Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Trending

বিশ্বব্যাপী নির্বাচনের বছর ২০২৪; যেভাবে হাসিনা ও সবশেষ আসাদের পলায়নের বছরে পরিণত হলো

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এবং সিরিয়ার আরব প্রজাতন্ত্র — নামে দুই দেশই গণপ্রজাতন্ত্রী, কিন্তু হাসিনা বা বাশারের শাসনের এমন কোনো বৈশিষ্ট্য ছিল না– যাকে গণতান্ত্রিক বলা যায়।

রেকর্ডসংখ্যক দেশে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ থাকায়– ২০২৪ সালকে অনায়সেই বলা হয়েছিল নির্বাচনের বছর। এসময়ে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র ও সিরিয়াসহ ৭২টি দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

যদিও বাংলাদেশ ও সিরিয়ায় তা ছিল নামকাওয়াস্তে, এবং প্রকৃতপক্ষে এগুলো নির্বাচনও নয়। নির্বাচন নামের প্রহসনে জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল এ দুই দেশের স্বৈরশাসকেরা। সেই বঞ্চনা থেকেই বাংলাদেশে বিক্ষোভগুলো রূপ নিতে থাকে গণঅভ্যুত্থানে।

চলতি বছরের শুরুতেই ছিল ৭ জানুয়ারির নির্বাচন, যেটি বিতর্কিত ও একপেশে বলে তীব্র সমালোচনা রয়েছে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা হলেও – গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরেন।

এমতাবস্থায় একের পর এক ঘটনার প্রেক্ষিতে, সরকারি চাকরিতে কোটা-ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয় জুলাই মাসে, যা সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হচ্ছিল। কিন্তু, কোনো স্বৈরাচারই প্রতিবাদ/ বিক্ষোভকে মানে না, শেখ হাসিনাও আন্দোলনের বিরুদ্ধে নিষ্ঠুর দমনাভিযান চালান, যা এই আন্দোলনকে স্বৈরাচারবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে পরিণত করে।

গত ৫ আগস্ট সারাদেশ থেকে আসা ছাত্র-জনতা প্রবেশ করে রাজধানীতে, তাঁরা এগিয়ে যাচ্ছিলেন গণভবনের দিকে। তখন দেশ ছেড়ে প্রতিবেশী ভারতে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা।

১৫ বছরের বেশি সময় কঠোরহস্তে বাংলাদেশকে শাসন-শোষণ করেছেন শেখ হাসিনা ও তাঁর সহযোগীরা, বার বার হাসিনা দাবি করেছেন, এসবই ছিল তাঁর পিতার স্বপ্ন।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের কাহিনিও অনেকটা এরকম।

পিতা হাফেজ আল আসাদের মৃত্যুর পর ২০০০ সালের ১৭ জুলাই ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন বাশার আল আসাদ। ১৯৭১ সাল, যে বছর বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে– ঠিক সেবছরেই সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হন হাফেজ। আমৃত্যু প্রায় তিন দশক ছিলেন রাষ্ট্রক্ষমতায়। তবে তিনি দেশটিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনেছিলেন।

বাশারের বেড়ে ওঠা রাজধানী দামেস্কের অভিজাত মহলে। তবে প্রেসিডেন্ট হওয়ার কথা তাঁর ছিল না, তাঁর একজন বড় ভাই ছিলেন, যাকে উত্তরাধিকারী মনোনীত করেছিলেন হাফেজ। বাশার তাই ডাক্তারি পড়াশোনায় মনোযোগ দেন, চক্ষুবিশারদ হিসেবে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করার পরে সিরিয়ান সেনাবাহিনীতে একজন চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করেন।

কিন্তু, সব সমীকরণ বদলে যায় ১৯৯৪ সালে। সেবছরেই এক গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হন তাঁর বড় ভাই বাসেল আল আসাদ। তখন বাশারকে সিরিয়ায় ফিরে এসে বাসেলের দায়িত্বগুলো বুঝে নিতে বলা হয়। ফলে এই চিকিৎসককে হঠাৎ করেই সামরিক একাডেমিতে ভর্তি হতে হয়, এবং ১৯৯৮ সালে তিনিই লেবাননে মোতায়েনকৃত সিরিয় সেনাদের নেতৃত্ব দেন।

হাফেজ আল আসাদের মৃত্যুর মাত্র একমাসের মধ্যেই সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হন বাশার। তাঁর ২৪ বছরের শাসনামলকে রোলারকোস্টার রাইডের মতোই উত্তাল বললেও কম বলা হয়। এই সময়ের বেশিরভাগজুড়ে ছিল বিক্ষোভ, সহিংসতা, গৃহযুদ্ধ ও ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাসমূহ, যার জেরে লাখ লাখ সিরিয়কে স্বদেশ ছেড়ে পালাতে হয়। তাঁরা আশ্রয় নেন প্রতিবেশী দেশগুলোয়, অনেকে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টায় মারা গেছে, আর যারা পৌঁছাতে পেড়েছেন তাঁদের অধিকাংশের সাথে মনুষ্যেতর আচরণ করেছে ইউরোপীয়রা। তবে বেশিরভাগ সিরিয় শরণার্থীই রয়েছেন প্রতিবেশী তুরস্ক, জর্ডান ও ইরাকে।

এপর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকটের জন্ম দিয়েছে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ। সর্বনাশা এ সংঘাত সমৃদ্ধ ও প্রাচীন সিরিয়ার জনপদকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। মানবিক সহায়তা সংস্থা কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইডের তথ্যমতে, বর্তমানে বিশ্বের মোট শরণার্থীর ২৫ শতাংশই হলেন সিরিয়রা।

বিদ্রোহীদের দামেস্ক দখলের মধ্য দিয়ে আজ ৮ ডিসেম্বর অবসান হয়েছে বাশার আল আসাদের শাসনামলের। দেশে ছেড়ে অজ্ঞাতগন্তব্যের উদ্দেশ্যে পালিয়ে গেছেন তিনি।

এই ঘটনা আমাদের হাসিনার পলায়নকেই যেন আরও একবার মনে করিয়ে দেয়।

কাগুজে প্রজাতন্ত্র, বাস্তবে স্বৈরাচারী

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ এবং সিরিয়ার আরব প্রজাতন্ত্র — নামে দুই দেশই গণপ্রজাতন্ত্রী, কিন্তু হাসিনা বা বাশারের শাসনের এমন কোনো বৈশিষ্ট্য ছিল না– যাকে গণতান্ত্রিক বলা যায়।

এরমধ্যে সিরিয়া তো বহুদিন ধরেই একদলীয় শাসনে পরিচালিত হচ্ছিল, তাই সেকথা স্বতন্ত্র। কিন্তু, গত ১৫ বছরে হাসিনা যা কায়েম করেছিলেন, সেটিও একদলীয় শাসন। দেশের গণমাধ্যম ও বিরোধী দলকে কার্যত ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করেন হাসিনা ও তাঁর দোসররা। হাসিনাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে, এমন যে কারো অপমান, হয়রানি, প্রাণনাশ— ইত্যাদি পরিণত হয়েছিল স্বাভাবিক ঘটনায়। 

ফলে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আগে থেকেই জনগণ জানতো– কার বিজয়ের নীলনকশা করা হচ্ছে।

সরকারের কঠোর দমনপীড়ন সত্ত্বেও – হাসিনার আমলে বেশ কয়েকবার ফুঁসে উঠেছিল জনগণ। কিন্তু, হাসিনা সব বিক্ষোভ, আন্দোলন দমন করতে সক্ষম হন। বিরোধীমত দমনে হাসিনার সহায়ক শক্তি ছিল প্রতিবেশী ভারত। তবে সব আন্দোলন দমন করতে পারলেও, জুলাইয়ের অভ্যুত্থান সামাল দিতে পারেননি হাসিনা।

বাশার আল আসাদের পতনের প্রেক্ষাপটটা সামরিক। তাঁর দমনপীড়ন ২০১১ সাল থেকে যে গৃহযুদ্ধের জন্ম দিয়েছিল– তারই চূড়ান্ত পরিণতি। সে বছর আরব বসন্তের অনুপ্রেরণায় সিরিয়াতেও রাজনৈতিক সংস্কার ও বিভিন্ন নাগরিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে সিরিয়রা আন্দোলন শুরু করেন। ১৯৬৩ সাল থেকে জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে সিরিয়ায়, যা অবসানের দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।
 
এমসয় বিদেশি শক্তিগুলো সিরিয়ায় তাদের গোয়েন্দা কার্যক্রম বিস্তার করে। ফলে ওই সময়ে বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের চেয়েও জটিল ও ঘোরালো হয়ে ওঠে সিরিয়ার পরিস্থিতি। তবে ২০১১ সালের মার্চে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালাতে থাকে নিরাপত্তা বাহিনী, আন্দোলন দমনে আরও কঠোর হন বাশার। ধীরে ধীরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন রূপ নেয় সহিংসতায়, সেখান থেকেই তা এমন গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়– যার ফলে উদ্বাস্তু হয়ে পড়ে লাখো মানুষ।

২০১১ সালের এপ্রিলে সিরিয়ায় আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তক্ষেপ করে যুক্তরাষ্ট্র। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা— বাশার সরকারের বিরুদ্ধে কিছু নিষেধাজ্ঞাও দেন। অন্যদিকে, বাশারের পক্ষ নেয় রাশিয়া।

বিদ্রোহীদের প্রবল আক্রমণে বাশার আল আসাদের সরকারি বাহিনী যখন ভেঙে পড়ার মুখে, ঠিক তখনই সামরিক সহায়তা নিয়ে তাঁর পাশে দাঁড়ান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অর্থনৈতিক সহযোগিতাও দেয় রাশিয়া।

তবে শেষরক্ষা হয়নি বাশার আল আসাদের। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যস্ত হয়ে পড়লে, এবং ইরান ইসরায়েলের সংঘাতে জড়ায়, লেবাননের সাম্প্রতিক যুদ্ধেও দুর্বল হয়েছে হিজবুল্লাহ। তারই সুযোগ নিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় সিরিয়ার বিদ্রোহীরা। তাঁদের অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে বড় ভূমিকা রাখে তুরস্কও। ফলে এই মাসের শুরু থেকে ঝটিকা অভিযানে নামে বিদ্রোহীরা। দ্রুতগতিতে তাঁরা একের পর এক শহর দখল করে এগোতে থাকে রাজধানী দামেস্কের দিকে। শেষপর্যন্ত দামেস্কও তাঁরা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

গৃহযুদ্ধ চলাকালে জনগণের বিরুদ্ধে অসংখ্য নির্মমতা চালিয়েছেন বাশার। তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে তিন শতাধিক বার রাসায়নিক অস্ত্র দিয়ে হামলার অভিযোগ রয়েছে।  ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বরে, বেসামরিক মানুষের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের ঘটনায় সম্প্রতি ফ্রান্সও বাশারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।  

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto