USA

মিত্র হারাতে পারে যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধের হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে প্রবেশের আগেই বিশ্বজুড়ে একের পর এক আতঙ্ক ছড়িয়ে যাচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে এবার বাণিজ্য যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্প বলেছেন, প্রথমদিন থেকেই  তিনি কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর বড় ধরনের শুল্ক আরোপ করবেন। সোমবার তিনি বলেন, মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আসা সব পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। মাদক পাচার ও অভিবাসীদের অবৈধ প্রবেশ ঠেকানোর পদক্ষেপ নেওয়ার আগ পর্যন্ত তার সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।  তবে চীন সাফ বলেছে এই যুদ্ধে কেউ জয়ী হবে না। মঙ্গলবার ওয়াশিংটনের চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে এ কথা বলা হয়। খবর বিবিসি অনলাইনের। 
দেশটিতে নারী অধিকার ও অভিবাসীদের প্রতি স্পষ্ট হুমকি হয়ে উঠেছেন রিপাবলিকান এই নেতা। চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিলেও ক্ষমতার প্রথম দিন থেকেই নতুন এক যুদ্ধ শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। আশঙ্কা করা হচ্ছে নতুন এ যুদ্ধে এবার সীমান্তে মিত্র হারাতে চলছে যুক্তরাষ্ট্র, যার পরিণতি কী হবে তা এখনই আঁচ করা যাচ্ছে না। নবনির্বাচিত এ প্রেসিডেন্ট জানান, ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনই তিনি একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করবেন। সেখানে মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ করারোপ করা হবে। ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প জানান, নির্বাহী আদেশে জারি করা ২৫ শতাংশ করের ওপর বাড়তি আরও ১০ শতাংশ করারোপ করবেন অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের ওপর।

যার ফলে চীন থেকে মার্কিন বাজারে আসা পণ্যের ওপর শুল্ক দাঁড়াবে ৩৫ শতাংশ। বেজিং মার্কিন বাজারে সিন্থেটিক ওপিওড ফেন্টানাইলের চোরাচালান বন্ধ করার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত এটি অব্যাহত থাকবে। ট্রাম্প যদি সত্যিই এমন নির্বাহী আদেশ জারি করেন তবে তা যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম তিন বাণিজ্যিক অংশীদারদের সঙ্গে দেশটির বড় ধরনের উত্তেজনা তৈরি করবে। এ ধরনের পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মেক্সিকো ও কানাডার বাণিজ্য চুক্তির লঙ্ঘন করবে বলেও জানান বিশেষজ্ঞরা।
ট্রাম্প জানান, মেক্সিকো ও কানাডার ওপর এসব কর ততদিন পর্যন্ত থাকবে যতদিন এসব দেশ মার্কিন ভূখ-ে মাদক ও অবৈধ অভিবাসী প্রবেশ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করবে।

এসব সমস্যার সমাধান না করলে বড় মূল্য পরিশোধ করার এটিই উপযুক্ত সময় বলেও মন্তব্য করেন ট্রাম্প। ওয়াশিংটনে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত জানান, বেজিং বিশ্বাস করে চীন-মার্কিন অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা পারস্পরিক লাভ অনুসারে গড়ে উঠেছে। এতে বাণিজ্য যুদ্ধ বা কর যুদ্ধ করে কোনো পক্ষই উপকৃত হবে না। এর আগে নির্বাচনী প্রচারের সময় ফেন্টানাইল চোরাচালান নিয়ে মেক্সিকো ও চীনের ওপর শতভাগ করারোপ করার হুমকি দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
গুরুতর মামলা থেকে রেহাই ॥ গুরুতর মামলা থেকে রেহাই পেয়েছেন ট্রাম্প। তার বিরুদ্ধে ২০২০ সালের নির্বাচনে জালিয়াতির মামলা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। সোমবার একজন ফেডারেল বিচারক ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একটি বড় মামলা খারিজ করেছেন। এ মামলায় তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ২০২০ সালের নির্বাচন বাতিল করতে চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছিল। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এ ফৌজদারি মামলাটি এনেছেন বিশেষ প্রসিকিউটর জ্যাক স্মিথ। তিনি বিচার বিভাগের নীতির উদ্ধৃতি দিয়ে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেন।

এ নীতি অনুসারে বর্তমান প্রেসিডেন্টের বিচারকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। স্মিথের এ আবেদনের পর বিচারক তানিয়া চুটকান কোনো পর্যবেক্ষণ ছাড়াই মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে শাসনকাল শেষ করলে তার বিরুদ্ধে পুনরায় এসব মামলা দাখিল করা যাবে। স্মিথ এ ছাড়াও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গোপন নথির মামলা খারিজের আবেদন করেছেন। উভয় ক্ষেত্রেই ট্রাম্প নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছেন।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button