Trending

ব্যবসা-বাণিজ্যে ত্রাহিদশা

বিএফআইইউ’র কয়েক হাজার ব্যাংক হিসাব ফ্রিজে ৩১ হাজার কোটি টাকা পড়ে আছে
ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা, বাজারে অর্থের প্রবাহ কমেছে, রমজানে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা :: অর্থনীতি চাঙ্গায় যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই বা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নয় রোজা ও ঈদ সামনে রেখে তাদের ব্যাংক হিসাব খুলে দেয়া উচিত। নচেৎ আর্থিকখাতে অর্থের প্রবাহ বাড়বে না বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ীরা
বিদেশে টাকা পাচারের কারণে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সময় থেকেই দুর্দশায় দেশের আর্থিক খাত। দুর্দশার মাত্রা কতটা তা বোঝাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এ বিষয়ে বলেছিলেন, ‘দেশের আর্থিক খাতের অবস্থা পাকিস্তানের চেয়েও খারাপ’। সেই দুর্দশা থেকে আর্থিক খাতকে উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তবে অতীতের ভুল সংশোধন করতেই সময় যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর। যদিও আর্থিক খাতের শুধুমাত্র রেমিট্যান্স ও রফতানি আয় ছাড়া কোন সূচকেই সফলতা নেই। কর্মসংস্থান, বাজেট বাস্তবায়ন, রাজস্ব আদায়, বেসরকারি বিনিয়োগ, পুঁজিবাজার সবখাতেই নিম্নমুখী ধারা। এমনকি এ থেকে উত্তরণে কোন পদক্ষেপও নেয়া হচ্ছে না। বরং গত ৩ মাসেই ৩৭৮ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ২ হাজারের বেশি ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এতে অবস্থার আরো অধোগতি হয়েছে। অথচ অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, শ্রীলঙ্কার চেয়েও খারাপ অবস্থায় চলে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ১২টি ব্যাংক ছিল অকার্যকর। আমানতকারীর টাকা নিয়ে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকার পদক্ষেপ না নিলে আর্থিক খাতের পরিস্থিতি হতো ভয়াবহ।

আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থার সবশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব ব্যাংক হিসাবে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা রয়েছে। এ সংক্রান্ত ১১৫টি মামলার মধ্যে ৯৫টির চ‚ড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৬৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা জব্দ করেছিল সংস্থাটি। ওই সময়ে মামলা ছিল ১১২টি। বিএফআইইউ’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩১ হাজার কোটি টাকা জব্দ বা অলস পড়ে আছে। যে কারণে আর্থিকখাতে অর্থের প্রবাহ কমে গেছে। অথচ সামনে মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব রোজা ও ঈদ। ঈদ কেন্দ্রিক ব্যবসায়ীরা নতুন পণ্য উৎপাদন ও আমদানি করে। সারা বছরের ব্যবসার অন্যতম সময় এই ঈদ। কিন্তু মানুষের হাতে টাকা নেই। বিদেশী বিনিয়োগও নেই বললেই চলে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সর্বশেষ অগ্রগতি প্রতিবেদনও দেশের অর্থনৈতিক সংকটের ছাপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ২১ দশমিক ৫২ শতাংশ। এ সময়ে বরাদ্দের বিপরীতে অর্থ ব্যয় হয়েছে ৫৯ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা। এটি গত ছয় অর্থবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অর্থ ব্যয়। সুখবর নেই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের ক্ষেত্রেও। আইএমএফ বাংলাদেশের ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর এবার কিস্তি পেতে দেরি হচ্ছে। আগের তিন কিস্তি ইতিমধ্যে পেয়েছে বাংলাদেশ। চতুর্থ কিস্তির অর্থ পাওয়ার কথা ছিল গত ডিসেম্বরে। এখন পর্যন্ত সেই অর্থ পাওয়া যায়নি। যা আগামী জুনের আগে মিলছে না। যা বিদেশী বিনিয়োগসহ আর্থিকখাতকে বিপদে ফেলবে। এদিকে নতুন করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠছে না। এমনকি আগের ছোট-ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিক্রি নেই, নতুন পণ্য নেই। অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছে না। অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে, কিছু বন্ধের পথে। আবার অনেকে ব্যবসা গুটিয়ে বিদেশে চলে গেছেন। ত্রাহি অবস্থার মধ্যে ব্যবসায়ীরা। সবমিলিয়ে আর্থিক খাতে ভয়াবহ অবস্থা। আর তাই রোজা ও ঈদ সামনে রেখে অর্থনীতি চাঙ্গায় এই সময়ে সরকারের উচিত জব্দ অর্থ থেকে পাচার ও অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে যারা এই টাকা কামিয়েছেন তাদেরটা কোষাগারে নিয়ে নেওয়া। পাশাপাশি যে সব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই বা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নয় এমন ব্যাংক হিসাব খুলে দেওয়া। এটা করতে না পারলে আর্থিক খাতে অর্থের প্রবাহ বাড়বে না বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষক ও ব্যবসায়ীরা। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন সম্প্রতি বলেছেন, বড় ব্যবসায়ীরা নিজেদের ফায়দা নিতে গিয়ে অন্য ব্যবসায়ীদের ধ্বংস করেছে। তিনি বলেন, বিভিন্ন কারণে ছোট-মাঝারি ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়েছেন। বড় বড় ব্যবসায়ীরা তাদের ফায়দা নেয়ার জন্য রাজনৈতিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ট্যাক্স মওকুফ করিয়েছেন। তারা কমপ্রোমাইজ করেছেন নিজেদের স্বার্থের জন্য। কিন্তু ছোট-মাঝারি ব্যবসায়ীদের তারা ধ্বংস করে দিয়েছে গত ১৬ বছরে। তিনি শহীদ জিয়াউর রহমানের মুক্তবাজার অর্থনীতিতে ফেরার তাগিদ দেন।

একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা নিয়ম মেনে ব্যবসা করেছি, ট্যাক্স দিয়েছি। অথচ অনেকদিন থেকে ব্যাংক হিসাব জব্দ। লেনদেন বন্ধ। যে কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধের পথে। অবশ্য জব্দ হিসাব ও অর্থের ক্ষেত্রে ক্ষমতাচ্যুত ভারতে পলায়নকারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাদের দোসর এস আলম গ্রæপের চেয়ারম্যান বিতর্কিত ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সাইফুল আলম, সাবেক ভ‚মিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, বসুন্ধরা গ্রæপের আহমেদ আকবর সোবহানের ব্যাংক হিসাব রয়েছে। তাই এ ধরনের দোষীদের ব্যাংক হিসাবকে জব্দ বা সরকারি কোষাগারে নিয়ে অন্যান্য ব্যবসায়ীদের জব্দ হিসাব খুলে দেয়ার আহবান জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ী।

সূত্র মতে, গত দেড় দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকার অর্থপাচার, অনিয়ম-দুর্নীতি ও লুটপাটের স্বর্গরাজ্য বানিয়ে আর্থিক খাতকে খাদের কিনারায় ফেলে দিয়েছেন। অথচ ওই সময়ে আওয়ামী লীগের বক্তব্য ছিল, তারা দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে তুলে দিয়েছে। কিন্তু ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সেই সরকারের পতনের পর বেরিয়ে আসছে উন্নয়নের আড়ালে দুর্নীতি এবং দেশ থেকে অর্থ পাচারের টালমাটাল চিত্র। অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর টালমাটাল পরিস্থিতিতে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের ছয় মাস অতিবাহিত হলেও স্বাভাবিক হয়নি জনজীবন। ফিরেনি আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি নেই। মূল্যস্ফীতি আগের মাসগুলোর তুলনায় সামান্য কমলেও, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সাধারণ মানুষকে এখনো ভোগাচ্ছে। পাশাপাশি এখনো রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসেনি। যৌক্তিক, অযৌক্তিক দাবি ও নানা কারণে সড়ক বন্ধ করে আন্দোলন সাধারণ মানুষকে ভোগালেও, তা নিরসনে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। ব্যবসার পাশাপাশি দেশে উন্নয়ন কার্যক্রমও স্থবির। মোটকথা সরকারের সকল কাজে গতিহীনতা বিরাজ করছে। যদিও ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে একের পর এক বৈঠক করছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এসব বৈঠকে তিনি ভালো অঙ্কের বৈদেশিক সহায়তা পাওয়ার আশ্বাস পেয়েছেন। কিন্তু একাধিক আর্থিকখাতের বিশ্লেষক বলেছেন, আশ^াস, প্রত্যাশা এবং বাস্তবতা এক নেই। স্বৈরাচার হাসিনাও নানা উন্নয়ন ও আর্থিক সূচকের গল্প শুনিয়ে গত ১৫ বছরে আর্থিক খাতকে ধ্বংস করে দিয়েছে।

শুধু রফতানি ও রেমিট্যান্সে উন্নতি
রফতানি ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্বস্তি দিলেও মূল্যস্ফীতি, কর্মসংস্থান, বাজেট বাস্তবায়ন, রাজস্ব আদায়, বেসরকারি বিনিয়োগ, পুঁজিবাজার ও বিদেশি বিনিয়োগের অবনতি হয়েছে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) পর্যালোচনা অনুযায়ী, পূর্ববর্তী স্বৈরাচারী সরকারের কাছ থেকে ভঙ্গুর অর্থনীতি পেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রথম সাত মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৫৯৬ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুুলনায় যা ২৩ দশমিক ৬১ শতাংশ বেশি। সাত মাসে রফতানি হয়েছে মোট ২ হাজার ৮৯৭ কোটি ডলারের পণ্য, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১২ শতাংশ বেশি। ডিসেম্বর শেষে রিজার্ভ বেড়ে ২১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার আগে রিজার্ভ প্রতি মাসে গড়ে এক বিলিয়ন ডলার করে কমছিল।

রেমিট্যান্স ও রফতানি আয়ের সফলতায় অর্থনীতিতে কিছুটা গতি এলেও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ কমায় কর্মসংস্থান বাড়েনি। জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বেকারত্বের মাত্রা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আগের বছরের একই সময়ে এ পরিমাণ ছিল ৪ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে। প্রথম চার মাসে সার্বিকভাবে বাজেট বাস্তবায়ন হয়েছে ১৮ শতাংশ। এ সময়ে উন্নয়ন ব্যয় রেকর্ড পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ। পরিকল্পনা বিভাগের পর্যবেক্ষণ, বাজেট বাস্তবায়ন হার এত নিম্ন পর্যায়ে থাকলে আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে না।

এদিকে এডিপি বাস্তবায়ন চিত্রতেও ফুটে উঠেছে দেশের সার্বিক চিত্র। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) এডিপি বাস্তবায়ন হয়েছে মাত্র ২১ দশমিক ৫২ শতাংশ। এ সময়ে বরাদ্দের বিপরীতে অর্থ ব্যয় হয়েছে ৫৯ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা। এটি গত ছয় অর্থবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অর্থ ব্যয়। আইএমইডির প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এডিপির বরাদ্দ রয়েছে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা। অর্থবছরের সাত মাসে ব্যয় হয়েছে ৫৯ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে ব্যয় হয়েছিল ৭৪ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা কম খরচ হয়েছে। তার মানে আগেরবার প্রকল্পের মাধ্যমে যত টাকা খরচ করা হয়েছে, এবার তা-ও ব্যয় করা সম্ভব হচ্ছে না। এর আগে জুলাই-জানুয়ারি হিসাবে করোনার বছরে (২০২০-২১ অর্থবছর) ৬১ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। পরের দুই বছরে প্রায় ৭২ হাজার কোটি টাকা করে খরচ হয়েছিল।

এ বিষয়ে ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক মোস্তফা কে মুজেরি বলেছেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকেই সব ক্ষেত্রে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না। আবার পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে তাও বলা যাচ্ছে না। ফলে চলতি অর্থবছরে এডিপি বাস্তবায়নে খুব বেশি সময় পাওয়া যাবে না। আবার সরকার রাজস্ব আহরণ করে এডিপির বরাদ্দের জোগান দেয়। সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতার বাইরে এবার মহার্ঘ ভাতা দেওয়ারও ঘোষণা হয়েছে। ফলে এডিপিতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, বৈদেশিক ঋণ ব্যবহারের জন্য সরকারি তহবিল থেকে একটা অংশ ব্যয় করতে হয়। এ কারণে বৈদেশিক অর্থায়নও আসছে না। উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থছাড়ও কমে গেছে। তবে বরাদ্দ কমলেও এখনও ২ লাখ কোটি টাকার ওপরে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এই বরাদ্দও ব্যয় করা যাবে কি না তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে।

এছাড়া আইএমএফ’র ঋণ নিয়েও অস্পষ্টতা দেখা দিয়েছে। আইএমএফ’র ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণের ৩ কিস্তি আসলেও গত ডিসেম্বরে চতুর্থ কিস্তির অর্থ পাওয়ার কথা ছিল। এখন পর্যন্ত সেই অর্থও মেলেনি। চতুর্থ কিস্তির প্রস্তাব আগামী মাসে কি ওয়াশিংটনে আইএমএফের নির্বাহী পরিষদে উঠছে, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, মার্চে নয়। বলেছি যে একটু অপেক্ষা করব। আগামী জুনে দুই কিস্তির (চতুর্থ ও পঞ্চম) প্রস্তাব একসঙ্গে উঠুক। মার্চ থেকে পিছিয়ে জুনে চলে যাওয়ার বিষয়টি আইএমএফের পাশাপাশি সরকারও চেয়েছে বলে জানান তিনি।

আইএমএফ’র ঋণের বিষয়ে বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, যা বলা হচ্ছে, তার সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই। মনে হচ্ছে কোথাও একটা গিট্টু লেগে গেছে। এ কারণে অর্থ উপদেষ্টা হয়তো পরিষ্কার করে কিছু বলছেন না বা পাশ কাটিয়ে যাচ্ছেন।

ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ঋণ কর্মসূচিটি কি আমরা চলমান রাখতে চাচ্ছি না? যদি চাই, তাহলে শর্তগুলো পূরণ করতে হবে। করা যে যাবে না, তা নয়। কেন করা হচ্ছে না, আমারও প্রশ্ন। তবে কিস্তি না পাওয়ার নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। তিনি বলেন, আইএমএফের কিস্তি আটকে গেলে বিশ্বব্যাংকের বাজেট সহায়তাও আটকে যেতে পারে, এটাও বিবেচনায় রাখা জরুরি।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d