Bangladesh

মালয়েশিয়ায় টাকা ‘পাচারে’ আমিনুল ও রুহুল আমিন

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে চক্র গড়ে বিপুল টাকা পাচার করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ‘চক্র ফি’ হিসেবে কর্মীপ্রতি এক লাখ টাকা করে পাচার হয়েছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। ভিসা ‘বাণিজ্যের’ নামে পাচার হয়েছে আরও ৩ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে পাচারের পরিমাণ দাঁড়াবে অন্তত ৮ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো সব রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য উন্মুক্ত ছিল না। দেড় হাজারের বেশি এজেন্সির মধ্য থেকে ১০০ এজেন্সির একটি চক্র বা সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছিল। চক্রের সদস্যরা মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে সরকার নির্ধারিত জনপ্রতি ব্যয় ৭৯ হাজার টাকার জায়গায় গড়ে ৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে উঠে আসে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ভেরিটে ইনকরপোরেটেডসহ পাঁচটি সংস্থার এক জরিপে (মে, ২০২৩)।

মালয়েশিয়ায় একটা চক্র আছে, যারা বাংলাদেশি চক্রের প্রতিনিধি। প্রবাসী কর্মী ও রাষ্ট্রকে জিম্মি করে অবৈধ ব্যবসা ও টাকা পাচার করছে এ চক্র।

ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, টিআইবি

চক্রে থাকা দুটি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক প্রথম আলোর কাছে তুলে ধরেছেন কীভাবে তাঁদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নিয়ে তা মালয়েশিয়ায় পাচার করা হতো। তাঁরা বলেছেন, চক্রটির হোতা আমিনুল ইসলাম বিন আমিন নূর, যিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মালয়েশিয়ার নাগরিক। বাংলাদেশে তাঁর প্রতিনিধি মোহাম্মদ রুহুল আমিন ওরফে স্বপন।

চক্র গড়ে শ্রমিক পাঠানো, ঘুষ লেনদেন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজারের দরজা বারবার বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গত মে মাসে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো বন্ধ হয়ে গেছে। মালয়েশিয়া বাংলাদেশের বড় শ্রমবাজারগুলোর একটি।

রিক্রুটিং এজেন্সি হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টার চক্রে না থাকলেও কর্মী পাঠিয়েছে অন্য এজেন্সির মাধ্যমে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও দেশের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর সংগঠন বায়রার যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘যে এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী পাঠিয়েছি, তারা একজন কর্মীর শুধু বিএমইটি ছাড়পত্র করে দেওয়ার নামে ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা করে চক্র ফি নিয়েছে। এ ছাড়পত্র নিতে মূলত খরচ হয় ৬ হাজার টাকা।’ তিনি বলেন, উড়োজাহাজের টিকিটসহ কর্মীর বাকি সব খরচ আলাদাভাবে করতে হয়েছে। এতে অভিবাসন খরচ বেড়েছে।’

যেভাবে চক্র, যেভাবে পাচার

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে মাইগ্রাম নামের একটি সফটওয়্যারে কর্মীদের নাম নিবন্ধন করতে হয়, যার আনুষ্ঠানিক নাম ফরেন ওয়ার্কার্স সেন্ট্রাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এফডব্লিউসিএমএস)। এটির মালিকানা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মালয়েশিয়ার নাগরিক আমিনুল ইসলাম বিন আমিন নূরের কোম্পানি বেস্টিনেটের হাতে। রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকেরা বলছেন, প্রতি কর্মীর জন্য নিবন্ধন ফি ১০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (প্রায় ২ হাজার ৭০০ টাকা)। এর বদলে নেওয়া হয় প্রায় ১ লাখ ৭ হাজার টাকা, যার মধ্যে স্থানীয় আদায়কারী প্রতিষ্ঠান ৭ হাজার টাকা রেখে বাকি ১ লাখ টাকা মালয়েশিয়ায় বেস্টিনেটকে পাঠিয়ে দেয়। লেনদেন হয় অবৈধভাবে।

মাইগ্রাম সফটওয়্যারে সেই সব প্রতিষ্ঠানেরই নাম থাকে, যারা চক্রের সদস্য। ই-ওয়ালেটের (অনলাইন লেনদেনের হিসাব) মাধ্যমে কর্মীপ্রতি ১০০ রিঙ্গিত ফি পরিশোধ করতে হয় চক্রের সদস্যদের। দুটি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক প্রথম আলোকে বলেছেন, কর্মীপ্রতি ১ লাখ ৭ হাজার টাকা জমা দেওয়ার পর বেস্টিনেট ই-ওয়ালেট থেকে ১০০ রিঙ্গিত করে ফি জমা দেওয়ার সুযোগ দেয়, নইলে দেওয়া হয় না। সফটওয়্যারের নিয়ন্ত্রণ থাকে তাদের হাতে।

মালয়েশিয়া চক্রের দুই সদস্যের ভাষ্য, আমিনুল ইসলাম বিন আমিন নূর বাড়তি টাকা নেন মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন পর্যায়ে ঘুষ দেওয়ার কথা বলে। বাংলাদেশে তাঁর প্রতিনিধি রুহুল আমিন ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি এজেন্সির মালিক। এই প্রতিষ্ঠানের ঢাকার মাদানী অ্যাভিনিউয়ের কার্যালয়ে গিয়ে টাকা জমা দিয়ে আসতে হতো। প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা প্রতিদিন নগদ কোটি কোটি টাকা বুঝে নিতেন।

যে এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী পাঠিয়েছি, তারা একজন কর্মীর শুধু বিএমইটি ছাড়পত্র করে দেওয়ার নামে ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা করে চক্র ফি নিয়েছে। এ ছাড়পত্র নিতে মূলত খরচ হয় ৬ হাজার টাকা।’ তিনি বলেন, উড়োজাহাজের টিকিটসহ কর্মীর বাকি সব খরচ আলাদাভাবে করতে হয়েছে। এতে অভিবাসন খরচ বেড়েছে।

বায়রার যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল ইসলাম

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে মালয়েশিয়ার আমিনুল ইসলাম বিন আমিন নূরের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ক্যাথারসিসের মালিক রুহুল আমিনকেও মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি। তিনি গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশ ছাড়েন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে গত ২০ জুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘টাকা নেওয়া ও পাচারের অভিযোগ মিথ্যা। আমি কি অত পাওয়ারফুল কেউ, আমাকে কেন সবাই টাকা দেবে? আমিন সাহেবও একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীরা কীভাবে এটা (শ্রমবাজার) নিয়ন্ত্রণ করবে?’ তিনি বলেন, ‘সব অনুমোদন দিয়েছে দুই দেশের সরকার। সব এজেন্সি মালয়েশিয়ায় আবেদন করেছে। এরপর জোর লবিং হয়েছে। যে এজেন্সির মালয়েশিয়ায় যোগাযোগ ভালো, তারা অনুমোদন পেয়েছে।’

অবশ্য সাধারণ রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকেরা বলছেন, বাংলাদেশ ছাড়া অন্য যেকোনো দেশে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর বিষয়টি সব এজেন্সির জন্য উন্মুক্ত। বাংলাদেশের কিছু ব্যবসায়ী মালয়েশিয়ায় অবৈধ লেনদেন করে চক্র গড়ে তোলেন। বাংলাদেশ সরকার এ ক্ষেত্রে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

বেস্টিনেটের অনিয়মের বিষয়ে ২০২৩ সালে অভিযোগ জমা পড়েছিল বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে। রিক্রুটিং এজেন্সি ও নিয়োগকর্তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিতে ওই বছর ৯ মে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশনে একটি চিঠি পাঠায় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, বেস্টিনেট থেকে ই-ওয়ালেট টপআপ (টাকা ভরা) বরাদ্দ না করায় বেশ কিছু এজেন্সি মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেছে। মালয়েশিয়ার একাধিক নিয়োগকারী কোম্পানিও বিষয়টি দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে। চিঠির অনুলিপি তারা বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।

অবশ্য সাধারণ রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকেরা বলছেন, বাংলাদেশ ছাড়া অন্য যেকোনো দেশে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর বিষয়টি সব এজেন্সির জন্য উন্মুক্ত। বাংলাদেশের কিছু ব্যবসায়ী মালয়েশিয়ায় অবৈধ লেনদেন করে চক্র গড়ে তোলেন। বাংলাদেশ সরকার এ ক্ষেত্রে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

বায়রার পক্ষ থেকেও একই ধরনের অভিযোগে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছিল। ওই চিঠির ভিত্তিতে গত বছরের ২ জানুয়ারি বাংলাদেশ হাইকমিশনে একটি চিঠি পাঠায় প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, এফডব্লিউসিএমএসের মাধ্যমে নির্বাচিত অধিকাংশ রিক্রুটিং এজেন্সির কর্মী সংগ্রহ ও পাঠানোর উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধা ও সক্ষমতা নেই। স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিক্রুটিং এজেন্ট নির্বাচনের কারণে সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সি কর্তৃক উচ্চহারে অভিবাসন ব্যয় গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া কর্মীদের ই-ভিসার জন্য ১২টি অনুমোদিত ভিসা সেন্টার থাকার পরও শুধু এফডব্লিউসিএমএসের ঢাকা অফিস মালয়েশিয়া এমপ্লয়মেন্ট ফ্যাসিলিয়েশন সেন্টার (এমইএফসি) এককভাবে ই-ভিসা ইস্যু করে থাকে। একাধিক সেন্টার থেকে ভিসা ইস্যুর ব্যবস্থা করতে বলা হয় চিঠিতে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এমইএফসির কার্যালয় ঢাকার বনানীর ক্যাথারসিস টাওয়ারে। ভিসার জন্য সেখানেই মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের পাসপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে এবং সেখান থেকেই পাসপোর্ট বুঝে নিয়েছে এজেন্সিগুলো।

বেস্টিনেট বাংলাদেশের ১২ হাজার শেয়ারের ১০ হাজার ছিল আমিনুল ইসলাম বিন আমিন নূরের নামে। দুই হাজার ছিল রুহুল আমিনের নামে। ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ আমিন ইসলামের পুরো শেয়ার রুহুলের নামে হস্তান্তর করা হয়। ওই সময় পরিচালক হিসেবে যুক্ত হন রুহুলের ভাই সাইফুল ইসলাম। ২০২২ সালে কোম্পানিটি নাম বদল করে হয়ে যায় ক্যাথারসিস সলিউশনস লিমিটেড।

বেস্টিনেটের সঙ্গে রুহুল আমিনের কী সম্পর্ক

প্রথম আলোর অনুসন্ধানে মালয়েশিয়া চক্রের দুই হোতা বেস্টিনেটের আমিনুল ইসলাম বিন আমিন নূর ও ক্যাথারসিসের মালিক মোহাম্মদ রুহুল আমিনের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক পাওয়া গেছে। বাংলাদেশের যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরের (আরজেএসসি) তথ্য বলছে, ২০১৪ সালের ২৪ মার্চ মালয়েশিয়ার বেস্টিনেট এ দেশে নিবন্ধন নেয় এবং বেস্টিনেট বাংলাদেশ লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি খোলে। কোম্পানিটির চেয়ারম্যান ছিলেন মালয়েশিয়ার আমিনুল ইসলাম বিন আমিন নূর ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন মোহাম্মদ রুহুল আমিন।

বেস্টিনেট বাংলাদেশের ১২ হাজার শেয়ারের ১০ হাজার ছিল আমিনুল ইসলাম বিন আমিন নূরের নামে। দুই হাজার ছিল রুহুল আমিনের নামে। ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ আমিন ইসলামের পুরো শেয়ার রুহুলের নামে হস্তান্তর করা হয়। ওই সময় পরিচালক হিসেবে যুক্ত হন রুহুলের ভাই সাইফুল ইসলাম। ২০২২ সালে কোম্পানিটি নাম বদল করে হয়ে যায় ক্যাথারসিস সলিউশনস লিমিটেড।

রুহুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, মালয়েশিয়ার বেস্টিনেটের সঙ্গে বাংলাদেশের বেস্টিনেটের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি আলাদা কোম্পানি। বাংলাদেশে কোনো ব্যবসা না পাওয়ায় আমিনুল ইসলাম এটির অংশীদারত্ব ছেড়ে দিয়েছেন।

এদিকে মালয়েশিয়ায় অর্থ পাচারের অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গত ২৮ মে একটি চিঠি দিয়েছিলেন চক্রের সদস্য রিক্রুটিং এজেন্সি ইউনাইটেড এক্সপোর্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম রফিক। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় টাকা পাচারের মূল হোতা রুহুল আমিন ওরফে স্বপন ও তাঁর মালয়েশিয়ার অংশীদার আমিনুল ইসলাম বিন আমিন নূর।

এস এম রফিক প্রথম আলোকে বলেন, চক্রে থাকা সব এজেন্সিকে প্রতি কর্মীর জন্য ১ লাখ ৭ হাজার টাকা করে ক্যাথারসিস কার্যালয়ে দিয়ে আসতে হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকার মালয়েশিয়া চক্রের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। গত ৫ আগস্ট তাদের পতনের পর অন্তর্বতী সরকার ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন বায়রার একাধিক সদস্য। ২২ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো বায়রার সদস্য মোস্তফা মাহমুদের চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, ২০১৭ সালেও মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর চক্র গড়ে তুলেছিল আমিনুল ইসলাম বিন আমিন নূর ও রুহুল আমিন। তখন ও এবার দুই দফায় ১৭ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা লুট করেছে চক্রটি।

এদিকে গত ৩০ মে প্রথম আলোতে ‘মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার: “চক্রে” ঢুকে চার সংসদ সদস্যের ব্যবসা রমরমা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, সাবেক সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদ, নিজাম উদ্দিন হাজারী ও লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদউদ্দিন চৌধুরীর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক প্রতিষ্ঠান মালয়েশিয়া চক্রে ঢুকে বিপুল অর্থ আয় করেছে। দুদক চার সাবেক সংসদ সদস্যসহ চক্রে থাকা অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে।

ভিসা কিনতেও ‘টাকা পাচার’

বাংলাদেশ থেকে দেড় বছরের কিছু বেশি সময়ে চক্রে থাকা ১০০ এজেন্সির নামে ৪ লাখ ৯২ হাজার ৪১৬ জন কর্মীর ছাড়পত্র নেওয়া হয়। অভিযোগ আছে, এসব নিয়োগপত্রের অন্তত অর্ধেক কেনা হয়েছে টাকার বিনিময়ে। তাতে খরচ হয়েছে কর্মী প্রতি গড়ে ৬ হাজার রিঙ্গিত বা দেড় লাখ টাকা। এর মাধ্যমে পাচার হয়েছে ৩ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। এটি ভিসা–বাণিজ্য হিসেবে পরিচিত।

সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, চক্র ফি ও ভিসা–বাণিজ্যের নামে মালয়েশিয়ায় পাচার হয়েছে প্রায় ৮ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা, যা মালয়েশিয়া থেকে আসা প্রবাসী আয়ের একটি বড় অংশের সমপরিমাণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মালয়েশিয়া থেকে প্রবাসী আয় এসেছে ১১২ কোটি মার্কিন ডলার (প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা)।

দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিবেশী দেশ থেকে কর্মী যায় নিয়োগকর্তার খরচে, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে নিয়ম আলাদা। সরকার ধারাবাহিকভাবে এটা চলতে দিয়েছে। এটা খুবই ন্যক্কারজনক, কলঙ্কজনক, অমানবিক। তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় একটা চক্র আছে, যারা বাংলাদেশি চক্রের প্রতিনিধি। প্রবাসী কর্মী ও রাষ্ট্রকে জিম্মি করে অবৈধ ব্যবসা ও টাকা পাচার করছে এ চক্র। যত দিন দায়ীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া না হবে, তত দিন এটা চলতেই থাকবে।

সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, চক্র ফি ও ভিসা–বাণিজ্যের নামে মালয়েশিয়ায় পাচার হয়েছে প্রায় ৮ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা, যা মালয়েশিয়া থেকে আসা প্রবাসী আয়ের একটি বড় অংশের সমপরিমাণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মালয়েশিয়া থেকে প্রবাসী আয় এসেছে ১১২ কোটি মার্কিন ডলার (প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা)।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
Situs Toto
toto togel
slot toto
Toto slot gacor
bacan4d
totoslotgacor
bacan4d
bacan4d slot gacor
bacan4d login
Bacan4d
bacan4d
bacan4d bonus
Toto gacor
Toto gacor
slot gacor hari ini
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d link alternatif
slot gacor bett 200
situs toto
SITUS TOTO
toto 4d
toto gacor
Slot Toto
Slot Toto
Slot Toto
Situs toto
Slot toto
Slot Dana
Slot Dana
Judi Bola
Judi Bola
Slot Gacor
toto slot
bacan4d toto
bacan4d akun demo slot
bacantogel
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacantoto
bacan4d
Bacan4d Login
slot demo
Bacan4d Toto
toto gacor
Slot Gacor
Live Draw
Live Draw Hk
toto slot
Bacan4d slot gacor
toto macau
toto slot
Toto Gacor
slot dana
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
Slot Dp Pulsa
Bacan4d Login
toto slot
Bacansports/a>
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
bacansport
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
slot gacor
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
toto slot
slot demo
toto slot gacor
bacansports Slot toto toto slot Slot toto Slot dana Slot toto slot maxwin slot maxwin toto slot toto slot slot dana
Toto Bola
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
bacan4d
ts77casino
situs toto
slot pulsa
bacansports
situs toto
slot toto
situs toto
slot toto
situs toto
toto slot
bacansport
bacansport
bacansports
slot toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
xx1toto
situs toto
situs toto
xx1toto
toto slot
xx1toto
xx1toto
slot qriss
Slot Toto
slot dana
situs toto
slot toto
slot dana
Situs Toto Slot Gacor
xx1toto
xx1toto
bacan4d
xx1toto
xx1toto
toto slot
situs toto slot gacor