মুক্ত এমভি আবদুল্লাহকে যেভাবে পাহারা দিচ্ছে দুটি যুদ্ধজাহাজ
জলদস্যুদের হাত থেকে বাংলাদেশের কেএসআরএম গ্রুপের জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ছাড়া পেয়েছে বাংলাদেশ সময় গত শনিবার রাত তিনটা আট মিনিটে। ছাড়া পাওয়ার পরপরই কাছাকাছি থাকা ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর দুটি যুদ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে আসছে।
আজ সোমবার বেলা দুইটায় সংস্থাটির ওয়েবসাইটে এমভি আবদুল্লাহকে পাহারা দিয়ে নেওয়ার ছবি প্রকাশ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত এমভি আবদুল্লাহ জাহাজকে পাহারা দিয়ে নিয়ে আসছে দুটি যুদ্ধজাহাজ
ছবিতে দেখা যায়, নীল সাগরে এগিয়ে চলছে এমভি আবদুল্লাহ। দুই পাশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর দুটি যুদ্ধজাহাজ। এ সময় তিনটি দ্রুতগতির নৌযানকেও টহল দিতে দেখা যায়।
কেএসআর গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত প্রথম আলোকে বলেন,জাহাজটি মুক্ত হওয়ার পর নিরাপদ জলসীমায় আনা পর্যন্ত পাহারা দিয়েছে যুদ্ধজাহাজ দুটি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর সদস্যরা এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের নাবিকদের সঙ্গেও কথা বলেছে। খোঁজখবর নিয়েছে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর অপারেশন আটলান্টার আওতায় সোমালিয়া উপকূল, এডেন, আকাবা, সুয়েজ, লোহিত সাগর ও আশপাশের এলাকায় কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। মূলত বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির জাহাজ নিরাপত্তা দেওয়া এবং জলদস্যুতা বিরোধী কার্যক্রম তদারকিই তাদের মূল উদ্দেশ্য।
জাহাজটির গন্তব্য এখন আরব আমিরাতের আল হারমিয়া বন্দর। সেখানে আগামী ২১ এপ্রিল জাহাজটি পৌঁছাতে পারে বলে কেএসআরএম গ্রুপ জানিয়েছে।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মূলত জলদস্যুদের হাত থেকে উদ্ধার হওয়া জাহাজটিতে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্যই ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর জাহাজ এই পাহারা দিয়েছে। আবার সোমালিয়া উপকূলে দস্যুতা বিরোধী যে কার্যক্রম চলমান রয়েছে তা জানানোর জন্যও তারা এমন পদক্ষেপ নেয়। তিনি বলেন, নৌবাহিনীর সদস্যরা নাবিকদের সঙ্গে কথা বলে নিরাপত্তার বিষয়ক কার্যক্রম হালনাগাদ করতে পারে।
নীল সাগরে এগিয়ে চলছে এমভি আবদুল্লাহ।
১২ মার্চ সোমালিয়ার দস্যুরা ভারত মহাসাগর থেকে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ জিম্মি করে। মুক্তিপণ দিয়ে জাহাজটি ছাড়া পায় গত শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৮ মিনিটে। অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল প্রথম প্রহরে।
এই হিসাবে জিম্মি করার ৩২দিন পর জাহাজটি মুক্তি পেয়েছে। মুক্তিপণ দিয়েই জাহাজটি ছাড়া পেয়েছে বলে জানা গেছে।
২০১০ সালে কেএসআরএম গ্রুপের আরেকটি জাহাজ এমভি জাহান মণি ছিনতাই করেছিল সোমালিয়ার দস্যুরা। ওই জাহাজ উদ্ধার করতে ৯৯দিন সময় লেগেছিল।