Science & Tech

মহাকাশ ছুঁয়ে ফিরে এলেন ছয় নারী, অনুপ্রেরণার গল্প বললেন কেটি পেরি

মহাকাশযাত্রায় অংশ নিয়ে ইতিহাস গড়েছেন ছয় নারী। তাদের একজন মার্কিন পপতারকা কেটি পেরি। জেফ বেজোসের মালিকানাধীন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্লু অরিজিনের ‘নিউ শেপার্ড’ নামের মহাকাশযানে তারা এই অভিযান সম্পন্ন করেন।

বাংলাদেশ সময় সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম টেক্সাসে অবস্থিত ব্লু অরিজিনের উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে যাত্রা শুরু করে এই ক্যাপসুল। কেটি পেরির পাশাপাশি এতে ছিলেন—জেফ বেজোসের বাগদত্তা লরেন সানচেজ, সাংবাদিক গেইল কিং, নাসার প্রকৌশলী আয়েশা বোয়ে, অধিকারকর্মী আমান্ডা নুয়েন ও প্রযোজক কেরিয়ান্ন ফ্লিন।

মহাকাশযানটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার ওপরে, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কারমান রেখা পর্যন্ত উঠে যায়। সেখানে প্রায় ৩ মিনিট কাটিয়ে মোট ১১ মিনিটের সফল ভ্রমণ শেষে তারা নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরে আসেন। এই অভিযানকে ঐতিহাসিক বলা হচ্ছে, কারণ এটি ছিল প্রথম কোনো একক নারী দল নিয়ে মহাকাশ অভিযান।

ব্লু অরিজিন জানিয়েছে, এ মিশনের লক্ষ্য হলো বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা—বিশেষ করে স্টেম (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত)—এ নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করা। পুরো যাত্রাটি ছিল স্বয়ংক্রিয়, কোনো চালক ছাড়াই পরিচালিত হয়।

যাত্রাপথে মহাকাশের ভারহীন পরিবেশ উপভোগ করেন এই ছয় নারী। তারা তাদের আসন থেকে উঠে জানালার পাশে গিয়ে পৃথিবীর দৃশ্য অবলোকন করেন। এটি ছিল ব্লু অরিজিনের ১১তম মানববাহী মহাকাশ মিশন, তবে প্রতিষ্ঠানটি মহাকাশ সফরের খরচ এখনো প্রকাশ করেনি।

ভ্রমণ শেষে অভিজ্ঞতা জানিয়ে কেটি পেরি বলেন, আমি এখন জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত বোধ করছি, ভালোবাসার অনুভবটাও অনেক প্রবল। এই যাত্রা থেকে ফিরে একটি গান লেখার ইচ্ছা আছে আমার। এটি ছিল অজানার সামনে আত্মসমর্পণের এক অপূর্ব মুহূর্ত।

অন্যদিকে লরেন সানচেজ বলেন, উপরে থেকে পৃথিবীটাকে যেন অনেক বেশি শান্ত ও সুন্দর মনে হচ্ছিল।

এ মহাকাশ অভিযানে অংশগ্রহণকারীদের অভিনন্দন জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান প্রধান ও মহাকাশ উদ্যোগের অন্যতম উদ্যোক্তা জ্যারেড আইজ্যাকম্যান।

ফরাসি সাময়িকী আলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কেটি পেরি বলেন, এই যাত্রায় অংশ নেওয়ার পেছনে আমার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা ছিল আমার মেয়ে ডেইজি। আমি চাই, সে যেন কখনো মনে না করে যে স্বপ্নের কোনো সীমা আছে। মহাকাশে যাওয়ার আগ্রহ নিয়ে কেটি বলেন, রকেট যাত্রা শুরু করলে ডেইজির চোখে আলো ও বিস্ময়ের যে ঝলক ফুটে উঠবে, তা দেখার জন্য আমি রীতিমতো উত্তেজিত।

একটি ভিডিও বার্তায় কেটি পেরি জানান, প্রশিক্ষণের সময় তিনি জেনেছেন, তাদের মহাকাশযানের ক্যাপসুলটির নাম ‘টরটয়েস’। বিস্ময়ের বিষয়, ছোটবেলায় মা–বাবা তাকে যে দুটি আদুরে নামে ডাকতেন, তার একটি ছিল এই ‘টরটয়েস’। বিষয়টি জানতে পেরে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং ব্লু অরিজিনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, এটা কোনো কাকতালীয় ব্যাপার নয় বলেই মনে হয়, আর এ জন্য আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

bacan4d slot toto