মন্ত্রীদের কঠোর হুশিয়ারি, তবুও নিত্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দরে
অসাধু সিন্ডিকেটের কারসাজিতে প্রতি সপ্তাহে কোনো না কোনো নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি যেন ‘স্থায়ী সংস্কৃতি’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঠকছেন সাধারণ ভোক্তা। এই মুহূর্তে সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও কোনো কারণ ছাড়াই নিত্যপণ্য বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দরে। চাল নিয়ে করা হচ্ছে চালবাজি।
ব্রয়লার মুরগি থেকে শুরু করে সব ধরনের সবজি, আদা-রসুন, মাছ-মাংস, চিনি ও ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়ে ক্রেতাকে জিম্মি করা হচ্ছে। এমনকি আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে গত ডিসেম্বর থেকেই বাড়তে শুরু করেছে ৬ পণ্যের দাম। বাজার ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার জন্যই মূলত এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে-এমন মন্তব্য সংশ্লিষ্টদের।
তাদের মতে, বছরের পর বছর এমন অবস্থা চললেও সরকারের একাধিক সংস্থা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। শুধু হাঁকডাকের মধ্যেই তাদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রেখেছে। এতে বাজারে ক্রেতাসাধারণ প্রতারিত হচ্ছেন। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বছরে কয়েক দফায় ভোক্তার পকেট কাটছে সেই চিহ্নিত সিন্ডিকেট সদস্যরা। তারা হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার কোটি টাকা।
ভোক্তাসাধারণ বলছেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো সভা করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও বাজারে কোনো প্রতিফলন নেই। পাশাপাশি একাধিক মন্ত্রীর কঠোর হুশিয়ারির পরও ইতিবাচক ফল আসছে না।
এদিকে চলতি মাসে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। দলটির পক্ষ থেকে এবারের নির্বাচনি ইশতেহারেও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। সরকার গঠনের পরই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন।
পাশাপাশি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়সহ একাধিক মন্ত্রণালয় পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে এক হয়ে কাজ করছে। মন্ত্রণালয়ের সভাশেষে সংশ্লিষ্ট একাধিক মন্ত্রী পণ্যমূল্য কমাতে বাজারে অসাধুদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিচ্ছেন। কিন্তু প্রভাব নেই বাজারে।
রাজধানীর একাধিক খুচরা বাজার ঘুরে ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নভেম্বরে প্রতিকেজি চিনি ১৩৫ টাকা বিক্রি হলেও চলতি বছর জানুয়ারিতে ১৪৫-১৫০ একই দামে চিনি বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিকেজি ভালোমানের মসুর ডাল নভেম্বরে বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকা। আর জানুয়ারিতে ১৪০ টাকা। প্রতিকেজি ছোলা নভেম্বরে বিক্রি হয়েছে ৮৫ টাক
জানুয়ারিতে দাম বেড়ে ১০০-১১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ভোজ্যতেলের মধ্যে প্রতিলিটার খোলা সয়াবিন তেল নভেম্বরে বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা, আর জানুয়ারিতে দাম বেড়ে ১৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। বোতলজাত সয়াবিন তেলের মধ্যে নভেম্বরে প্রতিলিটার বিক্রি হয়েছে ১৬৮ টাকা, জানুয়ারিতে বিক্রি হয়েছে ১৭২-১৭৩ টাকা। পাম সুপার প্রতিলিটার নভেম্বরে বিক্রি হয়েছে ১৩৫ টাকা, জানুয়ারিতে আরেক ধাপ বেড়ে ১৪২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। নভেম্বরে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ১৩০ টাকা বিক্রি হলেও ডিসেম্বরে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়।
তবে দেশি জাত বাজারে আসায় দাম কিছুটা কমে রোববার পর্যন্ত ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি হলেও বুধবার বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা। জানতে চাইলে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণের কথা শুধু মুখে বললে হবে না। এর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
আগে সাশ্রয়ী মূল্যে মানুষের হাতে নিত্যপণ্য দিতে হবে। পণ্যের দামে লাগাম টানতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সেগুলো ঠিকমতো নেওয়া হচ্ছে না। তিনি জানান, বর্তমানে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষ যে খুব কষ্টে আছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশেষ করে বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ ও নিম্নআয়ের মানুষ বেশি কষ্টে রয়েছে। তাই বাজার ব্যবস্থাপনা ঠেলে সাজিয়ে পণ্যমূল্য সহনীয় করতে হবে।
গোলাম রহমান আরও বলেন, বাজার ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার জন্য একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর কারসাজিতে বছরের পর বছর ভোক্তারা ঠকছেন। সংস্থাগুলো জানে কে বা কারা পণ্যের দাম নিয়ে কারসাজি করছে। একাধিকবার তারা সেটা চিহ্নিত করেছে। কিন্তু অসাধুদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
সম্প্রতি রোজানির্ভর পণ্যের এলসি খুলতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ঋণ যেমন সরবরাহ ঋণ বা সায়াপ্লায়ার্স ক্রেডিট, ট্রেড ক্রেডিট বা বায়ার্স ক্রেডিটের আওতায় রোজানির্ভর পণ্য আমদানির এলসি খোলার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী মার্চ পর্যন্ত সময় দিয়েছে। ওই সময়ের মধ্যে এসব পণ্য আমদানিতে ঋণনির্ভর এলসি খোলা যাবে। এছাড়া যেসব নিত্য বা রোজানির্ভর পণ্য ইতোমধ্যে আমদানি হয়েছে বা এলসির দায় পরিশোধের সময় এসেছে সেগুলোর দেনা ব্যাংক বা উদ্যোক্তারা পরিশোধের জন্য ডলারের সংস্থান করতে না পারলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে জোগান দিচ্ছে।
এদিকে গত বছর নভেম্বর ও ডিসেম্বরে ৫৯৫ টাকা কেজিতে গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে। ফলে ভোক্তা অধিদপ্তর থেকেও মাংসের দাম সহনীয় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। এতে কম দামে পাওয়ায় অনেক নিম্নআয়ের মানুষ মাংস কিনতে পারে। কিন্তু ফের কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়ে যাওয়ায় নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে গরুর মাংস।
বুধবার রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৭৫০ টাকা। যা দুই সপ্তাহ আগেও ৬০০-৬৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০-২০০ টাকা। প্রতিকেজি লেয়ারে মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা।
এছাড়া সবজির ভড়া মৌসুমেও মাঝারি আকারের প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। করলা প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা। প্রতিকেজি কাঁচামরিচ ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিকেজি ধুন্দুলের দাম ১০ টাকা বেড়ে ৮০-৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আলুর কেজি ৫৫-৬৫ টাকা, প্রতিকেজি বেগুন ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর বড় আকারের প্রতিপিস লাউ ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে টমেটোর কেজি রাখা হচ্ছে ৬০-৯০ টাকা। শিম কিনতে ক্রেতার কেজিপ্রতি খরচ হচ্ছে ৭০-৯০ টাকা। আর শিমের বিচি বিক্রি হচ্ছে কেজি ২০০ টাকায়।
সম্প্রতি জবাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, আসন্ন রমজান মাসের আগে সব নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। রমজান উপলক্ষ্যে যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্য মজুত আছে। ভারত দীর্ঘদিন রপ্তানি বন্ধ করে রেখেছিল। ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। রমজান মাসের আগেই ভারত বাংলাদেশে চিনি ও পেঁয়াজ রপ্তানি করবে। আগে শুল্ক বেশি ছিল এখন সেটা কমিয়ে আনা হবে। এছাড়া ব্রাজিল ও বিভিন্ন দেশ থেকে চিনিসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্য সামগ্রী আমদানি করা হবে। টিসিবির মাধ্যমেও রোজায় সারা দেশে খাদ্যপণ্য বিতরণ করা হবে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বেঁধে দেওয়া মূল্যে ব্যবসায়ীরা পণ্য বিক্রি করছেন না। সরকারি সংস্থাগুলো পণ্যের যে মূল্য প্রকাশ করে তার সঙ্গেও বাজারে মিল নেই। চাহিদা ও সরবরাহের তথ্যেও রয়েছে গরমিল। পণ্যমূল্যের তালিকা প্রতিটি বাজারে প্রতিদিন হালনাগাদ করার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না।
কেনাবেচায় লিখিত রসিদ থাকার কথা থাকলেও তার হদিস মিলছে না। এছাড়া চাহিদা অনুযায়ী আমদানি পণ্যের এলসি খোলা বা দেশে আনার বিষয়টিতেও নেই যথাযথভাবে তদারকি। বাজার মনিটরিংয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে নেই সমন্বয়। এসব মিলে বাজার ব্যবস্থাপনায় চলছে বিশৃঙ্খলা। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ভোক্তাদের। পণ্য কিনতে হচ্ছে চড়া দামে।
সূত্র জানায়, এসব পরিস্থিতি থেকে ভোক্তাকে রক্ষা করতে সরকারের একাধিক বাজার তদারকি সংস্থা কাজ করছে। এর মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তদারকি সেল, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, কৃষি মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, বিএসটিআই, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর, সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন, র্যাবসহ সরকারের অন্য সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে।
এছাড়া এসব সংস্থা নিজস্ব আইনে বাজার তদারকি করছে। তারপরও বাজারে কোনো ধরনের শৃঙ্খলা আনা সম্ভব হয়নি। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, অধিদপ্তর তার সক্ষমতা অনুযায়ী বাজারে তদারকি অভিযান পরিচালনা করছে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দফায় দফায় সভা করছেন। ব্যবসায়ীদের দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। কোনো অনিয়ম পেলে সঙ্গে সঙ্গে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। বাজারে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (বাজার সংযোগ ১) প্রণব কুমার সাহা বলেন, অধিদপ্তর থেকে পণ্যের যৌক্তিক মূল্য বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। সেই দামে পণ্য বিক্রি হচ্ছে কিনা তা দেখতে একজন ম্যাজিস্ট্রেটসহ টিম নিয়ে বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি পণ্য বিপণন ব্যবস্থায় কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হলে তা রোধ করা হচ্ছে। অনিয়ম পেলে কৃষি বিপণন আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
Good way of explaining, and pleasant paragraph to obtain information about my presentation focus, which i am going to convey in university.
Review my page – vpn special coupon code – http://vpnspecialcouponcode.wordpress.com/
–
Hello, just wanted to mention, I loved this
post. It was inspiring. Keep on posting!
My web site :: how vpn works
It’s in fact very complicated in this active life to listen news on TV, thus I just use world wide web for that purpose, and obtain the most up-to-date information.
Feel free to visit my blog post; vpn special offer
Excellent blog you have here but I was curious if you knew of any discussion boards that cover the same topics discussed here?
I’d really love to be a part of community where I can get feed-back from other experienced people that share
the same interest. If you have any recommendations, please
let me know. Thanks a lot!
My homepage vpn coupon code ucecf
We’re a gaggle of volunteers and starting a brand new scheme in our community.
Your web site provided us with useful information to work on. You have done a formidable activity and
our entire community will be grateful facebook vs eharmony to find love online you.
Hello there, You’ve done an incredible job. I will definitely digg it and personally recommend to my friends.
I am confident they’ll be benefited from this web site.
My web-site; eharmony special coupon code 2024
I’m not that much of a online reader to be honest but your blogs really nice, keep
it up! I’ll go ahead and bookmark your site to come back in the future.
All the best
My blog post – nordvpn special coupon code 2024