মহাকাশে নোভা বিস্ফোরণ দেখার অপেক্ষায় পৃথিবীবাসী
মহাকাশ মানেই যেন চমক। বিশাল মহাকাশজুড়ে প্রতিনিয়ত দেখা যায় নানা ধরনের মহাজাগতিক ঘটনা। কোনো কোনো ঘটনা স্বাভাবিক, প্রায় সব সময় দেখা যায়। আবার কিছু ঘটনা অনেক বছর পরপর দেখা যায়। কখনো আবার ঘটনাগুলো কয়েক শতকের মধ্যে একবারই চোখে পড়ে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ আমরা পৃথিবী থেকে যে নোভার ঝলক দেখতে পাব, তা আসলে দুই হাজার বছর আগে বিস্ফোরিত হয়েছিল। সেই বিস্ফোরণের আলো এ বছরের শেষ নাগাদ আমাদের পৃথিবীতে এসে পৌঁছাবে। ১৮৬৬ ও ১৯৪৬ সালে দুটি নোভার ঘটনা পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
একসময় ভাবা হতো, মহাকাশের সব নক্ষত্রই স্থির ও অপরিবর্তনীয়। অতীতের বিভিন্ন ঐতিহাসিক দলিলে বিভিন্ন মহাজাগতিক ঘটনার কথা বলা হয়েছে। প্রাচীন চীনা জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা একটি অতিথি তারার কথা লিপিবদ্ধ করেছিলেন। ১০৫৪ সালের ৪ জুলাই আকাশে একটি তারার ঝলকের কথা জানা যায়। সেই উজ্জ্বল ঝলক পরবর্তী ২৩ দিনের জন্য দিনের বেলায়ও দৃশ্যমান ছিল বলে জানা যায়। সেই তারার ঝলক জাপান, চীন ও মধ্যপ্রাচ্যের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরাও সে সময় পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। এবার বহু শতক পরে ২০২৪ সালের টি করোনো বোরেইলিস বা টি সিআরবি নামক নক্ষত্র সিস্টেমে এমনই একটি নোভার বিস্ফোরণ দেখা যাবে। যদিও এটি ১০৫৪ সালের তারার ঝলকের মতো দর্শনীয় হবে না বলে জানিয়েছেন জ্যোতির্বিদেরা।
১৫৭২ সালে ডেনমার্কের বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী টাইকো ব্রাহে ক্যাসিওপিয়া নক্ষত্রমণ্ডলে নতুন তারা পর্যবেক্ষণ করার পর ‘ডি নোভা স্টেলা’ বা ‘অন দ্য নিউ স্টার’ রচনায় তুলে ধরেন। পরবর্তীকালে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ‘নোভা’ শব্দটিকে নাক্ষত্রিক বিস্ফোরণের ঘটনা বর্ণনার ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকেন। একটি নক্ষত্রের জীবন কীভাবে শেষ হবে, তা তারার ভরের ওপর নির্ভর করে। খুব বৃহদাকার নক্ষত্র বা আমাদের সূর্যের ভরের আট গুণের বেশি হলে নাটকীয় সুপারনোভা বিস্ফোরণ ঘটে থাকে। এমনই বিস্ফোরণ ১০৫৪ ও ১৫৭২ সালে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল।