Bangladesh

বেইলি রোডের আগুনের বিভিষিকাময় মুহূর্তের বর্ণনা দিলেন এক প্রত্যক্ষদর্শী

রাজধানীর বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে লাগা আগুনে নারী-শিশুসহ মৃত ৪৪ জনের মধ্যে চারজনের পরিচয় জানা গেছে। তাদের মরদেহ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে রয়েছে।

যে ভবনটি আগুনে পুড়েছে সেটির পিৎজা-ইন নামে রেস্টুরেন্টে রাতে খেতে যান নুরুল আলম। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তিনি। শুনেছেন একের পর এক সিলিন্ডার বিস্ফোরণের শব্দ। সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন সেইসময়ের ঘটে যাওয়া অভিজ্ঞতা কথা।

বৃহস্পতিবার রাতে বহুতল ভবনটিতে লাগা ভয়াবহ আগুনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ জনে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩ ইউনিটের চেষ্টায় দুই ঘন্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও পুড়ে গেছে বাণিজ্যিক ভবনটি।

নুরুল আলম বলেন, ‘আমরা চিন্তা করছিলাম, কি হচ্ছে, আমরা কোথায় যাব? কারণ ওখানে অনেকগুলো সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়েছে। অনেকগুলো। আমরা আগুন লাগার পরে টপ ফ্লোরে চলে যাই। সেখানে অনেকগুলো মানুষ একসঙ্গে ছিলাম। প্রায় এক থেকে দেড় শ লোক আমরা ওখানে জড়ো হই। আমাদের পেছনে দেখলাম অনেক ধুয়া উড়ছিল। অনেকেই ওপরে উঠতে পারে নাই। যে যেভাবে পেরেছে ওপরে উঠেছে।’ 

এক পর্যায়ে নুরুল আলম মনে করেছিলেন, তিনি হয়ত আর বেঁচে ফিরবেন না। তাই সম্ভাব্য মৃত্যুর আগে ক্ষমা চেয়ে নেন পরিবারের সদস্যদের কাছে।

নুরুল আলম বলেন, ‘আগুনটা আমাদের দিকে অর্থাৎ টপ ফ্লোরের দিকে উঠে আসছিল। ওই মুহুর্তে আসলে বলাটা মুশকিল। আমরা ছটফট করছিলাম যে লাফ দিব নাকি কি করব। বাঁচব কিভাবে, আমরা মনে হয় আর বাঁচব না। তখন আমি আমার স্ত্রীকে ফোন দেই। বলি যে, তুমি আমাকে মাফ করে দাও। আমি মনে হয় আর বাসায় ফিরতে পারব না। আমার দুইটা ছেলে আছে, ওদেরকে তোমার হাতে তুলে দিলাম। তুমি ওদেরকে দেখে রেখো। পরে আমার মার সঙ্গেও কথা বললাম। মাফ চাইলাম।’

বেইলে রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে রাত পৌনে ১০টায় দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে। ৯টা ৫৬ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের ৬টি ইউনিট কাজ শুরু করে। একে একে যোগ দেয় ১৩টি ইউনিট।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পান তারা। মূহুর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে পুরো ভবনে।

প্রথম দুই ঘণ্টা কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে রাত ১২টার পর থেকে আহত ব্যক্তিদের ভবন থেকে বের করে আনা হয়।

ফায়ার সার্ভিস বলছে, পুরো ভবনে অসংখ্য গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ রাখা ছিল। এমনকি সিড়িতেও মজুত ছিল সিলিন্ডার। ফলে ভবনটিতে আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে তা দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। 

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন বলেন, ‘দ্বিতীয় তলা ছাড়া প্রত্যেকটি তলায় ইভেন সিঁড়ি ঘরেও সিলিন্ডার ছিল। এটা বিপদজনক একটা ব্যাপার। আগুন লাগলে সিলিন্ডার কতটুকু বিস্ফোরিত হয়, কি হয় আপনারা জানেন। আমরা তল্লাসি করছি। এরপর আমরা নির্ধারণ করব ভবনটা কতটুকু নিরাপদ।’ 

ভবনটিতে পর্যাপ্ত অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা ছিল না বলে জানিয়েছে পুলিশ। ভবন মালিকের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এটি একটি বাণিজ্যিক এলাকা এবং আশে পাশে এবং পেছনে কিন্তু আবাসিক এলাকাও আছে। ভবনটি সঠিকভাবে তৈরি করা হয়েছিল কিনা, কারও গাফিলতি আছে কিনা সেটি দেখা হবে। একটি মামলা রমনা থানায় হবে। পুলিশ সেটি তদন্ত করবে।’ 

ভবনটিতে কাচ্চি ভাই, পিজ্জা ইন, স্ট্রিট ওভেন, খানাসসহ বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এছাড়া ইলিয়েন, ক্লোজেস্ট ক্লাউডসহ বেশকিছু জনপ্রিয় পোশাকের দোকানও রয়েছে।

বেইলি রোডের আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪বেইলি রোডের আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ ঘটনা তদন্তে এরই মধ্যে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে ফায়ার সার্ভিস। 

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d