মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গোপন ঘাঁটিগুলোয় হামলা বেড়েছে: ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনা
ইরাক ও সিরিয়ায় সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মার্কিন বাহিনী বারবার হামলার শিকার হচ্ছে। এর মধ্যে গত সোমবার ইরাকের আল আসাদ বিমানঘাঁটিতে রকেট হামলা হয়। এতে মার্কিন সামরিক বাহিনীর অন্তত পাঁচ সদস্য আহত হন। গত জুলাই থেকে এসব হামলা বেড়েছে, যা মধ্যপ্রাচ্যে ইরানসমর্থিত সশস্ত্র সংগঠন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সংঘাত পুনরায় শুরুর বার্তা বহন করে। বছরের শুরুর দিকে এ সংঘাত কিছুটা কম ছিল।
বুধবার দ্য ইন্টারসেপ্টের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের মুখপাত্র বলেন, ৫ আগস্ট ইরাকের আল আসাদ বিমানঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের জোট বাহিনীর ওপর রকেট হামলা হয়। ঘাঁটিতে থাকা সদস্যরা ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করছেন। সাম্প্রতিক হামলা মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোর নিরাপত্তাজনিত দুর্বলতাকে আবারও সামনে এনেছে। গত ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরুর পর ১০ মাসে ইরানসমর্থিন সংগঠনগুলোর হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে এ পর্যন্ত মার্কিন বাহিনীর ১৪৫ সদস্য হতাহত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররাও পাল্টা হামলাও চালিয়েছে। গাজা যুদ্ধ চলাকালে ১০ মাসে তারা সিরিয়ায় সশস্ত্র সংগঠনগুলোর বিভিন্ন লক্ষ্যে ১০২ বার, ইরাকে ৭০ বার ও জর্ডানে একবার হামলা চালায়। গত জানুয়ারিতে ব্যাপকভাবে এ হামলা চালানো হয়। এতে সংগঠনগুলো কিছুটা দুর্বল দৃশ্যমান হয়।
তদন্তের ভিত্তিতে দ্য ইন্টারসেপ্ট জানায়, পুরো মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটি, দুর্গ বা অংশীদারিত্ব স্থাপনার সংখ্যা ৬০টিরও বেশি। এগুলোর মধ্যে ছোট সেনা সমাবেশ থেকে শুরু করে বিশাল সংখ্যক সেনা নিয়ে বিমানঘাঁটির উপস্থিতিও রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের ১৩ দেশে রয়েছে এসব স্থাপনা। দেশগুলো হলো– বাহরাইন, মিসর, ইরাক, ইসরায়েল, জর্ডান, কুয়েত, লেবানন, ওমান, কাতার, সৌদি আরব, সিরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইয়েমেন। এসব দেশে থাকা মার্কিন ঘাঁটিগুলোর অন্তত ১৪টি সাম্প্রতিক সময়ে ড্রোন, রকেট, মর্টার ও স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার শিকার হয়েছে।
মার্কিন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে এভাবে মার্কিন সেনাদের রাখার কার্যত কোনো গুরুত্ব নেই। ওয়াশিংটনভিত্তিক পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা গ্রুপ জাস্ট ফরেন পলিসির সদস্য এরিক স্পারলিং বলেন, অনির্দিষ্টকালের জন্য সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ইরাক, সিরিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যে ফেলে রাখার প্রকৃত কৌশলগত গুরুত্ব মার্কিনিদের জন্য প্রায় শূন্য। কিন্তু ওয়াশিংটন ডিসির নিরাপত্তা এলিটরা এটাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন।
স্বাধীনভাবে ইসরায়েলে হামলা চালাবে হিজবুল্লাহ
ইরানের অনুমতি না নিয়েই ইসরায়েলে স্বাধীনভাবে হামলা চালাতে পারে হিজবুল্লাহ। দুটি গোয়েন্দা সূত্রের বরাত দিয়ে সিএনএন জানায়, হিজবুল্লাহ ইরানের চেয়ে দ্রুত গতিতে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এবং আগামী কয়েক দিনের মধ্যে হামলা চালাতে পারে। তবে তেহরানে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া হত্যার জেরে ইসরায়েলে হামলা কীভাবে চালানো হবে, তা এখনও নির্ধারণ করেনি ইরান।
মার্কিন এক সামরিক কর্মকর্তা জানান, ইরান কিছুটা প্রস্তুতি নিয়েছে; পূর্ণ প্রস্তুতির জন্য তাদের সময় লাগবে। ইসরায়েলের একেবারে সীমান্ত লাগোয়া দেশ হওয়ায় লেবানন থেকে ইসরায়েলে হিজবুল্লাহর হামলা হতে পারে যখন-তখন। কিন্তু ইরানের ক্ষেত্রে কিছুটা প্রস্তুতির বিষয় আছে।