ভারত-চীন কাছাকাছি এলে যুক্তরাষ্ট্র কি এশিয়ায় ধাক্কা খাবে

পাঁচ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভারতে জমকালোভাবে স্বাগত জানানো হয়েছিল। তখন এর নিন্দা জানিয়েছিল চীন।
ঘটনা ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের। ভারতের আহমেদাবাদে ‘নমস্তে ট্রাম্প’ নামের বিশাল সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেটি ছিল প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর প্রথম ভারত সফর। তখন ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লির মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ছিল উষ্ণ। বাণিজ্যও বেড়েছিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক ছিল চোখে পড়ার মতো।
এর বিপরীতে সে বছরের জুন মাসে ভারতের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক ভেঙে পড়ে। লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চীনের সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে ভারতের ২০ সেনা নিহত হন। টিকটকসহ চীনের দুই শতাধিক অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছিল ভারত। চীনকে মোকাবিলা করতে সে সময় যুক্তরাষ্ট্র ও কোয়াড জোটের সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও কৌশলগত সম্পর্কও বাড়িয়েছিল নয়াদিল্লি।
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, চীন ও ভারতের সম্পর্ক যদি উষ্ণ হয়, তা দুই দেশের জন্যই মার্কিন শুল্কের ধাক্কা কমাতে সাহায্য করবে।
সবশেষ চলতি বছরের মে মাসে চীনকে নিজেদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তুলে ধরেছিল ভারত। সে মাসে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে প্রাণঘাতী হামলার পর চার দিনের সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ। ওই সংঘাতের সময় চীনের তৈরি প্রতিরক্ষা–ব্যবস্থা ব্যবহার করেছিল পাকিস্তান। এ নিয়ে চীনের ওপর নাখোশ ছিল ভারত।
তবে ভারতের ওপর ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং দ্রুত ভূরাজনৈতিক পরিবর্তন ভারত ও চীনকে কাছাকাছি এনেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিশ্বের ৬০ শতাংশের বেশি মানুষের বসবাস এশিয়ায়। এখানে প্রভাব ধরে রাখার জন্য দশকের পর দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র যে কূটনৈতিক ও কৌশলগত সাফল্য অর্জন করেছিল, তা উল্টে দিচ্ছে ট্রাম্পের অধীন হোয়াইট হাউস।
চীন-ভারত কাছাকাছি এলে বেইজিংকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একঘরে করার যে চেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে, তা ব্যাহত হবে।
বি আর দীপক, অধ্যাপক, নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটি
‘ড্রাগন–হাতির বন্ধুত্ব’
চলতি সপ্তাহের শুরুতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে বৈঠক করেন নরেন্দ্র মোদি। এ সময় চীন–ভারতের সম্পর্কে ‘অগ্রগতির’ প্রশংসা করেন মোদি। দুই দিনের ভারত সফরে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গেও বৈঠক করেন ওয়াং ই। বৈঠকে হিমালয় অঞ্চলে দুই দেশের সীমান্ত দ্বন্দ্ব নিয়ে আলোচনা হয়।
ভারত ও চীনের মধ্যে এসব বৈঠকে দুই পক্ষই আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়—এমন নানা পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট আবার চালু করা, ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা এবং সীমান্ত বাণিজ্য বাড়ানো। এর আগে গত জুনে তিব্বতে ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের ভ্রমণের অনুমতি দিয়েছিল বেইজিং। এ ছাড়া দুই দেশই সীমান্ত সমস্যা নিষ্পত্তির জন্য সমঝোতার পথ খোঁজার বিষয়ে রাজি হয়েছে। সীমান্ত নিয়ে নয়াদিল্লি–বেইজিং উত্তেজনা ঐতিহাসিক। এ নিয়ে ১৯৬২ সালে দুই দেশ যুদ্ধও করেছে।
চীনে চলতি মাসের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সাংহাই কো–অপারেশন অর্গানাইজেশনের সম্মেলনে যোগ দিতে দেশটির প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের আমন্ত্রণও গ্রহণ করেছেন মোদি। এই জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছে চীন ও রাশিয়া। বিশ্লেষকদের মতে, এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব ঠেকাতে জোটটি গড়ে তোলা হয়েছে। মোদি এই সম্মেলনে যোগ দিলে, তা হবে সাত বছরের মধ্যে তাঁর প্রথম চীন সফর।

হোয়াইট হাউসে গত ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্পফাইল ছবি: রয়টার্স
লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত ও চীনের সেনাদের মধ্য সংঘর্ষের দিকে ইঙ্গিত করে গত সোমবার ওয়াং ই বলেছিলেন, ‘বিগত কয়েক বছরে আমাদের সম্পর্কে যে অবনতি হয়েছিল, তা আমাদের দুই দেশের মানুষের স্বার্থের পক্ষে ছিল না। আমাদের সীমান্তে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে, তা দেখতে পেয়ে আমরা আনন্দিত।’ আর চলতি বছরের শুরুর দিকে ভারত–চীন সম্পর্ককে ‘ড্রাগন–হাতি বন্ধুত্ব’ বলে উল্লেখ করেছিলেন সি চিন পিং। ড্রাগনকে চীনের এবং হাতিকে প্রায়ই ভারতের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়।
তাইওয়ানভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান তাইওয়ান–এশিয়া এক্সচেঞ্জ ফাউন্ডেশনের গবেষক সানা হাশমি আল–জাজিরাকে বলেন, কিছু সময় ধরে চীন ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা ও বিভাজন কমিয়ে আনার চেষ্টা হচ্ছে। শুল্ক নিয়ে ট্রাম্পের নীতি এবং দিল্লির প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের প্রতি তাঁর ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে চীনের সঙ্গে নিজেদের শত্রুতা কমিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছে ভারত।
এরই মধ্যে চলতি বছরে পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে দুবার আমন্ত্রণ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একবার তিনি হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এ ছাড়া মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির জন্য বারবার কৃতিত্বের দাবি করেছেন ট্রাম্প। তবে নয়াদিল্লি এখনো স্বীকার করেনি যে ওই যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছিল ওয়াশিংটন।

হোয়াইট হাউসে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিছবি: রয়টার্স
সানা হাশমি বলেন, বেইজিংয়ের জন্য ভারতের কাছাকাছি আসাটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কৌশলগত। তবে নয়াদিল্লির দিক দিয়ে এই কাছে আসার পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে অনিশ্চয়তা ও ভূরাজনৈতিক চিত্রপটে পরিবর্তন। চীনকে ট্রাম্প দূরে ঠেলতে চাচ্ছেন—এমন কোনো ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না। তবে হোয়াইট হাউস নিশ্চিতভাবেই প্রধান একটি কৌশলগত অংশীদার ভারতকে দূরে সরানোর চেষ্টা করছে।
রাশিয়ার থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করার দণ্ড হিসেবে ভারতের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। এ নিয়ে দেশটিও ওপর মোট ৫০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন তিনি। চীনও রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল আমদানি করছে। তবে বেইজিংকে এ জন্য কোনো দণ্ড দেননি ট্রাম্প। বাণিজ্যবিষয়ক বিশ্লেষক বিশ্বজিৎ ধর বলেন, ট্রাম্পের শুল্কের কারণে এশিয়ায় সম্পর্কের পুনর্বিন্যাস হচ্ছে। এ কারণে গত কয়েক মাসে ভারত–চীন সম্পর্কে গতি এসেছে।
স্নায়ুযুদ্ধের সময় থেকেই একটি পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে থাকে নয়াদিল্লি। সেটি হলো বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে অংশীদারত্ব করবে তারা। তবে কোনো সামরিক জোটের সঙ্গে যুক্ত হবে না।
এশিয়ায় কি নতুন বাণিজ্য জোট হচ্ছে
রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, চীন ও ভারতের সম্পর্ক যদি উষ্ণ হয়, তা দুই দেশের জন্যই মার্কিন শুল্কের ধাক্কা কমাতে সাহায্য করবে। যুক্তরাষ্ট্র যখন ভারতীয় পণ্য রপ্তানিতে বাধার সৃস্টি করছে, তখন বেইজিংয়ের সঙ্গে নয়াদিল্লির সীমান্ত বাণিজ্য এবং সরবরাহ ব্যবস্থা সুগম হলে মার্কিন বাজারের ওপর ভারতের নির্ভরশীলতা কমবে।
২০২৪–২৫ অর্থবছরে চীনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যঘাটতি ছিল ৯৯ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। এ ঘাটতির পেছনে কাজ করেছে চীন থেকে ইলেকট্রনিক পণ্যের আমদানি বৃদ্ধি। যুক্তরাষ্ট্রের পর চীন ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। তবে চীনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যঘাটতি যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
তাইওয়ান–এশিয়া এক্সচেঞ্জ ফাউন্ডেশনের গবেষক সানা হাশমি বলেন, ভারতকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে চীন। এটাও ইঙ্গিত দিচ্ছে যে তাদের বাজারে ভারতীয় পণ্যের আগের চেয়ে বেশি প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে। এটি ভারতকে ট্রাম্পের শুল্কের বোঝা থেকে কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে। একই সঙ্গে ভারত ও চীনের মধ্যে বর্তমানে যে বাণিজ্যে ভারসাম্যহীনতা রয়েছে, তা–ও কমিয়ে আনতে পারে।
ভারতের মন জয় এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রভাব ধরে রাখার ক্ষেত্রে চীনের জন্য বড় কৌশলগত অর্জন হতে পারে বলে মনে করেন সানা হাশমি। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশলে বড় ভূমিকায় রয়েছে ভারত। ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হলে চীন এটা দেখাতে পারবে যে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বেইজিং একটি নির্ভরযোগ্য অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা অংশীদার।’
ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের ইনস্টিটিউট অব সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের গবেষক ইভান লিদারেভ বলেন, ভারত ও চীন—দুই দেশই এটা বুঝতে পেরেছে যে নিজেদের মধ্যে উত্তেজনার সম্পর্কের কারণে তারা ভূকৌশলগতভাবে অনেক কিছু হারিয়েছে। চীন বুঝতে পেরেছে, খারাপ সম্পর্ক করে তারা ভারতকে যুক্তরাষ্ট্রের খুব কাছে ঠেলে দিয়েছে। আর নয়াদিল্লি বুঝতে পেরেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে এখন তাদের বড় মূল্য দিতে হচ্ছে।
কোয়াডের কী হবে
জর্জ ডব্লিউ বুশ যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তখন থেকেই ওয়াশিংটনে চীনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে ভারতকে। তারপর প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ‘এশিয়ার দিকে ঝুঁকে পড়া’ নীতি বেইজিংয়ের উত্থান সামলাতে নয়াদিল্লিকে কেন্দ্রীয় ভূমিকায় বসিয়েছিল। কোয়াড জোটের মাধ্যমে ওই ভূমিকা আরও জোরালো হয়েছিল। কোয়াডে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি রয়েছে জাপান ও অস্ট্রেলিয়া।
স্নায়ুযুদ্ধের সময় থেকেই একটি পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে থাকে নয়াদিল্লি। সেটি হলো—বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে অংশীদারত্ব করবে তারা। তবে কোনো সামরিক জোটের সঙ্গে যুক্ত হবে না। একই সঙ্গে কোনো জোটে এমন কোনো আদর্শগত অবস্থান নেবে না, যা বড় কোনো পরাশক্তির বিরুদ্ধে যায়। এরপরও ওয়াশিংটনে একটি ধারণা ছিল যে ভারত–যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে গভীর করে এবং দীর্ঘদিন ধরে চলা নয়াদিল্লি–বেইজিং অবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে ভারতকে চীনের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে দাঁড় করানো যাবে।
সে লক্ষ্যে ভারতকে পাশে রাখার জন্য মস্কোর সঙ্গে নয়াদিল্লির ঐতিহ্যগত বন্ধুত্বের ওপর খুব বেশি চাপ দেয়নি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারগুলো। গত আধা শতক ধরে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির অস্ত্রের বড় সরবরাহকারী রাশিয়া। চলমান রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের সময়ও ওয়াশিংটনকে একই নীতি ধরে রাখতে দেখা গেছে। ইউক্রেনে অভিযানের কারণে পশ্চিমা দেশগুলো যখন রাশিয়ার জ্বালানি তেল বয়কট করছিল, তখন ভারতকে ওই তেল কিনতে উৎসাহিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর উদ্দেশ্য ছিল, বৈশ্বিক অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা।
ট্রাম্প এখন সেই সমীকরণে বদল আনছেন। তিনি চাচ্ছেন, ভারত যেন আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো একটি পক্ষ অবলম্বন করে। ভারতের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে ১৮ আগস্ট সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে লিখেছেন হোয়াইট হাউসের বাণিজ্য ও উৎপাদনবিষয়ক কাউন্সেলর পিটার নাভারো। তিনি লেখেন, ‘বাইডেন প্রশাসন মূলত এই কৌশলগত এবং ভূরাজনৈতিক উন্মাদনাকে (ভারতের পররাষ্ট্রনীতি) অন্যভাবে দেখেছিল। ট্রাম্প প্রশাসন এখন এটি মোকাবিলা করছে। তারা চাচ্ছে—ভারত যদি যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদার হতে চায়, তাহলে তাদের সে রকম আচরণ করতে হবে।’
নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটির চায়নিজ স্টাডিজের অধ্যাপক বি আর দীপক বলেন, চীন–ভারত কাছাকাছি এলে বেইজিংকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একঘরে করার যে চেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে, তা ব্যাহত হবে। কোয়াডে চীনবিরোধী অবস্থানের প্রতিও আগ্রহ হারাতে পারে ভারত। একই মত ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের গবেষক ইভান লিদারেভের। তিনি বলেন, ভারত-চীনের নতুন করে কাছাকাছি আসা কোয়াডের ভেতরে জটিলতা সৃষ্টি করবে। এই জটিলতা জোটের সদস্যদের পারস্পরিক আস্থা ও লক্ষ্যকে দুর্বল করে দেবে।