USA

মুসলিম ইস্যুতে ইউটার্ন নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, কারণ কী?

গত মাসে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও বলেছেন, তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হলে কয়েকটি মুসলিম দেশে তাঁর ‘বিখ্যাত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা’ পুনর্বহাল করবেন। গত গ্রীষ্মে তিনি দাবি করেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস মিনেসোটায় হাজার হাজার জিহাদি সহানুভূতিশীলদের জড়ো করতে চান। তিনি অভিযোগ করেন, ডেমোক্র্যাটরা যুক্তরাষ্ট্রের ‘মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলকে মধ্যপ্রাচ্যে পরিণত করার’ পরিকল্পনা করছেন। বুধবার দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে।

এতে বলা হয়, মুসলিমবিদ্বেষী ভীতি প্রদর্শন হলো ট্রাম্পের রাজনৈতিক পরিচয়ের মূল ভিত্তি। ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি বারবার মুসলিমবিদ্বেষী নানা বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি মুসলিমদের তালিকাভুক্ত করার বিষয়েও বলেছিলেন। তথাপি এবারের নির্বাচনের শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ট্রাম্প আরব ও মুসলিম ভোটারদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন, তাদের উচিত তাঁকে ভোট দেওয়া। যদিও বছরের পর বছর ধরে তিনি তাদের অপমান ও ধ্বংসের চেষ্টা করে গেছেন। 

গত সপ্তাহে আরবি ভাষার টিভি চ্যানেল আল-আরাবিয়াকে সাক্ষাৎকার দেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আমার অনেক বন্ধু আছে যারা আরব। তারা খুব সৌহার্দ্যপূর্ণ মানুষ।’ আরব ও মুসলিম জনবহুল গুরুত্বপূর্ণ দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্য মিশিগানে এক র্যা লিতে গত শনিবার ট্রাম্প জানান, তিনি মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতাদের একটি গ্রুপের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আপনি জানেন তারা কী চান? তারা শান্তি চান। তারা দারুণ মানুষ।’

ট্রাম্প আক্রমণাত্মক সুরে বলেন, মুসলমানদের উচিত কমলাকে ভোট না দেওয়া। কারণ, তিনি মুসলিমদের অপছন্দের কাজ করেন। ওয়াইমিংয়ের সাবেক প্রতিনিধি লিজ চেনিকে বেছে নিয়েছেন কমলা। এ পদক্ষেপের সমালোচনা করেন ট্রাম্প। চেনি রিপাবলিকান হলেও কমলাকে সমর্থন করছেন। ট্রাম্পের প্রশ্ন, কেন একজন মুসলিম বা কেন একজন আরব এমন কাউকে ভোট দিতে চাইবে, যার নায়ক লিজ চেনির মতো নারী। ট্রাম্প তাঁকে স্পষ্টতই তাঁর বাবা সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির সঙ্গে তুলনা করেন। ডিক চেনি ইরাক যুদ্ধে ভূমিকা রেখেছিলেন। ওই যুদ্ধ চলাকালে প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র রয়েছে দাবি করে ইরাকে স্থল অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। পরে এ ধরনের কোনো অস্ত্র পাওয়া যায়নি। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, এটি সারাবিশ্বের মুসলমানদের জন্য একটি বড় অপমান।’ 

রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন ইউটার্নের পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতে প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসের সঙ্গে তাঁর পার্থক্য সামান্য। সেখানে অল্প সংখ্যক মুসলিম ভোটার ব্যবধান তৈরি করে দিতে পারেন। একসময় এ ট্রাম্পই বলেছিলেন, মার্কিন সংস্কৃতির আত্তীকরণে প্রায়ই ব্যর্থ হয়েছে মুসলিমরা।
গত শনিবার ট্রাম্প স্বীকার করেন, মুসলিমরা নির্বাচনকে এদিক বা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের ভোট আছে। আমি আপনাদের বলছি, আমাদের অনেক ভোট আছে। কিন্তু আমাদের আরও বেশি ভোট পেতে হবে; আরও পেতে হচ্ছে।’

কার্যত ট্রাম্প গাজায় ইসরায়েলের হামলায় জো বাইডেন প্রশাসনের সমর্থনের কারণে আরব ও মুসলিম মার্কিনিদের মধ্যে ডেমোক্র্যাটদের দুর্বলতাকে কাজে লাগাতে চাচ্ছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে হামাসের আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল স্থল অভিযানে ৪০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। বলা দরকার, বেশির ভাগ আরব মার্কিনি মুসলিম নয় এবং বেশির ভাগ মার্কিন মুসলিম আরব নয়। তবে তারা উভয়েই ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহানুভূতিশীল।

জেরুজালেমে জন্ম নেওয়া ফিলিস্তিনি খ্রিষ্টান পাবলিক পলিসির অধ্যাপক বিশারা বাহবাহ গাজায় আগ্রাসনে বাইডেন প্রশাসনের সমর্থনে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ। এর জেরে এবার নির্বাচনে তিনি ট্রাম্পের জন্য আরব-মার্কিনি নামে একটি গ্রুপ গঠন করেছেন। রিপাবলিকান প্রার্থীর মুসলিমবিরোধী অবস্থান নিয়ে দ্বিমত নেই বিশারার। তবে তিনি মনে করেন, ট্রাম্পের অবস্থান আগের চেয়ে বদলেছে। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মার্কিনি মাদিহা তারিক বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন না ট্রাম্প বদলে গেছেন। 

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d