”

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, টার্বাইন ঘোরার জন্য বাতাসের গতি লাগে সেকেন্ডে কমপক্ষে ৩-৪ মিটার। যথেষ্ট বিদ্যুৎ পেতে হলে বেশি গতি প্রয়োজন। আর শুধু গতি থাকলেই হবে না, সেটা টেকসই হতে হবে।

চলমান প্রকল্প

বিদ্যুৎ বিভাগের যুগ্মসচিব নিরোদ চন্দ্র মণ্ডল জানান, বর্তমানে দেশে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ১০টি বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প চলমান আছে। এর মধ্যে তিনটি প্রকল্প নির্মাণাধীন। বাকি সাতটি প্রকল্প এখনও পরিকল্পনার বিভিন্ন ধাপে রয়েছে।

কক্সবাজারে ৬০ মেগাওয়াটের একটি, মোংলায় ৫৫ মেগাওয়াটের একটি এবং ফেনীতে ৩৩ মেগাওয়াটের একটি বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণাধীন আছে।

অন্যদিকে বেসরকারি খাতে তিন প্রকল্প আলোচনার পর্যায়ে আছে, যার মধ্যে কক্সবাজারের চকরিয়ায় ২০০ মেগাওয়াট, চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ১০০ মেগাওয়াট এবং সাতক্ষীরায় ১০০ মেগাওয়াটের কেন্দ্র হবে।

আর পরিকল্পনায় থাকা চার সরকারি প্রকল্প হচ্ছে- পটুয়াখালীতে ১০ মেগাওয়াট, চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ১০০ মেগাওয়াট, কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে ৫০ মেগাওয়াট এবং ফেনীর সোনাগাজীতে ২০ মেগাওয়াটের আরেকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র।

নিরোদ বলেন, বর্তমানে সরকারের যে চারটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন, সেগুলো শেষ হলে মোট ১৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব। এই চার প্রকল্প এখনও চুক্তি স্বাক্ষরের আগের পর্যায়ে রয়েছে।

যে প্রকল্পগুলো চলমান আছে এবং যেগুলোর পরিকল্পনা হচ্ছে, সবগুলোই অনশোরে, মানে স্থলভাগে। তবে অফশোরেও (সাগরে) বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প করার পরিকল্পনা সরকারের আছে বলে জানান নিরোদ।

তবে তার ভাষ্য, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল সাইক্লোনপ্রবণ হওয়ায় সমুদ্রে টার্বাইন করা ‘কঠিন’।

“অফশোরে আমরা কোনো প্রকল্প এখনও নিইনি। তবে বিভিন্নজন আমাদের কাছে প্রস্তাব দিচ্ছে। আমরা অফশোরে ফিজিবিলিটি স্টাডি করছি, সেই রিপোর্ট পাওয়ার পর আমরা অফশোরে যাব। সম্প্রতি ড্যানিশরা ৫০০ মেগাওয়াটের একটা (অফশোর) প্রকল্পের প্রস্তাব দিয়েছে। ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করতে চায়।”

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুক হামিদও রোববার এফবিসিসিআই আয়োজিত এক সেমিনারে এ নিয়ে কথা বলেন।

তিনি বলেন, “আমরা উইন্ড ম্যাপিং করেছি। কক্সবাজারে ৬০ মেগাওয়াট চালু হয়ে গেছে। আরও ২০০ মেগাওয়াট আসবে। উইন্ডে ৭০০-৮০০ মেগাওয়াটের মত সম্ভাবনা আছে।

“আমাদের অফশোরে উইন্ড পাওয়ারের ম্যাপিংও হয়ে গেছে। অফশোরে উইন্ড পাওয়ারের জন্য ডেনমার্কের একটা কোম্পানি আমাদের অ্যাপ্রোচ করেছে।”

সমস্যা কোথায়?

বিশ্বজুড়ে এখন ৭ লাখ ৮৬ হাজার ৩০৪ মেগাওয়াট বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা আছে বলে জানাচ্ছে ‘গ্লোবাল এনার্জি মনিটর’। এর মধ্যে কেবল চীনেরই সক্ষমতা ৩ লাখ ১০ হাজার ২৭৪ মেগাওয়াট, ভারতে এর পরিমাণ ২৮ হাজার ১৬৯ মেগাওয়াট। পাকিস্তানও বায়ুশক্তিতে নজর দিচ্ছে, তাদের বর্তমান সক্ষমতা ১৮৪১ মেগাওয়াট।

কিন্তু বাংলাদেশের বায়ু বিদ্যুতে এখনো সাফল্য আসেনি। কয়েকবছর আগে বায়ু বিদ্যুৎ নিয়ে কাজ শুরু করেছিল ন্যানো পাওয়ার নামের দেশীয় একটি কোম্পানি, তবে সাফল্য না পাওয়ায় মাঝপথেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

ন্যানো পাওয়ারের কর্ণধার কামাল হোসেন বলেন, স্থানীয়ভাবে পাওয়া উপাদান ব্যবহার করে কক্সজারের সোনাপাড়ায় টার্বাইন করেছিলেন তারা। কিন্তু সফল না হতে পেরে আর আগাননি।

“আমাদের এখানে বায়ু বিদ্যুতের মূল চ্যালেঞ্জ হল, যে পরিমাণ উইন্ড আশা করি, সেই পরিমাণ নাই। এরপরের চ্যালেঞ্জটা হল- টার্বাইনের যে ব্লেডগুলা থাকে, সেগুলা হয় মূলত ফাইবারের। কিন্তু লোকাল টেকনোলজির কারণে আমরা ফাইবারটাকে অ্যারেঞ্জ করতে পারি না।”

কামাল বলেন, যখন তারা কাজ শুরু করেন, সার্ভের ফলাফল ভালো আসছিল, টেকনাফ রোডে তারা টার্বাইন বসিয়েছিলেন, সেখানে বাতাসের গতিও ভালো ছিল।

“কিন্তু ফেইল করার পরে বুঝলাম, যে ব্লেডগুলা আমরা ব্যবহার করছি টার্বাইনে, ওই ব্লেডের কারণে এটা ভালো করে ঘুরতে পারে নাই।”

তবে এখন আবার বায়ু বিদ্যুৎ নিয়ে ভাবছেন জানিয়ে কামাল বলেন, “উইন্ড টার্বাইনের জন্য যে অল্টারনেটর লাগে, ইতোমধ্যে সেটা আমরা চীন থেকে আনছি। এটা লো স্পিডেই ভালো বিদ্যুত তৈরি করতে পারে। আমাদের টার্গেট হল চট্টগ্রামের ইপিজেড। ওখানে ভালো উইন্ড পাওয়া যাবে। তবে আমরা যদি ফাইবার ব্লেডটা করতে পারি, তাহলে আরও ভালো পারফর্মমেন্স পাব।”

ফাইবার ব্লেড ব্যবহার না করতে পারার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ইউরোপে পাওয়া যায় এই ফাইবার ব্লেড। কিন্তু এখন যে ডলার ক্রাইসিস… আর ওরা এখন শুধু ব্লেডটা আনতে দেয় না, নিলে ফুল প্যাকেজ নিতে হবে- এই একটা সমস্যা। এটা করতে গেলে খরচ বেশি হয়ে যায়।

“আপনার যদি ৫ কিলোওয়াটও হয়, দেশে হলে এটার খরচ পড়ে ৬ লাখ টাকা। কিন্তু ওদের থেকে আনলে সেটার দাম পড়ে ১৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ এখানেই ৩ গুণ বেশি খরচ।”

বায়ু বিদ্যুতে বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ হিসেবে ‘যুতসই’ বায়ুর অভাবকে দায়ী করছেন বিদ্যুৎ বিভাগের পাওয়ার সেলের পরিচালক (ম্যানেজমেন্ট) শেখ মুনির আহমেদ।

তার ভাষ্যে, “ইউরোপে একটা স্টেডি উইন্ড আছে, হালকা একটা বাতাস চলে সবসময়। কিন্তু আমাদের এখানে ৭২ ঘণ্টায় কোনো বাতাস নাই, তারপর আবার হঠাৎ করে বাতাস। সেই হিসেবে উইন্ডের (বায়ুবিদ্যুতের) জন্য এটা রিস্কি।

“আর দ্বিতীয়ত, প্রতি ৮-১০ বছরে এমন একটা বড় ঝড় তুফান হয়, দেখা গেল যে এটা ভেঙেচুরে যায়। তাই লোকেশন, সাইট, ইনফ্রাসট্রাকচার- সব মিলিয়ে হচ্ছিল না। কিন্তু এখন আমরা করতে পারছি কারণ এটা নিয়ে আমাদের স্টাডি আছে। আমরা অফশোরেও হয়ত যাব।”

অনেক জায়গায় ‘সম্ভনাময়’ বায়ু মিললেও নানা সমস্যা আছে জানিয়ে শেখ মুনির বলেন, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বাতাসের গতি ভালো হলেও সেখানে অবকাঠামোগত সমস্যা আছে। নতুন রাস্তা করতে হবে, যা লাভজনক হবে না।

“আমরা একটা নির্দিষ্ট উচ্চতায় করি। এখন হাইট বাড়িয়ে দিয়ে করছি। কিন্তু সেখানে একটা রিস্ক চলে আসে। আমরা ১২০ মিটার হাইটে করছি। আর এখানে ডাস্ট একটা ফ্যাক্টর। বাইরের (অন্য দেশে) বাতাস খুব পরিষ্কার, ক্লিন থাকে; ডাস্ট পার্টিকেল কম ওদের। আমাদের এখানে বেশি, তার ভেতর ময়েশ্চার, মানে স্টিকি ওয়েদার আছে। এই কারণে যতটুকু পাওয়ার কথা, আমরা পাই না। কিন্তু সোলারে এসব নেই- ওখানে একটা বড় সাফল্য আসবে।”

বাণিজ্যিকভাবে লাভবান না হলে বায়ু বিদ্যুতে সেভাবে বিনিয়োগ আসবে না বলে মনে করেন পাওয়ার সেলের পরিচালক শেখ মুনির।

“উইন্ড টার্বাইন বসানোর আগে দুটো জিনিস খেয়াল রাখতে হয়। বাতাসের এভারেজ স্পিড কেমন, আমাদের এখানে ২০০ কিলোমিটার পার আওয়ার বাতাসও হয়। সব দেশেই নিজেদের দেশের মত ডিজাইন করে।

“খালি প্ল্যান করলেই হবে না, কমার্শিয়ালাইজেশনেও আসতে হবে। লোকজনকে আনতে হবে। এখন যদি কেউ একটা বড় ইনভেস্টমেন্ট করে, পরে এটা ভেঙেচুরে পড়ে গেল, ইনস্যুরেন্সেও কাভার হল না…তাই ইনভেস্টমেন্টটা যেন সেইফ অ্যান্ড সিকিউরড হয়- সব মিলিয়ে চিন্তাভাবনা করতে হয়।”

উৎপাদান খরচ বেশি

জীবাশ্ম জ্বালানি (কয়লা, গ্যাস, তেল) থেকে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় তার তুলনায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন খরচ যে বেশি তা মানছেন জ্বালানি অর্থনীতি বিশ্লেষক শফিকুল আলম।

তবে তিনি বলেন, “বায়ু বিদ্যুতের খরচ কমাতে হলে প্রতিযোগিতামূলকভাবে প্রকল্পগুলো করতে হবে। প্রতিযোগিতামূলক মানে হল টেন্ডারের মাধ্যমে, মানে কমপ্লিট বিডিংয়ের মাধ্যমে সরকার এটা করতে পারে।

“এছাড়া মেশিনারিজের দামও একটা বিষয়। কিন্তু টেকনোলজির প্রাইস তো কমছে, সামনে আরও কমবে। আর এটা (খুরুশকুল) তো (মোটাদাগে) প্রথম প্রকল্প, টেকনোলজির দাম কমলে সামনের প্রকল্পগুলোর খরচও কমবে। সূর্যের আলো শুধুমাত্র দিনের বেলায় হয়। কিন্তু বায়ুবিদ্যুতের সুবিধা হল, এটা ২৪ ঘণ্টা পাওয়া সম্ভব।”

নবায়নযোগ্য জ্বালানির দাম বেশি, আর বাংলাদেশে তা অন্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি বলে মনে করেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আলম।

তার কথায়, “ভারতে বাংলাদেশের চেয়ে বিদ্যুতের দাম কম। ২০৩০ সালের মধ্যে সেখানে বায়ু বিদ্যুৎ ও সৌরবিদ্যুতের দাম হবে ২-৩ রুপি। আর আমরা তাদের কাছাকাছিও নাই।”

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পাওয়ার সেলের পরিচালক (ম্যানেজমেন্ট) শেখ মুনির আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ইন্ডিয়ায় কম, কারণ তাদের কিছু কিছু জমি আছে, যা ফ্রি; দাম নাই। কারণ বাড়ি-টাড়ি কিছু হয় না। রাজস্থানের মতো জায়গায় ল্যান্ড কস্ট জিরো, একবারে মিনিমাম।

“সেকেন্ড হল, ইনফ্রাসট্রাকচারটা ওরা করে ফেলছে। তারপর, ওদের ম্যাটেরিয়ালগুলার অধিকাংশ ওদের নিজস্ব। সবমিলিয়ে ওদের খরচ কম পড়ে… আমাদের জমির খরচ বেশি, এত জমি পাওয়া যায় না।”

বায়ু বিদ্যুতে ভারতের এগিয়ে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “অনেক বড় দেশ, অনেক বড় কোস্টাল এরিয়া আছে ওদের… রিস্কের সাথে প্রফিট্যাবিলিটির একটা রিলেশন আছে। আমাদের এখানে যখন দেখবে যে কেউ উইন্ড থেকে প্রফিট করছে, তখন অন্যরাও ভাববে যে আমিও করব।”

বায়ু বিদ্যুতের দাম বেশি পড়ার বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, “এখানে আসলে আমরা ডলারে কিনে টাকায় বেচি। এখানেও একটা কারেন্সি রিস্ক আছে। প্রতি ১০ বছর পর পর ডলারের দাম বাড়ে। এটা কমলে বাংলাদেশ উইল বি ইন অ্যা গুড শেইপ।”

বায়ু বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ সম্পর্কে ধারণা চাইলে ন্যানো পাওয়ারের কর্ণধার কামাল হোসেন বলেন, বর্তমান বাজার দরে প্রতি ইউনিট ১৮ টাকা পড়ে যায়।

খাত সংশ্লিষ্টরা যা ভাবছেন

নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে যেসব কোম্পানি কাজ করছে, তারা বায়ু বিদ্যুৎ নিয়ে আগ্রহের কথা বললেও তাকিয়ে আছেন কক্সবাজারের খুরুশকুলের বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দিকে।

সৌর বিদ্যুৎ নিয়ে কাজ করা ইমপ্রেস টেক বিডির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানজীর হোসেন বলেন, “উইন্ড নিয়ে আমাদের ভাবনা আছে। হাইড্রো নিয়েও ভাবনা আছে। কিন্তু উইন্ড নিয়ে আমরা এখনই কিছু করছি না, কারণ টার্বাইনগুলো একটু এক্সপেন্সিভ এবং বাংলাদেশের সবজায়গায় বাতাস স্টেবল না, কিছু কিছু জায়গায় করা যায়।”

সৌর বিদ্যুৎ নিয়ে একযুগ ধরে কাজ করছে সোলার ইলেক্টট্রো বাংলাদেশ লিমিটেড। কোম্পানির ব্যবস্থাপক (কারিগরি) কলিন্স শেখ বলেন, ২০১৯-২০২০ সালের দিকে তারা বায়ু বিদ্যুতে আগ্রহী হলেও পরে অগ্রসর হননি।

“কারণ সাপ্লায়ার পাইনি। সোলারের প্রিন্সিপ্যাল আছে, উইন্ডের সেটা নাই। একটা সঠিক সমীক্ষা পাচ্ছি না। তাই উইন্ডে আমাদের আগ্রহ কম।”

অবশ্য সৌর বিদ্যুৎ নিয়েও যে প্রথমদিকে উদ্যোক্তাদের আগ্রহ কম ছিল, সে কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “কক্সবাজারে (খুরুশকুল) প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে (বায়ু বিদ্যুৎ) হচ্ছে। যদি এটা সফলভাবে হয়, তাহলে ভাবব হয়ত।”

সৌর বিদ্যুতের আরেক কোম্পানি এনার্জি এরেনা ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তফা বলেন, “১ মেগাওয়াট সোলারে আড়াই একর জমি লাগে। সেটা অকৃষি জমি হতে হয়। উইন্ডের জন্য প্রয়োজন কোস্টাল এরিয়া, যত সমুদ্রবর্তী জায়গা হবে, তত বেশি স্টেডি উইন্ড স্পিড পাবেন।

দেশে প্রথম বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয় ফেনীর সোনাগাজীতে।

“কিন্তু আনফরচুনেটলি আমরা নদীমাতৃক দেশ, সমুদ্রমাতৃক না। আমাদের চট্টগ্রাম এলাকায় একটা সার্টেইন স্পিড পাচ্ছি। কিন্তু কখনো কখনো আমাদের উইন্ড স্পিড অনেক বেশি চলে আসে। আবার অনেকসময় অনেক কমে যায়। উইন্ড এনার্জির ক্ষেত্রে স্টেডি উইন্ড স্পিড এবং ডিরেকশন গুরুত্বপূর্ণ।”

একসঙ্গে সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা যায় কি না- তা নিয়ে কাজ করার কথা জানালেন মোস্তফা।

তিনি বলেন, সমীক্ষায় দেখা গেছে, চট্টগ্রামের মত কিছু এলাকায় সেটা সম্ভব। ফেনীর সোনাগাজীতে সরকারেরও একটি প্রকল্প আছে এরকম।

“৭ কিলোমিটার পার আওয়ার স্টেডি উইন্ড স্পিড যদি না থাকে, তাহলে ফিজিবল না। অনেক সময় ৪-৫ এ চলে আসে, অনেকসময় ১৬-১৭ তে চলে যায়। গড়ে ১০ বা ১০ এর বেশি থাকলে বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় চোখ বন্ধ করে কমার্শিয়ালি ফিজিবল বলা যায়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যদি ৬-৭ ও থাকে, তাহলে আমরা এটাকে ফিজিবল বলতে পারব। এটা করার জন্য আমরা সোলার প্যানেলের সাথে মার্জ করে টার্বাইন বসানোর চিন্তা করছি সোলার প্যানেলের শ্যাডো অ্যানালাইসিস করে।”

মোস্তফা বলেন, বিদেশে হোম সোলারের মত কিছু রেসিডেনশিয়াল হোম উইন্ড টার্বাইন আছে। কিন্তু বাংলাদেশে সেটা কঠিন।

“কারণ আমাদের এখানে ডাস্ট বেশি। আর যত ছোট টার্বাইন, স্পিড তত বেশি লাগবে। টার্বাইন একটা নয়েজ ক্রিয়েট করে, সেটাকে টলারেন্সের মাঝে রাখতে হবে। না হলে ক্লায়েন্ট বলবে, যতটুকু পাওয়ার পাচ্ছি, তার জন্য এত নয়েজ নিতে পারব না।

বায়ু বিদ্যুতের জন্য শুল্কও যে বাধার কারণ সে কথাও মনে করিয়ে দেন এনার্জি এরেইনার প্রধান মোস্তফা।

“সোলারে ইনভার্টার ইউজ করতে হয়, উইন্ডেও করতে হয়। এখানে টার্বাইন, ওখানে সোলার প্যানেল, বাকিসব অনেকটা সেইম। সোলার রিলেটেড যা কিছু আছে, তার কাস্টম ডিউটি ১ শতাংশ দিয়ে আনা গেলে আগ্রহী হত সবাই। বর্তমানে আমাদের ২৫-৩০ শতাংশ ডিউটি দিতে হয়। আমি নিয়ে আসলাম, সরবরাহকারী হিসেবে আমার ২৫% দিতে হচ্ছে। তারপর যখন আমি সেল করব, মানে আরেকজনকে সরবরাহ করব, তাতে যায় ১১% এর মত। আমি এভারেজে ৩০% বলছি।”

বায়ু বিদ্যুতে বিনিয়োগ টানতে শুল্ক ছাড় ও ভর্তুকি দেওয়ার পরামর্শ দিলেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল।

তিনি বলেন, “সরকার এখন নন-রিনিউয়েবল এনার্জিতে যে ভর্তুকি দিচ্ছে, রিনিউয়েবলে অত দেওয়া লাগবে না। কিছু দিলেই এটা ঘুরে দাঁড়াতে পারে। দক্ষিণাঞ্চলের জায়গা যদি ডেভেলপ করি, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করি, তাহলে বায়ু বিদ্যুতে আমরা সাফল্য পাব।”

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
totoslotgacor
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
toto gacor
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor
situs togel
Toto Slot
bacan4d
bacan4d