ভারতের সহায়তা নিয়েই সরকার দেশের গণতন্ত্রকে বন্দি করেছে : রহুল কবির রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভারতের সহায়তা নিয়েই এ অবৈধ ডামি সরকার দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণকে বন্দি করে রেখেছে। এদেশের গণতন্ত্রকে বন্দি করেছে।
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির ‘ফ্যান্টাসি আইল্য্যান্ড’ এ হাজী মো. মোস্তফা জামানের উদ্যোগে গতকাল ঢাকা মহানগর উত্তরের ৭টি থানার কারা নির্যাতিত নেতাকর্মীদের সন্মানে এক ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আপনারা (সরকার) দেশের মানুষের হৃদয়ের ভাষা বুঝতে পারেননি, আপনারা শুধু পার্শ্ববর্তীদেশকে খুশি করার জন্যই কথা বলেন। আপনারা যে কত ভন্ড, কত আত্মপ্রবঞ্চক, এটা দেশবাসী জানে. এজন্য অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দেন না, এজন্য মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দেন না, এজন্য জনগণের সমস্ত নাগরিক স্বাধীনতা, নাগরিক অধিকারকে আপনারা আজকে কুক্ষিগত করেছেন।
তিনি বলেন, আজকে দেশের আইন-আদালত, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুলিশ-র্যাব সব কিছু আপনাদের (সরকার) হাতের মুঠোয়, সব কিছু আপনারা কুক্ষিগত করে রেখেছেন, কোথায়ও কোনো প্রতিষ্ঠান স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। সব আওয়ামী ফ্যাসিবাদের ছাতার নিচে আপনারা বন্দি করে রেখেছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এক বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব এরকম কথা বলতে লজ্জা করলো না। পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকরতম সা¤প্রদায়িক শক্তি এখন পার্শ্ববর্তী দেশের রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। বাবরী মসজিদের জায়গায় মন্দির বানিয়েছে, এটা কি মিথ্যা নাকি সত্য? সেই সা¤প্রদায়িক শক্তি যারা ভারতের রাষ্ট্র পরিচালনা করছে, একমাত্র তারা আপনাদের (সরকার) সমর্থন জানিয়েছে। তাদের একজন ক‚টনীতিক বলেছেন যে, ইন্ডিয়ার চাপে, ইন্ডিয়ার কর্মতৎপরতায় আমেরিকার রাষ্ট্রদূত নাকি চুপ হয়ে গেছেন, পালিয়ে গেছেন- এরকম একটা শব্দ ব্যবহার করেছেন। এতো বড় সা¤প্রদায়িক শক্তি যারা ভারতের রাষ্ট্র ক্ষমতায় তাদের সঙ্গে আপনাদের সখ্যতা, তাদের সঙ্গে আপনাদের বন্ধুত্বৃ আপনার একজন সাবেক মন্ত্রী বলেছিলেন, ভারতের সঙ্গে নাকি স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। আর আপনারা এখন বলেছেন, সা¤প্রদায়িক শক্তিকে দেশ থেকে নাকি তাড়াবেন।
রিজভী বলেন, ইসরাইল যখন হামাসের ওপর আক্রমণ করছে, নির্বিচারে বোমের আঘাতে শিশুরা আর্তনাদ করছে। এই সরকারের প্রধান খুব তখন তাদের পক্ষে বললেন, খুব মায়া কান্না কাঁদলেন। আবার ইসরাইলের বিমান এখানে (ঢাকায়) নেমেছে কেনো? এই রহস্য কি? আমরা অনেক কথাই শুনি। বিরোধী দলের কথা-বার্তা মোবাইল রেকর্ড করার জন্য নাকি যন্ত্র কেনা হচ্ছে ইসরাইল থেকে। আর মায়া কান্না দেখাচ্ছেন, এগুলো হচ্ছে রাজনৈতিক ভন্ডামীর নমুনা।
তিনি বলেন, ইসরাইলের সঙ্গে অত্যন্ত গভীর সম্পর্ক রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তা না হলে. ওদের (ইসরাইল) সঙ্গে আমাদের ক‚টনৈতিক সম্পর্ক নাই। আমাদের পাসপোর্টে লেখা ছিলো সব দেশে ভ্রমণ করা যাবে এক্সসেপ্ট ইসরাইল, ইসরাইল ছাড়া প্রত্যেকটা দেশে ভ্রমণ করতে পারবে বাংলাদেশীরা। এখন সেটা তুলে দিয়েছে, সে মুখে বলছেন, বাংলাদেশেরে ক‚টনৈতিক সম্পর্ক নাই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী, ওই যে তাদের একজন মন্ত্রী বলেছেন যে, তলে তলে সব ঠিক ঠিকই ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। অনেক ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের মধ্যে উনি (শেখ হাসিনা) জড়িত হয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে আজকে দুর্বল করার জন্য, এই দুর্বল করে প্রভুদেরকে খুশি রেখে উনি বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করে রাখতে চান, এটাই তার অভিপ্রায়।
মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহŸায়ক হাজী মো. মোস্তফা জামানের সভাপতিত্বে সভায় উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, যুগ্ম আহŸায়ক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, সদস্য আলাউদ্দিন সরকার টিপু, এবিএম আবদুর রাজ্জাক, আহসান হাবিব মোল্লা, হাজী মো. ইউসুফ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।