Hot

ভারতের ডবল পরাজয়, ভারতীয়দের দৃষ্টি অন্যদিকে নিতে মোদির ‘পুশব্যাক’ নাটক

যুদ্ধজয়ী হতে চায় সবাই, পরাজয়ের দায় নিতে চায় না কেউ। কিন্তু দুই দেশের সঙ্গে দু’টি যুদ্ধে হিন্দুত্ববাদী ভারতের ডবল পরাজয় ঘটে গেল। নরেন্দ্র মোদির দম্ভ চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে। লোকসভায় বিরোধী দলের সদস্যরা মোদি-অমিত শাহ-জয়শঙ্কর-অজিত দোভালদের তুলোধুনো করেছে। চানক্যনীতির ভারত প্রতিবেশী ষড়যন্ত্র যুদ্ধে বাংলাদেশ এবং আকাশ যুদ্ধে পাকিস্তানের কাছে পরাজিত হয়েছে। লেজগুটানো শেয়ালের মতো বিশ্বমুরব্বি যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধরে তার মধ্যস্থতায় পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ঘটিয়ে মুখ রক্ষা করেছে। তবে যে ক্ষতি হওয়ার তা তিন দিনের যুদ্ধে হয়ে গেছে; ভারতের পরাজয় ঘটেছে। আগামী নির্বাচনে বিজেপির ‘হিন্দু প্রাইড’ পুনরুদ্ধারের সুইচ যুদ্ধে ব্যাকফায়ার করেছে। আবার হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরানোর সব ধরনের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর এখন ভারতের বিক্ষুব্ধ জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফিরিয়ে মুখ রক্ষার অপচেষ্টায় ভারতের বাংলাভাষীদের বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ নাটক করছে।

প্রথমত, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হয়। ওই হত্যাকা-ের পর পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে দেয়। পাকিস্তান ঘটনা অস্বীকার করে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করলেও মোদি কান দেননি। এতে করে বেধে যায় দুই পরাশক্তি দেশের মধ্যে সামরিক যুদ্ধ। দ্বিতীয়ত, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের কোনো দেশ মাফিয়া নেত্রী হাসিনাকে আশ্রয় দেয়নি। ভারত হাসিনা ও তার অলিগার্কদের আশ্রয় দিয়েছে। শুধু তাই নয়, পতিত হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগকে পুনরায় ঢাকার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে একের পর এক উদ্যোগ নিয়েছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরিম-লে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতার ‘ফেইক’ তথ্য তুলে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এখানেও পরাজয় ঘটেছে ভারতের। হাসিনাকে বাংলাদেশের ক্ষমতা ও রাজনীতিতে ফেরানোর যুদ্ধে শুধু পরাজিত নয়; কার্যত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম বাংলাদেশে এখন নিষিদ্ধ।

গণমাধ্যমের খবর হলো যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান।
তবে দু’দেশই দাবি করছে তারা যুদ্ধে জয়ী হয়েছে। দুই দেশের গণমাধ্যম থেকে শুরু করে মন্ত্রী, রাজনৈতিক দল এবং সাধারণ জনগণও নিজেদের জয়ী দাবি করছে। অবশ্য ভারতে বিজেপির সমর্থকরা বিজয় দাবি করলেও সাধারণ মানুষ মোদিকে যুদ্ধের জন্য দোষারোপ করছেন। তিন দিনের সংক্ষিপ্ত এ যুদ্ধে পরমাণু শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর মধ্যে পাকিস্তান সুবিধা করতে পারলেও ভারত তেমন সুবিধা করতে পারেনি। বিশেষ করে চীনের তৈরি অস্ত্র জে-১০ যুদ্ধবিমান দিয়ে ভারতের পাঁচটি বিমান (ফ্রান্স, আমেরিকা, রাশিয়ার তৈরি) ভূপাতিত করেছে পাকিস্তান। এর মধ্যে তিনটি ছিল ফ্রান্সের তৈরি অত্যাধুনিক রাফাল, একটি সুখোই ও একটি মিগ-২৯। চীনের সামরিক অস্ত্র জে-১০ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত করার ঘটনা মার্কিন ও ইউরোপের দেশগুলোর নেতাদের শামরিক শক্তির মর্যাদায় কালিমা লেপন করেছে। মোদি গংদের ভাবখানা ছিল এমন চীনের অস্ত্র ব্যবহার করা পাকিস্তানকে এক সপ্তাহের মধ্যে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেবে ফ্রান্সের রাফাল। কিন্তু চীনের অস্ত্র দিয়ে পাকিস্তান ভারতকে উচিত শিক্ষা দিয়েছে। যুদ্ধ মানেই জীবন ও সম্পদের ক্ষতি। পাকিস্তান তাদের ক্ষয়ক্ষতি তুলে ধরেছে। কিন্তু সেখানেও লুকোচুরি করছে ভারত। যুদ্ধে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেয়ায় ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি ও তার পরিবারকে ব্যাপক সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলিং ও আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। ফলে পর্দার আড়ালে ভারত যুদ্ধ বন্ধে পাকিস্তানকে রাজি করাতে দুই দেশের রাজনৈতিক মুরুব্বি যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করে। আবার ভারত আক্রমণে পাকিস্তানের ‘অপারেশন বুনিয়ান-উন মারসুস’ অভিযান এবং চীনের জে-১০ যুদ্ধবিমানের আক্রমণে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ অংশ নেয়া ফ্রান্সের রাফাল ফাইটার ভূপাতিত্বের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর অহমিকাকে চপেটাঘাত। ফলে মার্কিনিরাও চাচ্ছিল ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ থামিয়ে দিতে। যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধরত দুই দেশের সঙ্গে কথা বলে গত শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় পাকিস্তান ও ভারত একটি পূর্ণাঙ্গ এবং তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে’।

মার্কিন মধ্যস্থতায় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ থেকে সরে যাওয়ার কারণ বিশ্লেষণ করে প্রখ্যাত দার্শনিক লেখক কবি ফরহাদ মজহার বলেছেন, ‘পশ্চিমা প্রযুক্তির হার এড়াতে যুদ্ধ থামানো হয়। যুদ্ধক্ষেত্রে চীনা প্রযুক্তির কাছে ইউরোপীয় প্রযুক্তির ‘হেরে যাওয়া’ ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ বন্ধ করার ‘সবচেয়ে বড় কারণ’। ফরাসি রাফাল যুদ্ধবিমান যারা তৈরি করে, তাদের শেয়ারদর এরই মধ্যে পড়ে গেছে; অন্যদিকে চীনা কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। পাকিস্তান-ভারতের যুদ্ধ দ্রুতবেগে শেষ হওয়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। সবচেয়ে বড় কারণ হলো, যুদ্ধে এই প্রথম ফরাসি প্রযুক্তি, ইউরোপীয় প্রযুক্তি, যেমন রাফাল (যুদ্ধবিমান), এর চেয়ে যে চীনের প্রযুক্তি সুপেরিয়র, সেটা প্রমাণিত হয়েছে। ফলে ট্রাম্পকে যুদ্ধ থামিয়ে দিতে হয়েছে’।

গত ৭ মে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে গত মধ্যরাতের পর ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে ভারত যে সামরিক অভিযান চালায় তার জের ধরে ভারতের অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমানকে ভূপাতিত করা হয়েছে বলে ইসলামাবাদ দাবি করেছে। ভারতের প্রথম সারির সংবাদপত্র ‘দ্য হিন্দু’ এদিন সকালে জম্মু ও কাশ্মীরে তিনটি ভারতীয় বিমান ভূপাতিত হওয়ার কথা রিপোর্ট করেছে। আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস একাধিক ভারতীয় বিমান ভূপাতিত হওয়ার খবর প্রকাশ করায় তা আর চাপা রাখা সম্ভব হয়নি। রয়টার্স ভারত-শাসিত কাশ্মীরে তিনটি এবং দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস ভারত ও ভারত-শাসিত কাশ্মীর মিলিয়ে অন্তত দু’টি বিমান ধ্বংস হওয়ার কথা জানিয়েছে।

এতদিন ক্ষয়ক্ষতির কথা অস্বীকার করলেও গত ১১ মে ভারতীয় বিমান বাহিনীর এয়ার মার্শাল এ কে ভারতী বলেছেন, ‘ক্ষয়ক্ষতি যুদ্ধেরই অংশ’। দ্য হিন্দু জানতে চেয়েছিল, রাফায়েলসহ ভারতের একাধিক যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়েছে বলে পাকিস্তান যে দাবি করছে সে ব্যাপারে ভারতের বক্তব্য কী? জবাবে এ কে ভারতী বলেন, ‘আমরা একটা যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আছি। আর ক্ষয়ক্ষতি যে কোনো যুদ্ধেরই অংশ’।

এতদিন সামরিক শক্তিতে পাকিস্তানকে খাটো করতে ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক শক্তির তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরতো দিল্লিঘেঁষা সামরিক বিশেষজ্ঞরা। ভারত বনাম পাকিস্তানের সামরিক শক্তি তুলনামূলক বিশ্লেষণে বলা হতো ভারতের সামরিক বাজেট প্রায় ৫৬ বিলিয়ন ডলার; পক্ষান্তরে পাকিস্তানের সামরিক বাজেট ১০ বিলিয়ন ডলার। ভারতের হাতে ১১০ থেকে ১২০ পরমাণু বোমা; পাকিস্তানের হাতে রয়েছে ১২০ থেকে ১৩০ পরমাণু বোমা। ভারতের সক্রিয় সৈন্যসংখ্যা ২১ লাখ ৪০ হাজার। রিজার্ভে ১১ লাখ ৫৫ হাজার সৈন্য। এছাড়াও যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে মিলবে ৩১ কোটি সেনা। অপরদিকে, পাকিস্তানে সক্রিয় সৈন্য মাত্র ৬ লাখ ৫৩ হাজার। রিজার্ভে রয়েছে ৫ লাখ ১৩ হাজার সৈন্য। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে মিলবে ৪ কোটি সেনা। ভারতের স্থলবাহিনীর হাতে ৪ হাজার ৪২৬টি ট্যাঙ্ক। সামরিকযান ৫ হাজার ৬৮১টি। রকেট আর্টিলারির সংখ্যা ২৯২। পাকিস্তানের স্থলবাহিনীতে ২ হাজার ৭৩৫ ট্যাঙ্ক। সামরিকযান ৩ হাজার ৬৬। রকেট আর্টিলারি ১৩৪। ভারতের যুদ্ধবিমান ২ হাজার ২১৬। এগুলোর মধ্যে রাশিয়ায় তৈরি মিগ-২১, মিগ-২৭, মিগ-২৯, সুখোই-৩০এমকেআই, ব্রিটেন-ফ্রান্সের তৈরি জাগুয়ার এবং ফ্রান্সের তৈরি মিরেজ ২০০০। পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান ১ হাজার ১৪৩টি। এগুলোর মধ্যে চীনের তৈরি এফ-৭পিজি, জে-১০ এবং যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-১৬ লেকন। আর্মড ফোর্সেসের হিসাবে ভারতের নৌবাহিনীর ১৫টি সাবমেরিন, ১৫ ফ্রিগেট, ১১ ডেস্ট্রয়ার এবং বিমান বহনকারী জাহাজ ২। পক্ষান্তরে, পাকিস্তানের রয়েছে ৫ সাবমেরিন এবং ৯ ফ্রিগেট। দুই দেশের এই সামরিক শক্তির চিত্র তুলে ধরে হিন্দুত্ববাদী ভারত এবং তাদের অলিগার্করা তৃপ্তির ঢেকুর তুলতেন। ভাবখানা যে পাকিস্তানকে যুদ্ধে দু-চার দিনে কাবু করে ফেলা যাবে।

পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়ে আদর্শিকভাবে পরাজিত হয়েছে ভারতের শাসক দল বিজেপি ও তাদের ভাবাদর্শ। শুধু যুদ্ধের মাঠে নয়, আদর্শের ময়দানেও হেরে গেছে। পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করে ভারতের সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনীর সদস্য ও সাধারণ মানুষের প্রাণহানির জন্য মোদিকে দায়ী করছে সাধারণ মানুষ ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। লোকসভায় সেটা দেখা গেছে।

পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে পরাজয়ের পাশাপাশি ভারত হেরেছে বাংলাদেশের সঙ্গে রাজনৈতিক যুদ্ধে। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের সর্বাত্মক চেষ্টা করে। একদিকে বাংলাদেশকে ‘জঙ্গি রাষ্ট্র’ হিসেবে অপপ্রচার চালায়; অন্যদিকে বাংলাদেশে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতে নানামুখী ষড়যন্ত্র করে। জুডিশিয়াল ক্যু, আনসার বাহিনী দিয়ে সচিবালয় ঘেরাও, ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় ১০ লাখ লোকের সমাগম, প্রশাসনের আওয়ামী লীগ অনুসারী আমলাদের দিয়ে বেতন-ভাতা বৃদ্ধির নামে বিদ্রোহ, গার্মেস্টসে বিশৃঙ্খলা এবং পাহাড়ে অশান্তির চেষ্টা করে। মোদি গংদের ইন্ধনে হাসিনা বাংলাদেশে ফেরার ঘোষণা দেন। শুধু তাই নয়, শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন মানুষের বাড়িঘরে আগুন দিতে এবং তিনি নিজেও ১৩৭ জনকে হত্যা করার লাইসেন্স পেয়েছেন বলে ঘোষণা দেন। হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এমনকি ইসলামী ধারার দল জামায়াতের সঙ্গেও সখ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের ষড়যন্ত্র যুদ্ধ নিয়ে গত ৯ মে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘শুধু এ মাসেই ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ও হাইকমিশন বাংলাদেশের সরকারি, বেসরকারি ও সামরিক পর্যায়ে অন্তত ২৩টি মিটিং করেছে। আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের সুযোগ করে দিতেই উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিচারের নামে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। একপর্যায়ে গিয়ে বলা হবে, এক সময়ের জনসমর্থিত রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা আমাদের কাজ নয়।’ বাংলাদেশিদের ভিসা বন্ধ করে দেয়ায় বাংলাদেশের মানুষ এখন চিকিৎসার জন্য চীন যাচ্ছেন। বাংলাদেশিরা না যাওয়ায় পশ্চিমবঙ্গে কলকাতায় শত শত হোটেল খালি পড়ে থাকছে। হাসপাতাল ও হোটেল ব্যবসায়ীরা নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে মিছিল করে বাংলাদেশিদের ভিসা দিয়ে তাদের রুটিরুজির ব্যবস্থা করার দাবি জানান। কিন্তু মোদির হৃদয়ে যেন শেখ হাসিনা ছাড়া বাংলাদেশিদের কারো জায়গা নেই। ভারতের নাগরিকরাই প্রশ্ন তুলছেন শেখ হাসিনার জন্য কেন তাদের পথে বসতে হচ্ছে? বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে ‘জঙ্গি রাষ্ট্র’ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছেন; ব্যর্থ হন হাসিনাকে ঢাকার রাজনীতিতে পুনর্বাসনে। বিশ্বের দেশে দেশে ভারতীয়দের ব্যবহার করে মোদি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ঠেকানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস হিন্দুত্ববাদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ‘ঘোল’ খাইয়েছেন। এখন ভারতীয়রাই দাবি তুলছেন শেখ হাসিনাকে ঢাকার হাতে তুলে দেয়ার। হাসিনাকে ঢাকার রাজনীতিতে পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং পাকিস্তানের সঙ্গে তিন দিনের যুদ্ধে পরাজিত মোদি এখন ভারতবাসীর কাছে মুখ রক্ষায় দু’দেশের সীমান্ত দিয়ে ‘পুশব্যাক’ নাটক করছেন। যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের হাতে আটক সেনা ও বিএসএফের সদস্যদের ফেরত আনার জন্য ভারতের জনগণ যখন নরেন্দ্র মোদি গংদের ওপর চাপ দিচ্ছে; মোদি তখন পুশইন নাটক করছে। গত ৭ মে থেকে ৯ মে তিন দিনে সাতক্ষীরার শ্যামনগর সুন্দরবন চর দিয়ে ৭৮ জন এবং খাগড়াছড়ি সীমান্ত দিয়ে ১২৩ জন কুড়িগ্রামের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ৭৫ জনসহ প্রায় তিনশ’ জনকে পুশ ইন করা হয়েছে। অবশ্য পুশ ইন ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ঢাকা কূটনৈতিক পত্র দিয়েছে দিল্লিকে।

জানতে চাইলে দার্শনিক ফরহাদ মজহার গণমাধ্যমকে বলেন, পুশ ইন বিষয়টি সম্পূর্ণ মানবাধিকার পরিপন্থি। পুশ ইন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। হয়তো যুদ্ধে জনগণের বিক্ষুব্ধতা থেকে দৃষ্টি ফেরাতে এমন কা- করছে ভারত। আমার বক্তব্য হচ্ছে ভারত পুশ ইন করছে বাংলাদেশে। আওয়ামী লীগের বহু নেতা-কর্মী ওখানে (ভারত) গেছে। ওরা তো কেউ বৈধভাবে ভারতে যায়নি। ওদের ধরে ধরে বাংলাদেশে পুন ইন করছে না কেন?

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor