Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোপাটের অর্থ পাচার, দুদকের দায়সারা ভূমিকা

গত ১৬ বছরে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোপাট করা হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। লোপাটকারীদের তালিকায় ব্যাংকের মালিক-পরিচালক থেকে শুরু করে আছে প্রভাবশালী অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান। ঋণের নামে তারা জনগণের টাকা ব্যাংক থেকে সরিয়ে আত্মসাৎ করেছে। এ অর্থের বড় অংশ পাচার করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, দুবাই, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে। এনআরবিসি, বেসিক, সোনালী, সাউথ ইস্ট ও পদ্মা ব্যাংকের অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের পৃথক অভিযোগ অনুসন্ধান করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর মধ্যে তিনটি ঘটনায় দায়সারা মামলা হলেও জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়নি। বিদেশে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনতে পারেনি সংস্থাটি। আর্থিক খাতের সবচেয়ে বড় লোপাটকারীর বিরুদ্ধে তখন দুদক অনুসন্ধান করার সাহসই দেখায়নি। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

দুদক কর্মকর্তারা বলেছেন, আওয়ামী লীগ আমলে তিনটি ব্যাংকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় ‘বজ আঁটুনি ফসকা গেরো’ স্টাইলে মামলা হয়েছে। আলোচিত বেশ কয়েকটি অভিযোগ অনুসন্ধানের নামে ঝুলে আছে বছরের পর বছর। কেউ কেউ অভিযোগ পরিসমাপ্তি করে ‘ক্লিনচিট’ বাগিয়ে নিয়েছেন। ব্যাংক লোপাটের অনেক বস্তুনিষ্ট খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পরও তখন তা অনুসন্ধানে আগ্রহ দেখায়নি সংস্থাটি। এখনো দুদকের মনোভাবের কোনো পরিবর্তন হয়নি। কখন কাকে সরিয়ে দেওয়া হয় সেই ভাবনা থেকে ‘রুটিন ওয়ার্কে’ দিন পার করছে কমিশন। আর আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে লোক দেখানো অনুসন্ধান ফাইল খোলা হচ্ছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপির সাবেক মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে একই ভাবে অনুসন্ধান ফাইল খোলা হয়েছিল। সে সময় কারও কারও নামে করা মামলা এখন প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে।

জানতে চাইলে দুদক কমিশনার জহুরুল হক যুগান্তরকে বলেন, ব্যাংকের অর্থ লোপাট ও পাচারের একাধিক ঘটনার অনুসন্ধান ও তদন্ত শেষে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একটি ঘটনায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরতও আনা হয়েছে। এখনো অনেক আলোচিত বেশ কয়েকজন অর্থ লোপটকারীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলমান। বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়াও চলছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, ‘দুদকের কাজ সব সময়ই দায়সারা ও লোক দেখানো। ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে দুদক কিছু করতে পারে না বা করার সৎ সাহস দেখায় না-সাধারণ মানুষ, গণমাধ্যম ও আমাদের এই ধারণা পটপরিবর্তনের পর দুদক নিজেই দুটি আঙ্গিকে প্রমাণ করছে। প্রথমত, দুদক এখন আওয়ামী লীগের সাবেক যেসব মন্ত্রী-এমপি ও সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অনুসন্ধান শুরু করছে তাদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ আগে থাকার পরও কিছু করেনি। যেমন আমরা সাবেক ভূমিমন্ত্রীর যুক্তরাজ্যে অর্থ পাচারের প্রমাণসহ তথ্য দুদকে দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা তখন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। একই তথ্য-প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে এখন তৎপরতা দেখাচ্ছে। দ্বিতীয়ত, আওয়ামী লীগ সরকারে বিরাগভাজন ও বিরোধী শক্তি হিসাবে পরিচিত যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল তারা আবার ক্ষমতায় আসার সম্ভবনা তৈরি হওয়ায় তাদের মামলা প্রত্যাহার করা হচ্ছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে দুদক, সিআইডি, বিএফআইইউ ও অ্যার্টনি জেনারেল অফিসের সমন্বিত প্রক্রিয়া এখনই শুরু করা উচিত। এক্ষেত্রে দুদকের যে ভূমিকা পালন করার কথা সেটাও আমরা দেখছি না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পাচারের অর্থ ফেরানোর আশা আমরা করতেই পারি। তবে এই দুদক-সিআইডি-বিএফআইইউ দিয়ে তা হবে না। এগুলোর আমূল পরিবর্তন করতে হবে।’

জানা গেছে, ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আমলে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যক্তি পর্যায় থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের অর্থ লোপাটের অভিযোগ দুদকে আসে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কমিশন অভিযোগগুলো আমলে নেয়নি। যেসব ব্যাংকের অর্থ লোপাটের অভিযোগ তখন আমলে নেওয়া হয়নি তার মধ্যে অন্যতম ছিল ইসলামী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও প্রাইম ব্যাংক।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বিগত দিনে ব্যাংকিং কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অর্থ লোপাটে সহযোগিতা করেছে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্তারা। ব্যাংকের মালিক-পরিচালকরা নিজেদের মর্জিমাফিক ব্যাংক চালিয়েছেন। ফলে এখন ঝুঁকির মুখে পড়েছে সাধারণ গ্রাহকদের আমানত। ঋণের টাকা যারা বিদেশে পাচার করছে তাদের ধরতে ব্যর্থ ছিল বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ব্যাংক খাত টেনে তোলার চেষ্টা করছে। কিন্তু লোপাটকারীদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছে না। দুদকের ভূমিকা এখনো আগের মতো দায়সারাই মনে হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যাংকিং খাতের ঘুস-দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের ঘটনা অনুসন্ধান, তদন্ত ও মামলা করে থাকে দেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান দুদক। কিন্তু বিগত দিনে সরকারের সদিচ্ছার অভাব ও প্রভাবশালীদের চাপে এ কাজে কমিশন খুব বেশি আগ্রহ দেখায়নি। অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটের তথ্য গণমাধ্যমে প্রচার-প্রকাশিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও বিভিন্ন সময় তথ্য-উপাত্ত পাঠিয়েছে দুদকের কাছে। আবার ব্যক্তি পর্যায় থেকেও একাধিক ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ দুদকে জমা করে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অর্থ লোপাটের সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ থাকার পরও কমিশন সেগুলো অনুসন্ধানে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। সমালোচনা এড়াতে কিছু অভিযোগ অনুসন্ধানের পর দায়সারাভাবে মামলা করা হয়েছে।

জানা গেছে, রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের ঢাকার তিনটি শাখা থেকে নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠে। ২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে ব্যাংকটির গুলশান, শান্তিনগর ও দিলকুশা শাখা থেকে এই ঋণ দেওয়ার তথ্য-প্রমাণ গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়। তখন এ নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ২০১৫ সালে অনুসন্ধান শেষে ৫৬টি মামলা করা হয়। অবৈধ প্রভাবে তখন মামলার এজাহারে আলোচিত এই দুর্নীতির হোতা ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুকে আসামি করা হয়নি। ৮ বছর ধরে তদন্ত শেষে ২০২৩ সালের জুনে আদালতে জমা দেওয়া চার্জশিটে বাচ্চুকে অভিযুক্ত করা হয়। কিন্তু বাচ্চু এখনো বহাল তবিয়তে। তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। এই মামলার ১৪৭ আসামির কাউকেই গ্রেফতার করেনি দুদক।

আরও জানা গেছে, ব্যাংকিং খাতের আলোচিত আরেক ঋণ জালিয়াতির ঘটনা ‘হলমার্ক কেলেঙ্কারি’ হিসাবে পরিচিত। ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে সোনালী ব্যাংকের তৎকালীন হোটেল শেরাটন শাখা থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করে হলমার্ক গ্রুপ। এর মধ্যে ফান্ডেড প্রায় ১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। আর নন-ফান্ডেড ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। ফান্ডেড অংশের অনুসন্ধান শেষে ২০১২ সালে ১১টি মামলা করে দুদক। ২০১৩ সালে বেশকিছু মামলার চার্জশিট দেওয়া হয়। এসব মামলায় হলমার্কের এমডি তানভীর মাহমুদ, চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামসহ ব্যাংকটির ঊর্ধ্বতন বেশকিছু কর্মকর্তাকে সাজা দিয়েছেন আদালত। তবে নন ফান্ডেড অংশের জন্য আলাদা দল গঠন করা হলেও রহস্যজনক কারণে ফাইলটি ‘লালফিতায় বন্দি’। এখনো অনুসন্ধানই শেষ হয়নি। এই টাকা আদায়ের ব্যাপারেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সংস্থাটি।

জানা গেছে, নামে-বেনামে ঋণ অনুমোদন করে পদ্মা ব্যাংক থেকে (সাবেক ফার্মার্স ব্যাংক) প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা সরিয়ে নেয় একটি চক্র। এ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেও দুদকে নথিপত্র পাঠানো হয়। এ ঘটনার অনুসন্ধান শেষে ২০২২ সালের আগস্টের একটি মামলা করে দুদক। মামলায় ব্যাংকের সাবেক ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়সাল আহমেদ চৌধুরীসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে মাত্র ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। দুদক ব্যাংকটিকে ধ্বংসকারী সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ও তাদের ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে দায়সারাভাবে লোক দেখানো মামলা করে পুরো ঘটনাটি ধামাচাপা দিয়েছে। এছাড়াও জনতা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক ও যমুনা ব্যাংক থেকে হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেছে আলোচিত বিসমিল্লাহ গ্রুপ। গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খাজা সোলায়মান আনোয়ার চৌধুরী, তার স্ত্রী গ্রুপের চেয়ারম্যান নওরীন হাসিব এখন বিদেশে পলাতক। তারা ঋণের বেশিরভাগ অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন। দুদক এই দম্পত্তিসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দায় শেষ করেছে। এছাড়া অনেক বড় লোপাটকারীর বিরুদ্ধে তখন দুদক অনুসন্ধান শুর করার সাহস পায়নি। ইসলামী ব্যাংকের ৩০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে একটি গ্রুপ। গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে-বেনামে ঋণ অনুমোদন দিয়ে এই টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রচারের পর সারা দেশে সমালোচনার ঝড় বইলেও নীরব ছিল দুদক।

সংশ্লিষ্টরা জানান, জনতা ব্যাংকে ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৬ বছরে ১৩ হাজার ১১০ কোটি ৮০ লাখ টাকার ৩১টি ঋণ অনিয়মের ঘটনা চিহ্নিত করা হয়। এটা এই ব্যাংকের মোট অনাদায়ি ঋণের ২২ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এই অনাদায়ি অর্থের ৪৪ দশমিক ৩ শতাংশ রয়েছে জালিয়াতি ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে অভিযুক্ত অ্যাননটেক্স গ্রুপে। খোদ বাংলাদেশ মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের অডিটে এই অনিয়ম ধরা পড়লেও রহস্যজনকভাবে নীরব দুদক। এ ব্যাপারে অনুসন্ধানে দুদকের কোনো উদ্যোগ নেই। এনআরবিসি ব্যাংকের অর্থ পাচারের ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করা হলেও পাচার চক্রের হোতা ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল ও ব্যাংকটির এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আদনান ইমামকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। টানা ২০ বছর ধরে সাউথ ইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যানের গদিতে থাকা আলমগীর কবির ও তার ছেলে রাইয়ান কবিরের অর্থ পাচারের অনুসন্ধান করে দুদক। অনুসন্ধান কর্মকর্তা এই অভিযোগ পরিসমাপ্তি করেন। অথচ ব্যাংকের টাকা লোপাট করে থাইল্যান্ডে বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তোলার সুস্পষ্ট তথ্য প্রমাণ দুদককে দিয়েছিল বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এছাড়া আলমগীর কবির ও তার ছেলের সিঙ্গাপুরে প্রায় ৪০ কোটি টাকা সমমূল্যের ফ্ল্যাট ও সেখানে ব্যাবসায় বিপুল বিনিয়োগ আছে। খোদ ব্যাংকটির পরিচালক এ সংক্রান্ত তথ্য-প্রমাণসহ অভিযোগ করলেও দুদক তাকে দায়মুক্তি দেয়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto