মহাবিশ্বের রহস্য: সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোল
মহাবিশ্বের বুকে লুকিয়ে থাকা রহস্যের মধ্যে অন্যতম হলো সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল। এই দানবাকার বস্তুগুলোর আকর্ষণ শক্তি এতটাই তীব্র যে আলোও তার থেকে পালাতে পারে না। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই দাব ব্ল্যাকহোল সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু তথ্য।
সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাকহোল কী?
সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাকহোল হলো মহাজাগতিক বস্তু যাদের ভর সূর্যের ভরের কয়েক মিলিয়ন থেকে কয়েক বিলিয়ন গুণ বেশি।
এগুলো সাধারণত ছায়াপথের কেন্দ্রে থাকে এবং মহাজাগতিক কাঠামো ও বিবর্তনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কীভাবে তৈরি হয় সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাকহোল?
বৈজ্ঞানিক ধারণা অনুযায়ী, সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোল তৈরি হয় বিশাল নক্ষত্রের মৃত্যুর সময়। একটি নক্ষত্রের জ্বালানী যখন শেষ হয়ে যায়, তখন তার নিজস্ব ভরের নিজের কেন্দ্রের দিকে ভেঙে পড়ে। এভাবে মৃত নক্ষত্র ব্ল্যাক হোলে পরিণত হয়।
যদি নক্ষত্রটি যথেষ্ট পরিমাণে বড় হয়, তাহলে তা একটি সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলে পরিণত হতে পারে।
সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলের বৈশিষ্ট্য
তীব্র আকর্ষণ শক্তি: সুপার ম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের আকর্ষণ শক্তি এতটাই তীব্র যে আলোও তার থেকে পালাতে পারে না। ব্ল্যাকহোলকে ঘিরে যে এলাকা পর্যন্ত এর আকর্ষণ শক্তি বিদ্যমান, সেই এলাকাটিকে ‘ইভেন্ট হরাইজন’ বা ‘ঘটনা দিগন্ত’ বলা হয়।
অ্যাক্রেশন ডিস্ক: ইভেন্ট হরাইজনের চারপাশে ঘোরে একটি গ্যাসীয় কণাদের উত্তপ্ত চাকতি।
ডিস্ক, যাকে অ্যাক্রেশন ডিস্ক বলা হয়। বস্তকণারা যখন এই ডিস্কে পতিত হয়, তখন তীব্র ঘর্ষণের ফলে প্রচুর তাপ ও আলো বিকিরণ করে। তাই অ্যাক্রেশন ডিস্কি এলাকাটি অত্যন্ত উজ্জ্বল।
জেট: অ্যাক্রেশন ডিস্ক থেকে উচ্চ-শক্তির কণার দুটি বিপরীতমুখী জেট বা বিকিরণের ফিনকি বের হতে পারে। এই জেটগুলো মহাবিশ্বের অনেক অনেক দূর থেকেও দেখা সম্ভব।
সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল ছায়াপথের গঠন ও বিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এই ব্ল্যাকহোলগুলো গ্যালাক্সিদের নক্ষত্র তৈরির হার নিয়ন্ত্রণ করে। সমস্ত নক্ষত্র-গ্রহ-বস্তুপিণ্ডকে গ্যালাক্সির ভেতরেই ধরে রাখতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে কেন্দ্রে থাকা সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোল। সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোলের চারপাশের ঘন গ্যাস ও ধূলিকণা নতুন নক্ষত্রের জন্মের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান সরবরাহ করে।