International

ভারতে ২০২৯ সাল থেকে ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি কার্যকরের সুপারিশ

ভারতে ‘এক দেশ এক ভোট’–এর পক্ষে সায় দিয়েছে দেশটির সাবেক রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় কমিটি। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে কমিটির প্রতিবেদন পেশ করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশ—ভারতের সব রাজ্য ও লোকসভার ভোট একসঙ্গে হওয়া উচিত। ২০২৯ সালের লোকসভা ভোটের সময় থেকেই তা কার্যকর করা যেতে পারে।

গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার ওই কমিটি গড়ে দিয়েছিল। কোবিন্দ ছাড়া ওই কমিটির সদস্যরা হলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, লোকসভার বিরোধী নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী, সাবেক বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান এন কে সিং, লোকসভার সাবেক মহাসচিব সুভাষ কাশ্যপ, প্রবীণ আইনজীবী হরিশ সালভে ও সাবেক মুখ্য ভিজিল্যান্স কমিশনার সঞ্জয় কোঠারি।

প্রতিবেদনে কমিটির প্রত্যেকে লোকসভা ও বিধানসভার ভোট একই সঙ্গে করার পক্ষে মত দিয়েছেন। ভোটের পর কোথাও কোনো কারণে সরকারের পতন হলে সে ক্ষেত্রে কী হবে, সেই সুপারিশও করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সে ক্ষেত্রে বিধানসভার ভোট হবে মেয়াদের বাকি সময়ের জন্য। বর্তমানে সংবিধানে তেমন কোনো উপায়ের কথা বলা নেই। ভোট সব সময় পুরো পাঁচ বছরের জন্যই অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির সুপারিশ কার্যকর করতে সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন।

‘এক দেশ এক ভোট’ কার্যকরের পেছনে যুক্তি হিসেবে দেখানো হয়েছে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত হওয়া ও অহেতুক খরচ বৃদ্ধি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যতবার ভোট হয়, ততবার আদর্শ আচরণবিধি জারি করা হয়। তাতে উন্নয়ন ব্যাহত হয়। খরচও বেড়ে যায়। প্রকল্পগুলো দীর্ঘসূত্রতায় ভোগে। একসঙ্গে ভোট হলে এমনটি হবে না। সে কারণে কমিটি বলেছে, লোকসভা ও বিধানসভা ভোট হয়ে যাওয়ার ১০০ দিনের মধ্যে পৌরসভা ও পঞ্চায়েতের ভোটের আয়োজন করতে হবে। এতে এক ভোটার তালিকায় সব ভোট করানো যাবে। প্রতিবার ভোটের জন্য নতুন ভোটার তালিকা প্রয়োজন হবে না।

এদিকে সরকারবিরোধীদের অভিযোগ, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ধীরে ধীরে ‘ওয়েস্টমিনস্টার মডেল’ থেকে সরে এসে যুক্তরাষ্ট্রের ধাঁচে ‘প্রেসিডেন্সিয়াল’ ব্যবস্থা চালু করতে চাইছেন। এর ফলে এত বছর ধরে চলে আসা যুক্তরাজ্যীয় কাঠামো উঠিয়ে দেওয়া যাবে। সংসদীয় ব্যবস্থাও শাসক দলের ইচ্ছেমতো করে গড়ে তোলা যাবে।

২০১৪ সালে নির্বাচিত হওয়ার সময় থেকেই নরেন্দ্র মোদি ‘এক দেশ এক ভোট’ ব্যবস্থা চালুর ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। নীতি আয়োগ, নির্বাচন কমিশন ও আইন কমিশনও সময়ে সময়ে এই নীতির পক্ষে মত দিয়েছে। বিরোধীরা মনে করেন, মোদি চান লোকসভার জোয়ারে বিধানসভা ভোট ভাসিয়ে দিতে। তা ছাড়া একসঙ্গে ভোট হলে রাজ্যস্তরে বিরোধীদের জোটবদ্ধ হওয়া কঠিন হবে। মোদির দল সেই সুযোগ নিতে আগ্রহী।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button