Bangladesh

মনোনয়নে থাকবে চমক: আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাই শুরু আজ, প্রতি আসনে গড়ে ১১ জন করে মনোনয়ন চেয়েছে

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনোনয়নে বেশকিছু চমক থাকবে। অনেক আসনে আসবে নতুন মুখ। প্রার্থী তালিকায় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, সাবেক আমলা, সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের শীর্ষ ব্যক্তি স্থান পেতে পারেন।

পাশাপাশি দলের জনপ্রিয় ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির তরুণ নেতারা মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন। অন্যদিকে বিতর্কিত মন্ত্রী-এমপিসহ স্থানীয়ভাবে জনবিচ্ছিন্ন নেতাদের প্রার্থী হিসাবে বিবেচনা না করার বিষয়ে দেওয়া হবে বিশেষ গুরুত্ব। পাশাপাশি বয়সের কারণে বাদ পড়বেন বেশ কয়েকজন বর্তমান এমপি। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য। 

আরও জানা গেছে, প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ অনেকটাই এগিয়ে রেখেছেন দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিভিন্ন সংস্থার জরিপ, দলের সাংগঠনিক রিপোর্ট, অতীতে আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা, তৃণমূলে দল ও সাধারণ ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্যতাসহ নানা বিষয় বিবেচনায় নিয়েই প্রয়োজনীয় নম্বর দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে যারা এগিয়ে থাকবেন, তারাই মনোনয়ন পাবেন। এসব বিষয় মাথায় রেখে সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থী বাছাই শুরু করবে আজ।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, কাল (আজ বৃহস্পতিবার) আমাদের মনোনয়ন বোর্ডের সভা। এখন আর কোনো জল্পনা-কল্পনার সুযোগ নেই। যারা দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন, তাদের মধ্যে যোগ্যদেরই বিবেচনা করব। 

সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনের তারকা, সাবেক আমলা ও বিভিন্ন পেশাজীবীদের মনোনয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা তো ভালো। তারা আমাদের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, প্রতি আসনে গড়ে ১১ জন করে ফরম কিনেছেন, তাদের মধ্যে কিন্তু ১০ জনই বাদ পড়বেন। একজনকে আমরা মনোনয়ন দেব। এর সঙ্গে আমাদের জোট রয়েছে। তাদের কয়টা আসন দেওয়া হবে, ফলে সবকিছু যাচাই-বাছাই ও বিবেচনা করেই মনোনয়ন দেওয়া হবে।

দলীয় প্রার্থী ঠিক করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বুধবার আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের মনোনয়ন প্রক্রিয়া গণতান্ত্রিক। আমরা অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র অনুসরণ করি। জনমত জরিপ, সরকারি জরিপ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব একটা সেল আছে। সব মিলিয়ে যার নম্বর বেশি তাকেই মনোনয়নের জন্য বিবেচনা করা হয়। সব বিবেচনা করেই গ্রহণযোগ্য প্রার্থীকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে। শরিক ও জোটের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে তিনি বলেন, ১৪ দলের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে প্রার্থিতা ঠিক করা হবে।
কার সঙ্গে কার নির্বাচনি সমীকরণ হয়-সেটা মনোনয়ন প্রত্যাহার পর্যন্ত চলবে।

প্রসঙ্গত, জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩৩৬২টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে আওয়ামী লীগ। গত মঙ্গলবার এই প্রক্রিয়া শেষ হয়। সেখানে দেখা গেছে, ৩০০ আসন হিসাবে প্রতিটিতে গড়ে ১১ জনের বেশি মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন। দলীয় নেতা-মন্ত্রী ছাড়াও সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনের অন্তত ১৭ জন তারকা মনোনয়ন পেতে চান। 

এছাড়া ১৩ সাবেক আমলা ও ১৪ জন সাবেক সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের অন্তত অর্ধশত শীর্ষ নেতা আওয়ামী লীগের ফরম কিনেছেন। এছাড়া জেলা পরিষদ ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ক্ষমতাসীন দলের শতাধিক স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি নৌকার প্রার্থী হতে চান। এর বাইরে জোটের (১৪ দল) দুই শরিক দলের চার নেতাও আওয়ামী লীগের দলীয় ফরম কিনেছেন। 

বিনোদন তারকাদের মধ্যে নীলফামারী-২ আসনে বরেণ্য অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর, মানিকগঞ্জ-২ আসনে কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম আওয়ামী লীগের মনোনয়নে বর্তমানে সংসদ-সদস্য হিসাবে আছেন। তাদের সঙ্গে এবার আরও অন্তত ১০ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য ফরম কিনেছেন। 

তারা হলেন-চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি, ঝিনাইদহ-১ আসনে সিমলা, ফেনী-৩ আসনে অভিনেত্রী শমী কায়সার, বরিশাল-৩ আসনে নায়ক মাসুদ পারভেজ রুবেল, ঢাকা-১০ আসনে অভিনেতা ড্যানি সিডাক, ঢাকা-১৭ ও টাঙ্গাইল-১ আসনে অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান, পাবনা-৫ আসনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছেলে, প্রযোজক ও অভিনেতা আরশাদ আদনান রনি, বাগেরহাট-৩ আসনে চিত্রনায়ক শাকিল খান, ঢাকা-৮ আসনে কণ্ঠশিল্পী এসডি রুবেল, ফেনী-৩ আসনে রোকেয়া প্রাচী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।

সাংস্কৃতিক অঙ্গন ছাড়াও দেশে ক্রীড়াঙ্গনের জনপ্রিয় তারকারাও আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চান। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন-বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক-মাশরাফি বিন মুর্তজা (নড়াইল-২) ও নাঈমুর রহমান দুর্জয় (মানিকগঞ্জ-১), সাবেক ফুটবলার আব্দুল সালাম মুর্দেশী (খুলনা-৪) এবং জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আরিফ খান জয় (নেত্রকোনা-১)। 

এছাড়া ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে আলোচিত নাম বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এবার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। ঢাকা-১০, মাগুরা-১ ও ২ আসনে নৌকার প্রার্থী হতে চান তিনি।

সাবেক আমলাদের বেশ কয়েকজন বর্তমানে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ-সদস্য রয়েছেন। তাদের মধ্যে মহীউদ্দীন খান আলমগীর, আবুল হাসান মাহমুদ আলী, সাজ্জাদুল হাসান, মঞ্জুর হোসেন এবং এমএ মান্নান এবারও মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। এর বাইরে আরও অন্তত নয়জন সাবেক আমলা আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। 

তারা হলেন-জামালপুর-৫ আসনে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ। সুনামগঞ্জ-২ আসনে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যান ও নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব মোহাম্মদ সাদিক, খুলনা-১ আসনে সাবেক সচিব প্রশান্ত কুমার রায়, ভোলা-৪ আসনে সাবেক সচিব মেজবাহ উদ্দিন, নওগাঁ-৩ আসনে সাবেক সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, চাঁদপুর-১ আসনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব গোলাম হোসেন, চাঁদপুর-৫ আসনে শাহ কামাল, বরগুনা-১ আসনে মিহির কান্তি মজুমদার।

পুলিশের যেসব সাবেক কর্মকর্তা মনোনয়ন ফরম কিনেছেন তারা হলেন-কিশোরগঞ্জ-২ আসনে বর্তমান এমপি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) নূর মোহাম্মদ, শরীয়তপুর-১ আসনে সাবেক আইজিপি একেএম শহীদুল হক, বরিশাল-৫ আসনে মাহবুব উদ্দিন (এসপি মাহবুব), যিনি মুজিবনগর সরকারকে গার্ড অব অনার দিয়েছিলেন, কিশোরগঞ্জ-২ আসনে সাবেক ডিআইজি আবদুল কাহার আকন্দ, সাতক্ষীরা-৪ আসনে সাবেক সিনিয়র এএসপি শেখ আতাউর রহমান এবং সাবেক এসপি হাবিবুর রহমান, জামালপুর-১ আসনে সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মোখলেসুর রহমান, ময়মনসিংহ-৮ আসনে সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি আবদুর রহিম এবং সাতক্ষীরা-৪ আসনে সাবেক সিনিয়র এএসপি শেখ আতাউর রহমান। 

সাবেক সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা বর্তমান সংসদে রয়েছেন, তারাও এবার মনোনয়ন চেয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন-লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, জাহিদ ফারুক শামীম, নাসির উদ্দিন, ক্যাপ্টেন এবি তাজুল ইসলাম ও সুবিদ আলী ভূঁইয়া। এছাড়া পটুয়াখালী-৩ থেকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবির) সাবেক ডিজি আবুল হোসেন নৌকার মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। 

বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান শীর্ষ নেতাদের মধ্যে রয়েছেন- ঢাকা-৭ আসনে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, টাঙ্গাইল-৩ আসনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডা. কামরুল হাসান খান, রাজবাড়ী-২ আসনে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সাবেক সভাপতি ডা. এম ইকবাল আর্সলান, ময়মনসিংহ-৪ ও ৯ আসনে স্বাচিপের সাবেক মহাসচিব ডা. এমএ আজিজ, সিলেট-৩ আসনে বিএমএ মহাসচিব এহতেশামুল হক চৌধুরী, ফরিদপুর-৩ আসনে এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি একে আজাদ, কুমিল্লা-৩ আসনে এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন, এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি একেএম জসিম উদ্দিন ঢাকা-১৭ আসনে, বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সভাপতি প্রকৌশলী আবদুস সবুর কুমিল্লা-১ আসন এবং সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার এসএম মনজুরুল হক মঞ্জু বরিশাল-৬ আসন থেকে নৌকার মনোনয়ন পেতে চান।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁদপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান। একই আসন থেকে তিনি এবারও দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন। এছাড়া ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী ফেনী-২ আসনে এবং বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম কুমিল্লা-১০ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।

এদিকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক ইসিতে নিবন্ধন নেই-এমন দুটি দলের চার নেতা নৌকার প্রার্থী হতে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। তাদের মধ্যে নড়াইল-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন ১৪ দলীয় জোটের শরিক গণআজাদী লীগের সভাপতি এসকে সিকদার এবং বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের তিন নেতা-সভাপতি রেজাউল রশিদ খান সিরাজগঞ্জ-৬ আসনে, সদস্য হামিদুল, সুনামগঞ্জ-২ আসনে ও সদস্য মো. বকুল হোসেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে। এর বাইরে ১৪ দলীয় জোটের কয়েকটি দল নিজেদের মতো করে ফরম বিতরণ করেছে। দলীয় প্রার্থী বাছাইয়ের পরে জোটের নেতাদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করবে ক্ষমতাসীনরা। এর সঙ্গে এবার নতুন কিছু দলও নির্বাচনি মাঠে রয়েছে। প্রার্থী বাছাইয়ে এ বিষয়টিও মাথায় রাখছে আওয়ামী লীগ। 

গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছিলেন-এমন কয়েকজন কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী নেতা এবারও দলীয় মনোনয়ন কিনেছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ একাধিক আসনে ফরম কিনেছেন। তাদের সঙ্গে আছেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বর্তমান ও সাবেক অনেক নেতা। 

এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে বড় অংশ রয়েছে তরুণ প্রজন্ম। বিশেষ করে সাবেক ছাত্রনেতাদের অনেকেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। প্রতিটি নির্বাচনেই সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্য থেকে অনেককেই দলীয় মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাওয়া নির্বাচনি যুদ্ধে এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না।

এদিকে বেশ কয়েকটি আসনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী রয়েছেন। অর্থাৎ দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার পক্ষে গোপালগঞ্জ-৩ ও রংপুর-৬ আসনের জন্য মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন দলটির নেতারা। একই তালিকায় রয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কার্যনির্বাহী সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সালাউদ্দিন ও শেখ তন্ময়। 

উলটো চিত্রও রয়েছে। কুমিল্লা-৫ আসনে ২৪ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী ফরম জমা দিয়েছেন। বরগুনা-১ আসনে ২২ জন দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে দলীয় মনোনয়ন ফরম উত্তোলন ও জমা দিয়েছেন ১৪ জন। এছাড়া একই আসনে বাবা-ছেলে, স্বামী, স্ত্রী, ভাইবোনসহ পরিবার ও আত্মীয়দের মধ্যে ফরম কিনেছেন অনেক আসনেই। বিশেষ করে বাবা বর্তমানে এমপি, সেই আসনে সন্তানও মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। 

পাবনা-৪ আসনে দলীয় মনোনয়নের জন্য প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর দুই ছেলে ও মেয়ে, জামাতাসহ চারজন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তারা হলেন-বড় মেয়ে মাহজেবিন শিরিন পিয়া, দুই ছেলে গালিবুর রহমান শরীফ, সাকিবুর রহমান শরীফ, জামাতা আবুল কালাম আজাদ মিন্টু। ঠাকুরগাঁও-২ আসনে দবিরুল ইসলাম এবং তার ছেলে, মেজো ভাই, ভাতিজাসহ চারজন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। 

দবিরুলের বড় ছেলে মাজহারুল ইসলাম সুজন, মেজো ভাই মোহাম্মদ আলী এবং ভাতিজা আলী আসলাম জুয়েলও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ঢাকা-৭ আসন থেকে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন হাজি মো. সেলিম ও তার দুই ছেলে সোলায়মান সেলিম ও ইরফান সেলিম। এছাড়া গাজীপুর-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের নেতা প্রয়াত রহমত আলীর মেয়ে রুমানা আলী টুসি ও ছেলে জামিল হাসান দুর্জয় ফরম কিনেছেন। কক্সবাজার-৩ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের সঙ্গে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী হয়েছেন তার বোন নাজনীন সরওয়ার কাবেরী এবং ভাই সোহেল সরওয়ার কাজল। 

আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন জেলা পরিষদ সদস্য দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ফরম কিনেছেন। কয়েকজন উপজেলা চেয়ারম্যান পদত্যাগ করে সংসদ নির্বাচনের ফরম কিনেছেন। ঢাকার ১৩ জন বর্তমান কাউন্সিলরসহ শতাধিক জনপ্রতিনিধি আওয়ামী লীগের ফরম কিনেছেন। দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন অতীতের বিভিন্ন নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করা নেতারাও। দলীয় মনোনয়নের দৌড়ে এবার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী প্রার্থী রয়েছেন। বর্তমান এমপিদের সঙ্গে সাবেক ও বর্তমান সংরক্ষিত নারী আসনের এমপিরাও দলের মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করেছেন। আওয়ামী লীগের নারী সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগ ও যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের বিভিন্ন পর্যায়ের নারী নেত্রীরা মনোনয়ন চেয়েছেন। 

সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক : আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক ডাকা হয়েছে আজ সকাল ১০টায়। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের অফিসে অনুষ্ঠেয় এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন দলের সভাপতি ও মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি শেখ হাসিনা। প্রথম দিনের বৈঠকে রাজশাহী, খুলনা ও রংপুর বিভাগের সংসদীয় আসনগুলোর মনোনয়ন চূড়ান্ত করার প্রস্তুতি রয়েছে। এরপর মনোনয়ন বোর্ডের মুলতবি বৈঠকে অন্য বিভাগগুলোর প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d