ভাসতে ভাসতে চলেছে দানবাকৃতি হিমবাহ, অজানা আশঙ্কায় বিজ্ঞানীরা
ভাগ্যিস পৃথিবীর সব রহস্যের উত্তর গুগল জানে না। ভাগ্যিস ব্রহ্মাণ্ড আজও রহস্যময়। অজানা সেই রহস্যের প্রতি ভালোবাসাই তো বিজ্ঞান, তেমনই তার ভয়ের দিকও রয়েছে। যেমন সুবিশাল হিমবাহ এ২৩এ। আয়তনে মুম্বাইয়ের প্রায় ৬ গুণ। সেটি নাকি অজ্ঞাত কারণে ভাসতে ভাসতে চলেছে অজনায়। ওই বিরাট হিমবাহে এমন আচরণে হাজার হাজার পেঙ্গুইন, সিল মাছ, সামুদ্রিক পাখিরা সন্ত্রস্ত। হিমবাহে ভাঙন ধরায় মৃত্যু হচ্ছে, বাস্তুহারা হচ্ছে পেঙ্গুইন। কীসের সংকেত? মানুষের কৃতকর্মে, পরিবেশ দূষণে শেষের সেদিন কি সমাগত?
পৃথিবীর তাবড় বিজ্ঞানীরা জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বার বার সতর্ক করছেন। আন্টার্কটিকা নিয়ে ইতিম্যধ্যে বিপদসঙ্কেত দিয়েছে নাসাও। দুটি পরিস্থিতির কথা জানিয়েছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি। তাদের বক্তব্য, ১৯৮০ সালে মেরু প্রদেশে পুরু বরফের যে স্তর দেখা যেত, তা ১৫ শতাংশ এসে ঠেকেছে। উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে একথা জানিয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। ইতিমধ্যে নজিরবিহীন তাপমাত্র দেখা গিয়েছে দক্ষিণ মেরুর উত্তর প্রান্তের ‘এসপ্যারেঞ্জা বেসে’। সেখানে তাপমাত্রা পৌঁছায় ১৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস অর্থাৎ ৬৪.৯৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটে।
এর মধ্যেই চার হাজার বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ২৩এ হিমবাহ নিয়ে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বিশেষজ্ঞদের কপালে। যা আদতে মুম্বইয়ের প্রায় ৬ গুণ। এই হিমবাহে ভাঙন ধরেছে। আচমকাই বিচ্ছিন্ন হয়ে ভাসতে শুরু করেছে সেটি। এই সুবিশাল হিমবাহ গলতে শুরু করলে বড় বিপদ হবে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। হিমবাহ গলনের ফলে জলস্তর অনেকটাই বাড়বে।
বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, যে হারে গলতে শুরু করেছে আন্টার্কটিকার বরফ তার পরিণতিতে আগামী ১০০ বছরে অন্তত ১০ ফুট বাড়তে পারে সমুদ্রের জল-স্তর। ফলে বহ দেশের সমুদ্র উপকূলবর্তী শহর তলিয়ে যাবে জলের নিচে। আমাদের সুন্দরবন নিয়ে আশঙ্কার কথাও জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের দাবি, যদি আন্টার্কটিকার হিমবাহ সম্পূর্ণ গলে যায়, তবে সমুদ্রের জলস্তর গড়ে ২৩ ফুট বাড়বে। সম্ভবত সেই পৃথিবীতে অস্তিত্ব থাকবে না শ্রীলঙ্কা, মরিশাসের মতো বহু দ্বীপরাষ্ট্রের।