Hot

বিশ্বজুড়ে সংঘাত: ক্ষুধায় প্রতিদিন ২১০০০ মানুষের মৃত্যু

বিশ্বজুড়ে সংঘাতের কারণে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা রেকর্ড স্তরে পৌঁছেছে। ইউনাইটেড কিংডম-ভিত্তিক দাতব্য সংস্থার প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে খাদ্যের অভাবে প্রতিদিন ৭ হাজার থেকে ২১ হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। 

বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষ্যে বুধবার ‘ফুড ওয়ারর্স’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে অক্সফাম। সংঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মানুষ অস্ত্র ব্যবহার এবং খাদ্য সহায়তা অবরুদ্ধ করার অভিযোগ করেছে। এএফপি। 

অক্সফাম ‘ফুড ওয়ারর্স’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি ৫৪টি দেশের ক্ষুধা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে প্রকাশ করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ফিলিস্তিন ও সুদান। বলা হয়েছে, এসব দেশের ২৮ কোটি ১৬ লাখ মানুষের প্রায় সবাই এখন তীব্র ক্ষুধা পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। আর ক্ষুধার কারণে প্রতিদিন ৭ থেকে ২১ হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।  

এ ছাড়া সংঘাতের কারণে এসব দেশে উদ্বাস্তু সমস্যাও প্রকট রূপ নিয়েছে। অক্সফামের হিসাবে, দেশগুলোয় উদ্বাস্তুর সংখ্যা এখন ১১ কোটি ৭০ লাখে উন্নীত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ২৮১.৬ মিলিয়ন মানুষ তীব্র ক্ষুধার সম্মুখীন। সংঘাত এই দেশগুলোর মানুষের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি ঘটিয়েছে, যা এখন রেকর্ড ১১৭ মিলিয়নে পৌঁছেছে। 

অক্সফাম জোর দিয়ে বলেছে, সংঘাত শুধুমাত্র ক্ষুধাকে জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করছে না, বরং যুদ্ধরত পক্ষগুলো সক্রিয়ভাবে খাদ্য, পানি এবং শক্তি অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে। সে সঙ্গে খাদ্য সহায়তাকে বাধা দিয়ে খাদ্যকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে। খাদ্য ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য কাজ করা অক্সফামের এমিলি ফার বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইনের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত পক্ষগুলোর কারণে অনাহার বা ক্ষুধা একটি প্রাণঘাতী অস্ত্রে পরিণত হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকের খাদ্য সংকট মূলত তৈরি করা পরিস্থিতি। গাজার প্রায় অর্ধমিলিয়ন মানুষ এবং সুদানে এক মিলিয়নের তিন-চতুর্থাংশ মানুষ অনাহারে রয়েছে, কারণ খাদ্যের ওপর যুদ্ধের বিধ্বংসী প্রভাব পড়েছে এবং এই পরিস্থিতি প্রজন্ম ধরে চলতে পারে। 

বিশ্লেষণে দেখা গেছে, যুদ্ধ, বাস্তুচ্যুতি এবং ক্ষুধা সংকট এমন দেশগুলোতে ঘটে, যে দেশগুলো পণ্য রপ্তানির ওপর খুব বেশি নির্ভরশীল। উদাহরণস্বরূপ, সুদানের রপ্তানি আয়ের ৯৫ শতাংশ আসে স্বর্ণ এবং পশুসম্পদ থেকে। যুদ্ধ, ঘন ঘন জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা, অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং বৈষম্যের মতো অন্যান্য সংকটকে তীব্র করে তোলে। 

জলবায়ু সম্পর্কিত বিপর্যয় যেমন, খরা এবং বন্যা, মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় পূর্ব ও দক্ষিণ আফ্রিকায় ক্ষুধা সংকট বেড়েছে। 

অক্সফাম কর্মকর্তা এমিলি ফারের মতে, ‘বৃহৎ আকারের ব্যক্তিগত বিনিয়োগ (বিদেশি এবং অভ্যন্তরীণ উভয়ই) প্রায়ই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে বাড়িয়ে তুলছে। কারণ, বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্থানীয় জনগণকে স্থানচ্যুত করে।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button