Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Bangladesh

বিমানে পণ্যের মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া

আকাশ পথে পণ্য পরিবহনে ঢাকায় ভাড়া বেশি, দিল্লিতে খরচ কম বিপাকে রফতানিকারকরা  প্রতিদিন গড়ে ৫০ টন পণ্যের কার্গো ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বদলে দিল্লি বিমানবন্দরে চলে যাচ্ছে

বিমান দেশকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য উড়োজাহাজের তুলনায় যাত্রীদের ভাড়া বেশি নিচ্ছে এবং পণ্য পরিবহন ভাড়াও বেশি নিচ্ছে। ফলে যাত্রীরা যেমন হয়রানির শিকার হচ্ছেন তেমনি পণ্য আমদানি-রফতানিকারকরাও পড়েছেন বিপাকে। শুধু অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ায় আন্তর্জাতিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ও ব্র্যান্ডগুলো পণ্য পরিবহনে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে দিল্লি বিমানবন্দরের দিকে ঝকছে। এতে করে বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণ আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যা দেশকে অর্থনৈতিকভাবে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আবার দেশের রফতানি মুখ থুবরে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, বিমানে আমদানি-রফতানি উভয় খাতেই পণ্য পরিবহনের ব্যয় বেড়েছে। বিশেষ করে রফতানিতে বাড়তি ব্যয় মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আকাশ, নৌ ও সড়কÑ এই তিনটি পথেরই বর্তমানে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বাড়তি ভাড়া। বিশেষ করে দ্রুত পণ্য পেতে বিমানের বিকল্প নেই। আর তাই আন্তর্জাতিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ও ব্র্যান্ডগুলো পণ্য পরিবহনে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে দিল্লি বিমানবন্দরকে বেছে নিচ্ছে। কারণ দিল্লি বিমানবন্দরে পণ্য পরিবহন ব্যয় কম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আকাশ, সমুদ্র ও সড়কপথে যথাক্রমে উড়োজাহাজ, জাহাজ ও ট্রাক-টেলরের ভাড়া এবং কনটেইনার, স্ক্যানার, হ্যান্ডলিংসহ বন্দরের আনুষঙ্গিক চার্জসহ সার্বিকভাবে পরিবহন খরচ আগের চেয়ে কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে রফতানিমুখী ব্যবসায়ীদের মুনাফায় টান পড়েছে। তা সত্ত্বেও বিদেশি ক্রেতা ধরে রাখার স্বার্থে অনেক রফতানিকারক কম মুনাফা করছেন এবং কেউ কেউ লোকসানের মুখেও পড়ছেন।

জানা গেছে, সড়কে যাওয়া পণ্যগুলোর গন্তব্য কম দূরত্বের দেশগুলো। জাহাজ পথেও আগের থেকে বিভিন্ন দেশ ঘুরে গন্তব্যে যেতে হয় বলে বাড়তি ভাড়া বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। তাই রফতানি পণ্য দ্রুত পৌঁছানোর জন্য সবচেয়ে বড় মাধ্যম উড়োজাহাজ। এই মাধ্যমে বেশি যাচ্ছে পচনশীল পণ্য। আর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের শুল্ক এত বেশি যে, ক্রেতারা তাদের পণ্য ট্রাকে করে বেনাপোল ও পেট্রাপোল হয়ে ১ হাজার ৯০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দিল্লি নিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের আন্তর্জাতিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান ও ব্র্যান্ডগুলো পণ্য পরিবহনে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে দিল্লি বিমানবন্দরকে বেছে নিচ্ছে। কারণ দিল্লি বিমানবন্দর কম শুল্ক আরোপ করে। শুধু দিল্লি নয়; বাংলাদেশের তুলনায় পার্শ্ববর্তী দেশ পাকিস্তানের রফতানিকারকরা কম খরচে পণ্য পৌঁছাতে পারেন বিদেশে। অন্যদিকে পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় প্রতিযোগীদের সঙ্গে পেরে উঠছেন না বাংলাদেশের রফতানিকারকরা। ফলে চড়া দামের কারণে ক্রেতা হারাচ্ছেন তারা। বাড়তি ভাড়ার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষিপণ্য রফতানিকারকরা। কারণ সবজির বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের পণ্যগুলোর ধরন একই। তিন দেশের রফতানির গন্তব্যও একই। কিন্তু ভারত-পাকিস্তানের ভাড়া ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বেশি হওয়ার কারণে বিদেশি ক্রেতারা তাদের থেকেই পণ্য কিনছেন বেশি। সম্ভাবনা সত্ত্বেও পিছিয়ে পড়ছেন বাংলাদেশের রফতানিকারকরা।

উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে- শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে এক কেজি পোশাক পণ্য ইউরোপের বিভিন্ন গন্তব্যে পরিবহন করতে খরচ হয় ৩ ডলার। অথচ একই পরিমাণ পণ্য দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে পাঠালে খরচ হয় ১ দশমিক ২ ডলার। মূলত শাহজালাল বিমানবন্দরের উচ্চ শুল্ক, মূল্য সংযোজন কর, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ও সার্ভিস চার্জ গ্রাহকদের ঢাকা থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। কারণ এখানে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের জন্য ৭২ শতাংশ সারচার্জ আরোপ করা হয়। আবার সময়মতো ফি পরিশোধ না করলে ৬০ শতাংশ জরিমানা আদায় করা হয়। অতিরিক্ত চার্জের কারণে স্থানীয় এয়ারলাইন্স, ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার, কুরিয়ার কোম্পানি, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলারসহ সংশ্লিষ্ট অনেক খাত ব্যবসা হারাচ্ছে। এছাড়া শাহজালালের ছোট কার্গো ভিলেজ থেকে পণ্য চুরি, অযত্নে ফেলে রাখা এবং পণ্যের মানের অবনতি হওয়া নিয়ে গ্রাহকদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ আছে।

অথচ শাহজালাল বিমানবন্দরে চলতি বছরের শেষ দিকে বা আগামী বছরের শুরুর দিকে স্বপ্নের তৃতীয় টার্মিনালের কার্যক্রম শুরু করবে। বিশ্বমানের সব সুযোগ-সুবিধা এবং যাত্রী পরিষেবার নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে। নতুন করে বিভিন্ন দেশ এখান থেকে তাদের এয়ারলাইন্স সেবা চালু করবে এই আশা করা হচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশকে একটি অ্যাভিয়েশন হাব হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রথম মাইলফলক হিসেবে ধরা হচ্ছে। আর এসব স্বপ্ন ফিঁকে হয়ে যাচ্ছে বিমানবন্দর ব্যবহারে উচ্চ শুল্ক ও নানাবিধ ব্যয়। এছাড়া শাহজালাল বিমানবন্দরের বিমান ওঠা-নামার ক্ষেত্রে একটি রানওয়ে হওয়ায় সময়ক্ষেপণ বা জটও ভাবাচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে এই সমস্যা আরও বাড়বে। এতে আগামীতে কি সুফল মিলবে এ নিয়েও সন্দিহান সংশ্লিষ্টরা। আর তাই ব্যয় কমাতে দিল্লি বিমানবন্দরের দ্বারস্থ হচ্ছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা।

এদিকে থার্ড টার্মিনাল নিয়ে আগামীতে স্বপ্ন দেখা হলেও বর্তমানেই শ্রমিকদের সমস্যার সমাধান করতে পারছে না বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। গত কয়েক দিন থেকে বিমানবন্দরের মালয়েশিয়াগামী ফ্লাইটের শিডিউল বিপর্যয় এবং সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে শত শত শ্রমিক টিকিট না পেয়ে বিমানবন্দর এবং এর আশপাশে গত প্রায় ১৫ দিন থেকে অবস্থান করছে। এছাড়া ডলার সঙ্কটে বাংলাদেশ ব্যাংক বিদেশি এয়ারলাইনসগুলোর বকেয়া প্রদান করতে না পারায় কম দামের টিকিট বাংলাদেশে বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে এয়ারলাইনসগুলো। ফলে বাড়তি দামে টিকিট বিক্রি করছে বিদেশি এয়ারলাইনসগুলো। গতকাল শেষ দিনেও মালয়েশিয়াগামী শত শত শ্রমিক টিকিট না পেয়ে হতাশ হয়ে গ্রামে ফিরেছেন। ফ্লাইট কমায় এমনকি বাড়তি দামেও মেলেনি এয়ার টিকিট। দেশের রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের শাহজালাল বিমানবন্দরে এভাবে হয়রানি যেন দৈনন্দিনকার চালচিত্র, যা বিশ্বের কোনো দেশের নজির আছে কি না সন্দেহ সংশ্লিষ্টদের।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে ১ লাখ ৬৫ হাজার টন কার্গো জাহাজী হয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ৩৪ হাজার টন পোশাক পণ্য এবং ৩০ হাজার টন শাকসবজি, ফল ও অন্যান্য সামগ্রী।
২০২২-২৩ অর্থবছরে এ বিমানবন্দর দিয়ে ১ লাখ ৬৭ হাজার টন কার্গো বিদেশে পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে ১ লাখ ৪২ হাজার টন পোশাক পণ্য এবং ২৪ হাজার টন ফল, শাকসবজিসহ অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী।

এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, উচ্চ শুল্কের কারণে গত বছর আট হাজার টনেরও বেশি কার্গো বিশেষ করে পোশাক পণ্য শাহজালাল বিমানবন্দরকে বাদ দিয়ে দিল্লি বিমানবন্দরে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এ বছর এর পরিমাণ বেশি, কারণ ক্রেতারা দিল্লি বিমানবন্দরকে তাদের ব্যবসায়ের জন্য সাশ্রয়ী মনে করছে। শাহজালাল বিমানবন্দরকে বাদ দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৫০ টন কার্গো দিল্লিতে পাঠানো হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এখানে অতিরিক্ত চার্জের কারণে স্থানীয় এয়ারলাইন্স, ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার, কুরিয়ার কোম্পানি, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলারসহ সংশ্লিষ্ট অনেক খাত ব্যবসা হারাচ্ছে। কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রুটে ব্যবসা করার চেষ্টা করা অন্তত আটটি বেসরকারি এয়ারলাইন্স। কিন্তু উচ্চ শুল্কের কারণে প্রতিযোগিতায় পেরে উঠছে না।

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কবির আহমেদ বলেন, ঢাকা বিমানবন্দরে ফ্রেইট চার্জ অত্যন্ত বেশি। তিনি বলেন, দিল্লি বিমানবন্দর ব্যবহার করতে ঢাকা থেকে ভারতের রাজধানীতে পণ্য পরিবহনের পরও রফতানিকারকরা প্রতি কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ মার্কিন সেন্ট সাশ্রয় করতে পারেন। এদিকে গত বছর এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে পণ্য পরিবহনের প্রধান সমুদ্রপথ লোহিত সাগরের সুয়েজ খালের ঐতিহ্যবাহী রুট ব্যবহারকারী কার্গোবাহী জাহাজগুলো হুতিদের হামলার শিকার হয়েছে। এরপর থেকে উড়োজাহাজে পণ্য পরিবহন বেড়েছে।

ফলে প্রতিবেশী দেশটির রফতানিকারকদের অভিযোগ, বাংলাদেশ থেকে যাওয়া কার্গো দিল্লি বিমানবন্দরে চাপ সৃষ্টি করেছে। তাই তারা সময়মতো ভারতের তৈরি পণ্য পাঠাতে পারছেন না। তারা ইতোমধ্যে দিল্লির কাছে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত চার্জ আরোপের দাবি জানিয়েছে। যেন বাংলাদেশি রফতানিকারক তাদের বিমানবন্দর ব্যবহার করতে না পারে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রয়োজন মনে করলে যেকোনো বিমানবন্দর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করতে পারে। কার্গোর পরিমাণ বাড়লে ঢাকার এয়ারলাইন্সগুলোও চার্জ বাড়ায়। এ ধরনের ব্যয় বৃদ্ধি অবশ্য সাময়িক।
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি এস এম মান্নান কচি বলেছেন, দিল্লি বিমানবন্দর বাংলাদেশি পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করলে রফতানিতে প্রভাব পড়বে না। তবে খরচ বাড়বে বলে স্বীকার করেন তিনি।

এদিকে ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ। বর্তমানে ৪০০ টন রফতানিযোগ্য পণ্য সংরক্ষণের সক্ষমতা থাকলেও সাধারণ সময়ে দৈনিক শিপমেন্ট গড়ে ৮০০ টন এবং ব্যস্ত সময়ে ১ হাজার ২০০ টনে পৌঁছে যায়। অন্যদিকে শাহজালালের ছোট কার্গো ভিলেজ থেকে পণ্য চুরি, অযত্নে ফেলে রাখা এবং পণ্যের মানের অবনতি হওয়া নিয়ে গ্রাহকদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ আছে। কয়েক বছর আগেও কাতার ও ইতিহাদ শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ডেডিকেটেড ফ্লাইটে কার্গো পরিবহন করত। এখন তারা হয়তো ফ্লাইট স্থগিত করেছে অথবা সক্ষমতা কমিয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আকাশপথে পরিবহন করা পণ্যের প্রায় ৬০ শতাংশ যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের মাধ্যমে বহন করা হয়, বাকিগুলো কার্গো ফ্লাইটে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto