ভারতের বাংলাভাষী মুসলিমদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়ার প্রতিবাদ ওয়াইসির

ভারতের একাধিক প্রান্তে বাংলাভাষী মুসলিম নাগরিকদের বেআইনিভাবে আটক এবং বাংলাদেশে পুশইনের ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তিনি।
অবৈধ অভিবাসী ইস্যুতে ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সমালোচনায় অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের (মিম) প্রধান ও লোকসভা সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। ভারতের একাধিক প্রান্তে বাংলাভাষী মুসলিম নাগরিকদের বেআইনিভাবে আটক এবং বাংলাদেশে পুশইনের ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন তিনি।
ওয়াইসি অভিযোগ করলেন, কেন্দ্রীয় সরকার সংখ্যালঘু ও দরিদ্র শ্রেণির ওপর পরিকল্পিতভাবে নিপীড়ন চালাচ্ছে।
শনিবার (২৬ জুলাই) এক্স হ্যান্ডেলে একাধিক পোস্টে তিনি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই সরকার শক্তের কাছে দুর্বল, আর দুর্বলের কাছে শক্ত।’
ওয়াইসি দাবি করেন, “দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাংলাভাষী মুসলিমদের ‘বাংলাদেশী’ তকমা দিয়ে বেআইনিভাবে আটক করা হচ্ছে। অথচ এদের অধিকাংশই ভারতীয় নাগরিক।”
তিনি বলেন, ‘এরা নির্মাণকর্মী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, রাস্তায় আবর্জনা তোলার সাথে যুক্ত। এরা দরিদ্র শ্রেণির মানুষ। এদের অনেকের পক্ষে পুলিশের অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খোলা বা আইনি লড়াই চালানো সম্ভব নয়। সেই দুর্বলতাকেই ব্যবহার করছে প্রশাসন।’
ওয়াইসি গুরুগ্রামের জেলা শাসকের এক নির্দেশিকার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তাতে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশীদের চিহ্নিত করে ফেরত পাঠাতে এসওপি অনুসরণের কথা বলা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গ টেনে ওয়াইসি বলেন, ‘কেবলমাত্র কেউ বাংলা ভাষায় কথা বলেন বলেই তাকে গ্রেফতার করা যায় না। ভাষাভিত্তিক গ্রেফতার একেবারেই বেআইনি।’
এই অভিযোগের পটভূমিতে সম্প্রতি পুনে পুলিশের অভিযানকেও উল্লেখ করেছেন তিনি। বুধওয়ার পেঠ এলাকার একটি রেড-লাইট জোন থেকে পাঁচ বাংলাদেশী নারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ, তারা ভুয়া পরিচয়পত্র নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। পরে পতিতাবৃত্তির সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন। যদিও পুলিশের দাবি, ওই নারীরা জাল কাগজপত্র ব্যবহার করেই দেশে ঢুকেছিলেন। একটি মানবপাচার চক্রের সাথে তাদের যোগাযোগ ছিল। এ ঘটনায় একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।
ওয়াইসি প্রশ্ন তুলেছেন, এ ধরনের বিচ্ছিন্ন ঘটনার সুযোগ নিয়ে কীভাবে হাজার হাজার বাংলাভাষী মুসলিম নাগরিককে ‘অবৈধ’ বলে চিহ্নিত করা যায়?
তার বক্তব্য, সরকারের এ পদক্ষেপ এক প্রকারের ‘ব্যাকডোর এনআরসি’। এটি একটি নৈতিক লঙ্ঘন। বন্দুকের মুখে কাউকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়া যায় না।