‘বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন’ ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছে রেকর্ড ১৩ মিলিয়ন শিক্ষার্থী
‘গাওকাও’ পরীক্ষার প্রথম দিনে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকছে একজন শিক্ষার্থী। চীনের উহানে, ৭ জুন ২০২৪।
চীনে অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক এক ভর্তি পরীক্ষায় বসছে রেকর্ডসংখ্যক হাই স্কুল শিক্ষার্থী। মন্থর গতির অর্থনীতি ও তরুণ স্নাতকদের সুযোগ দিতে খানিকটা বিপাকে থাকা দেশটিতে এই পরীক্ষাতেই এসব শিক্ষার্থীর ভাগ্য অনেকটা নির্ধারিত হয়ে যেতে পারে।
চীনের দুই দিনব্যাপী জাতীয় কলেজ ভর্তি পরীক্ষা পরিচিত ‘গাওকাও’। এটিই পৃথিবীর বৃহত্তম একাডেমিক পরীক্ষা। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম একে ‘বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন’ কলেজ ভর্তি পরীক্ষা বলেও আখ্যা দিয়েছে। তীব্র প্রতিযোগিতা, ঝুঁকি এবং শক্তিক্ষয়ী হওয়ার কারণে এ পরীক্ষাকে সবচেয়ে কঠিন বলা হচ্ছে।
১২ বছরের শিক্ষাজীবনে যা যা শিখেছে, তার সবকিছুর পরীক্ষা হয় মাত্র কয়েকটি বিষয়ের মধ্যে। আর পরীক্ষার জন্য তারা দুই ঘণ্টারও কম সময় পায়।
গত বছরের রেকর্ড ভেঙে চলতি বছর এ পরীক্ষার জন্য ১৩.৪ মিলিয়নের বেশি শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছে। অর্থাৎ চীনে এর আগে এত বড় ‘গাওকাও’ আরও কখনোই আয়োজিত হয়নি। গত বছর ১২.৯ মিলিয়ন শিক্ষার্থী এ পরীক্ষার জন্য নিবন্ধন করেছিল।
চীনে ছাত্রছাত্রীরা বছরের পর বছর এই ভীষণ কঠিন পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয়। দেশের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ার সুযোগ পাওয়ার একমাত্র উপায় এ পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া।
এই ভর্তিপরীক্ষায় যেসব বিষয়ের ওপর পরীক্ষা হয়, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে সাহিত্য, গণিত, ইংরেজি, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, রাজনীতি ও ইতিহাস।
চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি ধীরে হয়ে যাওয়া এবং তরুণদের মধ্যে বেকারত্ব বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের ওপর এ পরীক্ষায় ভালো করার চাপ বেড়ে গেছে বহুগুণ।
শুক্রবার (৭ জুন) পরীক্ষার প্রথম দিনে পরীক্ষার হলের বাইরে ছাত্রছাত্রীদের বাবা-মাকে উদ্বিগ্ন চেহারায় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। অনেক বাবা-মা ও শিক্ষক লাল পোশাক পরেছিলেন। চীনে লাল বিজয়ের প্রতীক। আবার অনেকের হাতে ছিল সূর্যমুখী ফুল। একাডেমিক ক্ষেত্রে সফলতা পাওয়ার জন্য এই ফুলকে শুভ বলে ধরে নেওয়া হয়।
‘গাওকাও’-এর প্রথম দিনে সিকিউরিটি চেক পেরোতে লাইনে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীরা। চীনের বুঝু, ৭ জুন ২০২০৪।
পরীক্ষা নেওয়ার স্থানে শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বেইজিংয়ে কিছু এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ ভোর ৬টা থেকেই দায়িত্বপালন শুরু করেছে, যাতে যানজট কম হয়।
সাংহাইয়ে এক সপ্তাহ আগে থেকেই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য বুকিং নিতে শুরু করেছে ট্যাক্সি ডিসপ্যাচ সেন্টারগুলো।
‘গাওকো’ পরীক্ষায় বসতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য শুভকামনা ও উৎসাহ প্রদানের বার্তায় সয়লাব হয়ে গেছে চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম উইবোতে সার্চ টপিকে ট্রেন্ডিংয়ে আছে ‘গাওকাও’।
অনে চীনা—এমনকি কয়েকজন আন্তর্জাতিক তারকাও পরীক্ষার্থীদের জন্য শুভকামনা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন।