ভারতে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে মুসলিম জনগোষ্ঠী আতঙ্কিত
১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ ইসলামী দলগুলোর প্রতিবাদ অব্যাহত
ভারতের উত্তরাখন্ড রাজ্যের হলদওয়ানিতে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হওয়া পুলিশী আক্রমনে এখনো পর্যন্ত ৬জন মুসলিম নিহত ও শতাধিক আহতের ঘটনায় বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ অব্যাহত রয়েছে।
ভারতে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে মুসলিম জনগোষ্ঠী আজ আতঙ্কিত। সন্ত্রাসী মোদি সরকার দেশটিতে মুসলিম নাগরিকের জানমাল , ধর্মীয় স্থাপনার কোনো নিরাপত্তা দিতে চরমভাবে ব্যর্থ হচ্ছে। মুসলমানদের হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ভারত থেকে ইসলামকে নিশ্চিন্ন করা যাবে না। ভারতের উত্তরাখণ্ডে মুসলিম হত্যা, মসজিদ মাদরাসা উচ্ছেদের প্রতিবাদে আগামী কাল বুধবার বিকেলে ৩টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগরী বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে।
ইসলামী আইনজীবী পরিষদ : ইসলামী আইনজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফর রহমান শেখ, সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. মশিউর রহমান, সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শওকত আলী হাওলাদার, সেক্রেটারী জেনারেল অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান, অ্যাডভোকেট হানিফ মিয়া, অ্যাডভোকেট মানিক মিয়া, অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ, অ্যাডভোকেট শহিদুল হক তোতা, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম মিলন, অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান, অ্যাডভোকেট জমারত আলী, অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট বিল্লাল আহমেদ মজুমদার, অ্যাডভোকেট আনিছুর রহমান, অ্যাডভোকেট বাইজিদ হোসেন গতকাল এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ধর্মনিরপেক্ষতার আড়ালে ভারত মুসলিম হত্যা ও মসজিদ মাদরাসা উচ্ছেদের মাধ্যমে ইসলাম ও মুসলিম শূন্য করার অপরিনামদর্শি খেলায় মেতে উঠেছে। ভারতের মুসলমানদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন যাবত গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। মোদি সরকার প্রতিনিয়ত মুসলমানদের উপর জুলুম-নিপীড়ন চালাচ্ছে। বিশ্ব সন্ত্রাসী মোদি সরকারের অচিরেই করুণ পরিণতি ঘটবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করে সেখানে মন্দির নির্মাণ করেছে। মাদরাসাগুলোতে রামায়ণ পাঠ বাধ্যতামূলক করে একের পর এক মুসলিম বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিচ্ছে। অবিলম্বে ভারতের মুসলমানদের ওপর হত্যাযজ্ঞ নির্যাতন নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে। মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এখন সে দেশের কতিপয় উগ্রহিন্দুকে লেলিয়ে দিয়ে বিভিন্ন মসজিদ-মাদরাসার নামে মিথ্যা মামলা করে এবং কোর্টের রায়ের নামে মাদরাসা মসজিদে হামলা ও উচ্ছেদ করে তদস্থলে মন্দির নির্মাণের নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে । উত্তরাখণ্ডের নৈনিতাল এলাকার এই ঘটনাও সেই ষড়যন্ত্রের অংশবিশেষ। মুসলিম হত্যা ও মসজিদ মাদরাসা উচ্ছেদের পরিণতি ভারতের জন্য শুভ হবে না। তারা অবিলম্বে ভারতকে মুসলিম বিদ্বেষ পরিহার করে মানবতার কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানান। অন্যথায় বিশ্বব্যাপী ভারতের পণ্য বর্জনসহ ভারতের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
খেলাফত মজলিস: ভারতের উত্তরাখন্ড রাজ্যের হলদওয়ানিতে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুরু হওয়া পুলিশী আক্রমনে এখনো পর্যন্ত ৬জন মুসলিম নিহত ও শতাধিক আহতের খবর পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় উদ্বেগ ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ ও মহাসচিব ড: আহমদ আবদুল কাদের।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, ভারতে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে মুসলিম জনগোষ্ঠী আজ আতঙ্কিত ও তটস্থ। উত্তরাখন্ড রাজ্যের হলদওয়ানিতে ক্ষমতাসীন বিজেপি প্রশাসন মুসলমানদের উপর যে হামলা চালিয়েছে তা বর্বরতা ছাড়া আর কিছুই নয়। যে মসজিদ ও মাদ্রাসাকে অবৈধ বলে সেখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে তা হিংসাত্মক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিজেপি সরকার এভাবে বেছে বেছে মুসলিম স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ ও মুসলিম ঐতিহাসিক নামকরণগুলো মুছে ফেলতে চাইছে। ভারত নিজেদেরকে সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র দাবি করলেও মূলত উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর কাছে দেশটি আত্মসমর্পণ করে বসে আছে। বিজেপি সরকার এসব হিংসা ও উগ্রবাদিতা নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। আমরা অবিলম্বে সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করছি। নিজদেশের মুসলিম নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ধর্মীয় স্থাপনা সুরক্ষা দেয়ার জন্য ভারত সরকারের কার্যকর তৎপরতা দাবি করছি।
ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ :
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম বলেছেন, দেশে আজ নিরব দুর্ভিক্ষ চলছে। দিনমজুর মানুষের বোবাকান্নায় আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে ওঠছে। কোথাও সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। যে যেভাবে পারছে সে সেভাবেই লুটেপুটে খাচ্ছে। দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার সম্পূর্ণ বাইরে। অবৈধ পার্লামেন্টের এমপি ও মন্ত্রীরা অনেকেই সিন্ডিকেটের সাথে সরাসরি জড়িত। এ অবস্থায় একটি দেশ চলতে পারে না। গতকাল সোমবার বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের গুরুত্বপূর্ণ এক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। নগর দক্ষিণ সেক্রেটারি ডা. মুহাম্মদ শহিদুল ইসলামের পরিচালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন আলহাজ আলতাফ হোসাইন, আলহাজ আবদুল আউয়াল মজুমদার, কেএম শরীয়াতুল্লাহ, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, আলহাজ নজরুল ইসলাম খোকন, মাওলানা নজরুল ইসলাম, এইচ এম রফিকুল ইসলাম, মাওলানা কামাল হোসাইন, মাওলানা নাযির আহমদ শিবলী, ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, কেএম আবু তাহের, মাওলানা নাজিমুদ্দিন, মাওলানা তাজওয়ার হাসান। সভায় আগামী বুধবার বিকেলে ভারতে মুসলিম হত্যাযজ্ঞ এবং মসজিদ মাদরাসা উচ্ছেদের প্রতিবাদে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।