ভোটের অধিকার আদায়ে জনগণকে রাস্তায় নামতে হবে: ফখরুল
পরিবর্তন চাইলে ভোটের অধিকার আদায়ে জনগণকে রাস্তায় নামতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ সোমবার ঠাকুরগাঁওয়ে আয়োজিত এক জনসভায় তিনি এই কথা বলেন।
উপস্থিত নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘এখন একটা নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। আপনারা কী সত্যি সত্যি পরিবর্তন চান নাকি আবার ওই আওয়ামী লীগের নৌকায় ফিরে যেতে চান? তাহলে ৫ আগস্ট সবাই যেমন রাস্তায় নেমেছিলেন, আবারও ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে হবে। রাস্তায় নামতে হবে নিজের অধিকার আদায়ের জন্য, ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য, ভাতের অধিকার পাওয়ার জন্য এবং ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য, সামাজিক মর্যাদা পাওয়ার জন্য।’
স্বাধীনতার পর থেকেই দেশে খুন-জখম-হিংসা শুরু হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার, যে নেতাকে এত মানুষ ভালোবাসতো, যে দলটাকে লোকে ভালোবাসতো—আওয়ামী লীগ, সেই দলটাই আমাদের ওপর চড়াও হয়ে গেল, এই দেশের মানুষের ওপর।’
ইতিহাস বর্ণনা করে ফখরুল আরও বলেন, ‘দুর্ভাগ্য আমাদের, আওয়ামী লীগের হাতে যখন দ্বিতীয়বার ক্ষমতা এলো ২০০৯ সালে তখন আবার শুরু হলো অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়ন।’
আওয়ামী লীগ আবারও একদলীয় শাসনব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ভোটের ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা তিনবার ভোট দিতে পারিনি। যুবকরা এখনো জানে না ভোট কী। আমাদের আওয়ামী লীগের ভাইরা ভোটটা দিয়েছেন, বলে দিয়েছেন—তোরা আসিবার দরকার নাই, মুই দিয়ে দিনু। স্লোগান ছিল—আমার ভোট আমি দিব, তোমার ভোটও আমি দিব।’
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকরা যা মনে করতো তা লিখতে পারতো না। যা সত্য তা লিখতে পারতো না। আমাদের রমেশ বাবু (ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন) যা কইলা, ওইটাই শুনিবা হবে, ওইটাই লিখিবা হবে। হাসিনা যা কইলা ওইটাই লিখিবা হবে, ওইটাই বলিবা হবে। এই অবস্থা তারা তৈরি করেছিল, আর আমরা যা বলবো তা ছাপানো যাবে না।’
এখন একটা দাবি উঠেছে আমরা একাই সব করে ফেলছি, আর ১৫ বছর ধরে আমরা মাইর খেলাম, মামলা খেলাম, গায়েবি মামলা হলো। অনেকে বলার চেষ্টা করে বিএনপি তো পারে নাই, বিএনপি ১৫ বছর লড়াই করেছে বলেই তো তোমরা পেরেছো, বাবা! না হলে এই জায়গাটা তো তৈরি হতো না, যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা নেই উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা যদি কখনো সুযোগ পাই, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে যেতে পারি, এই দেশে সব সম্প্রদায়, সব ধর্মের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করা হবে। কৃষক যেন সফলের ন্যায্যমূল্য পায় সেটা আমরা নিশ্চিত করবো। শ্রমিক ভাই যেন তার ন্যায্য হিস্যা পায়, আর বিনা কারণে গায়েবি মামলা যেন আর কোনো দিন না হয়। বিনা কারণে মানুষকে গুম করা, হত্যা করা এটা যেন বাংলাদেশে আর কোনো দিন না হয়।’