মহাজাগতিক ঘটনার স্বাক্ষী বাংলাদেশ, গোলাপি চাঁদ আকাশে
জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে বিশ্বের সব কিছু যেন উলট-পালট হয়ে যাচ্ছে। ৬ ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। এখন আর এই ধারা চলমান নেই। গ্রীস্মের উত্তাপ পাওয়া যায় শীতকালেও। তাই বলা চলে কখন শীতকাল আর কখন হেমন্তকাল সেটা ভুলতে বসেছে নতুন প্রজন্ম। বাংলাদেশের ঋণ পরিবর্তনের মত হাওয়া লেগেছে চাঁদের গাঁয়েও। তাই তো চাঁদও রূপ বদলাতে শুরু করেছে।
গতকাল বুধবার বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে বাংলাদেশের আকাশেও গোলাপি চাঁদের দেখা মিলেছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা গেছে বিশেষ রঙ্গের এ চাঁদ। তবে যে গরম তাতে মানুষের উৎসাহ ছিলো না বিশেষ এই চাঁদ দেখার।
জানা যায়, বুধবার (২৪ এপ্রিল) দেশের আকাশে দেখা যাওয়া গোলাপি রঙের চাঁদের ছবি অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করছেন। তবে যারা দেখতে পাননি তারা তো বিশ্বাসই করতে চাইচেন না। তবে বলে রাখা ভালো চাঁদের যেহেতু নিজস্ব কোনো আলো নাই তাই সে যে কোনো রং ধারণ করতে পারে অন্যের সাহায্যে।
জানা গেছে, বিশ্বের নানা প্রান্তে কয়েক দিন ধরে দেখা গেলেও দেশের আকাশে আজই তা উজ্জ্বলভাবে দেখা যাচ্ছে। গোলাপি এপ্রিলের পূর্ণিমার এ চাঁদের আরও নাম রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- ‘ফিশ মুন’ (মাছ চাঁদ, ‘গ্রাস মুন’ (ঘাস চাঁদ) ও ‘এগ মুন’ (ডিম চাঁদ)।
সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, শুক্রবার ভোর থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত আকাশ ‘গোলাপি চাঁদে’ উজ্জ্বল থাকবে। তবে শনিবার চাঁদের ঔজ্জ্বল্য সবচেয়ে বেশি থাকবে।
এই বিশেষ পূর্ণিমাটি মার্চ মাসে চন্দ্রগ্রহণের ঠিক এক মাস পরে ঘটে। এটি এমন একটি মহাজাগতিক ঘটনা, যখন চাঁদ পৃথিবীর খুব কাছাকাছি আসে। যার কারণে এই সময় চাঁদের আকার বড় ও উজ্জ্বল দেখায়।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছে, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে থাকা অত্যন্ত সূক্ষ্ম ধূলিকণা এবং বিভিন্ন ধরনের গ্যাসের শক্তির কারণে অনেক সময় চাঁদের রঙের দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখা যায়। এ ছাড়া অন্যান্য ধোঁয়া দূষণও পৃথিবীতে আলো পৌঁছাতে বাধা সৃষ্টি করে। পৃথিবীতে আসা আলো তাদের নিজ নিজ তরঙ্গ দৈর্ঘ্য অনুযায়ী অনেক প্রকারে বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়, যার মধ্যে নীল রঙকে সবচেয়ে দ্রুত বিক্ষিপ্ত হতে দেখা যায়। লাল রঙও বহু দূরে যায়।
এই কারণে, যখন চাঁদকে পৃথিবী থেকে দেখা হয় তখন বাদামী, নীল, হালকা নীল, রূপালি, সোনালি, হালকা হলুদ রঙের দেখায়। আর বিভ্রমের কারণে একে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বড়ও দেখায়। জ্যোতির্বিদ্যার ভাষায় একে রিলে স্ক্যাটারিং বা আলোর বিচ্ছুরণও বলা হয়। এপ্রিল মাসে যে পূর্ণিমা দেখা যায় তাকে গোলাপি চাঁদ বলা হয়।