বিদ্যমান মূল্যস্ফীতি কমিয়ে ৬ থেকে ৫ শতাংশে আনতে অর্থনীতিবিদদের ৩ পরামর্শ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, [দেশটিতে] সুদের হার প্রায় দুই ডিজিট (বাংলাদেশের মতো) থেকে ৩ শতাংশের কাছাকাছি নেমে আসে।
কিছু পদক্ষেপ নিলে বাংলাদেশের বিদ্যমান মূল্যস্ফীতি কমে ৬ থেকে ৫ শতাংশে নেমে আসতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছেন কয়েকজন অর্থনীতিবিদ। প্রতীকী ছবি: সংগৃহীত
যদি বাংলাদেশ ব্যাংক একটি শক্তিশালী মুদ্রানীতি গ্রহণ করে, বাণিজ্যিক ব্যাংককে অতিরিক্ত তারল্য সহায়তা দেওয়া থেকে বিরত থাকে এবং বাজেট ঘাটতি মেটাতে টাকা না ছাপে, তাহলে ছয় থেকে নয় মাসের মধ্যে দেশের মূল্যস্ফীতির হার কমে আসা উচিত।
বুধবার (১২ জুন) রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর।
রাজধানীর গুলশানে এমসিসিআই মিলনায়তনে ‘বাজেট ইনসাইটস: চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড অপারচুনিটিজ’ শীর্ষক এক উপস্থাপনায় তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে, বিশ্বের সব প্রধান অর্থনীতিতে কঠোর মুদ্রানীতি মূল্যস্ফীতির হার দ্রুত কমাতে অবদান রেখেছে।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, [দেশটিতে] সুদের হার প্রায় দুই ডিজিট (বাংলাদেশের মতো) থেকে ৩ শতাংশের কাছাকাছি নেমে আসে।
মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, ঢাকা (এমসিসিআই) এবং পিআরআই আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ভারতেও একই ধরনের ইতিবাচক উন্নয়ন দেখা গেছে।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘এসব দেখে আমরা আশা করতে পারি যে, বাংলাদেশে একই ধরনের পদক্ষেপের ফলে মূল্যস্ফীতির হার কমিয়ে ৬ থেকে ৫ শতাংশে পর্যন্ত নামিয়ে আনা যেতে পারে।’
পিআরআই-এর চেয়ারম্যান জায়েদি সাত্তার বলেন, ব্যয়ের দিক থেকে অনেক বেশি প্রায়োগিক ও বাস্তবসম্মত এ বাজেট সঠিক পথে আছে।
‘কেউ কেউ বলছেন এটি [বাজেট] সংকোচনমূলক, কিন্তু এটি সংশোধিত বাজেটের তুলনায় মাঝারি রকমের সম্প্রসারণমূলক,’ তিনি আরও বলেন।
যদিও পিআরআই চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রাকে তিনি বাস্তবসম্মত বলে মনে করেন, তবে তিনি বাজেটে আমূল সংস্কারও প্রত্যাশা করেন।
‘বাজেট ঘাটতি গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। আদর্শত, বাজেট ঘাটতি সংকোচনমূলক রাজস্ব ও মুদ্রানীতিকে সমর্থন করে,’ সাত্তার বলেন।
বাজেটে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি একটি জাতীয়তাবাদী ধারণা।
তিনি বলেন, মেড ইন বাংলাদেশের নীতিগত সহায়তা যদি বৈশ্বিক বাজারে বিক্রির দিকে পরিচালিত হয়, তাহলে প্রবৃদ্ধি ৭–৮ শতাংশ হতে পারে, যা বেড়ে ১০ শতাংশেও পৌঁছাতে পারে।
তিনি অবশ্য আরও বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ বাজারে বিক্রির মাধ্যমে এমন প্রবৃদ্ধি অর্জনের উদাহরণ কোনো দেশে নেই।’
আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি রহমান।