Science & Tech

ভয়েজার ১-এ সাথে ফের যোগাযোগ পুনঃস্থাপন

নাসা সফলভাবে পৃথিবীর সবচেয়ে দূরে অবস্থানরত মহাকাশযান ‘ভয়েজার ১’-এর সঙ্গে যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করেছে। গত অক্টোবর মাসে জ্বালানি-সঙ্কটের কারণে যান্ত্রিক ত্রুটির ফলে মহাকাশযানটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তবে নাসা নিশ্চিত করেছ, ১৮ নভেম্বর পুনরায় সংযোগ স্থাপিত হয়েছে। বর্তমানে মহাকাশযানটি পৃথিবী থেকে ২৪.৯ বিলিয়ন কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে এবং চারটি কার্যকরী যন্ত্র থেকে তথ্য পাঠিয়ে চলেছে। 

স্পেস.কম -এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সমস্যা শুরু হয় যখন ইঞ্জিনিয়াররা ভয়েজার ১-কে তার যন্ত্রের জন্য হিটার চালু করতে নির্দেশ দেন। এতে মহাকাশযানটির ত্রুটি-সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রধান X-ব্যান্ড ট্রান্সমিটার বন্ধ করে দেয়। যেহেতু জ্বালানি সংরক্ষণের জন্য অন্যান্য অনাবশ্যক সিস্টেম আগেই বন্ধ ছিল, সিস্টেমটি কম শক্তি-সম্পন্ন ‘S-ব্যান্ড ট্রান্সমিটার’ চালু করে। ফলে, নাসার ডিপ স্পেস নেটওয়ার্ক কোনো সংকেত শনাক্ত করতে পারেনি।   

পরবর্তীতে X-ব্যান্ড ট্রান্সমিটার পুনরায় চালু করা হলে মহাকাশযানটি আবারও ডেটা পাঠানো শুরু করে। এতে লো-এনার্জি চার্জড পার্টিকল এক্সপেরিমেন্ট এবং প্লাজমা ওয়েভ এক্সপেরিমেন্ট -এর মতো যন্ত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ সম্ভব হয়।

ভয়েজার ১ ও তার যমজ মহাকাশযান ‘ভয়েজার ২’ বিগত বছরগুলোতে একাধিক যোগাযোগ সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। ২০২২ ও ২০২৩ সালে ভয়েজার ১ থেকে প্রাপ্ত টেলেমেট্রি ডেটা অস্পষ্ট ছিল। অন্যদিকে, জ্বালানি ঘাটতির কারণে সেপ্টেম্বর মাসে ভয়েজার ২-এ একটি বৈজ্ঞানিক যন্ত্র বন্ধ করতে হয়।  
বয়সজনিত সীমাবদ্ধতার পরও উভয় মহাকাশযান প্রত্যাশার চেয়ে বেশি কার্যক্ষমতা দেখাচ্ছে। তাদের শক্তি সরবরাহ প্রতি বছর চার ওয়াট করে হ্রাস পাচ্ছে। 

১৯৭৭ সালে উৎক্ষেপণের পর ভয়েজার মহাকাশযানগুলো বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস, এবং নেপচুন গ্রহের বিস্ময়কর তথ্য পাঠিয়েছে। বর্তমানে তারা আন্তঃনাক্ষত্রিক অঞ্চলে অভিযান চালাচ্ছে এবং শক্তি ফুরিয়ে যাওয়ার পরও এই যাত্রা অব্যাহত থাকবে।  

নাসা জানিয়েছে, ২০২৭ সালে মহাকাশযানগুলোর ৫০তম বার্ষিকীতে তাদের কার্যক্ষমতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা চলছে। এই মিশন শুধুমাত্র বৈজ্ঞানিক তথ্যই নয়, বরং মানবজাতির অদম্য চেতনার প্রতীক হিসেবেও চিহ্নিত হবে।  

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button