Trending

মূল্যস্ফীতি ভোক্তার কাঁধে, দফায় দফায় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভুল বা বিতর্কিত সিদ্ধান্তের কারণে মন্দায় আক্রান্ত ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে ডলারের দাম ও ঋণের সুদ অপরিকল্পিত এবং লাগামহীনভাবে বাড়ছে। উদ্যোক্তাদের খরচ বাড়ছে। কমছে টাকার মান। এতে আমদানি ব্যয় ও পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। নিয়ন্ত্রণহীণ হয়ে পড়েছে মূল্যস্ফীতির হার। অর্থনৈতিক অস্থিরতায় বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে মানুষের আয় বাড়ছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভুল সিদ্ধান্তের সব দায় গিয়ে পড়ছে ভোক্তা ও উদ্যোক্তার ওপর। চড়া মূল্যস্ফীতির দণ্ডে দণ্ডিত হচ্ছে ভোক্তা। ভোক্তাকে মূল্যস্ফীতির আঘাত থেকে রক্ষা করা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব হলেও সংস্থাটি গত প্রায় দুই বছর ধরে সফল হচ্ছে না। অথচ কেন্দ্রীয় ব্যাংকই করোনার সময় ‘লকডাউনের অর্থনীতি’ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলার নজির আছে। সেই সময়ে নানামুখী প্রণোদনা দিয়ে ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ছাপানো টাকা বাজারে ছেড়ে ভোক্তাকে কিছুটা হলেও উপশম দিতে সক্ষম হয়েছে। অথচ গত দুই বছর ধরে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েও সংস্থাটির শীর্ষ নির্বাহীরা ডলারের দাম ও মূল্যস্ফীতিকে বাগে আনতে পারছে না।

৫ মে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রফউ তালুকদার একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকেরও দুটি প্রধান দায়িত্ব আছে। একটি হচ্ছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং অপরটি হচ্ছে আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গৃহীত মুদ্রানীতির লক্ষ্য থাকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও আর্থিক স্থিতিশীলতা।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও রিজার্ভ ক্ষয়-এ দুটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে আছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আমরা অনেক পদক্ষেপ নিয়েছি। এক্ষেত্রে শুধু চাহিদা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি না, বরং সরবরাহ বাড়ানোর লক্ষ্যেও কাজ করছি।’

অথচ কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার এ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারছে না। এর দায় এসে পড়ছে সরকার, উদ্যোক্তার ওপর। সরকার ব্যয় নির্বাহ করতে মানুষের ওপর করের বোঝা বাড়াচ্ছে। উদ্যোক্তা খরচ মেটাতে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন। চূড়ান্ত পর্যায়ে ভোক্তাকেই এ দায় বহন করতে হচ্ছে। তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ডলারের দাম স্থিতিশীল রাখতে, মূল্যস্ফীতির হার কমাতে ও বিনিয়োগ বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে সেগুলোর বেশিরভাগই কার্যকর ফল বয়ে আনতে পারেনি। এ লক্ষ্য অর্জনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তগুলো নিয়েও মতভেদ আছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু দেশের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার ও ব্যবসায়ীরা সরাসরি বলেছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। যে কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঠিক সিদ্ধান্তের অভাবে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমন করলে দ্রুত বৈশ্বিক পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে। বৈশ্বিকভাবে পণ্য মূল্য বেড়ে যায়। বাংলাদেশ যেহেতু আমদানি নির্ভর দেশ সেহেতু দেশের আমদানি ব্যয় বেড়ে গিয়ে ডলারের ওপর চাপ তৈরি হয়। রিজার্ভের পরিমাণ কমতে থাকে। পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওই বছরের ১১ এপ্রিল প্রথমে আমদানি নিরুৎসাহিত করতে সীমিত আকারে অর্থাৎ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া সব পণ্য আমদানিতে ২৫ শতাংশ এলসি মার্জিন আরোপ করে। এতে ডলারের ওপর চাপ কমানোর লক্ষ্য অর্জিত না হয়ে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। এর ১ মাসের মাথায় ১০ মে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অপর এক সার্কুলারের মাধ্যমে এলসি মার্জিন বাড়িয়ে দ্বিগুণ ও তিনগুণ করে। এর ফলে বিলাসী পণ্য আমদানিতে মার্জিন তিনগুণ বেড়ে ৭৫ শতাংশ ও বাণিজ্যিক পণ্য আমদানিতে ৫০ শতাংশ করা হয়। এতেও আমদানিতে লাগাম টানা সম্ভব হয়নি। ফলে এর এক মাস ২৫ দিনের মাথায় তৃতীয় দফায় ৫ জুলাই এ বিষয়ে আরও একটি সার্কুলার জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মার্জিন আরও বাড়িয়ে দেয়। এই দফায় বিলাসী পণ্য আমদানিতে শতভাগ মার্জিন আরোপ ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ছাড়া বাকি সব পণ্য আমদানিতে ঋণ বন্ধ করে দেয়। এতেও রিজার্ভের ক্ষয় রোধ করা সম্ভব হয়নি। ডলারের দাম বাড়তে থাকে। রিজার্ভ প্রচণ্ড চাপের মধ্যে পড়ে যায়। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ধরে রাখতে স্বল্পমেয়াদি ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বাড়াতে থাকে। ইতোমধ্যে বিদেশি ঋণের সুদহার বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়। ডলারের দামও বেড়েছে। ফলে ঋণ ও সুদের অঙ্ক বাড়তে থাকে।

এতে মেয়াদ শেষে ঋণ পরিশোধের চাপ আরও বেড়ে যায়। যা এখনো অব্যাহত। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এসে ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের সংস্থান ছাড়া এলসি খুলতে ব্যাংকগুলোকে নিষেধ করে। এসব পদক্ষেপের পরও বিলাসী পণ্যের এলসি খোলা একেবারে বন্ধ হয়নি। কিছু আমদানিকারক বিভিন্নভাবে ডলারের সংস্থান করে বিলাসী পণ্যের এলসি খুলতে থাকেন। যে কারণে এখনো বাজারে বিলাসী পণ্যের কমতি নেই। তবে আগের চেয়ে সরবরাহ কমেছে। এর মানে হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এলসি মার্জিন আরোপ সব খাতে কাজ করেনি। ফলে ডলারের সরবরাহ কমেছে। এতে বেড়েছে দাম। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ডলারের দাম ছিল ৮৫ টাকা। ২০২২ সালে জুনে তা বেড়ে হয় ৯২ টাকা। ২০২৩ সালের জুনে আরও বেড়ে ৯৫ টাকা হয়। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে আরও বেড়ে ১১০ টাকা। এর ঠিক সাড়ে ৬ মাস পর ডলারের দাম এক লাফে বেড়ে ১১৮ টাকা হয়। তারপরও ওই দামে ডলার মিলছে না। আমদানির জন্য ১২৫ টাকা করে ডলার কিনতে হচ্ছে। আগাম ডলার বিক্রি হচ্ছে ১২৯ টাকায়। যার চাপ এসে পড়ছে ভোক্তার কাঁধে। ডলারের দাম বাড়ায় আমদানি খরচ যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে বৈদেশিক ঋণের বোঝাও। এ বোঝাও পরোক্ষাভাবে রাষ্ট্রকেই বহন করতে হবে। যার দায় ভোক্তার ওপরই আসবে।

করোনার আগে থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশে বেঁধে দিয়েছিল। ২০২২ সালের জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতির হার কমাতে সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়। এর আলোকে ঋণের সুদের হার কিছুটা বাড়ানোর ইঙ্গিত দেওয়া হয়। কিন্তু সীমা তুলে দেওয়া হয়নি। ফলে ভোক্তাঋণসহ কিছু খাতে সুদহার বেড়েছে। গত বছরের জুলাই থেকে সুদহারের সীমা তুলে দেওয়া হয়। আরোপ করা হয় সুদ করিডর পদ্ধতি। ফলে এ হার বাড়তে থাকে। গ্রাহকদের ঋণের সুদ সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে এখন ১৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ হয়েছে। একই সঙ্গে সরকারের ঋণ গ্রহণের সুদহার আড়াই শতাংশ থেকে বেড়ে সাড়ে ১১ শতাংশ হয়েছে। এতে সরকারের যেমন ঋণের খরচ বেড়েছে, তেমনি উদ্যোক্তাদের ঋণের খরচও বেড়েছে। সরকারের ঋণের খরচ বাড়ায় তা মেটাতে জনগণের ওপর করের বোঝা চাপানো হচ্ছে। উদ্যোক্তাদের ঋণের খরচ বাড়ায় পণ্যমূল্য বাড়িয়ে তা ভোক্তার কাছ থেকে তা আদায় করা হচ্ছে। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে সিদ্ধান্তে সুদহার বেড়েছে, তার দণ্ড দুভাবেই ভোক্তাকে দিতে হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে পলিসি রিসার্চ ইসস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বৈশ্বিক সংকট ও দেশীয় পরিস্থিতিতে ডলারের দাম ও ঋণের সুদের হার বাড়বে। তবে তা ধীরে ধীরে সহনীয় মাত্রায় বাড়াতে হবে। একবারে লাফ দিয়ে বাড়ানো ঠিক নয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রায় দুই বছর ডলারের দাম ধরে রাখল। ওই সময়ে ধরে না রেখে ধীরে ধীরে টাকার অবমূল্যায়ন করলে আজকে এত বেশি চাপ পড়ত না। ঋণের সুদের হারও সীমা বেঁধে দিয়ে দীর্ঘদিন একই বৃত্তে রাখা ঠিক হয়নি। এখন ডলারের দাম ও সুদের হার বেশি বাড়ানোর ফলে অর্থনীতি এ চাপ নিতে পারছে না।

সূত্রমতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাজের অন্যতম একটি হচ্ছে মূল্যস্ফীতির হার সহনীয় পর্যায়ে রাখা। বাংলাদেশে ৬ শতাংশের মতো মূল্যস্ফীতিকে সহনীয় বলে ধরে নেওয়া হয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বর এ হার ছিল সাড়ে ৫ শতাংশ। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ২০২২ সালের মার্চ থেকেই এ হার বাড়তে থাকে। জুনে তা ৬ শতাংশের ঘর অতিক্রম করে। মূল্যস্ফীতির ওই পাগলা ঘোড়া এখনো ছুটছে। গত এপ্রিলে তা ৯ দশমক ৭৪ শতাংশে ওঠেছে। এ হার নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ছাড়িয়ে সরকারের ঋণের জোগান বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু গত অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের ৬৩ হাজার কোটি টাকা এখনো বাজারে রয়ে গেছে। গত অর্থবছর থেকে সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি অনুস্মরণ করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে একে আরও কঠোর করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রনে না এলে আগামী অর্থবছরে আরও কঠোর করতে হবে মুদ্রানীতিকে। সংকোচনমুখী মুদ্রানীতির মাধ্যমে বাজারে টাকার প্রবাহ কমানো হচ্ছে। টানা দুই অর্থবছর ধরে মূল্যস্ফীতির নিয়ন্ত্রণের দোহাই দিয়ে এ নীতি অনুসরণ করায় বিনিয়োগ কম হচ্ছে। ফলে চাকরির বাজারে যারা নতুন আসছেন তাদের আশানুরূপ কর্মসংস্থান হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতির আঘাতে তাদের সম্ভাব্য কর্মজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এদিকে ডলারের দাম ও ঋণের সুদের হার বাড়ার কারণে মূল্যস্ফীতিতে আরও চাপ তৈরি হচ্ছে। ফলে আগামী অর্থবছরেও সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি অনুসরণ করতে হবে। এতে বেকারদের জন্য আরও দুঃসংবাদ বয়ে আনবে।

ডলারের প্রবাহ বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রপ্তানি আয় দেশে আনার ওপর নানা ধরনের বিধিবিধান জারি করেছে। এসব বিধিও ঘন ঘন পরিবর্তন করেছে। এতে রপ্তানিকারকরা বিভ্রান্ত হয়েছেন। ফলে রপ্তানি আয় দেশে আসা বিলম্বিত হয়েছে।

রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে হুন্ডির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি বারবার আলোচিত হয়েছে। বিদেশে যেসব দেশে হুন্ডিবাজদের তৎপরতা বেশি ওইসব দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের পাঠিয়ে বা দেশে হুন্ডিপ্রবণ এলাকাগুলোতে সমন্বিত কোনো অভিযান হয়নি। ফলে হুন্ডির তৎপরতাও কমেনি। এক সময় রেমিট্যান্স পাঠানোতে শীর্ষে ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত। হুন্ডির প্রকোপ বাড়লে দেশটি নেমে আসে শীর্ষ তালিকার তৃতীয় স্থানে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একটি টিম ওই দেশে গিয়ে রেমিট্যান্স কমার কারণ ও তার প্রতিকার অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নিলে দেশটি থেকে আবার রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ে। এ রকম দেশ ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থা নিলে পারত, কিন্তু নেয়নি। একটি সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ ধরনের পদক্ষেপ নিতে চেয়েছিল, কিন্তু রাজনৈতিক চাপে তা সম্ভব হয়নি।

একই সঙ্গে দেশের ভেতরেও যেসব অঞ্চলের প্রবাসী কর্মী বেশি ওইসব স্থানে হুন্ডির বিরুদ্ধে সমন্বিত অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা করেও তা সম্পন্ন করতে পারেনি রাজনৈতিক চাপে। কারণ বড় বড় হুন্ডিবাজরা সরকারের প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে যুক্ত।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অন্যতম প্রধান কাজ হচ্ছে ব্যাংক খাত নিয়ন্ত্রণ ও স্বাস্থ্য ভালো রাখা। এ কাজে যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক চরম ভাবে ব্যর্থ হয়েছে, তার জ্বলন্ত উদাহরণ ব্যাংক খাতের বর্তমান নেতিবাচক পরিস্থিতি। দুর্বল ব্যাংকগুলোতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সমন্বয়ক বা পর্যবেক্ষক থাকলেও ব্যাংকের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। তাহলে প্রশ্ন আসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তারা কি করেছেন? অনেক পর্যবেক্ষক বলেছেন, উত্তর হলো তাদের কাজ করতে দেওয়া হয়নি। ব্যাংকগুলো এখন তারল্য সংকট, মূলধন সংকট, খেলাপি ঋণের ভারে আক্রান্ত।

দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়েও কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত বদল করেছে। প্রথমে তারা দুর্বল ব্যাংক কার সঙ্গে একীভূত হবে তা চাপিয়ে দিয়েছে। এতে গ্রাহকরা দুর্বল ব্যাংক থেকে আমানত তুলে নিতে থাকেন। ব্যাংকের অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। পরে তা থেকে সরে আসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন নতুন কোনো ব্যাংক একীভূত করার ব্যাপারে আর চাপ দিচ্ছে না।

অথচ কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত বছরের ৫ ডিসেম্বর দুর্বল ব্যাংকের করণীয় সম্পর্কে প্রমোট কানেক্টিভি অ্যাকশন প্ল্যানের গাইডলাইন প্রকাশ করে। এটি ২০২৫ সালের মার্চ থেকে কার্যকর হবে। এতে দুর্বল ব্যাংক সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। কোনো ব্যাংকের কোন পর্যায়ে গেলে একীভূত হতে হবে তা বলা রয়েছে। এটি কার্যকর হওয়ার আগেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজেই নিজের প্রণীত এ নীতিমালার তোয়াক্কা না করে ব্যাংক একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়। এরপর তারা একীভূতকরণের নীতিমালা জারি করে। গ্রাহক ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেওয়া শুরু করলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একীভূতকরণ থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয়।

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
Toto Slot
slot gacor
slot gacor
slot toto
Bacan4d Login
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot bacan4d
bacan4d togel
bacan4d game
slot gacor
bacan4d login
bacantoto 4d
toto gacor
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
slot77 gacor
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
bacansports
slot toto