বিশ্ব অর্থনীতিকে খাদে ফেলবেন ট্রাম্প? দেশে দেশে শুল্ক বৃদ্ধির পরিকল্পনা
যুক্তরাষ্ট্রের মসনদে বসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আনুষ্ঠানিকভাবে ২০ জানুয়ারি ক্ষমতায় বসেছেন তিনি। এরই মধ্যে তার আগমনকে ঘিরে বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে অর্থনৈতিক হিসাব-নিকাশ। বাড়ছে অনিশ্চয়তাও। কারণ ক্ষমতার সিংহাসনে বসতে না বসতেই দেশে দেশে শুল্ক বৃদ্ধির পরিকল্পনা করেছেন ট্রাম্প।
চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা বিবেচনা করেছেন তিনি। এই তালিকা থেকে বাদ যায়নি ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ)। এর আগে মেক্সিকো ও কানাডার ওপরও ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। পণ্য আমদানির ওপর এভাবে শুল্ক আরোপ করতে থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্যান্য দেশের বাণিজ্য ব্যাপক হারে হ্রাস পাবে। যার জেরে বিশ্ব অর্থনীতি ভয়াবহ খাদে পড়তে পারে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। সিএনএন, বিবিসি।
১ ফেব্রুয়ারি থেকে চীনে তৈরি পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার কথা বিবেচনা করছেন ট্রাম্প। মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে এক প্রেস কনফারেন্সে ট্রাম্প বলেছেন, ‘এই পদক্ষেপ চীনের ফেন্টানিল বাণিজ্যের ওপর। যা প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রে হাজার হাজার মৃত্যুর কারণ। তারা (চীন) মেক্সিকো ও কানাডায় ফেন্টানিল পাঠাচ্ছে।
এ জন্য ১ ফেব্রুয়ারি থেকে তাদের ওপর শুল্ক আরোপ নিয়ে ভাবছে প্রশাসন।’
এ সময় ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপরও শুল্ক আরোপ করবেন তিনি। ট্রাম্প আরও বলেছেন, শুল্ক আরোপই একমাত্র উপায়। যার মাধ্যমে ন্যায্যতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।’ এর আগে মেক্সিকো ও কানাডার ওপরও ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
তার অভিযোগ, দেশ দুটি যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসী ও মাদকের অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে। আর তাদের দেশে মাদক প্রবেশ করাচ্ছে চীন।
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডাভোস) এক সভায় যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতির প্রতিবাদ করেছেন চীনের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্র–ডোও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, যদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে কানাডা এর জবাব দেবে। অটোয়া এরই মধ্যে পালটা শুল্ক আরোপের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
যার পরিমাণ কয়েক বিলিয়ন ডলার হতে পারে। তবে অনেক অর্থনীতিবিদ মনে করেন, এ ধরনের পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যেতে পারে। বিদেশিদের পালটা পদক্ষেপের কারণে বড় সমস্যায় পড়তে পারেন ব্যবসায়ীরাও।
ব্লুমবার্গ ইকোনমিকসের মডেল অনুযায়ী, ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শুল্ক আরোপের কারণে বিশ্বের অসংখ্য দেশের বাণিজ্যিক ক্ষতির মুখে পড়বে। এসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক ক্ষতি পূরণ করতে একে অপরের সঙ্গে আরও বেশি বাণিজ্য করবে। এতে বিশ্বায়ন চলমান থাকলেও সেটি আর যুক্তরাষ্ট্রকে কেন্দ্র করে হবে না।