বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধ ১২ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা
চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধে সরকারের প্রায় ১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে। টাকার অঙ্কে যা ১২ হাজার ৬২৬ কোটি টাকার সমতুল্য। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের টার্গেট বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। গতকাল অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সাময়িকভাবে এ তথ্য প্রকাশ করে। প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) সরকারের সুদ পরিশোধের পরিমাণ বাজেট বরাদ্দের ১২ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকাকেও ছাড়িয়ে গেছে। যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১০২ শতাংশ বেড়েছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে সুদ পরিশোধের টার্গেট ছিল মাত্র ৫৬ দশমিক ৯ কোটি ডলার, টাকার অঙ্কে ছিল মাত্র ৫ হাজার ৬২৩ কোটি টাকা।
ফলে এক বছরের ব্যবধানে ১০ মাসে ৭ হাজার ৩ কোটি টাকা বাড়তি সুদ পরিশোধ করতে হয়েছে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও বাজেট সহায়তা বাবদ সরকারের ঋণের পরিমাণ বাড়ার কারণেও সুদ পরিশোধের চাপ বাড়ছে বলে জানায় ইআরডি। এদিকে সুদহার বৃদ্ধির সঙ্গে সরকারের মোট ঋণ পরিশোধের হারও বেড়েছে।
ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-এপ্রিল সময়ে সরকারের ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ৪৪ শতাংশ। সরকার সুদ ও আসল মিলিয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের এসময় মোট পরিশোধ করেছে ২ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলার। ইআরডির প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে আসল ও সুদ মিলিয়ে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ বেড়ে ৩ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার হতে পারে।
বেড়েছে ঋণ প্রতিশ্রুতি
চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাংলাদেশ ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন। ফলে এক বছরের ব্যবধানে ঋণ প্রতিশ্রুতি বেড়েছে ৩৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কাছ থেকে ১০ দশমিক ১৯৪ বিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতি আদায়ের লক্ষ্য রয়েছে ইআরডির।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে সবচেয়ে বেশি প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে এডিবির কাছ থেকে। এ সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া গেছে ২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি। এছাড়া জাপানের কাছ থেকে ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার ও বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে ১ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে।
ঋণ প্রতিশ্রুতি বাড়লেও সেভাবে বাড়েনি অর্থ ছাড়
চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে বৈদেশিক ঋণের অর্থছাড় হয়েছে ৬ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে অর্থছাড়ের পরিমাণ ছিল ৫ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। ফলে যেভাবে ঋণ প্রতিশ্রুতি মিলেছে একইভাবে মেলেনি বৈদেশিক অর্থছাড়। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি অর্থছাড় করেছে জাপান, ১ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার। এরপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অর্থছাড় করেছে এডিবি, ১ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলার। এছাড়া বিশ্বব্যাংক ছাড় করেছে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। আর রাশিয়া ৮৫৭ দশিিমক ৮ মিলিয়ন ডলার ও চীন ৩৬১ দশমিক ৭১ মিলিয়ন ডলার ছাড় করেছে।