Trending

বিপর্যস্ত পোল্ট্রি-মৎস্যখাত

বাড়ছে শীতের তীব্রতা তাপমাত্র নেমেছে ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে আসন্ন রমজানে বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের :: তাপমাত্রা কমায় প্রতিটা খামারে গড়ে ১০-২০টা মুরগির বাচ্চা মারা যাচ্ছে :: শীতে মৎস্য খামারের পানি দূষিত হয়ে গ্যাস জমে মাছ মারা যাচ্ছে :: অন্যান্য বারের শীতের সময়ে মুরগির বাচ্চা মারা গেলেও এবার এই সংখ্যাটা দ্বিগুণ হয়েছে- বিএবির সাধারণ সম্পাদক

তীব্র শীতে সারাদেশে জনজীবন বিপর্যস্ত। গত কয়েকদিন যাবত উত্তারাঞ্চলের কয়েকটি জেলাসহ দেশের অন্তত ২২টি জেলায় বইছে শৈত্যপ্রবাহ। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস। যা একদিন আগে ছিল ৮ দশমিক ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস। ঢাকা বিভাগেও বইছে শৈত্যপ্রবাহ। এ বিভাগের একমাত্র ঢাকার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রীর উপরে। গতকাল ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তীব্র শীতের প্রভাব পড়েছে মানুষ পশু পাখি আর ফসলের উপর। বিশেষ করে মৎস্য ও পোল্ট্রি শিল্পে শীতের বিরূপ প্রভাব পড়েছে। তীব্র শীতে পোল্ট্রি এবং মৎস্য খামারে দেখা দিচ্ছে নানান রোগ বালাই। মুরগী খামারে মারা যাচ্ছে মুরগী। মাছের খামারে মরে যাচ্ছে মাছ। রাজশাহী পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বলেন, প্রতিটা খামারে গড়ে ১০-২০টা মুরগির বাচ্চা মারা যাচ্ছে। গত তিন-চারদিনে ২৫ থেকে ৩০ হাজার মুরগি মারা গেছে। যদিও প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর বলছে শীতের কারনে মুরগী মারা যাবার তথ্য তাদের কাছে নেই। তারা শীতের কারনে মৃত্যুরোধে বাল্ব জ্বালিয়ে রাখার এবং পলিথিন দিয়ে খামার ঢেকে রাখার জন্য খামারিদের পরামর্শ দিচ্ছে।

প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ফার্ম) শরিফুল হক বলেন, এ বিষয়ে আমাদের একটি সেল কাজ করছে। তারা খামারিদের নানান পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে মুরগী বা মুরগীর বাচ্চা মারা যাওয়ার কোন তথ্য এখনো আমাদের কাছে আসেনি।

তীব্র শীতে অনেক খামারে মুরগির বাচ্চা মারা যাচ্ছে। কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী টিকে থাকার চেষ্টা করলেও শীতের কারনে অনেক পোল্ট্রি খামার বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন খামারীরা। একদিকে বাচ্চা ও ফিডের দামবৃদ্ধি, অন্যদিকে শীতের কারণে মারা যাচ্ছে মুরগি। এতে সংকটে পড়েছেন খামারিরা। আর যার প্রভাবে দাম শীতের শুরু থেকেই বাড়ছে পোল্ট্রি মুরগির। মাছ ও মুরগীর উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বাজারে এর প্রভাব পড়ছে। সরবাহ কমে যাওয়ায় বাজারে দাম বেড়ে গেছে। এতে সাধারণ মানুষের ব্যয় বেড়ে নাভিশ্বাস অবস্থা। আর মাস দেড়েক পর আসছে রোজা। রমজানে পোল্ট্রি মুরগি সাধারণ মানুষের অন্যতম অবলম্বন। তাই আগামী দিনে গরীবের প্রোটিন পোল্ট্রি মুরগির সঙ্কট তৈরির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। একই সঙ্গে মাছের দামও বাড়বে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্রুতই পদক্ষেপ না নিলে রমজানে পোল্ট্রি মুরগি এবং মাছের দাম কোথায় ঠেকে তা বলা দুষ্কর। শাক-শবজি থেকে শুরু করে নিত্য পণ্যের মূল্য আকাশচুম্বি। এরপর আবার পোল্ট্রি মুরগি ও মাছের দাম বাড়লে দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সেহেরি ও ইফতারে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার মেলা দুস্কর হয়ে যাবে। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফজলুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, বর্তমানে খামারের যে সব মুরগীর বাচ্চা মারা যাচ্ছে সেগুলোই রোজার মধ্যে বিক্রির উপযোগি হতো। একই ভাবে মাছের ক্ষেত্রেও তাই। এখন মুরগীর বাচ্চা এবং মাছ মারা যাওয়ায় এর ভার আগামী এক দেড়মাস পর বাজারে প্রকট হয়ে দেখা দেবে। আর তখন পবিত্র রমজান থাকবে। রমজানে এমনিতেই মাছ ও মুরগীর চাহিদা থাকে। তখন বাজারে সরবরাহ কম থালে দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক।

ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) সাধারণ সম্পাদক ও পিপলস পোলট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহবুবুর রহমানের জানালেন, প্রতি সপ্তাহে লেয়ার, ব্রয়লার, সোনালি, কালার বার্ড মিলিয়ে সারাদেশে দুই কোটি বাচ্চা করি। সেখান থেকে এ বছর ২০ শতাংশ পর্যন্ত মুরগির বাচ্চা মারা যাচ্ছে। অর্থাৎ, গড়ে প্রায় ৪০ লাখ বাচ্চা মারা যেতে পারে। এটা সম্ভাব্য, কম-বেশি হতে পারে। অতি ঠান্ডা মূল কারণ। প্রতিবছর শীতের সময়ে মুরগির বাচ্চা মারা গেলেও এবার এই সংখ্যাটা দ্বিগুণ হয়েছে বলে জানান তিনি। অন্যান্য বছরও তাপমাত্রা কমেছে, বাচ্চা মরেছে। কিন্তু আমরা যারা বাচ্চা বিক্রি করি, এবার আমাদের কাছে মুরগির বাচ্চার মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার অনেক খবর আসছে। এই হার অব্যাহত থাকলে মাস দেড়েকের মধ্যে মুরগির বাচ্চার সঙ্কটে পড়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন এ খাত সংশ্লিষ্টরা। আর যা আসন্ন রমজানে প্রভাব পড়তে পারে।

শীতে অনেকের মৎস্য খামারে মাছ মারা যাচ্ছে। মংমনসিংহের ত্রিশালের খামারি মাসুদ বলেন, আমি দুটি পুকুরে পাবদা মাছের চাষ করেছিলাম। আর মাস খানেক পরেই এগুলো বিক্রির উপযোগি হতো। কিন্তু দু’দিন আগে পুকুরের মাছ সব মেরে ভেসে উঠলো।

এ বিষয়ে কৃষিবিদ ফরহাদ আহাম্মেদ বলেন, শীতকালে পুকুরে মাছ চাষে বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। কারণ পানি দূষিত হয়, অক্সিজেন কমে যায়, গ্যাস সৃষ্টি হওয়াসহ নানা সমস্যার জন্য মাছের বিভিন্ন রোগ ও মড়ক দেখা যায়। ফলে মাছের উৎপাদন কমে যায়। অক্সিজেনের অভাবে মাছ পানিতে খাবি খায়। পানির ওপর ভেসে ওঠে। মাছ খুব ক্লান্ত হয়, মুখ খুলে থাকে ও ফুলকা ফাটে। মাছ মারা যায়। এসব সমস্যা হওয়ার আগেই প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিলে মাছের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। শীতে পুকুরে বা মাছের খামারে যাতে গ্যাসের সৃষ্টি না হয় সেজন্য পানিতে সাঁতারকাটা, বাঁশ দিয়ে পানির ওপর পেটানো, হররা টেনে তলের গ্যাস বের করে দেয়া, পুকুরে পাম্প বসিয়ে ঢেউয়ের সৃষ্টি করা, এসব করতে হবে।

শীতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে পোল্ট্রিখাতে। তীব্র শীতে ছোট ছোট মুরগীর বাচ্ছ প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে। রাজশাহীর খামারি ইমাম হোসেন বলেন, গত ১৫ দিনে আমার খামারে মরা বাচ্চার সংখ্যা ৩০০’র কাছাকাছি হয়ে গেছে। আমি ২০১৩ সাল থেকে ব্যবসা করি এই লাইনে। এর আগে কখনওই এইভাবে বাচ্চা মারা যেতে দেখিনি। তীব্র শীতের সাথে খাপ খাওয়াতে পারেনি বলেই মুরগির বাচ্চাগুলো এভাবে মারা যাচ্ছে। রাজশাহীর আরেক খামারি মো. মামুন জানান, তীব্র শীতের কারণে তিনি খামারে নতুন করে মুরগির বাচ্চা তোলা বন্ধ রেখেছেন আপাতত। রাজশাহীতে তাপমাত্রা অনেক কম। আমার খামারের সব মুরগি বেচে দিয়েছি আমি আগেই। নতুন বাচ্চা তুলছি না, কারণ বাচ্চা তুললে শীতের কারণে সেগুলো মারা যাচ্ছে। শৈত্যপ্রবাহ গেলে বাচ্চা তুলবো।
রাজশাহী পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বলেন, প্রতিটা খামারে গড়ে ১০-২০টা মুরগি মারা যাচ্ছে। সঠিকভাবে এটার কোনও হিসাব নাই। এটা আমাদের অনুমানভিত্তিক কথা। রাজশাহী এবং এর আশেপাশে মিলিয়ে তিন হাজারের বেশি খামার আছে। এখন যদি গড় করা হয়, তাহলে এই তিন-চারদিনে ২৫-৩০ হাজার মুরগি তো মারা গেছেই। সংখ্যাটা এর আরও বেশি হবে।

এই মৃত্যু কারণ কী?
শীতে খামারের সঠিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। মানুষ ঘরের ভেতর থাকলেই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে যায়। সেখানে খামার তো খোলা হয়। পলিথিন দিয়ে সেটাকে ঢাকতে হয়। কিন্তু চারপাশে পলিথিন দিয়ে ঢাকলে আবার অক্সিজেনের স্বল্পতা দেখা দেয় এবং মাইক্রোপ্লাজমাসহ বিভিন্ন ধরনের শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়। শীতে ছোট মুরগির পরিচর্যা করা কঠিন। এ সময় ব্রুডিং করাটা বেশ কঠিন। ছোট বাচ্চাকে খামারে উঠানোর পর তাপমাত্রা যদি ৯৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম থাকে, তাহলে ঠান্ডা লেগে নিউমোনিয়াসহ আরও অনেক সমস্যা হয়। মুরগির খামার তো খোলা ঘর থাকে। সেখানে পলিথিন দিয়ে তারা একভাবে তাপমাত্রাটা নিয়ন্ত্রণ করে। সাধারণ সময়ে এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। কিন্তু এখন তাপমাত্রা অনেক কমে যাওয়াতে ওটা ণিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এজন্যই ওখানে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা থাকছে না ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এম মনিরুল এইচ খান বলেন, ব্রয়লার মুরগির রেজিসট্যান্স ক্ষমতা খুবই কম। তাদের বাসস্থানে তাপমাত্রা একটু কমবেশি হলেই মারা যায়। দেশি মুরগির বাচ্চা কিন্তু এভাবে সাধারণত মারা যায় না।

শীতের তীব্রতায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মৎস্য পোল্ট্রি খাতের সার্বিক অবস্থা নিয়ে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো প্রতিবেদন নিচে তুলে ধরা হল।

রাজশাহী থেকে বিশেষ সংবাদদাতা রেজাউল করিম রাজু জানান, ফসলি জমিকে পুকুর বানিয়ে মাছ চাষ বেড়েছে রাজশাহীতে। প্রতি বছর বাড়ছে পুকুরের সংখ্যা। ফলে মাছ চাষে উদ্বৃত্ত জেলা রাজশাহী। প্রতিদিন এখান থেকে শতাধিক ছোট ট্রাকে কৃত্রিম পুকুর বানিয়ে দেশের ২৫ জেলায় যাচ্ছে তাজা মাছ। প্রতিদিন দুই তিন কোটি টাকার মাছের লেনদেন হয়। রাজশাহী মৎস্য অফিসের হিসাবে নয় উপজেলায় পুকুরের সংখ্যা একান্ন হাজার। তাছাড়া রয়েছে নদী খাল বিল আর জলাভূমি। ফারাক্কার কারনে নদী গুলো মরে গেলে মানুষ মাছ চাষে উদ্যোগি হয়। তাছাড়া ধান চাষে লোকসান হওয়ায় ধানের জমিকে পুকুরে রুপান্তর করে। যদিও প্রলম্বিত খরা পুকুরে মাছ চাষে বিঘ্ন ঘটালেও গভীর নলকূপ দিয়ে পানি তুলে পুকুর ভরে চলছে মাছের আবাদ। বানিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ করা হচ্ছে ফরমালিন মুক্ত মাছ বাজারে আসছে। বছরে মাছের উৎপাদন দাড়িয়েছে ৮৬ হাজার মেট্রিব টন। রুই, কাতলা, কার্প জাতীয় মাছের সাথে দেশী পাবদা, কৈ, শিং মাছ চাষ হচ্ছে। যদিও খরা ও শীতে মাছ চাষ নিয়ে তাদের বেশ বেকায়দায় পড়তে হয়। খরার সময় তীব্র তাপাদহে পানি গরম হয়ে মাছ মরে। আবার শীতে মাছ ধরতে বেশ কষ্ট হয়। বর্তমানে শীতে অনেক পুকুরে গ্যাস জমে পানি দূষিত হওয়ায় মাছ মরে যাচ্ছে। এতে চাষিরা বেশ চিন্তিত। এদিকে রাজশাহীতে প্রায় তিন হাজারের বেশী ছোট বড় মুরগীর খামার থাকলেও নানামূখী সমস্যায় পড়ে তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এখন সব মিলিয়ে তের’শ খামার রয়েছে। সেখান থেকে ব্রয়লার, লেয়ার ও সোনালী মুরগী বাজারে আসছে। ডিমও উৎপাদন হচ্ছে। এখন লেয়ার মুরগীর খামার রয়েছে প্রায় পাঁচশো আর ব্রয়লার সাড়ে আটশো। এই শীতে খামারে মুরগীর বাচ্চা অনেক মারা যাচ্ছে। রাজশাহী পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক বলেন, প্রতিটা খামারে গড়ে ১০-২০টা মুরগি মারা যাচ্ছে। গত তিন-চারদিনে ২৫ থেকে ৩০ হাজার মুরগি মারা গেছে। এতে করে পোল্ট্রি শিল্পের মালিকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

বগুড়া থেকে বিশেষ সংবাদদাতা মহসিন রাজু জানান, এমনিতেই ফিড ও মেডিসিনের দূর্মুল্য ও দুষ্প্রাপ্যতায় সংকটের মধ্যেই চলতে হচ্ছিল পোল্ট্রি ও ফিশিং সেক্টরের উদ্যোতাদের। এরমধ্যে আবার তীব্র শীত,ঘন কুয়াশা ও শৈত্যপ্রবাহের কারণে এই সেক্টরে এখন মহাদুর্যোগের অশনিসংকেত দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। সহসাই শীত ও শৈত্য প্রবাহের অবসান না হলে পথে বসবে অনেক উদ্যোক্তা বলেছেন অভিজ্ঞরা। বগুড়া জেলা পশুপালন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক নাসরিন পারভীন গতকাল জানান, বগুড়ায় বর্তমানে চালু ছোটবড় পোল্ট্রি ফার্ম রয়েছে ৫ হাজার ৭৬৪টি এবং হাঁসের খামার ৫৯৪ টি। বর্তমানে মোটামুটি সবগুলোই চালু আছে। শীতজনিত কারণে কোন হাঁস বা মুরগির খামার বন্ধ হয়েছে এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে চলমান শীত ও শৈত্যপ্রবাহের অবসান না হলে হাঁস মুরগির মড়ক বা রোগ ব্যাধি দেখা দিতে পারে। বগুড়া জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের কোন দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের কার্যালয়ে গিয়ে পাওয়া পায়নি। ফোন ও ধরেননি তারা।

কয়েকজন পোল্ট্রি ও ফিশিং সেক্টরের উদ্যোক্তা জানান, কর্মকর্তারা যাই বলুননা কেন, শীতে অনেক খামারেই মুরগীর বাচ্চা মারা যাচ্ছে। এ ছাড়া এই খাত এখন দেশি বিদেশি সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে। এমতাবস্থায় চলমান শৈত্য প্রবাহ যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তারা বলেন সরকার পদক্ষেপ না নিলে প্রানীজ প্রোটিনের উৎস পুরোপুরি ভারত নির্ভর হয়ে পড়বে।

ময়মনসিংহের গফরগাঁও থেকে মুহাম্মদ আতিকুল্লাহ জানান, উপজেলা সদর ও ১৫টি ইউনিয়নে গত কয়েক দিনের তীব্র শীত ও হিমেল হাওয়ার কারনে পোল্ট্রি খামারে নানান ধরনের রোগ দেখা দিয়েছে। এতে করে হাঁস-মুরগী মারা যাচ্ছে। বেসরকারি হিসেবে শতাধিক খামারে কয়েক শ’ মুরগীর বাচ্চা মারা গেছে। গফরগাঁও উপজেলার ৩নং চরআলগী ইউনিয়নের চরমছলন্দ গ্রামের মো. আসাদুল জানান, তীব্র শীতে মুরগী হাঁসসহ নানান ধরনের প্রাণী প্রতিনিয়তই আক্রান্ত হচ্ছে এবং মারা যাচ্ছে। উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আরিফুল ইসলাম জানান, শীতজনিত কারণে হাঁসমুরগী মারা যাচ্ছে কি না আমরা প্রতিনিয়ত এর খোঁজ রাখছি। খামারিদের আমরা এ বিষয়ে নানান পরামর্শ দিচ্ছি। এ দিকে শৈত্যপ্রবাহের কারনে বিভিন্ন ইউনিয়নের আবহমান গ্রামবাংলায় মৎস্য খাতের অনেক ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষকরা জানান । বহু মৎস্য খামারের হরেক রকমের মাছ রোদ না থাকার ফলে মরে যাচ্ছে। এতে করে খামারীরা আর্থিক ভাবে ক্ষতি হচ্ছে। শিলাসী গ্রামের মোঃ জহিরুল হক জানান, তীব্র শীতে পুকুরের মাছ ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছে। এ রকম পরিস্থিতি গত ১৫/২০বছরের মধ্যে হয়নি। তবে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার মুহাম্মদ মালিক তানভীর হোসেন জানান, এখন পর্যন্ত মৎস্য খামারে কোন ধরনের রোগ বালাই নেই। মাছ মরে যাওয়ার কোন খবরও আমাদের কাছে নেই।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d