Hot

ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ‘যুদ্ধের প্রস্তুতির’ নির্দেশনা কিছু হিন্দু নেতার আস্ফালন দেশ অচল করে দেয়ার হুমকি, ঐক্যবদ্ধ ছাত্র-সেনা-জনতা

২০১৮ সালের ৩০ জুন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে পতিত শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘ভারতকে যা দিয়েছি সেটি তারা সারা জীবন মনে রাখবে। আমি কোনো প্রতিদান চাই না’। সত্যিই তাই! শেখ হাসিনা গত ১৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশকে ভারতের পদতলে সমর্পণ করেছিলেন। শেখ হাসিনা তার প্রতিদান না চাইলেও হাসিনার রাজনৈতিক বিপর্যয়ে ভারত প্রতিদান দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে দিল্লিতে আশ্রয় নিয়েছে। হিন্দুত্ববাদী ভারত এখন পতিত হাসিনাকে পুনর্বাসনের চেষ্টায় একের পর এক ষড়যন্ত্র করছে। এমনকি সে দেশের সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশ কি এতোই দুর্বল? ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের নামে পিলখানায় গণহত্যা চালিয়ে ৫৭ সেনা অফিসারসহ ৭৩ জনকে হত্যা করেছে। কি প্রক্রিয়ায় সে হত্যাকাণ্ড হয়েছে, শেখ হাসিনা কিভাবে বিদ্রোহ দমনে সেনাবাহিনীর অভিযান ঠেকিয়ে হত্যাকারীদের নির্বিঘ্নে চলে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন ভারতের তাবেদার সাবেক সেনাপ্রধান মঈন উ আহমদের বয়ানে তা প্রকাশ পেয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশ কী এখন এতোই দুর্বল? মুসলিম-হিন্দু-বৌদ্ধ-খিষ্টান নির্বিশেষে সব দল মত ধর্মের ১৮ কোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ। ভারতের যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার সক্ষমতা বাংলাদেশের রয়েছে। পিলখানায় সেনাবাহিনীর ৫৭ অফিসার হত্যা এবং গত বছর ভারতের ইন্ধনে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেয়ার চেষ্টা করলেও এখন সেনা-জনতা ঐক্যবদ্ধ। ভারতের যে কোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় বাংলাদেশ সক্ষম। অবশ্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান্ উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের আগেই আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব ড. মুহম্মদ ইউনূস ভারতকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে অস্থিরতা সৃষ্টি করলে প্রতিবেশী মিয়ানমারসহ ভারতের সেভেন সিস্টার্সে (উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের সাতটি রাজ্য) ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং তা হবে বিপজ্জনক।’

গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলো জায়গা না দিলেও ভারত আশ্রয় দিয়েছে। সেখানে থেকে দিল্লির সাউথ ব্লক ও শেখ হাসিনা একের পর এক কার্ড খেলে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করেন। সেনাবাহিনীর মধ্যে ক্যূ ঘটানোর অপচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর জুডিশিয়াল ক্যূর চেষ্টা করেন। অতঃপর সংখ্যালঘু নির্যাতন, ১৫ আগস্টে ১০ লাখ লোকের ঢাকা সমাগম এবং আনসারদের দিয়ে সচিবালয় ঘেরাও করে তথাকথিত প্রতিবিপ্লবের চেষ্টা করেন। এ ছাড়াও প্রশাসনের বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নানান দাবি দাওয়া আদায়ের নামে রাস্তায় নামিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টা হয়। সবগুলো চেষ্টাই ব্যর্থ হয়ে যায়। ভারতীয় গণমাধ্যম এবং তাদের দোসর ও হাসিনার তাবেদার ঢাকার কিছু গণমাধ্যম ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ অপপ্রচার চালায়। কিন্তু বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী, মাদরাসার হাজার হাজার ছাত্র, বিএনপি, জামায়াত সংখ্যালঘুদের প্রহরা দেয়। অতঃপর বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাসগুপ্ত বলেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে না, বরং মাদরাসার ছাত্রদের মন্দির প্রহরা দেখে ভাল লাগছে।’ বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ যখনই বিপদে পড়ে তখন হিন্দুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে।’ গত এক মাসে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ভারতের সব ধরনের অপচেষ্টা ব্যর্থ করেছে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা-সেনাবাহিনী।
বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের শয়তানি তারপরও বন্ধ হয়নি। গত ৫ আগস্ট ভারতের উত্তরপ্রদেশের লখনৌতে সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডারদের এক কনফারেন্সে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সে দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোর (মূলত বাংলাদেশ) কথা ইঙ্গিত করে বলেন, ভারত একটি শান্তিপ্রিয় দেশ, তবে শান্তি রক্ষার জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে যুদ্ধের জন্যও প্রস্তুত থাকতে হবে। রাজনাথ সিং বলেন, ‘ভারতের চারপাশে যা ঘটছে তা গভীর পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে এবং ভবিষ্যতের নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যৌথ সামরিক দৃষ্টিভঙ্গি কাজে লাগাতে হবে।’ ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বক্তব্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং উসকানিমূলক বলে মন্তব্য করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছেন, রাজনাথ সিং রাশিয়া-ইউক্রেন, ইসরাইল-হামাস
এর পাশাপাশি বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের কথা বলেছেন। যা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। বাংলাদেশে কোনো যুদ্ধ পরিস্থিতি নেই। বরং বাংলাদেশ অতি সম্প্রতি দেশের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটিয়ে গত ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে স্বস্তিতে আছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বক্তব্য ইঙ্গিতপূর্ণ ও উসকানিমূলক বলে মন্তব্য করে গভীর উদ্বেগ ও আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। রাজনাথ সিংয়ের রাশিয়া, ইউক্রেন, ইসরাইল ও হামাসের সঙ্গে বাংলাদেশের নাম বলাটা ইঙ্গিতপূর্ণ ও উসকানিমূলক। রাজনাথ সিং সে দেশের সেনাবাহিনীর কমান্ডারদের সঙ্গে বৈঠকে যুদ্ধের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। এটা তাদের দেশের ব্যাপার। কিন্তু আমাদের উদ্বেগের বিষয়, তিনি (রাজনাথ) বলেছেন, রাশিয়া, ইউক্রেন, ইসরাইল-হামাস ও বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশে তো কোনো যুদ্ধ হচ্ছে না। জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের নানা ধরনের দুরভিসন্ধি এখনো চলছে। গোটা দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য তারা গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। দেশবাসীকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেয়ার খবর প্রকাশ হওয়ায় বাংলাদেশের কিছু সনাতন ধর্মাবলম্বী ‘ছাগল নাচে খুটির জোরে’ প্রবাদের মতো বাংলাদেশের পরিবেশ ঘোলাটে করার হুমকি দিয়েছে। গত ৫ সেপ্টেম্বর ‘হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা বন্ধ ও জড়িতদের বিচার দাবিতে ঢাকায় মশাল মিছিল করেছে। সনাতন অধিকার মঞ্চ নামের সংগঠনের ব্যানারে ওই মিছিলে তাদের দাবি মেনে নেয়া না হলে আগামী ৫ অক্টোবর লংমার্চ করে ঢাকা অবরোধ করার হুমকি দেন।’ বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুমন রায় বলেন, ‘আট দফা বাস্তবায়ন ও সনাতন সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন বন্ধ না হলে ৫ অক্টোবর সারাদেশ থেকে সনাতনী মানুষ ঢাকায় এসে রাজপথ অবরোধ করবে।’ ভক্ত সংঘ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অনিল পালের দাবি ‘দেশের কোথাও হিন্দুরা শান্তিতে বসবাস করতে পারছেন না।’

রাজনাথ সিংয়ের চরম ধৃষ্টতা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য শুনে গত শুক্রবার চট্টগ্রামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালায় একদল উগ্রপন্থী হিন্দু। রাতের আঁধারে তারা জয়শ্রী রাম সেøাগান দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপর হামলার চেষ্টাও করে। তবে সেনাবাহিনী ও পুলিশের কর্মকর্তাদের ত্বরিত হস্তক্ষেপের কারণে উগ্রপন্থীদের অপচেষ্টা ভণ্ডুল হয়ে যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই উগ্রপন্থীদের সাথে সাধারণ সনাতনী হিন্দুদের কোন সম্পর্ক নেই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, শুক্রবার রাত ১১টায় নগরীর মোমিন রোড দিয়ে গণেশ পূজার প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার সময় একটি ভবনের উপর থেকে কে বা কারা পানি নিক্ষেপ করে। প্রতিমা বহনকারীরা এসময় ভবনের তৃতীয় তলায় উঠে এতিম ছাত্রদের মারধর করতে চাইলে শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ করে। খবর পেয়ে স্থানীয়রা সেখানে জড়ো হতে থাকে। এসময় উগ্রপন্থিদের সাথে স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ক্যাডারেরা যোগ দিলে সাধারণ মানুষও তাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠে। এসময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা গুজব ছড়ানো হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে আসেন সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা। তারা বিক্ষুব্ধ মানুষকে নিবৃত করার চেষ্টা করেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে থাকায় অপ্রীতিকর আর কিছু ঘটেনি। স্থানীয়রা বলছেন, এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রয়েছে। তবে একটি উগ্রগোষ্ঠী পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশ সব ধর্মের মানুষের সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির দেশ। ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিল মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধসহ সব ধর্মের শিক্ষার্র্থী ও শ্রেণি পেশার মানুষ। গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার নির্দেশে ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশের গুলিতে মুসলিম-হিন্দু দুই ধর্মের মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। কিন্তু হিন্দুত্ববাদী ভারতের পুরনো কৌশল বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে মুসলিম আর হিন্দুদের পৃথক করে ফেলা। হাসিনার পতনের পর তারা ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ কাল্পনিক অভিযোগ তুলে বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করে। সে চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর ফের হিন্দু-মুসলিম বিরোধ বাঁধানোর অপচেষ্টা করছে। ঢাকায় সনাতন অধিকার মঞ্চ নামের সংগঠনের ব্যানারে সে আন্দোলন করে দেশ অচলের হুমকি দেয়া হচ্ছে সেখানে অর্থের জোগানদাতা কে?

রাজনাথের সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশনার আগেও ভারতের বুদ্ধিজীবীদের বড় অংশ বাংলাদেশ নিয়ে দিল্লির সাউথ ব্লকের ভুলনীতির কৌশলের সমালোচনা করেছেন। তারা সব আম এক ঝুড়িতে রাখার নীতি ভুল উল্লেখ করে বলেছেন, ভারতের উচিত কোনো ব্যক্তির সঙ্গে নয় বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলা। রাষ্ট্রের জনগণের বদলে কেবল শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলায় খেসারত ভারতকে দিচ্ছে হচ্ছে। ভারতের বিবেকবান বুদ্ধিজীবীরা যাই বলুক বাস্তবতা হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী ভারত এমন একটি দেশ যে দেশের কোনো প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্ক নেই। চীন, পাকিস্তানের সঙ্গে সাপে নেউলে সম্পর্ক। মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, নেপাল কারো সঙ্গে ভাল সম্পর্ক নেই। ভুটানের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল থাকলেও তারা এখন চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলছে। মিয়ানমারের সামরিক জান্তারা এখন চরম কোণঠাসা। কেবল শেখ হাসিনা ঢাকাকে ভারতের পদতলে নিয়ে গিয়েছিল। ভারতের ইন্ধনে ২০০৮ সালে ওয়ান ইলেভেনের ফখরুদ্দিন-মঈন উ আহমদের সরকার গঠন করা হলে ভারত বাংলাদেশে খুঁটি গেড়ে বসে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের নামে হত্যাকাণ্ড চালায়। অতঃপর শেখ হাসিনার শাসনালে বিজিবি ও সেনাবাহিনীতে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। অভিযোগ রয়েছে এই দুই বাহিনীর মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেয়ার অপচেষ্টা হয়।

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর বিডিআরের নাম পরিবর্তন করে বিজিবি রাখা হয়। নামের সঙ্গে সঙ্গে হাসিনার দিল্লি তোষণনীতির কারণে সীমান্তে বিজিবির কর্মকাণ্ডে পরিবর্তন আসে। তারা সীমান্তে ‘কাঠের পুতুল’ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া কোনো কাজ করেননি। বিএসএফ বাংলাদেশীদের সীমান্তে গুলি করে হত্যা করলেও বিজিবি তা প্রতিরোধ ও প্রতিহত করতে পারেনি। অথচ কয়েক বছর আগে রৌমারির বরইবাড়ি সীমান্তে বিডিআর দেখিয়ে দিয়েছিল তারা কি জিনিস। গতকাল রাজধানীর পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরের সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘সীমান্তে পিঠ প্রদর্শন করবেন না। নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করুন।’

শেখ হাসিনা ভারতের মদতে ১৫ বছর বাংলাদেশের দেশপ্রেমী সেনাবাহিনীকে নানাভাবে দুর্বল করার চেষ্টা করেছে। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের পাতানো নির্বাচনে জনপ্রতিরোধ ঠেকাতে সেনাবাহিনীকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। কিন্তু পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সব শ্রেণিপেশার মানুষ জনতা রাজপথে নামার পর শেখ হাসিনা কারফিউ জারী করে সেনাবাহিনীকে মাঠে নামান। অতঃপর কয়েকদিন কারফিউ জারী করলেও ছাত্রজনতা তা মানেনি। বাঁধভাঙ্গা জোয়ারের মতো সব শ্রেণির মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে শেখ হাসিনা পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণের নির্দেশনা দেন। মূলত শেখ হাসিনা কয়েকজন বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তাকে হাত করে দীর্ঘ ১৫ বছর দলীয় ভাবে পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করে দানবে পরিণত করেছিল। পুলিশ ছাত্রজনতার ওপর গুলি চালিয়ে রাজপথ রক্তে রঞ্জিত করলেও সেনাবাহিনী জনতার ওপর গুলি চালানোর হাসিনার অবৈধ আদেশ মানেনি। বরং সেনাবাহিনী এক সময় ছাত্রজনতার পক্ষে অবস্থান নিয়ে পুলিশ বাহিনীকে মোকাবিলা করেন।

হাসিনার পক্ষে অবস্থান নিয়ে গোপালগঞ্জের কিছু মানুষ বিশৃংখলা করেছে। এমনকি সেনাবাহিনীর গাড়িতে হামলা করেছিল। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেনাবাহিনী গোপালগঞ্জের দুষ্কৃতকারীদের উচিত শিক্ষা দিয়েছে।

বর্তমানে দেশের ১৮ কোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ। মানুষের সঙ্গে রয়েছেন দেশপ্রেমী সেনাবাহিনী। আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব ড. মুহম্মদ ইউনূসের রয়েছে বিশ্বজোড়া খ্যাতি। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন। ‘জাগো বাহে কোনঠে সবাই’ এর দেশে রাজনাথ সিংরা পতিত হাসিনার হয়ে যতই যুদ্ধের জন্য সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত করুক; তাতে কাজ হবে না। বাংলাদেশের ওপর কোনো ধরনের আক্রমণের অপচেষ্টা করলে ছাত্র-জনতা-সেনাবাহিনী ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করবে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
totoslotgacor
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
toto gacor
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
toto gacor
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
situs toto
Slot Toto
Toto Slot
Slot Gacor
Slot Gacor
Slot Gacor
slot toto
Toto Slot
slot gacor