মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার প্রভাব খাতুনগঞ্জে
♦ মসলার বাজাওে হঠাৎ উত্তাপ ♦ সাত মাসের ব্যবধানে বেড়েছে কেজিতে ২২০০ টাকা পর্যন্ত
আগুন লেগেছে মসলার বাজারে। দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে সাত মাসের ব্যবধানে মসলার দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২২০০ টাকা থেকে শুরু হয়ে সর্বনিম্ন ২০ টাকা। এর মধ্যে মূল্যবৃদ্ধির দৌড়ে সবচেয়ে বড় লাফ দিয়েছে এলাচ। মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে এলাচের দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে প্রায় দেড় হাজার টাকা। মসলার বাজারের এমন কারসাজির জন্য পুরনো সিন্ডিকেটকে দায়ী করেছেন ব্যবসায়ীরা।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘সিন্ডিকেট করে মসলার দাম বৃদ্ধির সুযোগ নেই। প্রয়োজনে বাজার মনিটরিং টিম সক্রিয় হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।’ চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘বুকিং রেট বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে কিছু কিছু মসলার দাম বেড়েছে। কিন্তু এলাচের এমন মূল্যবৃদ্ধির কারণ আমাদের জানা নেই।’ চট্টগ্রাম মসলা আমদানিকারক সমিতির সভাপতি অমর কান্তি দাস বলেন, ‘মসলার ব্যবসাটা আমদানিনির্ভর। রপ্তানিকারক দেশে দাম বাড়লে এখানেও বেড়ে যায়। এ ছাড়া জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, ডলার সংকট তো আছেই। এসব কারণে দেশে মসলার দাম বেড়েছে। তবে এলাচ নিয়ে যা হচ্ছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এলাচের বাজার সিন্ডিকেট কারসাজির জন্য দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।’
জানা যায়, গত বছরের অক্টোবরে খাতুনগঞ্জে প্রতি কেজি এলাচ ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা বিক্রি হলেও গত বৃহস্পতিবার তা বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৩ হাজার ৮৫০ টাকায়। এ ছাড়া ২৬০ টাকার ভারতীয় শুকনা মরিচ কেজিপ্রতি ৩০০ টাকা, ১৮০ টাকার ভারতীয় হলুদ ২৬৫ টাকা, ১৭৫ টাকার দেশি হলুদ ২৩০ টাকা, ৩৭০ টাকার দারুচিনি ৩৮৫ টাকা, ৬৪০ টাকার জায়ফল ৬৫০ টাকা, ২৩০ টাকার কালোজিরা ২৫০ টাকা, ১১০ টাকার মেথি ১২০ টাকা, ১৬০ টাকার ধনিয়া ১৮০ টাকা এবং ১ হাজার ৪৮০ টাকার লবঙ্গ ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কয়েকজন ব্যবসায়ীর দাবি, মধ্যপ্রাচ্য অস্থিরতাকে সুযোগ হিসেবে নিতে চেয়েছেন কিছু ব্যবসায়ী। তাই এলাচসহ কয়েকটি মসলার দাম বৃদ্ধি করেছে। তবে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, ‘হরমুজ প্রণালিতে জাহাজ চলাচল বাধাগ্রস্ত হলে আমদানি-রপ্তানিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। কারণ বিশ্বের সিংহভাগ তেল ও গ্যাস পরিবহন হয় হরমুজ প্রণালি হয়েই। আমাদের দেশের অনেক ভোগ্যপণ্যও আসে হরমুজ প্রণালি হয়েই। ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে অস্থিরতা শুরু হওয়ার পর ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটা শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ভালো খবর হচ্ছে এখনো হরমুজ প্রণালিতে জাহাজ চলাচলে কোনো বাধা তৈরি হয়নি।’