Trending

বিশ্বের অন্যতম ভয়ঙ্কর প্রাণী অনুপ্রবেশ করতে যাচ্ছে ব্রিটেনে

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে, বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রাণীদের অন্যতম এবং তাদের মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে বিশে^র পঞ্চম সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রজাতি লাল আগুনে পিঁপড়ার অনুপ্রবেশ ঘটতে যাচ্ছে ব্রিটেনে। ইতোমধ্যেই এটি ইউরোপে ৭ শতাংশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এর হুলকে ‘বেদনাদায়ক এবং জ্বালাময়’ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে, যা পূজ ও অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে এবং এমনকি, প্রাণঘাতি অ্যানাফিল্যাকটিক শক সৃষ্টি করতে পারে।
অ্যানাফিল্যাকটিক শক শরীরে অতিরিক্ত রাসায়নিকের নিঃসরণ ঘটায়, যার ফলে মানবদেহের রক্তচাপ হঠাৎ কমে যায় এবং শ্বাসনালী সরু হয়ে যায়, শ্বাস-প্রশ্বাসে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। এর লক্ষণ এবং উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে নাড়ির দুর্বল গতি, ত্বকের ফুসকুড়ি এবং বমি ভাব।

সম্প্রতি, গবেষকরা ইতালীয় দ্বীপ সিসিলির সিরাকুজে শহরের কাছে পাঁচ হেক্টর জায়গা জুড়ে ৮৮টি লাল আগুনে পিঁপড়ার বাসা সনাক্ত করেছেন। তারা বলছেন, এ আক্রমণাত্মক প্রজাতি খুব সম্ভবত চীন বা যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে। মূলত দক্ষিণ আমেরিকার প্রজাতি এ লাল আগুনে পিঁপড়া, যা সোলেনোপসিস ইনভিক্টা নামেও পরিচিত, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাস্তুতন্ত্র, কৃষি এবং মানব স্বাস্থ্যের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।

কারেন্ট বায়োলজি নামক জার্নালে প্রকাশিত সাম্প্রতিক গবেষণা অনুসারে, এক শতাব্দীরও কম সময়ে পিঁপড়ার প্রজাতিটি যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, ক্যারিবিয় দ্বীপপুঞ্জ, চীন, তাইওয়ান এবং অস্ট্রেলিয়ার বেশিরভাগ অংশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে এবং শুধুমাত্র নিউজিল্যান্ডে নির্মূল করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে এর উপস্থিতি প্রতি বছর ৬শ’ বোটি ডলারের বেশি ক্ষতির কারণ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়াসহ আক্রান্ত দেশগুলো এটি নির্মূলে শত শত কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে, কিন্তু সামান্যই সাফল্য পাচ্ছে।

স্পেন, হল্যান্ড এবং ফিনল্যান্ডের আমদানিকৃত পণ্যগুলোর মধ্যে মাঝে মাঝে লাল আগুনের পিঁপড়া পাওয়া গেছে। স্পেনের ইনস্টিটিউট অফ ইভোল্যুশনারি বায়োলজির (আইবিই) অধ্যয়নের নেতা ডক্টর রজার ভিলা বলেছেন, ‘বার্সেলোনা, রোম, লন্ডন বা প্যারিসের মতো বড় শহরগুলো এ আক্রমণাত্মক প্রজাতিতে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত হতে পারে, যা এর সংখ্যা এবং আক্রমণাত্মকতার কারণে মানুষের জীবনধারাকে প্রভাবিত করতে পারে।’
ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলীয় শহরগুলো সমুদ্রবন্দর দ্বারা সংযুক্ত, যা এস ইনভিক্টার বিস্তারকে সহজতর করেছে। ড. রজার বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের পূর্বাভাস বিবেচনা করলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে, কারণ প্রজাতিটি সম্ভাব্যভাবে ইউরোপের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পারে। এ অঞ্চলে এই নতুন হুমকিটি অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছড়িয়ে পড়ার আগে সফলভাবে মোকাবেলা করার জন্য প্রাথমিক সনাক্তকরণ ও দ্রুত প্রতিক্রিয়ার জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button