ভারতীয় নৌবাহিনীতে ৪৩,০০০ কোটি রুপিতে ৬ সাবমেরিন!
পোশাকি নাম ‘প্রজেক্ট ৭৫১’। আদতে এটি ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য অন্তত ৪৩ হাজার কোটি রুপি খরচ করে ছয়টি অত্যাধুনিক ডুবোজাহাজ (সাবমেরিন) নির্মাণ প্রকল্প। জার্মানির পাশাপাশি স্পেনও ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পে কৌশলগত অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য ডুবোজাহাজ নির্মাণ কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার দৌড়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।
জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ এবং স্পেনের প্রেসিডেন্ট পেড্রো স্যাঞ্চেজের আসন্ন ভারত সফরে এ বিষয়ে সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রের খবর। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের জুন মাসে রাজনাথের সভাপতিত্বে সমরাস্ত্র ক্রয়-সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাসম্পন্ন ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন কাউন্সিল (ডিএসি)-এর বৈঠকে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পে কৌশলগত অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে নৌবাহিনীর জন্য ছয়টি ডুবোজাহাজ নির্মাণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
এর পর সেই প্রস্তাবে চূড়ান্ত সিলমোহর দিয়েছিল ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং নরেন্দ্র মোদি মন্ত্রিসভা। গত বছরের জুন মাসে দিল্লিতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ এবং জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াসের উপস্থিতিতে এ সংক্রান্ত দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সইয়ের বিষয়ে ‘চূড়ান্ত আলোচনা’ হয়েছিল বলে সরকারি সূত্রের খবর। অন্য দিকে, গত মাসে ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি বিশেষজ্ঞ দল স্পেনের রাষ্ট্রায়ত্ত জাহাজ নির্মাতা সংস্থা নাভান্তিয়ার কারখানা পরিদর্শনে গিয়েছিল।
সেখানে তারা স্পেনীয় ডুবোজাহাজের কার্যকারিতাও খতিয়ে দেখেছেন বলে জানা গেছে। পরীক্ষা শেষ জার্মান ডুবোজাহাজেরও। জার্মানির থাইসেনক্রুপ মেরিন সিস্টেমস ইতিমধ্যেই মুম্বইয়ের মাঝগাঁও ডক জাহাজ নির্মাণ কর্তৃপক্ষের (এমডিএল) সঙ্গে ‘এয়ার ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রপালশন সিস্টেম’-সহ ছয়টি ডুবোজাহাজ নির্মাণের প্রকল্পের জন্য চুক্তি করেছে। অন্য দিকে, নাভান্তিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং যৌথ ভাবে ভারতীয় সংস্থা লারসেন অ্যান্ড টুব্রো-র সাথে কাজ করতে চলেছে।
প্রায় দেড় দশক আগে ফরাসি সংস্থা ডিসিএনএস-এর সাথে নকশা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা চুক্তির ভিত্তিতে ছয়টি কলভরী গোত্রের স্করপেন ডুবোজাহাজ বানানো শুরু করেছিল ভারত। সেই প্রকল্পের নাম ছিল ‘প্রজেক্ট ৭৫’। ওই গোত্রের প্রথম স্টেলথ ডুবোজাহাজ আইএনএস কলভরীকে ২০১৫ সালের অক্টোবরে নৌবাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হয়েছিল। ২০২০-র নভেম্বরে এই গোত্রের শেষ ডুবোজাহাজটি হাতে পেয়েছিল নৌবাহিনী। এর পরেই আধুনিকতর ডুবোজাহাজ নির্মাণের তৎপরতা শুরু করে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।