Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

ব্যাংকে টাকা তুলতে হাহাকার

গ্রাহকদের মধ্যে আস্থাহীনতা জরুরি প্রয়োজনীয় টাকাও মিলছে না :: অক্টোবরে সবল ব্যাংকে ফেরত এসেছে সোয়া ৪ হাজার কোটি টাকা :: দ্রুতই সমাধান হয়ে যাবে -বাংলাদেশ ব্যাংক

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের পতনের পর দেশের ব্যাংক খাতে ঘটে যাওয়া অনিয়মের খবরে বিচলিত হয়ে বেশ কয়েকটি ব্যাংকে আমানত তোলার হিড়িক পড়েছে। এর ফলে নগদ অর্থের সংকটে পড়েছে ব্যাংকগুলো। গত তিন মাস সেই সংকট আরো প্রকট হয়েছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে দু-একটি ব্যাংক গ্রাহককে তার জমানো টাকার অঙ্ক যাই থাকুক না কেন, দুই হাজার টাকাও দিতে পারছে না। টাকা না পাওয়ায় দৈনন্দিন কার্যক্রমও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে গ্রাহকদের। চিকিৎসা ব্যয়, স্কুলের বেতন-ভাতা, সন্তানদের বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি প্রদান নিয়েও অনেক গ্রাহক বিপাকে আছেন। কোনো কোনো ব্যাংকে তদবিরে মিলছে নগদ পাঁচ হাজার টাকা। তাও এক দিন মিললে এক সপ্তাহের মধ্যে আর মিলছে না। পরিস্থিতি এতটা খারাপ হয়েছে যে, ব্যাংক কর্মকর্তারা ব্যাংকে আসতে ভয় পাচ্ছেন। ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের সাভার শাখায় টাকা তুলতে না পেরে ব্যাংকের ভেতরে বিক্ষোভ করেছেন গ্রাহকরা। বিক্ষোভের একপর্যায়ে গ্রাহকরা ব্যাংক কর্মকর্তাদের ভেতরে রেখে তালা মেরে দিয়েছেন। ন্যাশনাল ব্যাংকের অপর একটি শাখায় একাধিক কর্মকর্তা গ্রাহকদের চাপ সহ্য করতে না পেরে হৃদরোগেও আক্রান্ত হয়েছেন। অনেকে আবার ভয়ে অফিসে আসছেন না। এছাড়া একাধিক ব্যাংকে গ্রাহক-কর্মকর্তা বাগি¦তণ্ডা ও হাতাহাতির মতো ঘটনাও ঘটেছে। মোটাদাগে তীব্র তারল্য সংকটে পড়েছে গ্লোবাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি, আইসিবি, ইউনিয়ন, এক্সিম, পদ্মা, ন্যাশনাল ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। যদিও ব্যাংকে জমা রাখা টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে আমানতকারীদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে কয়েকটি সবল ব্যাংকের শাখা থেকে এখনো আমানতের দুই লাখ টাকাও এক দিনে তুলতে দেয়া হচ্ছে না। এদিকে ব্যাংক থেকে সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে উল্লেখ করেছেন ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিকেএমইএ) সভাপতি মো. হাতেম আলী অভিযোগ করে বলেছেন, ব্যাংকে টাকা থাকা সত্ত্বেও চেক ফেরত দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ব্যাংক থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা পাওয়া যাচ্ছে না।

গত ৮ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছিলেন, দেশের ব্যাংকগুলোর প্রায় ৯৫ শতাংশ হিসাবে জমা অর্থের পরিমাণ দুই লাখ টাকার নিচে। প্রতিটি ব্যাংক হিসাবের বিপরীতে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত আমানত বীমার আওতায় থাকে। ক্ষুদ্র আমানতকারীদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই, পাশে আছে সরকার। কিন্তু এর পরের দৃশ্যপট ঠিক উল্টো। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহক মহিউদ্দিন পলাশ নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বলেন, যেকোনো চেক ভাঙাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলেছিলেন, তারল্য সংকট অনেকটা কেটে যাবে। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে সংকট আরো প্রকট হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। ব্যাংকপাড়া ঘুরে দেখা যায়, প্রভাবশালী বা ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে সখ্য আছে এমন অনেকে তদবির করে টাকা তুলতে পারছেন। অপরদিকে অনেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা পাচ্ছেন না। অনেকেই টাকা তুলতে শাখা ব্যবস্থাপকদের রুমে গিয়ে তদবির করছেন। শুধু রাজধানী নয়, শহরের বাইরেও তারল্য সংকটের কারণে অনেক ব্যাংকের শাখাতেই কাক্সিক্ষত পরিমাণ টাকা না পেয়ে ঘুরে যাচ্ছেন গ্রাহকরা। গত রোববার ও গতকাল সোমবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি ব্যাংকের শাখায় গিয়ে দেখা যায়, টাকা না পেয়ে হতাশা আর বিরক্তি নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছেন গ্রাহকরা। এ বিষয়ে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) চলতি দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদ ফোরকানুল্লাহ দাবি করেন, গ্রাহকের ভোগান্তি কমাতে আমরা বদ্ধপরিকর। আমরা চেষ্টা করছি সমস্যা সমাধানের। এতে গ্রাহককে আমাদের সহযোগিতা করতে হবে। আশা করি সামনে সমস্যা কেটে যাবে। ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের এমডি সৈয়দ ওয়াসেক মোহাম্মদ আলী ইনকিলাবকে বলেন, গ্রাহককে কিভাবে সামলাবো বুঝে উঠতে পারছি না। বাংলাদেশ ব্যাংক সাহায্য করছে। তাই আশাবাদী দ্রুতই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

এদিকে ক্ষমতার পালাবদলে অনিশ্চয়তার মধ্যে অগাস্ট মাসে গ্রাহকরা হুমড়ি খেয়ে ব্যাংক থেকে টাকা তোলা শুরু করেছিলেন; যে কারণে দুর্বল ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে পারছে না। আবার আস্থার সেই সংকট কাটিয়ে সবল ব্যাংকগুলোতে এখন আবার গ্রাহকরা টাকা জমা রাখছেন। এ বিষয়ে সব ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, আমানতের বিপরীতে ও বন্ডে বিনিয়োগের উচ্চ সুদহারের পাশাপাশি কিছু ‘দুর্বল’ ব্যাংক ঘিরে গ্রাহকদের মধ্যে যে আস্থাহীনতা শুরু হয়েছিল তার প্রভাব কমে আসায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। চলতি বছর অক্টোবর মাসে ব্যাংক ব্যবস্থায় জমা টাকার পরিমাণ আগের মাস সেপ্টেম্বরের তুলনায় চার হাজার ২০৯ কোটি টাকা বেড়েছে। সেপ্টেম্বরে ব্যাংকের ফেরত এসেছিল আট হাজার ৮৮১ কোটি টাকা।

দুর্বল ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নেয়ার পর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ৯-১০টি ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে বসে আছে। তার এমন বক্তব্যের পর আমানতকারীদের মধ্যে ভয় ধরে যায়। এরপর থেকে অনেক ব্যাংকে আমানত তোলার হিড়িক পড়ে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গত আগস্ট মাসে দেশের ব্যাংক খাত থেকে ২৭ হাজার ৬৬২ কোটি টাকার আমানত কমে যায়।

ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শেখ মোহাম্মদ মারুফ বলছেন, ব্যাংক খাত ‘অত্যন্ত সংবেদনশীল’ একটি জায়গা। সরকার পতনের পর আস্থার সংকট থেকেই টাকা তোলার হিড়িক পড়েছিল। এ কারণে ব্যাংকের বাইরে নগদ টাকার পরিমাণ তখন বেড়ে গিয়েছিল। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যক্রম ও আমানতকারীদের নিশ্চয়তা দেয়ার কারণে ব্যাংক খাতে আবার টাকা ফেরত আসছে।

সূত্র মতে, আওয়ামী সরকারের অনিয়ম-দুর্নীতি ও লুটপাটের সহচর চট্টগ্রামভিত্তিক বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের ব্যাংক দখল ও সেখান থেকে ঋণের নামে বড় অঙ্কের অর্থ বের করে নিয়ে যাওয়ার খবর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে গণমাধ্যম। ফলে ওই গ্রুপটির দখলে থাকা ব্যাংকগুলো থেকে টাকা তুলে নিতে শুরু করে আমানতকারীরা। এসব ব্যাংকে তোলার হিড়িক পড়লে ওই ব্যাংকগুলোকে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে নগদ টাকা ধার করার সুযোগ করে দিতে গ্যারান্টি স্কিম চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দুর্বল হয়ে পড়া ব্যাংকগুলোকে গত অক্টোবর মাসের শুরু থেকে এভাবে নগদ টাকা ধার করার সুযোগ দেয়ায় গত মাস অক্টোবর থেকে আমানত ফেরত পেয়েছেন অনেক গ্রাহক। তবে সেটিও ছিল চাহিদার তুলনায় অনেক কম।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের এক গ্রাহক বলেন, ব্যাংকটির মিরপুর শাখায় তার প্রায় ১২ লাখ টাকার মতো আমানত ছিল। শাখা থেকে টাকা না পেয়ে তিনি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে দুই লাখ টাকার মতো আমানত তুলতে সক্ষম হয়েছেন। তাও ১০-২০ হাজার করে। একবারে টাকাগুলো পাননি। এদিকে কয়েকটি ব্যাংকে টাকা তোলার চাপ থাকলেও সেই আমানত আবার জমা হচ্ছে সবল ব্যাংকগুলোতে।

এর ফলে ওই সবল ব্যাংকগুলোর আমানতে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি অর্জিত হচ্ছে। এর মধ্যে গত আগস্টে সিটি ব্যাংকে রেকর্ড তিন হাজার কোটি টাকার নিট আমানত প্রবৃদ্ধি অর্জন করে। পরের মাস সেপ্টেম্বরে ব্র্যাক ব্যাংক দুই হাজার কোটি টাকার নিট আমানত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মাইলফলক স্পর্শ করে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে নগদ টাকা ধার নেয়ার ব্যবস্থা করে দেয়ায় এই সংকট কিছুটা নিরসন হয়েছে। তবে এখনো ব্যাংকগুলোর খারাপ অবস্থা। এক সাথে অনেক আমানতকারী টাকা তোলার চেষ্টা করায় এই সংকট ঘনীভূত হয়েছে। তবে আশা করা যাচ্ছে, দ্রুত এই সংকট দূর হয়ে যাবে।

ব্যাংকগুলো অনেক গ্রাহকের পুরো আমানত ফেরত দিতে না পেরে সুদের হার ১ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়ার প্রস্তাব করছে বলেও জানা গেছে। তাছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের আমানত বীমা স্কিমের আওতায় গ্রাহকের দুই লাখ টাকা পর্যন্ত আমানত বীমার আওতায় আছে। ফলে ব্যাংক অবসায়ন হলেও আমানতকারীকে বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পরিশোধ করবে বলেও সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। এতে অনেক আমানতকারী ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে না পেরে সেই আমানত কয়েকটি ভাগে করে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে রাখতে চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে।

গ্রাহকদের অভিযোগ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, টাকা তোলার প্রবণতা দেখা গেছে মোটামুটি ভালো অবস্থানে থাকা ব্যাংকগুলোর গ্রাহকদের মধ্যেও। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রিমিয়ার ব্যাংকের এক গ্রাহক বলেন, বসুন্ধরা শাখায় তার বড় অঙ্কের মেয়াদি আমানত রয়েছে। সম্প্রতি সেই আমানত ভাঙতে গেলে ব্যাংক থেকে টাকা নেই বলে জানানো হয়। পরে চাহিদার তুলনায় খুবই সামান্য অঙ্কের আমানত ফেরত দেয়া হয় তাকে।

গত আগস্ট পর্যন্ত দেশের ব্যাংকগুলোতে মোট আমানত ছিল ১৭ লাখ ৩১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মোট আমানতকারীদের মধ্যে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত জমা আছে এমন আমানতকারীদের হার ৯৪ দশমিক ৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা বলেছেন, অক্টোবর মাসে ব্যাংকের বাইরে নগদ টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ৭৯ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা। সরকার পতনের পর ১৫ অগাস্ট ব্যাংকের বাইরে নগদ টাকার পরিমাণ বেড়ে হয়েছিল তিন লাখ এক হাজার ৯৪৭ কোটি টাকা। আসলে তখন ব্যাংক খাত নিয়ে গ্রাহকের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছিল। তখন সবাই হুমড়ি খেয়ে ব্যাংক থেকে টাকা তুলেছেন। যাদের দরকার ছিল তারাও টাকা তুলে নিয়েছেন, আবার যাদের টাকার দরকার ছিল না ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ার আতঙ্কে তারাও টাকা তুলে নিয়েছিলেন। মুখপাত্র বলেন, সার্বিক দিক বিবেচনা করলে ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট নেই। ইসলামী ধারার ব্যাংকে তারল্য সংকট রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এসব দুর্বল ব্যাংকগুলোতে তারল্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। তবে এখনো অনেক ব্যাংকে সমস্যা রয়ে গেছে। দ্রুতই সমাধান হয়ে যাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto