Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
International

বিরোধীরা উড়িয়ে দিচ্ছে বুথফেরত জরিপ

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের শেষ ধাপের ভোট গ্রহণের পর ক্ষমতাসীন বিজেপির বড় জয়ের পূর্বাভাস দিয়ে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমে যেসব বুথফেরত জরিপ প্রকাশ করা হয়েছে, তাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে বিরোধী কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট। তারা এ জরিপকে ‘ভুয়া’ ও ‘প্রতারণামূলক’ বলে মন্তব্য করেছে। এসব জরিপের প্রায় প্রতিটিতেই বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হবেন এবং ক্ষমতাসীন এনডিএ জোট ৩৫০টির বেশি আসন পাবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এসব জরিপের ওপর অনাস্থা প্রকাশ করে বলেছেন, তাদের ইন্ডিয়া জোট নির্বাচনে ২৯৫টি আসনে জিততে যাচ্ছে। বিজেপিবিরোধী আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধান দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, বিরোধী ইন্ডিয়া জোটই সরকার গঠন করবে। আপের আরেক নেতা বলেছেন, মোদি আবার প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি মাথা ন্যাড়া করে ফেলবেন।

বুথফেরত জরিপ প্রকাশের পরদিন গতকাল রোববার কংগ্রেস নেতারা তাদের লোকসভা প্রার্থীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। বৈঠকে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাহুল গান্ধীসহ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, জরিপের পূর্বাভাস ছিল নির্বাচনে জালিয়াতিকে বৈধতা দিতে ‘পরিকল্পিত ঘটনা’।

ইন্ডিয়া জোটের শরিক দল শিবসেনার নেতা সঞ্জয় রাউত বলেন, গণমাধ্যম কোম্পানিগুলোর ওপর যথেষ্ট চাপ আছে সরকারের। এ বুথফেরত জরিপের মাধ্যমে ‘করপোরেট গেম’ খেলা হয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, জরিপ নিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর প্রতিক্রিয়া ছিল সবচেয়ে সরাসরি। তিনি বলেন, এটা কোনো বুথফেরত জরিপ নয়। এটা মোদি-মিডিয়া জরিপ। ইন্ডিয়া জোট ২৯৫টি আসন পেতে যাচ্ছে। ‘জনগণের জরিপের’ ভিত্তিতে একই কথা বলেছেন মল্লিকার্জুন খাড়গেও।

ইন্ডিয়া জোটের শরিক সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব বলেন, বুথফেরত জরিপ বোঝার চেষ্টা করুন। এ নিয়ে তো বিরোধী দলগুলো আগে থেকেই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল। গণমাধ্যম যে বিজেপিকে ৩শর বেশি আসনে দেবে, এটা জানাই ছিল। এতে গড়বড় আছে।
তবে এ ক্ষেত্রে একধাপ এগিয়ে আপের নেতা সোমনাথ ভারতী বলেছেন, ৪ জুন (আগামীকাল) ফলাফল ঘোষণার পর ইন্ডিয়া ব্লকই সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদি তৃতীয়বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি মাথা ন্যাড়া করে ফেলবেন। দিল্লির সব আসনে ইন্ডিয়া জোট জয়ী হবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেন আপ নেতা সোমনাথ।

এ অবস্থায় বিজেপি নেতা ও ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে নির্বাচনের ফলাফলে প্রভাব বিস্তারের গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। তিনি বলেন, অমিত শাহ শনিবার অনুষ্ঠিত শেষ দফার ভোট গ্রহণের আগের দিন (শুক্রবার) ১৫০ জন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। এ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটরাই বিভিন্ন জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ নিয়ে জয়রাম রমেশকে বিস্তারিত জানাতে বলেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। কমিশন বলছে, কোনো জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ ধরনের ফোন পাওয়ার কথা জানাননি।
ইন্ডিয়া জোটের মঞ্চে দেখা গেলেও পশ্চিমবঙ্গে এবার একাই নির্বাচনে লড়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল তৃণমূল কংগ্রেস। ভারতের কেন্দ্রে কংগ্রেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকলেও তারা রাজ্যে ছিল আলাদা। বুথফেরত জরিপে পশ্চিমবঙ্গের ৪২ আসনের মধ্যে তৃণমূল ১৮ এবং বিজেপি ২২টি আসন পাবে বলে আভাস দেওয়া হয়। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মমতা। তিনি বুথফেরত সমীক্ষাকে ‘ভুয়া’ বলেও মন্তব্য করেন। তৃণমূল কর্মীদের শক্ত থাকার বার্তা দিয়ে ‘টিভি নাইন’ চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘আমাদের রাজ্য নিয়ে যেটা দেখাচ্ছে, সেটা আমি বিশ্বাস করি না। এটা একেবারে ফেক।’

লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে বড় দল হতে চলেছে বিজেপি– শনিবার সপ্তম দফার ভোট শেষে একাধিক বুথফেরত সমীক্ষায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে। রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘সংবাদমাধ্যম কী করে বলে দিচ্ছে, ওই আসনে অমুক জিতবে, ওই আসনে তমুক– কত টাকার বিনিময়ে? আমি এ সংবাদমাধ্যমের হিসাব মানি না। কর্মীদের বলব শক্ত থাকতে, গণনা ভালো করে করতে। যা দেখিয়েছে সংবাদমাধ্যম, তার দ্বিগুণ পাব। প্রতিটি আসন আমরা জিতব।’
তবে রাজ্যে তৃণমূল ঠিক কতগুলো আসন পাবে, তা নিয়ে অবশ্য কোনো সংখ্যা জানাননি মমতা। সেই প্রশ্নে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘আমি কোনো নম্বরে যাব না। কিন্তু একটা কথা আপনাদের বলতে পারি, আমরা যেভাবে মাঠে-ময়দানে নেমে কাজ করেছি, লোকের চোখ দেখেছি, তাতে আমার কখনও মনে হয়নি যে, মানুষ আমাদের ভোট দেবেন না।’

ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় এলে কী করবে তৃণমূল– এ প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যাব। সে রকম পরিস্থিতি এলে নিশ্চয়ই কথা বলব। আমাদের কোনো অসুবিধা নেই।’ তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘মোদিজিকে যারা জিতিয়ে দিচ্ছেন, তাদেরও বলে দিই– এবার কিন্তু অত সহজ অঙ্কে, অত সহজে পার পাওয়া যাবে না। এ সরকার আদৌ কত দিন চলবে, সন্দেহ আছে।’ ইন্ডিয়া জোটের শরিক ডিএমকে, আপ, এসপি লোকসভায় ভালো ফল করবে বলেও আশাবাদী মমতা।
বুথফেরত জরিপের ফলাফল সবসময় যে সঠিক হয়, এমনটা বলা যায় না। অতীতে ভুল প্রমাণ হওয়ার অনেক রেকর্ড আছে।

ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, বুথফেরত জরিপ অন্তত ছয়বার ভুল প্রমাণ হয়েছে। ২০০৪ সালের নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ২৪০ থেকে ২৭৫ আসন পাবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়। ওই নির্বাচনে তারা পেয়েছিল ১৮৭ আসন। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বুথফেরত জরিপগুলোতে বিজেপির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করা হলেও আসন সংখ্যা ২৬১ থেকে ২৮৯ বলে আভাস দেওয়া হয়েছিল। ওই ভোটে এনডিএ জোট পেয়েছে ৩৩৬টি আসন।
এ ছাড়া ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশ, ২০১৫ সালে বিহার ও দিল্লি, ২০২৩ সালে ছত্তিশগড়ের বিধানসভা ভোটেও বুথফেরত জরিপের পূর্বাভাস সঠিক প্রমাণিত হয়নি।

এর আগে ২০১৯ সালের নির্বাচনে যেসব বুথফেরত জরিপ প্রকাশ হয়, তার মধ্যে ১৩টি বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটকে এগিয়ে রেখেছিল। তখন এসব জরিপের গড় ফলে এনডিএর আসন দেখানো হয় ৩০৬টি; বিরোধী জোট ইউপিএ (বর্তমানে ইন্ডিয়া) ১২০ আসন পাবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়। ওই নির্বাচনে এনডিএ ৩৫৩ আসন পেয়েছিল; ইউপিএ পেয়েছিল ৯৩টি আসন।

তবে সব জল্পনার অবসান ঘটবে আগামীকাল মঙ্গলবার। দেড় মাস ধরে সাত দফায় চলা নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হবে এদিন; জানা যাবে বুথফেরত জরিপের সত্যতাও।

ব্লুমবার্গে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বিশ্লেষক অ্যান্ডি মুখার্জি বলেন, বুথফেরত জরিপের দিকে নজর দিতে হবে সতর্কভাবে। কারণ অতীতে অনেক সময়ই এসব জরিপ ভুল প্রমাণিত হয়েছে। এ ছাড়া টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে মোদি সরকারের প্রভাবও আছে। হতে পারে আগামীকাল মঙ্গলবার যে ফল ঘোষণা করা হবে, তাতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট পাঁচ বছরের জন্য আবার ক্ষমতায় যাওয়ার জনরায় পাবে। কিন্তু ৩৫০-এর বেশি লোকসভা আসন শুনতে অনেকটা অবাস্তবই মনে হচ্ছে।
ভারতের বিশিষ্ট নির্বাচনী কৌশলপ্রণেতা প্রশান্ত কিশোরও জরিপের ফল পরোক্ষভাবে নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি ‘ভুয়া সাংবাদিক, গলাবাজ রাজনীতিক ও তথাকথিত সোশ্যাল মিডিয়া বিশেষজ্ঞদের’ কথায় কান দিয়ে ‘সময় নষ্ট না করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

আবারও কারাগারে কেজরিওয়াল
নির্বাচনে প্রচারণায় অংশ নেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আবারও তিহার জেলে গেছেন আপ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল। রোববার তিনি জেল কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। বিজেপিবিরোধী এই নেতা সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার বলে অনেক বিশ্লেষক মনে করেন।

অরুণাচলে বড় জয় বিজেপির
চীন সীমান্তবর্তী ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অরুণাচল রাজ্যে বিধানসভা ভোটে বড় জয় পেয়েছে বিজেপি। তারা রাজ্যের ৬০ বিধানসভা আসনের ৪৬টিতে জয় পেয়েছে। পাঁচটিতে জিতেছে মেঘালয়ের ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল পিপলস পার্টি বা এনপিপি। সেখানে এনপিপি তিন, পিপিএ দুটি ও কংগ্রেস একটি আসনে জিতেছে।

অন্যদিকে, সিকিমে বিধানসভা ভোটে বড় জয় পেয়েছে রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দল সিকিম ক্রান্তিকারি মোর্চা বা এসকেএম। রাজ্যটির ৩২ বিধানসভা আসনের ৩১টিকে জয় পেয়েছে তারা। রাজ্যটির বিরোধী দল সিকিম ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট পেয়েছে মাত্র একটি আসন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto