Science & Tech

ভিডিও বাস্তব নাকি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারসাজি, ধরতে পারছেন না কেউ: জরিপ 

১ থেকে ৪ মার্চ অনলাইনে অনুষ্ঠিত এই জরিপে এক হাজার অংশগ্রহণকারীদের সোরার তৈরি চারটি এআই ভিডিও এবং একটি ক্যামেরা ব্যবহার করে বাস্তবজগতে রেকর্ড করা চারটি ভিডিও দেখানো হয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তারা ওপেনএআইয়ের ‘সোরা’ এআই সৃষ্ট ভিডিও এবং মানুষের দ্বারা রেকর্ড করা ভিডিওগুলোকে পরস্পরের থেকে আলাদা করতে হিমশিম খাচ্ছেন। সম্প্রতি ভ্যারাইটি ইন্টেলিজেন্স প্ল্যাটফর্মকে (ভিআইপি+) বিশেষভাবে সরবরাহ করা নতুন হ্যারিসএক্স জরিপ থেকে এমন তথ্যই জানা গেছে।

বিতর্কিত সফটওয়্যারটি উন্মোচনের কয়েক সপ্তাহ পরে মার্কিন ভোক্তাদের মধ্যে একটি জরিপ চালানো হয়। জরিপে বেশিরভাগ প্রাপ্তবয়স্করা, তাদের দেখানো ভিডিওগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নাকি মানুষের দ্বারা তৈরি তা নির্ধারণ করতে সক্ষম হননি। 

জরিপে প্রদর্শিত ভিডিওগুলোর অর্ধেক ছিল সোরা এআইয়ের তৈরি। অনলাইনে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ভিডিওগুলো তাদের উচ্চ মানের কারণে ইতোমধ্যে হলিউড থেকে ক্যাপিটল হিল উভয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। 

সোরার ডেমো ভিডিওতে বিগ সারের গ্যারে পয়েন্ট বিচ বরাবর রুক্ষ পাহাড়ের ওপর ঢেউ আছড়ে পড়ছে এমন একটি ড্রোনশট দেখা যায়। এছাড়া আছে ক্যালিফোর্নিয়ার ঐতিহাসিক গোল্ড রাশ বা স্বর্ণ অভিযানের ভিডিও ও। সবগুলোই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার তৈরি, কোনও মানুষের রেকর্ড করা না।  

১ থেকে ৪ মার্চ অনলাইনে অনুষ্ঠিত এই জরিপে এক হাজার অংশগ্রহণকারীদের সোরার তৈরি চারটি এআই ভিডিও এবং একটি ক্যামেরা ব্যবহার করে বাস্তবজগতে রেকর্ড করা চারটি ভিডিও দেখানো হয়।

উদাহরণস্বরূপ, যখন বিগ সারের একটি ভিডিও দেখানো হয়, তখন ৬০% উত্তরদাতা ভুলভাবে মনে করেন যে এটি কোনও মানুষের দ্বারা তৈরি করা হয়েছে।

হ্যারিসএক্স দ্বারা পরিচালিত জরিপে আরও দেখা গেছে, জরিপে সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ মনে করেন যে মার্কিন সরকারের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দ্বারা তৈরি সামগ্রী স্পষ্টভাবে লেবেল করা বাধ্যতামূলক করা উচিত। ভিডিও, ছবি, টেক্সট, মিউজিক, ক্যাপশন এবং সাউন্ডসহ সব কনটেন্ট ফরম্যাটে নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও তারা একই ধরনের ইচ্ছা পোষণ করেন। 

সোরা এআই সফটওয়্যারটি এখনও জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা না হলেও, বিনোদন শিল্পে এটি নিয়ে ইতোমধ্যে অনেক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। আর উদ্বেগের কারণ হল এই সফটওয়্যার ভিডিও তৈরির পদ্ধতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারে, যার প্রভাব আসতে পারে হলিউডের ক্যামেরার কাজ করার পদ্ধতিতেও। তবে, সোরা শেষ পর্যন্ত চালু হলেও প্রাথমিকভাবে এটির কিছু সীমাবদ্ধতা থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের পরবর্তীতে জানানো হয় তাদের দেখানো ভিডিওগুলো সোরা এআই দ্বারা তৈরি। এ নিয়ে তাদের কাছ থেকে অনুভূতি জানতে চাওয়া হলে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক উভয় প্রতিক্রিয়াই দেখতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে কৌতূহলী (২৮%), অনিশ্চিত (২৭%) এবং মুক্তমনা (২৫%) থেকে উদ্বিগ্ন (১৮%), অনুপ্রাণিত (১৮%) এবং ভীত (২%) প্রতিক্রিয়া ছিল।

হ্যারিসএক্স-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও গবেষণা প্রধান দ্রিতান নেশো বলেন, ‘আপনি যখন বিশ্বকে দ্রুত পরিবর্তন করার চেষ্টা করেন, তখন বিশ্বও আপনার লাগাম ধরে টানতে যায়’। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, সোরার মতো জেনারেটিভ এআই আরও উন্নত হওয়ার সাথে সাথে এর প্রভাব সম্পর্কেও উদ্বেগ বাড়ছে।

এসব প্রযুক্তির যথাযথ লেবেলিং এবং নিয়ন্ত্রণের আহ্বানও জানান তিনি। নেশো বিশ্বাস করেন যে এ ধরনের শিল্পে দিক নির্দেশনা স্থাপন এবং জনসাধারণের সাথে কার্যকরভাবে যোগাযোগ করা দরকার।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button