Science & Tech

মহাসাগরের রং কি সত্যিই ভবিষ্যতে বেগুনি হয়ে যাবে

সমুদ্রের তীরে দাঁড়ালে আমরা নীল সমুদ্রে হারিয়ে যাই। পৃথিবীর প্রায় তিন-চতুর্থাংশ মহাসাগর হওয়ায় মহাকাশ থেকে মহাসাগরগুলোকে হালকা নীল বিন্দুর মতো দেখা যায়। সম্প্রতি জাপানের একদল গবেষক মহাসাগরগুলোর রং ভবিষ্যতে বেগুনি হয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন। মহাসাগরের রাসায়নিক পরিবর্তন ধীরে ধীরে হয়ে থাকে। পৃথিবীতে সালফারের মাত্রা বেশি হয়ে গেলে বেগুনি রঙের মহাসাগর দেখা যেতে পারে। নেচার সাময়িকীতে এ বিষয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছেন তাঁরা।

গবেষকদের তথ্যমতে, পৃথিবীর বিভিন্ন মহাসাগর একসময় সবুজ রঙের ছিল। সাগরের রাসায়নিক পরিস্থিতি ও সালোকসংশ্লেষণের বিবর্তনের কারণে সমুদ্রের রঙে ভিন্নতা দেখা যায়। ভূত্বকের বিশেষ ধরনের শিলাপাথরে থাকা আয়রন প্রায় ৩৮০ থেকে ১৮০ কোটি বছর আগে আর্কেইয়ান ও প্যালিওপ্রোটেরোজোয়িক সময় থেকে ভূত্বকে জমা হতে শুরু করে। সেই সময়ের জীবন মহাসাগরের এককোষী জীবের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। বিভিন্ন মহাদেশ তখন ধূসর, বাদামি এবং কালো পাথর ও পলির সমন্বয়ে এক অনুর্বর ভূখণ্ড ছিল। মহাদেশীয় শিলার ওপর বৃষ্টির পানির মাধ্যমে লোহা দ্রবীভূত হয়। এই লোহা পরে নদীর মাধ্যমে মহাসাগরে বাহিত হয়। লোহার অন্যান্য উৎস ছিল সমুদ্রের তলদেশে আগ্নেয়গিরি। এই লোহা পরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আর্কেইয়ান ইওন ছিল এমন এক সময় যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ও মহাসাগরে গ্যাসীয় অক্সিজেনের অভাব ছিল। সেই সময়ই সূর্যের আলো থেকে শক্তি উৎপন্নকারী প্রথম জীব বিবর্তিত হয়েছিল। এই জীব অ্যানেরোবিক সালোকসংশ্লেষণ ব্যবহার করত। তখন বিভিন্ন জীব অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে সালোকসংশ্লেষণ করতে পারত।
অ্যানেরোবিক সালোকসংশ্লেষণের একটি উপজাত হলো অক্সিজেন গ্যাস। অক্সিজেন গ্যাস সমুদ্রের পানির লোহার সঙ্গে যুক্ত হয়। সমুদ্রের নোনা পানি লোহা ও অক্সিজেনকে রাসায়নিকভাবে নিরপেক্ষ করলে অক্সিজেন গ্যাস বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে। প্রাথমিক সালোকসংশ্লেষণের কারণে গ্রেট অক্সিডেশন ইভেন্ট নামের একটি ঘটনা তৈরি হয়। সেই ঘটনা পৃথিবীর জটিল জীবন বিকাশের জন্য একটি প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশগত সন্ধিক্ষণ বলা যায়। সেই ঘটনার মাধ্যমে অক্সিজেনবিহীন পৃথিবী অক্সিজেনের পৃথিবীতে পরিণত হয়। তখন মহাসাগর থেকে বায়ুমণ্ডলে প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন মুক্ত হয়।

আর্কেইয়ান ইওন যুগের সবুজ মহাসাগর ধীরে ধীরে নীল মহাসাগরে পরিণত হয়। জাপানের আগ্নেয় দ্বীপ আইও জিমার চারপাশের পানিতে অক্সিডাইজড লোহার কারণে সবুজ আভা ধারণ করতে দেখা যায়। সেই দ্বীপের চারপাশের সবুজ পানিতে নীল-সবুজ শৈবাল দেখা যায়। নীল-সবুজ শৈবাল আদিম ব্যাকটেরিয়া নয়। আর্কেইয়ান ইওন যুগে আধুনিক নীল-সবুজ শৈবালের পূর্বপুরুষেরা ব্যাকটেরিয়ার পাশাপাশি বিবর্তিত হয়েছিল। সেই পূর্বপুরুষেরা সালোকসংশ্লেষণের জন্য পানির পরিবর্তে ফেরাস লোহাকে ইলেকট্রনের উৎস হিসেবে ব্যবহার করত। তখন মহাসাগরে লোহার উচ্চমাত্রা ছিল।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d