Science & Tech

ভাব বিনিময়ে সক্ষম!

মানুষ, প্রাণী ও উদ্ভিদজগতের উপর ব্যাকটিরিয়ার প্রভাব নিয়ে অনেক গবেষণা হচ্ছে। কিন্তু ব্যাকটিরিয়ার নিজস্ব জগত, পরস্পরের মধ্যে ভাবের আদানপ্রদান সম্পর্কে এতকাল বেশি কিছু জানা ছিল না। নতুন এক গবেষণায় বিস্ময়কর তথ্য উঠে আসছে।

এখনো পর্যন্ত যা জানা গেছে, সেই জ্ঞান অনুযায়ী ব্যাকটিরিয়ার এমন কোনো ইন্দ্রিয় নেই যা দিয়ে সে এ আলোর সংকেত গ্রহণ করতে পারে। ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির বায়োকেমিস্ট মার্গারেট ম্যাকফল-নাই বলেন, ‘একটি তত্ত্ব অনুযায়ী, গোষ্ঠী হিসেবে দৃশ্যমান হওয়ার জন্যই ব্যাকটিরিয়া উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। অতিক্ষুদ্র আকারের কারণে একটিমাত্র ব্যাকটিরিয়ার কিন্তু সেই ক্ষমতা নেই। সে কারণে অনুমান করা হচ্ছে, যে ব্যাকটিরিয়া সেই মুহূর্তে উজ্জ্বল হতে শুরু করেছে, যখন তাকে দেখার মতো জটিল চোখ ছিল।’

কিন্তু আরো বড় কোনো প্রাণীর চোখে ব্যাকটিরিয়া নিজেকে দৃশ্যমান করে তুলতে চায় কেন? বিজ্ঞানীরা বহুকাল সন্ধান চালিয়েও সেই কারণ বুঝতে পারেন নি। তারপর হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের উপকূলে ক্ষুদ্র এক প্রাণী সেই রহস্য বুঝতে সাহায্য করলো। প্রতি সন্ধ্যায় হাওয়াইয়ান ববটেইল স্কুইড নামের ক্ষুদ্র অক্টোপাস জাতীয় প্রাণী তার গোপন আস্তানা থেকে বেরিয়ে এসে অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে ক্ষুদ্র কাঁকড়া ও চিংড়ি শিকার করে। চাঁদ ও তারার আলোয় নিজেই অন্য প্রাণীর শিকার হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে সেই স্কুইড এক চতুর কৌশল প্রয়োগ করে। সেই প্রাণী তখন জ্বলজ্বল করতে থাকে। নিজের উজ্জ্বল হওয়ার ক্ষমতা না থাকায় সেই প্রাণী আসলে অ্যালিভিব্রিও ফিশেরি ব্যাকটিরিয়া কাজে লাগায়। স্কুইড তার বিশেষ লুমিনিয়াস অরগ্যানের মধ্যে সেগুলি পুষে রাখে। ব্যাকটিরিয়া স্কুইডের গোটা ত্বকের উপর ছড়িয়ে পড়ে।

প্রায় পাঁচ সেন্টিমিটার বড় সেই প্রাণী এভাবে নিজের ছায়া উজ্জ্বল করে অন্য শিকারি প্রাণীর চোখে কার্যত অদৃশ্য হয়ে ওঠে। সেই প্রাণী গবেষকদের চোখেও এভাবে ধুলো দিয়ে এসেছে। তবে একটা উপায় পাওয়া গেছে। সিআইটি-র সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী র‌্যান্ডাল স্কারবরো জানান, ‘আমরা এমন এক প্রাণী সংগ্রহ করেছি। সেটি একটি পূর্ণবয়স্ক মাদি হাওয়াইয়ান ববটেল স্কুইড। আমরা সেটিকে ভোরবেলা পাঠিয়ে দিলে পরের দিন সকালে সেটি গন্তব্যে পৌঁছবে। পরিবহণের সময় সেটি প্রায় ২০ ঘণ্টা পথেই থাকে। সাধারণত যাত্রার ধকল ভালোই সামলে নিয়ে খুশিই থাকে।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button