ভারত থেকে ১২০০ কোটি টাকায় ২০০ বগি কিনছে রেলওয়ে: রেল ভবনে ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর
এক হাজার ২০৫ কোটি ৫৪ লাখ ৫৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০০ যাত্রীবাহী বগি (প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ) কেনার জন্য ভারতীয় প্রতিষ্ঠান আরআইটিইএস লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। গতকাল সোমবার রাজধানীর রেলওয়ে ভবনে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেলমন্ত্রী মো. জিল্লুল হাকিম, রেল সচিব হুমায়ুন কবীর, মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী, ভারতীয় কোম্পানির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাহুল মিত্তাল, ভারতীয় রেলওয়ের প্রোডাকশন ইউনিটের অতিরিক্ত সদস্য সঞ্জয় কুমার পঙ্কজ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব করপোরেশন মিচেল ক্রেজা ও রেলওয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ।
চুক্তি অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম বলেন, আমাদের ক্যারেজের খুব সমস্যা। এই মুহ‚র্তে আপনারা (ভারতীয়) যে ক্যারেজ দিচ্ছেন এর জন্য ধন্যবাদ। তিনি বলেন, চুক্তিতে ক্যারেজ কবে দেওয়া হবে সেই সময় নেই। এটা করলে আমাদের সুবিধা হবে। আমরা সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা করতে পারি। আগামী দুই মাসের মধ্যে যদি দুই সেট ক্যারেজ দেওয়া যায় তবে সেটা আমাদের জন্য ভালো হবে। বাকিগুলো শিডিউল করে নিলে হবে। এসময় তিনি বলেন, ‘আমাদের আরও বগি লাগবে। ২০০ বগি সাপ্লাই শেষ হলে নতুন চুক্তি করব।
জানা গেছে, প্রকল্পের সময় ১ জুলাই ২০২২ থেকে ৩০ জুন ২০২৬। বাংলাদেশ সরকার ও ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি) এর অর্থায়নে প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে এক হাজার ২৯৮ কোটি ৫৮ লাখ ৭৭ হাজার ১৩৯ টাকা (ডলার ১১৬ টাকা ৭১ পয়সা)। এতে করে প্রতিটি বগির দাম আসে ৬ কোটি ৪৯ টাকা। এর মধ্যে ম্যাটেরিয়াল চার্জ দিবে ইআইবি। দেশে বগি আসার পর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সেটি খালাস বাবদ আরও ৩৫ শতাংশ টাকা দিতে হবে। এই অর্থ দিবে বাংলাদেশ সরকার যা প্রায় ৩০৩ কোটি টাকা।
চুক্তি অনুযায়ী সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ২০ মাসের পর থেকে বগি দেওয়া শুরু হবে যা চলবে ৩৬ মাস পর্যন্ত। অর্থাৎ ১৬ মাসের মধ্যে রেলওয়ে এই বগিগুলো পাবে।
রেলওয়ে বলছে, বগিগুলো হবে স্টেইনলেস স্টিলের, দ্রæত গতি সম্পন্ন, বগির ছাদে এসি থাকবে, অটোমেটিক এয়ার ব্রেক পদ্ধতি ও পরিবেশবান্ধব হবে। এই বগিগুলো পরবর্তীতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনগুলোর সঙ্গে যুক্ত করা হবে।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য হিসেবে বলা হয়েছে, ক্যারেজের প্রাপ্যতা বৃদ্ধির মাধ্যমে যাত্রীদের আধুনিক, নিরাপদ ও আরামদায়ক সেবা প্রদান, যাত্রী চাহিদা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে নতুন রুটে রেল পরিচালনা, পুরোনো ও আয়ুষ্কাল শেষ হওয়া যাত্রী ক্যারেজগুলো প্রতিস্থাপন এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করা।
রেলওয়ে নিজস্ব নথিতে স্বীকার করে বলেছে, সারা দেশে রেলের নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে পড়লেও যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে রয়েছে।