মঙ্গলে প্রবালসদৃশ পাথর খুঁজে পেল নাসার কিউরিওসিটি রোভার

মঙ্গলের পৃষ্ঠে প্রবালের মতো দেখতে এক অদ্ভুত পাথরের ছবি তুলেছে নাসার কিউরিওসিটি রোভার। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, হালকা রঙের এই পাথরটি বাতাসে ক্ষয়ে গেছে এবং এর বয়স প্রায় এক বিলিয়ন বছর (১০০ কোটি বছর) বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পাথরটি মঙ্গলের গেইল ক্রেটারে (একটি বিশাল আঘাতজনিত গহ্বর) পাওয়া গেছে। আকারে এটি প্রায় ২.৫ সেন্টিমিটার (প্রায় ১ ইঞ্চি) চওড়া এবং শাখা-প্রশাখাযুক্ত, যা দেখতে অনেকটা সমুদ্রের তলদেশে পাওয়া প্রবালের মতো।
ছবিটি তোলা হয়েছে রোভারের রিমোট মাইক্রো ইমেজার ক্যামেরায়, যা উচ্চক্ষমতার টেলিস্কোপিক ক্যামেরা।
নাসা জানিয়েছে, এ ধরনের ছোট আকারের গঠন মঙ্গলে বহুবার পাওয়া গেছে। এগুলো গঠিত হয়েছিল বিলিয়ন বছর আগে, যখন সেখানে তরল পানি ছিল। তখন পানির সঙ্গে দ্রবীভূত খনিজ পদার্থ পাথরের ফাটলে জমা হয়। পরে পানি শুকিয়ে গেলে সেই খনিজ পদার্থ শক্ত হয়ে থাকে। কোটি কোটি বছর ধরে বাতাসের বালুকণায় ক্ষয়ে চারপাশের পাথর ভেঙে গিয়ে এমন অনন্য আকার তৈরি হয়। পৃথিবীতেও এ প্রক্রিয়া সাধারণভাবে দেখা যায়।
এর আগে গত মাসে কিউরিওসিটি ‘পাপোসো’ নামের আরেকটি ফুলের মতো দেখতে পাথর আবিষ্কার করেছিল, যার আকার প্রায় ৫ সেন্টিমিটার।
২০১২ সালে মঙ্গলে অবতরণ করা কিউরিওসিটির মূল কাজ হলো—মঙ্গলের অতীতে জীবনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ ছিল কি না, তার প্রমাণ খোঁজা। এখন পর্যন্ত এটি গেইল ক্রেটারের প্রায় ৩৫ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে দেখেছে। তবে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়, কারণ পথে থেমে শিলা থেকে নমুনা সংগ্রহ, ড্রিলিং এবং তথ্য বিশ্লেষণ করতে হয়।
এখন পর্যন্ত মঙ্গলে জীবনের কোনো নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে চলমান ও ভবিষ্যতের মিশনগুলো এই গ্রহের বাসযোগ্যতা ও জীবনের সম্ভাবনা নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে যাবে।