Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Bangladesh

মিন্টুর টার্গেট ছিল এমপি হওয়ার: আনার হত্যা

শঙ্কা-সন্দেহ ছিল আগে থেকেই। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও বলেছিলেন তিন বারের এমপি, সিনিয়র রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী  
ব্যবসায়ী আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যাকাণ্ডের পেছনের হোতা শুধু তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু আখতারুজ্জামানই নয়; এর পেছনে আরও শক্তিশালী কেউ জড়িত থাকতে পারে। আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঘাতক শিমুল ভূঁইয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার পর কিছুটা আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। কারণ শিমুল তদন্ত কর্মকর্তাদের এমন কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন যা এই হত্যাকাণ্ডের মোড় অনেকটা ঘুরিয়ে দিয়েছে। আনার হত্যায় ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা ফেঁসে যাচ্ছেন বলেও গুঞ্জন ছিল। এরইমধ্যে শনিবারই গ্রেপ্তার করা হয় জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ ওরফে বাবুকে। শিমুল ভূঁইয়া ও বাবুর দেয়া তথ্যমতেই কয়েকদিন ধরে নজরদারিতে রাখা হয়েছিল ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে। অবশেষে গতকাল তাকে ঢাকার ধানমণ্ডি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি। 
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আনার হত্যাকাণ্ডটি অনেকটা কাটআউট পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পরিকল্পনাকারীরা এক হলেও তাদের একটি অংশের সঙ্গে মিশন বাস্তবায়নকারীদের যোগাযোগ ছিল না। বিশেষকরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে মিশন বাস্তবায়নকারীদের বিস্তর দূরত্ব ছিল।

বিজ্ঞাপন শুধুমাত্র কিলার শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে ১৬ই মে বাবুর মোবাইলে কথাবার্তা ও হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ চালাচালি  এবং ফরিদপুরের ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে সাক্ষাৎ হয়। যার তথ্যপ্রমাণ পেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। শিমুল ভূঁইয়াও তার স্বীকারোক্তিতে এসব কথা বলেছেন। আনার হত্যারকাণ্ডের পর সঞ্জীবা গার্ডেন থেকে শিমুল ভূঁইয়া শাহীনের মোবাইলে যেসব ছবি পাঠিয়েছিল সেগুলো শাহীনই প্রথম জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিন্টুর মোবাইলে পাঠিয়ে বলে আনার শেষ, মনোনয়ন কনফার্ম। আর বাবুর সঙ্গে যেদিন ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে শিমুল ভূঁইয়ার দেখা হয় সেদিন শিমুল আনার হত্যার ছবিগুলো বাবুর কাছে পাঠায়। কারণ শাহীন আগে থেকেই শিমুলকে বলেছিল এসব ছবি দেখিয়ে যেন বাবুর কাছ থেকে ২ কোটি টাকা নেয়। ডিবি বলছে, পলাতক শাহীনের সঙ্গে সবারই যোগাযোগ ছিল। শাহীন খুব ঠাণ্ডা মাথায় সবপক্ষকেই ব্যবহার করেছে। এ ঘটনায় সে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করেছে। মিশন বাস্তবায়নকারীদের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের যোগাযোগ না থাকায় তাদের নাম অনেক পরে এসেছে। এ ছাড়া শিমুল ভূঁইয়ার দেয়া তথ্যও যাচাই বাছাই করে দেখেছেন কর্মকর্তারা।  

তদন্ত কর্মকর্তারা বলেছেন, জিজ্ঞাসাবাদে শিমুল ভূঁইয়া, বাবু ও মিন্টুর সঙ্গে শাহীনের এবং তার সঙ্গে শুধু বাবুর যোগাযোগ হয়েছে বলে জানায়। শিমুলের দেয়া এই তথ্য পাওয়ার পর থেকে যাচাই বাছাই শুরু করে ডিবি। তদন্তের একপর্যায়ে সত্যতাও পাওয়া যায়। পরে বাবুকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চালায় ডিবির একটি টিম। কিন্তু ডিবির টিম তাকে গ্রেপ্তার করবে সেই খবর চলে যায় তার কাছে। পরে বাবু তার তিনটি মোবাইল ফোন হারানোর নাটক করে থানায় জিডি করে। বাবু নিজেই তার তিনটি মোবাইল ফোন ধ্বংস করে দেয়। কারণ তার মোবাইলে আনার হত্যার বিষয়ে শিমুল, শাহীনের সঙ্গে যেসব কথাবার্তা হয়েছে তার প্রমাণও ছিল। সেগুলো যাতে ডিবির হাতে না যায় তাই  মোবাইলগুলো ধ্বংস করে দিয়ে গাঁ-ঢাকা দিয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ডিবি তাকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের ওয়ারি ডিভিশনের একজন এডিসি (সদ্য একটি জেলায় বদলি হওয়া) বাবুর কাছে আগেই তথ্য দিয়েছিলেন তাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।

তার বুদ্ধিতেই বাবু মোবাইল হারানোর নাটক করে থানায় জিডি করেছিলেন। গাঁ-ঢাকা দিয়ে বাঁচতে চেয়েছিলেন। কারণ তিনি জানতেন বাবু গ্রেপ্তার হলে তার একসময়ের রাজনৈতিক নেতা মিন্টু ফেঁসে যেতে পারেন। আটক জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিন্টুর সঙ্গে ওই এডিসির সখ্যতা রয়েছে। ছাত্রজীবন থেকে এডিসি মিন্টুকে নেতা মেনে রাজনীতি করতেন। পাশাপাশি গ্রাম হওয়াতে মিন্টুকে এডিসি চাচা বলে ডাকতেন। পুলিশে যোগদানের পর আইনগতভাবে মিন্টুকে সহযোগিতাও করেছেন। তাদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্কও রয়েছে। আনার অপহরণের ঘটনার পরেও তার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। মামলা হয়েছে শেরেবাংলা নগর থানায়। সে হিসেবে মামলাটি তদন্ত করার কথা ডিএমপির তেজগাঁও ক্রাইম ডিভিশন অথবা ডিবি তেজগাঁও ডিভিশন। কিন্তু ওই এডিসি মামলাটি কৌশলে ওয়ারি ডিভিশনে নিয়ে যান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আনারের মেয়ে বেশ কয়েকটি অভিযোগ দিয়েছেন তারমধ্যে ওই এডিসি মামলা প্রভাবিত ও আসামিদের সহযোগিতা করছেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।  

ডিবির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এমপি আনারের সঙ্গে একসময় সুসম্পর্ক ছিল মিন্টুর। কিন্তু রাজনৈতিক  প্রভাব, ঝিনাইদহ-৪ সংসদীয় আসন এবং সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্ব লাগে আনারের সঙ্গে। টানা ৩ বার আনার ওই আসনটি দখল করে আছেন। সেখানে অন্য কেউ সুযোগ পাচ্ছেন না। সাবেক এমপিও যেমন মনোনয়ন পাননি ঠিক তেমনি মিন্টুও অনেক তদবির করে বঞ্চিত হন। এতে করে মিন্টুর মধ্যে একটা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। কারণ তার নজর বা টার্গেট ছিল ওই আসন থেকে এমপি নির্বাচন করার। আনারের কারণে সেটি পারছিলেন না। শক্তভাবে গেড়ে বসেছিলেন আনার। এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়াতে রাজনৈতিক একটা প্রভাবও ছিল আনারের। এ ছাড়া সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান ব্যবসা একাই নিয়ন্ত্রণ করতেন আনার। বিভিন্ন সময় ভাগ চাইতেন মিন্টু। কিন্তু আনার তাকে দিতে চাইতেন না। সবমিলিয়ে মিন্টু, শাহীন ও বাবু মনে করেছিল আনারকে সরিয়ে দিলে সবকিছুর সমাধান হবে। তারা যেটি চায় সেটিও বাস্তবায়ন হবে। তবে ডিবি মনে করছে এই হত্যা মামলায় মিন্টু শাহীনসহ বাকিদের ব্যবহার করেছে নিজের ফায়দার জন্য। আনার হত্যার জন্য যে দুই কোটি টাকা দেয়ার কথা ছিল সেটি মিন্টুই দেয়ার কথা ছিল বাবুর কাছে। আর বাবু সেটি শিমুল ভূঁইয়ার কাছে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু টাকা লেনদেনের আগেই শিমুল গ্রেপ্তার হয়ে যায়। ডিবি বলছে, আনার হত্যার পরপরই মিন্টুর কাছে খবর চলে যায়। আনার হত্যার তথ্য নিশ্চিত করে মিন্টুকে বলা হয়েছিল ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে মনোনয়ন পেতে তার আর কোনো বাধা নেই। 

স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, মিন্টুর বিরুদ্ধে এলাকায় অভিযোগের শেষ নাই। স্থানীয়রা জানান, ছাত্রলীগকর্মী হিসেবে রাজনীতি শুরু করা মিন্টু দীর্ঘদিন ধরে ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। অভিযোগ আছে, পৌরসভার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে একটি মামলা করে তিনি অবৈধভাবে টানা ১১ বছর মেয়র ছিলেন। ওই সময় তিনি পৌরসভার বেহাল অবস্থা ছিল। পৌরসভার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বরাদ্দের টাকা কাজ না করেই বিল করতেন। তার নিজের ও ঘনিষ্ঠজনদের নামের ৭টি লাইসেন্স ছাড়া আর কেউ কাজ পেত না। অনেক কাজ অসম্পন্ন রেখে বিল করতেন। এ ছাড়া এই নেতার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ঝিনাইদহ, ঢাকাসহ বিদেশেও সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। তার ও পরিবারের নামে একাধিক ফ্ল্যাট ও বাড়ি রয়েছে। এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনের পদপদবিও তার অধীনে। ওষুধ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দীর্ঘদিন ঝিনাইদহ চেম্বার অব কমার্সে বিনাভোটে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন ভোটে নির্বাচিত সভাপতিও তিনি। এ ছাড়াও আরও বিভিন্ন সংগঠন তার কব্জায় রয়েছে। এলাকায় রাজনৈতিকভাবেও তিনি প্রভাব বিস্তার করেন। তার বাইরে কথা বলার সাহস কেউ পায় না। তার বিভিন্ন বেআইনি কর্মকাণ্ডের জন্য লাঠিয়াল বাহিনী রয়েছে। দুটি হত্যা মামলার আসামিও তিনি। 

এদিকে, মঙ্গলবার দুপুর থেকেই আওয়ামী লীগ নেতা মিন্টু ঢাকায় ডিবির কাছে আটক হয়েছেন এমন গুজব ঝিনাইদহ শহরে ছড়িয়ে পড়ে। সময় যতই গড়াতে থাকে ততই গুজবের ডালপালা ছড়াতে থাকে ঝিনাইদহের বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল এবং সাধারণ মানুষের মাঝে। অনেকে ফেসবুকে আটকের সময় এবং ঘটনাস্থল উল্লেখ করে প্রচার করতে থাকে। সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জরুরি তারবার্তা পাঠিয়ে শহরে নিরাপত্তা জোরদার করার তাগিদ দেয়া হয়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto