Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
International

মধ্যপ্রাচ্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কেন গুরুত্বপূর্ণ?

গত কয়েক দশক ধরেই মধ্যপ্রাচ্যে সক্রিয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ইরাক আক্রমণ থেকে শুরু করে ইসলামিক স্টেট বা আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই কিংবা ইসরায়েল ও সৌদি আরবকে অস্ত্র পাঠানো— এমন নানা বিষয়ে সম্পৃক্ত থেকেছে তারা। জ্বালানি সম্পদ, বাণিজ্য রুট, ভূ-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা এবং ইসরায়েলের সঙ্গে দেশটির স্থায়ী মিত্রতার মতো বিষয়গুলোকেই অঞ্চলটির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের কারণ হিসেবে দেখে থাকেন বিশ্লেষকরা।

তবে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থান করা মার্কিন সেনার সংখ্যা নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে। ২০০৭ সালে কেবল ইরাকেই যেখানে ১ লাখ ৬০ হাজার সেনা ছিল, সেখানে মিশর থেকে আফগানিস্তান পর্যন্ত সবমিলিয়ে বর্তমানে এই সংখ্যা ৪০ হাজারেরও কম। এর পুরোটাই মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ডের অধীনে রয়েছে।

অঞ্চলটিতে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি আরও কমিয়ে আনা হবে কিনা তা ওয়াশিংটনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জ্বালানি

সৌদি আরব, ইরান, ইরাক, কুয়েত এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বিশাল মজুত কয়েক দশক ধরেই মার্কিন নীতি নির্ধারণের একটি প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নিজ ভূমিতেই শেল গ্যাস (পাথুরে গ্যাস নামেও পরিচিত এই প্রাকৃতিক গ্যাস) বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ১৫ বছরে দেশটিতে তেল ও গ্যাসের উৎপাদন বেড়েছে। ফলে এ ধরনের জ্বালানি আমদানির ক্ষেত্রে দেশটি আগের চেয়ে কম নির্ভরশীল। পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস উভয় ক্ষেত্রেই যুক্তরাষ্ট্র নেট রপ্তানিকারক, অর্থাৎ আমদানির চেয়ে বেশি রপ্তানি করছে দেশটি।

বৈশ্বিক তেলের বাজার আন্তঃসম্পর্কিত; মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটলে তা তেলের দামের সঙ্গে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায়ও প্রভাব ফেলতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র যখন মধ্যপ্রাচ্যের জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমিয়ে আনছে তখন চীন মধ্যপ্রাচ্যের তেলের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল বলে জানাচ্ছেন লন্ডনের স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের (এসওএএস) আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক গিলবার্ট আসকার। এর অর্থ হলো- ‘মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রকে চীনের বিষয়ে বেশ কিছু কৌশলগত সুবিধা দেয়,’ বলেন তিনি।

অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং পণ্য পরিবহন

মধ্যপ্রাচ্য আমেরিকান পণ্য ও পরিষেবা বিশেষ করে সামরিক হার্ডওয়্যারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাজার। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে এই অঞ্চলটিতেই সবচেয়ে বেশি মার্কিন অস্ত্র রপ্তানি করা হয়েছে। মোট মার্কিন অস্ত্র রপ্তানির ৩৮ শতাংশই গেছে মধ্যপ্রাচ্যে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র কিনেছে সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত এবং ইসরায়েল।

এছাড়াও সমুদ্র পথে বৈশ্বিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্য গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান হিউ লোভাট। তিনি অঞ্চলটির ইউরোপীয় কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের (ইসিএফআর) একজন বিশ্লেষক। গাজা যুদ্ধের ফলে লোহিত সাগরে চলাচল করা জাহাজে আক্রমণ শুরু করে ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা।

প্রতি বছর ১৭ হাজারেরও বেশি জাহাজ এই সাগর দিয়ে খাবার, ওষুধ, জ্বালানিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন করে থাকে, যা বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় ১২ শতাংশ। যুক্তরাজ্য ও তাদের অন্যান্য আন্তর্জাতিক মিত্রদের নিয়ে ২০২৪ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে যৌথভাবে হুথিদের অবস্থান লক্ষ্য করে পাল্টা আক্রমণ চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এতে এটা স্পষ্ট যে যুক্তরাষ্ট্র ‘বৈশ্বিক সমুদ্র রুটের মাধ্যমে নৌযান চলাচলের স্বাধীনতাকে অগ্রাধিকার দেয়’, বলেন লোভাট।

তিনি আরও বলেন, মিশরের সুয়েজ খাল এবং ইরানের অদূরে হরমুজের সরু প্রণালীও অত্যন্ত জরুরি। ‘এই বৈশ্বিক সমুদ্রপথ মার্কিন অর্থনীতির জন্য এখনও গুরুত্বপূর্ণ।’

ভূ-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা

ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকাকে সংযুক্ত করা মধ্যপ্রাচ্যে কৌশলগত অবস্থান মার্কিন বাণিজ্য ও সামরিক অভিযানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাহরাইন, কাতার এবং কুয়েতে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিও রয়েছে।

ওয়াশিংটন ডিসির থিঙ্ক ট্যাঙ্ক দ্য উইলসন সেন্টারের মিডল ইস্ট প্রোগ্রামের ডিরেক্টর মেরিসা খুরমা বলেন, কোনো একক শক্তি যেন আধিপত্য বিস্তার করে এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলতে না পারে তা নিশ্চিত করতে নিজেদের শক্তিশালী উপস্থিতি বজায় রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ঐতিহাসিকভাবে তেলের চাহিদা আর কমিউনিজমের প্রভাব রুখে দেওয়া—মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মূল আগ্রহের কেন্দ্রে থাকলেও বর্তমানে এগুলোর বাইরে দেশটি তার প্রভাব এবং পরাশক্তি রক্ষা করতে চাইছে। অঞ্চলটি ‘চীন এবং রাশিয়ার সঙ্গে ক্ষমতা-প্রতিযোগিতার মূল নাট্যমঞ্চ’, বলেন তিনি।

মেরিসা খুরমা আরও বলেন, অঞ্চলটি যে কী পরিমাণ অস্থিতিশীল গাজা-যুদ্ধ সেটাই স্মরণ করিয়ে দেয়, ‘বিশেষ করে যখন ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব এবং এই অঞ্চলে ইরানের সামরিক সম্প্রসারণবাদদের মতো দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের সমাধানের ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিচ্ছিন্ন রয়েছে এবং রাজনৈতিকভাবেও নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে।’

সন্ত্রাস প্রতিরোধ

মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের (এমইআই) খালেদ এলগিন্ডি বলেছেন, ‘এই অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসী হুমকির প্রতিক্রিয়াতেই’ সাম্প্রতিক দশকগুলোতে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি দেখা গেছে। তবে ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১’র হামলা চালানোর কারণ হিসেবে সৌদি আরবে মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতির কথা উল্লেখ করেছিল চরমপন্থী ইসলামি গোষ্ঠী আল-কায়েদা। ফলে ‘হিংসাত্মক চরমপন্থার একটি প্রধান চালক’ এটি উল্লেখ করেন তিনি।

যদিও আল-কায়েদাকে ধ্বংস করার জন্য মার্কিন যুদ্ধের বেশিরভাগই আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানে কেন্দ্রীভূত থাকলেও মধ্যপ্রাচ্যেও তারা তাদের কার্যক্রম ও জোটগত তৎপরতা চালিয়ে গেছে। আর অতি সম্প্রতি মার্কিন সমর্থিত একটি বৈশ্বিক জোট সিরিয়া ও ইরাকে তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে ইসলামিক স্টেট (আইএস) গোষ্ঠীকে তাড়িয়ে দিতে স্থানীয় বাহিনীকে সমর্থন করেছে।

২০১৯ সালে দলটির প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদি উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় মার্কিন বিশেষ বাহিনীর অভিযানের সময় আত্মহত্যা করেন। এছাড়াও এই অঞ্চলটি হামাস এবং হেজবুল্লাহসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশ কর্তৃক সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ আরও কয়েকটি গোষ্ঠীর আবাসস্থল। এলগিন্ডি বলেন, এই অঞ্চলে মার্কিন উপস্থিতি আইএস এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলোর জন্য ‘নিয়োগের একটি প্রধান হাতিয়ার’।

ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ নাতাশা হল বলেন: ‘দুঃশাসন, আত্মনিয়ন্ত্রণের অভাব আর মধ্যপ্রাচ্যে অত্যাচার ও সাম্রাজ্যবাদের ধারণার কারণেই সন্ত্রাসবাদ বিদ্যমান।’ ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন সন্ত্রাসবাদের উপসর্গ দমনের চেষ্টা করে, কারণগুলোর সমাধান করে না। ফলে অনুমিতভাবেই তা অব্যাহত থাকে এবং বৃদ্ধি পায়,’ যুক্ত করেন তিনি।

ইসরায়েল

গত ৬০ বছরের বেশিরভাগ সময়ই ইসরায়েলের নিরাপত্তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে শীর্ষ-স্তরের অগ্রাধিকার পাচ্ছে, বলেন এলগিন্ডি। আদর্শিক মিলের পাশাপাশি মার্কিন নেতাদের উপর অভ্যন্তরীণ শক্তিশালী রাজনৈতিক চাপও ইসরায়েলকে সমর্থনে ভূমিকা রেখেছে।

এসওএএসের আকসার বলেন, ইসরায়েলের প্রতি ওয়াশিংটনের অব্যাহত সমর্থনও একটি ‘অত্যন্ত দক্ষ’ বিনিয়োগ। এতে করে যুক্তরাষ্ট্র অঞ্চলটিতে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক মিত্র পেয়েছে। অবশ্য অতি সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন এবং তার আগে মিশরসহ ইসরায়েলের প্রতিবেশী আরব দেশগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ শান্তি চুক্তিতে মধ্যস্থতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

এলগিন্ডির মতে, বর্তমান ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আরও সরাসরিভাবে সম্পৃক্ত করেছে। যেমন ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে যুদ্ধজাহাজ পাঠানো কিংবা এপ্রিলে ইসরায়েলের উপর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করা।

তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের প্রতি বাইডেনের ব্যক্তিগত এবং আদর্শিক প্রতিশ্রুতি ‘তর্কসাপেক্ষে ইতিহাসের যেকোনো মার্কিন রাষ্ট্রপতিকে ছাড়িয়ে গেছে’, যা ‘তার নীতির দ্বন্দ্বকে’ ব্যাখ্যা করে।

‘বর্তমান গাজা যুদ্ধের আচরণ এবং লক্ষ্য- দুটো বিষয়ের কারণেই যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসায়েলের মধ্যে গুরুতর এবং ক্রমবর্ধমান পার্থক্য সৃষ্টি হওয়া সত্ত্বেও বাইডেন প্রশাসন কার্যত প্রতিটি পর্যায়ে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের জন্য প্রায় সীমাহীন সামরিক, রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক সমর্থন প্রদান করে গেছে,’ বলেন তিনি।

নাতাশা হল মনে করেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফিরে গেলে বর্তমান মার্কিন সমর্থনের পরিবর্তন হবার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু তিনি বিশ্বাস করেন ইসরায়েলের প্রতি বর্তমান মার্কিন সমর্থনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ভণ্ডামির জন্য চ্যালেঞ্জ’ মোকাবিলা করে ‘আগামী বছর ও দশকগুলোতে ভূ-রাজনৈতিকভাবে চড়া মূল্য দিতে হবে’।

এরপর কী?

মধ্যপ্রাচ্যকে যুক্তরাষ্ট্রের কতটা অগ্রাধিকার দেয়া উচিত তা নিয়ে ভিন্ন মত আছে। এলগিন্ডি বলছেন তিনি ‘অদূর ভবিষ্যতের কোনো সময়ে’ অঞ্চলটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাবার সম্ভাবনা দেখছেন না। এটি করার জন্য মার্কিন-ইসরায়েল সম্পর্কের পুনর্মূল্যায়নসহ ‘এক ধরনের প্যারাডাইম শিফট’ বা কাঠামোর পরিবর্তন প্রয়োজন, বলে মনে করেন তিনি।

এদিকে আকসারের মতে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্থান যে শূন্যতা তৈরি করবে, চীন ও রাশিয়া তা পূরণ করতে পারে।’ তবে মধ্যপ্রাচ্যে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে মার্কিন নাগরিকদের মধ্যে সীমিত আগ্রহের কথা মাথায় রেখে অঞ্চলেটিতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের মতো দূরবর্তী যুদ্ধের জন্য নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর দিকেই যুক্তরাষ্ট্র নজর দিচ্ছে বলে মত এই বিশ্লেষকের।

ওয়াশিংটন ডিসির থিঙ্ক ট্যাঙ্ক স্টিমসন সেন্টারের কেলি এ গ্রিয়েকোর মতো কারো কারো মতে, মধ্যপ্রাচ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার করা উচিত। এতে করে ‘ইন্দো-প্যাসিফিকের মতো যে জায়গাগুলোতে’ প্রয়োজন, সেখানে এই সম্পদ স্থানান্তর করা যাবে।

তিনিও মনে করেন, মার্কিন হস্তক্ষেপের ফলে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র-বিরোধী মনোভাব তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন সমর্থন এই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তিকে ‘আরও একটি ধাক্কা দিয়েছে’।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
toto slot
bacansport
slot gacor
slot toto