Hot

ভোটের ট্রেনে ওঠার তোড়জোড়

  • রাজনৈতিক অঙ্গনের বাইরেও সর্বত্র নির্বাচন নিয়ে আলোচনা
  • প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনাকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি ও বাম দলগুলো
  • সংস্কার ও বিচার নিশ্চিত হলে জামায়াতের আপত্তি নেই
  • প্রস্তুতিতে ব্যস্ত নির্বাচন কমিশন, নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত

নির্বাচনী ট্রেন ছাড়ার প্রস্তুতি চলছে জোরেশোরে। গণতন্ত্রের পথে যাত্রী হতেও প্রস্তুতি নিচ্ছে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। আনন্দ-উৎসাহের সঙ্গে দলবিশেষের কিছুটা দ্বিধাও রয়েছে এই প্রস্তুতির মধ্যে। গত বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করে জাতীয় নির্বাচনের জন্য ডিসেম্বরের মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেওয়ার পর রাজনৈতিক অঙ্গনের বাইরেও সর্বত্র নির্বাচন নিয়ে আলোচনা।

ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের দিকেই ভোটগ্রহণ হতে পারে—এই সম্ভাবনা ধরে নিয়ে নানা হিসাব-নিকাশ শুরু হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার এই নির্দেশনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপি বলেছে, ‘দেশের জনগণ নির্বাচন ও ভোটাধিকারের জন্য প্রাণ দিয়েছে। কাজেই আমরা মনে করি, নির্বাচন নিয়ে আর কোনো সমস্যা হবে না।’ জামায়াতে ইসলামী বলেছে, ‘আমরা আগেও বলেছি, নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সব সংস্কার এবং বিচার নিশ্চিত হলে নির্বাচনে আমাদের আপত্তি নেই।

গতকাল বৃহস্পতিবার জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের কালের কণ্ঠকে এ কথা বলেন। আগামী ১৯ জুলাই জামায়াতে ইসলামী রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ব্যাপক জনসমাগম ও শোডাউনের মাধ্যমে সমাবেশ করতে যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়েই দলটি দেশবাসীকে নির্বাচনী বার্তা দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।

গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জুলাই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সাংবাদিকের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনাসভা ও শহীদ সাংবাদিক পরিবারের সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা লিবারেল ডেমোক্রেসিতে বিশ্বাস করি।

নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতার পরিবর্তন হবে। সেই নির্বাচিত সরকারই একমাত্র দেশ চালাবে এবং সমস্যাগুলোর সমাধান করবে। দেশের জনগণ নির্বাচন ও ভোটাধিকারের জন্য প্রাণ দিয়েছে। কাজেই আমি মনে করি, নির্বাচন নিয়ে আর কোনো সমস্যা হবে না।’

তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশনে প্রতিটি বিষয়ে মতামত দেওয়া হয়েছে।

বেশির ভাগ বিষয়ের সঙ্গে বিএনপি একমত হয়েছে। কতগুলো মৌলিক বিষয়ে বিএনপি একমত হতে পারেনি। ভবিষ্যতে সংসদে বিতর্কের মাধ্যমে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।

বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, ‘আমি আশাবাদী মানুষ। নির্বাচন তো এ দেশের মানুষ চায়। নির্বাচনের জন্য এ দেশের মানুষ প্রাণ দিয়েছে। মানুষ একটা নির্বাচিত প্রতিনিধিত্ব চায় সংসদের মাধ্যমে। এগুলো নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। যত দ্রুত সম্ভব একটা নির্বাচিত সরকারের দিকে যাই, গণতন্ত্রে উত্তরণের দিকে যাই।’

এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘সংস্কার ঘিরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে নানা বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কোনো দল বিতর্ক করলেই সেটার মানে এই নয় যে তারা নির্বাচন চায় না কিংবা নির্বাচন পেছাতে চায়।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা সংসদ নির্বাচন করতে চাই। নির্বাচন যদি সংসদের না হয় তাহলে দেশে একটা অন্ধকার শক্তি আবার ক্ষমতায় আসবে। অতএব আমাদের সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করতে হবে যেন নির্বাচন হয়।’

জুলাই অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের নবগঠিত দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কিছু আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করে রেখেছে। নতুন এই দলের চলমান পদযাত্রা কর্মসূচিকে নির্বাচনী প্রচার হিসেবেই অনেকে দেখছেন। এই পদযাত্রায় নির্বাচনের আগেই জুলাই ঘোষণাপত্র, জুলাই সনদ বা সংস্কার এবং গণহত্যাকারীদের বিচারের দাবি জানানো হচ্ছে। গতকাল মাগুরায় দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই সনদ ঘোষণার আগে কোনো নির্বাচন ছাত্র-জনতা মেনে নেবে না। আগে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিচার হতে হবে। খুনিদের বিচার, সংস্কার ও জুলাই সনদ ঘোষণার আগে নির্বাচনের পাঁয়তারা করা হলে আবারও গণ-আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’

দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা সম্পর্কে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমাদের মনে হয়েছে, যেহেতু নির্বাচনে সরকারের অনেক বিভাগ কাজ করে, সেসব বিভাগকে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন। কিন্তু আমরা আমাদের দলীয় অবস্থানেই রয়েছি। নির্বাচনের আগে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও বিচার কার্যক্রম দৃশ্যমান হতে হবে।’

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশেরও আসনভিত্তিক নির্বাচনের জন্য দেশের বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থী বাছাই কর্মসূচি চলমান।

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতি শেষ করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনাকে স্বাগত জানিয়েছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। গতকাল তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এই ঘোষণাকে আমি ইতিবাচক হিসেবে দেখছি। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন নিয়ে জনমনে যে সংশয় ছিল তা কিছুটা কমবে বলে মনে করি। নির্বাচন কমিশনও ডিসেম্বর মাস সামনে রেখে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছে। সংস্কারের বিষয়েও জুলাই মাসের মধ্যে ন্যূনতম ঐকমত্যে পৌঁছতে পারব। আর বিচার তো চলমান প্রক্রিয়া। এখন নির্বাচনের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীসহ পুরো প্রশাসনকে প্রস্তুত করা দরকার। সেই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে আশা করি। তবে নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছ থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা আসতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা তরুণদের জন্য আলাদা বুথ করার প্রস্তাব দিয়েছেন। এটি ইতিবাচক হিসেবে দেখছি না। আলাদা বুথ করতে হলে ষাটোর্ধ্ব প্রবীণদের জন্য করতে হবে, যাতে ভোট দিতে এসে তাঁদের কোনো কষ্ট পেতে না হয়।’

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘দেশের জনগণ নির্বাচনের জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। একই সঙ্গে নির্বাচন যাতে কালো টাকা, পেশিশক্তির দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে একটি ভালো নির্বাচন হয়। নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে, সেটাও চায়। এই নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের তিন মাসই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার চারটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ শেষ করতে যাচ্ছে। এর পরও তারা নির্বাচনী প্রস্তুতির ঘোষণা দিয়েছে, এটাই ইতিবাচক। তবে নির্বাচন ফেব্রুয়ারি না এপ্রিলে হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সরকার দ্রুত এই প্রশ্নের সমাধান করবে বলে আশা করি।’ তিনি আরো বলেন, ‘তরুণদের জন্য আলাদা বুথের কথা বলা হয়েছে। সেটা হয়তো প্রথমবার যারা ভোট দেবে, তারা কোন দলকে ভোট দিচ্ছে বা ছাত্র-তরুণদের ভোটের অবস্থা বোঝার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তেমন কোনো সুফল পাওয়া যাবে না। বরং তা সমতার নীতির পরিপন্থী হবে।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান মনে করেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী ট্রেনে যাত্রা শুরুর অপেক্ষায় রয়েছে। তবে তার আগে বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলোর বাইরে অন্য ক্রিয়াশীল দলগুলোর ভূমিকা কী হচ্ছে সে বিষয়টিও খেয়ালে রাখতে হবে। জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণার বিষয়টি কোন অবস্থায় পৌঁছায় সেটাও দেখেতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাখতে বলেছেন বলে তাঁর প্রেস সচিব জানিয়েছেন। কিন্তু আমার মনে হয় না, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রস্তুতিতে এতটা সময় লাগবে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা একটি চলমান প্রক্রিয়া। তরুণ ভোটারদের জন্য আলাদা ভোটার তালিকা ও বুথ করার যে প্রস্তুাব এসেছে, এটা পৃথিবীর কোথাও নেই। এটা করা যাবে না। এতে ভোটের শৃঙ্খলা নষ্ট হবে।’

নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি, নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত : এদিকে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনসংক্রান্ত বিধি-বিধান সংশোধন, নতুন দলের নিবন্ধন এবং সংসদীয় আসনগুলোর সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে পাঁচটি সমন্বয় ও তদারকি কমিটি গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল ইসির উপসচিব মো. শাহ আলম স্বাক্ষরিত পাঁচটি অফিস আদেশে এসব কমিটি করার তথ্য জানানো হয়েছে। অফিস আদেশ অনুযায়ী, চারজন নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে এই কমিটিগুলো আইন-শৃঙ্খলা, মাঠ প্রশাসন, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ; নির্বাচনী আইন, বিধি, প্রবিধি ও নীতিমালা এবং নির্বাচনী তদারকি (ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি) কমিটি; প্রবাসী ভোট ও দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করবে। এ ছাড়া ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গতকাল নির্বাচন কমিশনের সভায় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, এই নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) আর কোনো নির্বাচনে ব্যবহার হবে না। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন পেতে আগ্রহী ১৪৭টি নতুন দলের আবেদন প্রাথমিক যাচাই সম্পন্ন করেছে ইসি। এ ক্ষেত্রে যাদের তথ্যে ঘাটতি আছে তাদের ১৫ দিন সময় দেওয়া হবে। কয়টি দলকে চিঠি দেওয়া হবে, তা আগামী রবিবার জানানো হবে। আর যেসব দলের পূর্ণাঙ্গ তথ্য আছে বা ফরম্যাট অনুযায়ী সব কার্যক্রম সম্পন্ন করে আবেদন জানিয়েছে, সেগুলো মাঠ পর্যায়ে যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হবে। নির্বাচনী অনিয়ম হলে পুরো আসনের ভোটগ্রহণ বাতিলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ক্ষমতা ফিরছে, যা বিগত কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন বাদ দিয়েছিল। নির্বাচন কমিশন এ বিষয়ে আরপিও সংশোধনের প্রস্তাব করছে। নির্বাচনে প্রার্থীর হলফনামায় তথ্য দেওয়ার বিষয়ে কিছু সংশোধনের প্রস্তাব করছে নির্বাচন কমিশন। এ ক্ষেত্রে দ্বৈত নাগরিককে ঘোষণা দিতে হবে, সার্টিফিকেট দিতে হবে। প্রার্থীর সারা জীবনে ফৌজদারি মামলার হিস্ট্রি দিতে হবে। নির্ভরশীল নিকটাত্মীয়দের সবার সম্পদের বিবরণ জমা দিতে হবে। হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিলে নির্বাচন কমিশনের যেন এই সক্ষমতা থাকে যে তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে জবাবদিহির আওতায় আনা যাবে—এ ধরনের প্রস্তাব রাখা হচ্ছে। জাতীয় সংসদের আসন এলাকাগুলোর সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজটি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। গতকালের কমিশন সভায় এটি উপস্থাপন করা হয়েছে। ২২১টি আসনের সীমানা পরিবর্তনে কোনো ধরনের আবেদন হয়নি। তার পরও যেখানে যেখানে অনেক বেশি ভেরিয়েশন আছে সেখানে আরেকটু কিছু করা যায় কি না দেখা হচ্ছে। ঢাকা শহরে সংখ্যাগুলো খুব বেশি কমবে না। ভোটারসংখ্যাকে গুরুত্ব দিয়ে সীমানা পুনর্নির্ধারণের চেষ্টা করা হচ্ছে। এর সঙ্গে ভৌগোলিক অবস্থা, প্রশাসনিক সুবিধা, যাতায়াতব্যবস্থাকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে গতকাল পর্যন্ত ৪৪ লাখ ছয় হাজার ৬০২ জন বাদ পড়া ভোটার পাওয়া গেছে। মৃত ভোটার শনাক্ত হয়েছে ২১ লাখ ৩২ হাজার ৫৯০ জন। ভোটার তালিকা হালনাগাদের একটি সম্পূরক তালিকা আগামী সপ্তাহেই প্রকাশ করা হবে। যাঁদের সম্পূরক তালিকা প্রকাশ করা হবে তাঁরা ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি ভোটার হওয়ার যোগ্য হয়েছেন।

নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার তফসিলে শাপলা প্রতীক তালিকায় না রাখার কারণ সম্পর্কে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘এই প্রতীকের জন্য দুটি দল আবেদন করেছে। নাগরিক ঐক্য ১৭ এপ্রিল, আর এনসিপি ২২ জুন। এসব বিবেচনায় প্রতীকের তালিকায় শাপলা রাখা হয়নি। আমরা শাপলাকে বাদ দিইনি। নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা সংশোধন করে ১১৫টি প্রতীক সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। এর মধ্যে ৫১টি প্রতীক ৫১টি নিবন্ধিত দলের জন্য। বাকিগুলো নতুন নিবন্ধন পাওয়া দলের এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য থাকবে।’

নির্বাচন কমিশন সার্ভিস গঠন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের করা প্রস্তাবে একমত হয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে যত দিন সার্ভিস গঠন না হচ্ছে তত দিন পর্যন্ত বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে কার্যক্রম চলবে। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা পুনঃ অর্পণ রিভাইজ করা হয়েছে। কিছু কিছু বিষয় ফাইন টিউন করা হয়েছে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ওপরে যাঁরা নিয়োগ পাবেন, তাঁদের নিয়োগটা কমিশনের অনুমোদিত হবে। আগে এটি কমিশন সচিব করতেন। আর নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে বিভাগীয় প্রধান যাঁরা আছেন, তাঁদের নিয়োগটাও কমিশন দেবে। এর পাশাপাশি টেকনিক্যাল পদে যাঁরা আছেন তাঁদের ব্যাপারে আমরা একটা নীতিমালা করতে যাচ্ছি, যাতে জব ডেসক্রিপশন এবং কোয়ালিফিকেশন অনুযায়ী যথাযথ ব্যক্তি যথাযথ জায়গায় পোস্টেড হন।’

এ ছাড়া ধর্মান্তরিত হওয়ারা জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন সংক্রান্ত জটিলতায় পড়েছেন, গতকাল তাঁদের জন্য সেবা কার্যক্রম সহজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন পেতে আগ্রহী ১৪৭টি নতুন দলের আবেদন প্রাথমিক যাচাই সম্পন্ন করেছে ইসি। এ ক্ষেত্রে যাদের তথ্যে ঘাটতি আছে তাদের ১৫ দিন সময় দেওয়া হবে। কয়টি দলকে চিঠি দেওয়া হবে তা আগামী রবিবার জানানো হবে। আর যেসব দলের পূর্ণাঙ্গ তথ্য আছে বা ফরম্যাট অনুযায়ী সব কার্যক্রম সম্পন্ন করে আবেদন জানিয়েছে, সেগুলো মাঠ পর্যায়ে যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হবে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

bacan4d slot toto