ভারতের ইন্ধনে ১৫-২১ আগস্টে প্রতিবিপ্লব! উল্লম্ফনের চেষ্টায় দানবরা
দিল্লির পুতুল শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর হারানো সাম্রাজ্য (বাংলাদেশে আধিপত্য) ফিরে পেতে হিন্দুত্ববাদী ভারত মরিয়া হয়ে উঠেছে। তার সঙ্গে যোগ দিয়েছে দেশের কিছু মুখচেনা সুশীল, বুদ্ধিজীবী, তাবেদার সাংবাদিক ও গণমাধ্যম। দিল্লিতে নিরাপদে বসে কলকাঠি নাড়ছেন আওয়ামী লীগের পলাতক নেত্রী শেখ হাসিনা। তার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয় ‘ভারতের হস্তক্ষেপ’ চেয়েছেন। ১৫ আগস্টকে ঘিরে এ হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এখনো মাঠে সক্রিয়। অন্য ৩৪টি ছাত্র সংগঠন ১৫ আগস্ট মাঠে নামার কর্মসূচি দিয়েছে। দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি, সুসংগঠিত দল জামায়াতসহ অর্ধশত রাজনৈতিক দল ভারতের ষড়যন্ত্র প্রতিহতের ঘোষণা দিয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, আজ ১৫ আগস্ট দেশে কী ঘটতে যাচ্ছে? বিশ্লেষকরা বলছেন, ৫৪ বছর ধরে বাংলাদেশে গ্রথিত ভারতের তাবেদার প্রতিষ্ঠানগুলো ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে উপড়ে গেছে। সেই সাম্রাজ্য ফিরে পেতে ভারত মরিয়া। এজন্য ভারতের গণমাধ্যম এবং দিল্লির তাবেদার বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোকে ব্যবহার করে শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতিতে অশান্তি উস্কে দেয়ার রোডম্যাপ করেছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও আওয়ামী লীগ নেতারা এই ফাঁদে পা দিলে ইউক্রেনের নাগরিকদের ভাগ্য বরণ করতে হবে।
রাশিয়া-ইউক্রেনের প্রতিবেশী ইউরোপের দেশগুলো যুদ্ধ চায়নি। কয়েক হাজার মাইল দূরের য্ক্তুরাষ্ট্র ইউক্রেনের প্রশাসনকে উস্কে দিয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাধিয়ে নিরাপদে রয়েছে। ইউক্রেনের নাগরিকরা প্রতিদিন পুতিনের ‘বন্দুকের নলের খাবার’ হচ্ছে। ১৫ থেকে ২১ আগস্টকে কেন্দ্র করে ভারত এবং দিল্লিতে নিরাপদ দূরত্বে থেকে হাসিনা বাংলাদেশে গণ্ডগোল পাকালে জীবন বিপন্ন হবে ভারতের ফাঁদে পা দেয়া অংশগ্রহণকারী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের। হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের কিছুই হবে না।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর ধীরে ধীরে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসছে। কিন্তু ভারতের নরেন্দ্র মোদি, অজিত দোভাল গং ‘শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ’ ভালোভাবে নিতে পারছেন না। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন দেশের কিছু তাবেদার গণমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবী-তথাকথিত সংস্কৃতিসেবী। গত কয়েক বছরে পতিত হাসিনার নির্দেশে প্রায় হাজার মানুষকে গুম, আয়নাঘরে ১০ থেকে ১২ বছর করে আটকে রাখা, শত শত মানুষ হত্যা, জুলুম নির্যাতন, হামলা-মামলা, বিএনপি ও জামায়াতের ওপর নিষ্ঠুরতা, একের পর এক পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বর ট্র্যাজেডি, এমনকি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় পুলিশ-বিজিবির গুলিতে ৫ শতাধিক ছাত্র-জনতা হত্যার ঘটনা তাবেদার গণমাধ্যম ও দিল্লির হালুয়া-রুটি খাওয়া বু্িদ্ধজীবীদের মন স্পর্শ করেনি। দর্জি বিশ্বজিৎ দাস ও বুয়েটের আবরার ফাহাদকে ছাত্রলীগের পৈশাচিকভাবে হত্যার ঘটনা বিবেককে নাড়া দেয়নি। তারা (দালাল মিডিয়া) এখন ভারতের ইন্ধনে তথাকথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের ‘নাটক’ করে মায়াকান্না করছে। গতকালও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একটি বিদেশি চক্র ছাত্র-জনতার বিজয়কে নস্যাৎ করতে চায়। সেই চক্র বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অলিক কাহিনী প্রচার করছে। গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেছেন, ১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে ভারতের ইন্ধনে আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা শো-ডাউনের চেষ্টা করলে প্রাণ নিয়ে ঘরে ফিরতে পারবেন না।
দিল্লির পুতুল হাসিনা রেজিমের পতনের পর মরিয়া হয়ে উঠেছে ভারত। দেশটি বাংলাদেশে ফের তাদের তাবেদারি করবে এমন হাসিনা মার্কা কাউকে ক্ষমতায় বসাতে চায়। এর মধ্যে ড. মুহম্মদ ইউনূস ভারতীয় গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ভারত যদি বাংলাদেশকে ডিস্টার্ব করে তাহলে সেভেন সিস্টার্সে সমস্যা হবে। এতে করে মোদির মাথা আরো খারাপ হয়ে যায়। ভারতের বু্িদ্ধজীবী সম্প্রদায় বাংলাদেশ ইস্যুতে সব আম এক ঝুড়িতে রাখা (জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক না করে কেবল আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক) পররাষ্ট্রনীতির কঠোর সমালোচনা করছেন। এ অবস্থায় দিল্লির শাসন বাংলাদেশে বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টায় কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে নতুন সরকার গঠনের পর ভারত প্রথম ট্রাম্পকার্ড খেলে সংখ্যালঘু নির্যাতন। ভারতীয় অর্ধশত গণমাধ্যম বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের ফেইক নিউজ প্রচার করে। মোটা টাকা খরচ করে বাংলাদেশের কিছু মানুষকে সীমান্তে নিয়ে গিয়ে ভিডিও করে প্রচার করে সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে। দেশের দু’একটি মন্দিরে গিয়ে ছবি তুলে অপপ্রচার করে। ভারতীয় মিডিয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশীয় কিছু গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও টিভি) সংখ্যালঘু নির্যাতনের ফেইক নিউজ প্রচারের প্রতিযোগিতায় নামে। কিছু মুখচেনা বুদ্ধিজীবী, উচ্ছিষ্টভোগী সাংবাদিক ‘গেল গেল, সব গেল’ রব তোলে। কিন্তু বিবিসি, আল-জাজিরাসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সংখ্যালঘু নির্যাতনের ‘ফেইক নিউজের’ মুখোশ উন্মোচন করে। তারা প্রমাণ করে দেয় যে, সংখ্যালঘু নির্যাতনে খবরের বেশির ভাগ ছবি পুরনো এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভারত থেকে পোস্ট দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীতে মন্দিরে আগুন দেয়া ব্যক্তিরা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ নেতারা তাদের মোটা টাকা দিয়ে মন্দিরে আগুন দিতে বলেছে। এমনকি যুবদলের গেঞ্জি পরে হিন্দু বাড়িতে আগুন দিয়ে ধরা পড়ে দুর্বৃত্তরা জানায় তারা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার হয়ে হিন্দু বাড়িতে আগুন দিয়েছেন। এমনকি বাংলাদেশের হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা রাণা দাশগুপ্ত স্বীকার করেন, হিন্দুদের ঘরে আগুন দেয়া হচ্ছে না। বরং মাদরাসার ছাত্র ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা দিনরাত মন্দির প্রহরা দিচ্ছে। ফলে ব্যর্থ হয় ভারতের সংখ্যালঘু নির্যাতনের ট্রাম্পকার্ড।
ভারত দ্বিতীয় ট্রাম্পকার্ড খেলে বিচার বিভাগে। জুডিশিয়াল ক্যু করতে সাবেক প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও আপিল বিভাগের ৫ বিচারপতিকে দিয়ে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অবৈধ ঘোষণার অপচেষ্টা করে। আপিল বিভাগের বিচারপতি এনায়েতুর রহিমের প্রস্তাবে ওবায়দুল হাসান ফুলকোর্ট সভা ডাকেন। সরকারি ছুটির দিন শনিবার বিচারপতিদের অনেকেই হাইকোর্টে চলে আসেন। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা এবং সাধারণ হাজার হাজার জনতা হাইকোর্ট ঘেরাও করে ওবায়দুল হাসানকে পদত্যাগে বাধ্য করে। একই সঙ্গে অপিল বিভাগের বিচাপতিদের পদত্যাগে বাধ্য হন। দিল্লির জুডিশিয়াল ক্যুর পরিকল্পনা নস্যাৎ হয়ে যায়।
বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা দুটি ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার পরও দমে যায়নি চানক্যনীতির ভারত। পতিত শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও সাংবিধান রক্ষায় ভারতের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এখন ভারত ১৫ ও ২১ আগস্ট ঘিরে তৃতীয় দফায় ট্রাম্পকার্ড ছুঁড়ছে। সেই ট্রাম্পকার্ড অনুযায়ী হাসিনা দিল্লিতে নিরাপদ দূরত্বে থেকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সংখ্যালঘু হিন্দুরা মিলে ১০ লাখ লোক ১৫ আগস্টে রাস্তায় নামার নির্দেশনা দিয়েছেন। আর ওই নির্দেশনা নিয়ে হুক্কাহুয়া শুরু করেছে দেশের কিছু গণমাধ্যম। ভাবখানা প্রতিবিপ্লব ঘটিয়েই ফেলবে। দেশের মানুষ শেখ হাসিনার দুশাসনে বিক্ষুব্ধ। শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবির আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে সাধারণ আমজনতা রাজপথে নামার পর কারফিউ জারী করে সেনাবাহিনীকে মাঠে নামানো হয়। অতঃপর শেখ হাসিনা পুলিশ বাহিনীকে সারাসরি আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণের নির্দেশ দেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, কারফিউ চলার সময় দেখামাত্র গুলি’র নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আইনশৃংখলা বাহিনী দানবের মতো হয়ে পাখির মতো গুলি করে মানুষকে মেরেছে। পুলিশের গুলিতে এতো হত্যাকাণ্ড রাজপথে এতো রক্ত নিয়ে তাবেদার গণমাধ্যমগুলোর উচ্চবাচ্য করেনি। খবর না ছাপলে নয় সেজন্য কিছু খবর রাখঢাক করে প্রকাশ করেছে। এর আগে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উস্কে দিয়ে শান্তি সমাবেশের নামে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হলে একদিনে ১০ লাখ লোক মারা যাবে।’ কিন্তু আওয়ামী লীগের পতনের পর অতো মানুষ প্রাণ হারায়নি। বরং আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে অসংখ্য ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছেন। হাসিনা পালানোর পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আওয়ামী লীগের জুলুমবাজ, নির্যাতনকারী নেতাকর্মী ও খুনের সঙ্গে যুক্ত আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের ওপর চড়াও হয়েছে। আওয়ামী লীগ লুটেরাদের ওপর আক্রমণ করেছে কারো কারো বাসা-বাড়িতে হামলা করেছে। এতে হিন্দু ধর্মাবলম্বী আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার বাসায় হামলা হয়েছে। এটাকে রং চড়িয়ে সংখ্যালঘুদের বাসায় হামলার মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। ভারতের কিছু গণমাধ্যম এবং বাংলাদেশের কিছু তাবেদার গণমাধ্যম সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতনের ‘ফেইক নিউজ’ ফলাও করে প্রচার করছে। অথচ আল জাজিরা, বিবিসি, ডয়েচে ভেলে, ভয়েস অব আমেরিকা, নিউ ইয়র্ক টাইমসসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে ঢাকার প্রকৃত চিত্র প্রচার করছে। বিদেশি গণমাধ্যম ঘটনার পেছনের ঘটনাগুলো তুলে ধরছে। ভারতীয় গণমাধ্যম দিল্লির ‘নাচের পুতুল’ ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারিণী হাসিনার পক্ষ নিয়ে অপচপ্রচার করছে। বাংলাদেশে ‘সংখ্যালঘু নির্যাতন’ নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী ট্রাম্পকার্ড। তাই তারা ১৫ আগস্টে প্রতিবিপ্লবের স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু দেশের গণমাধ্যম? মূলত দেশীয় কিছু গণমাধ্যম নিজেদের স্বার্থে ভারত ও হাসিনার অপতৎপরতার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে। এসব মিডিয়া কখনোই শেখ হাসিনাকে দেশের বাস্তব অবস্থা বুঝতে দেয়নি। শেখ হাসিনার সব ধরনের অন্যায় কর্মকাণ্ড তারা চাটুকারিতা দিয়ে বৈধতা দিয়েছে নিজেদের স্বার্থে। চাটুকার গণমাধ্যমগুলো শেখ হাসিনার সরকারকে ‘দানবে’ পরিণত করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের শাসন আমলে পিলখানা গণহত্যা, শাপলা চত্বর গণহত্যা, বিগত ছাত্র আন্দোলনে যে সহস্রাধিক গণহত্যা তাদের কাছে গৌণ। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে নানাবিধ সুবিধা নিয়ে হাসিনাকে তোষামোদ করেছে। এখন হাসিনা পালিয়েছে। তার পুত্র-কন্যারাও বিদেশে। হাসিনার বোন রেহানা এবং তার সন্তানরাও বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। হাসিনা রেজিমের পতন ভালোভাবে মেনে নিতে পারেনি। এখন নিজেদের স্বার্থে প্রতিবিপ্লব দেখতে চায়।
ছাত্র-জনতার বিপ্লবে হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর নতুন সরকার ক্ষমতায় এসেছে। পুলিশ কয়েকদিন রাস্তায় না থাকায় কিছু চুরি-ডাকাতি হয়েছে। তবে পুলিশ যখন দায়িত্বে ছিল তখনো চুরি-ডাকাতি ছিল। দেশের সার্বিক পরিবেশ ক্রমান্বয়ে স্বাভাবিক হয়ে উঠছে। এ অবস্থায় ১৫ আগস্ট ঘিরে ষড়যন্ত্রকারীরা নতুন বিপ্লবের স্বপ্ন দেখছে। গত কয়েকদিন ধরে রাজনৈতিক অঙ্গনে উদ্বেগ, উত্তেজনা ও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী কেন্দ্র করে ঢাকায় শোক ও শ্রদ্ধা জানানোর নামে দিবসটি ঘিরে আওয়ামী লীগ নেতাদের নাশকতা পরিকল্পনার নানা তথ্য ভাসছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। শেখ হাসিনা ১০ লাখ লোকের সমাগমের নির্দেশনা দিয়েছেন। এ সংক্রান্ত একাধিক অডিও ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস হয়েছে। দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে গুম-খুনের সংস্কৃতি গড়ে তোলা দলটি ১৫ আগস্ট ঘিরে প্রতিবিপ্লবের দুঃস্বপ্ন দেখছে। ভারতের সহায়তায় মরণ কামড় দিতে আওয়ামী লীগের দোসররা ব্যাপক নাশকতা চালানোর ষড়যন্ত্র করছে। দেশের নতুন সরকার, সব রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন প্রতিবিপ্লবের স্বপ্নকে প্রতিহতের ডাক দিয়েছে।
প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক আহমাদ ছফা ‘অর্ধেক নারী অর্ধেক ঈশ্বরী’ বইয়ে লিখেছেন ‘জ্বলন্ত আগুনে যে পোকারা ঝাঁপ দিয়ে মরে তাতে কি আগুনের অপরাধ আছে?’ ভারতের মদত আর নিরাপদ দূরত্বে থাকা শেখ হাসিনার ডাকে যদি কেউ বাংলাদেশে প্রতিবিপ্লবের অপচেষ্টা করে আর তাদের যদি আহমাদ ছফার গল্পের পোকাদের ভাগ্যবরণ করতে চান; তাহলে তো আগুনকে দোষ দেয়া যাবে না।