Jannah Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.
Hot

মৃত্যুমুখী শিল্প বেকারত্ব চরমে

সংকটে পুরো অর্থনীতি। মন্দায় ব্যবসা-বাণিজ্য। অস্তিত্ব সংকটে শিল্প-কারখানা। উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি, ডলারের উচ্চমূল্য, জ্বালানি খাতে অস্থিতিশীলতা, ঋণের উচ্চ সুদহারের কারণে চরম চাপে ব্যবসা।

এমন বহুমুখী চাপে নাস্তানাবুদ দেশের শিল্পোদ্যোক্তারা। তাঁরা বলছেন, ৬০ শতাংশের বেশি কারখানায় উৎপাদন হচ্ছে না। ব্যাংকে সুদ বেড়েছে, গ্যাস নেই, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি—সব মিলিয়ে শিল্প বন্ধ হওয়ার পথে। সরকার গ্যাস-বিদ্যুৎ ঠিকমতো দিতে পারছে না।

অথচ নানা হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এমন নাজুক পরিস্থিতিতে তাঁদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।

এদিকে গত এক বছরে বেকার বেড়েছে তিন লাখ ৩০ হাজার, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

শিল্পোদ্যোক্তা ও বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের বেসরকারি খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

মূলধন ঘাটতির কারণে বিদ্যমান ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়লে ব্যবসা-বাণিজ্য তথা সামগ্রিক অর্থনীতিতে সংকট আরো গভীর হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

টেক্সটাইল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘২০২৫ সালে শুধু শিল্প নয়, শিল্পোদ্যোক্তাদের মেরে ফেলা হচ্ছে। এটাকে আমরা ষড়যন্ত্র মনে করি। শিল্প বাঁচাতে না পারলে দেশে দুর্ভিক্ষ হবে। শিল্পবিরোধী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শিল্প-কারখানার গলা টিপে মেরে ফেলা হচ্ছে। গ্যাসসংকটে আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। চলতি মূলধন সংকুচিত হয়েছে। আগামী ঈদে কারখানাগুলো বেতন-ভাতা দিতে পারবে কি না, সেই লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিনিয়ত আমাদের কারখানা লে-অফ হচ্ছে। কিছুদিন পর মানুষ রাস্তায় নামবে। আরো ভয়াবহ পরিস্থিতি হবে। দুর্ভিক্ষের মতো অবস্থা হবে, যদি আপনি শিল্পকে বাঁচাতে না পারেন। আর দেশি উদ্যোক্তাদের জিন্দা লাশ বানিয়ে বিদেশি বিনিয়োগ এনে কর্মসংস্থান করার চিন্তা করা হচ্ছে।’

গ্যাসসংকটে উৎপাদন কমেছে ৬০%

২০২৩ সালে ১৭৮ শতাংশ এবং চলতি বছরে ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত গ্যাসের মূল্য বেড়েছে। এতে শিল্পের উদ্যোক্তাদের ব্যয় বাড়লেও বাড়েনি শিল্পে গ্যাসের সরবরাহ। গ্যাস সরবরাহের এই অবস্থা চলতে থাকলে রপ্তানিমুখী টেক্সটাইল ও পোশাক খাতের প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা।

বিটিএমএর সহসভাপতি সালেউদ জামান খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে আগামী দু-এক মাসের মধ্যে দেশের ৫০ শতাংশ কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। আমার কারখানা পাঁচ-ছয় মাস থেকে শ্রমিকদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন দিচ্ছে। গ্যাস কম্পানিগুলো গ্যাস সাপ্লাই না করে বিল নিচ্ছে। আমার মতো অনেক কারখানাকে ১০ কোটি টাকা গ্যাস বিল দিতে হচ্ছে গ্যাস ব্যবহার না করে। আমরা গ্যাস না পেয়ে বিদ্যুৎ লাইন, আরইবির লাইন সংস্থান করলাম। সেখানে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ বর্তমানে সাত ঘণ্টা। একটা কারখানায় প্রতিদিন ছয়বার বিদ্যুৎ চলে যায়। তাহলে কিভাবে দেশের শিল্প ও মালিকরা টিকে থাকবেন? আজ যে শিল্প মালিক, তাঁরা মারা যাবেন। এই পরিস্থিতি না বদলালে বাংলাদেশে শিল্প মালিক উদ্যোক্তা আর হবে না।’

ব্যাংকঋণের সুদের হার ১৬ শতাংশ ছাড়িয়েছে

উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে কমছে সাধারণ মানুষের আয় ও কর্মসংস্থান। এর অন্যতম কারণ ব্যাংকঋণের সুদের হার বৃদ্ধি এবং উৎপাদন হ্রাস। সুদের হার বাড়ার কারণে আমানতকারীরা কিছুটা লাভবান হলেও ব্যাংক ও ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন করে সংকট তৈরি হয়েছে। একদিকে উচ্চ সুদ দিতে চেয়েও আমানত পাচ্ছে না ব্যাংক, অন্যদিকে ঋণসংকটে পড়ছে বেসরকারি খাত। সর্বশেষ তথ্য মতে, ব্যাংকঋণের সুদের হার ১৬ শতাংশ অতিক্রম করেছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধিতে।

দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ঋণের উচ্চ সুদহার বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে, যা নতুন বিনিয়োগে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিনিয়োগকারীরা দেশের অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ভয় পাচ্ছেন। তা ছাড়া উচ্চ সুদহারের কারণে বিনিয়োগবিমুখ শিল্পোদ্যোক্তারা।’

বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি তলানিতে

দেশে বিনিয়োগ বাড়ার অন্যতম প্রধান নিয়ামক বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ কমছেই; টানা সাত মাস ধরে কমে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচকের প্রবৃদ্ধি ফেব্রুয়ারিতে ৬.৮২ শতাংশে নেমে এসেছে। এই প্রবৃদ্ধি ২১ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারির পরে আর কখনো এতটা কম হয়নি বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি। তবে চলতি বছরের মার্চে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৫৭ শতাংশ।

বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি তলানিতে নেমেছে। গত নভেম্বর মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭.৬৬ শতাংশ। দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বেনামি-জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ বিতরণ কমে আসায় এবং দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত ও পর্ষদে পরিবর্তন হয়েছে এমন ১১টি ব্যাংকের নতুন ঋণ প্রদান বন্ধ থাকায় এমন পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।

ব্যাংকাররা বলছেন, রমজান মাসজুড়ে প্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি চাহিদা বৃদ্ধির জন্য এই প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়েছে। কিছু ব্যাংককে দীর্ঘমেয়াদি বিদেশি মুদ্রার ঋণকে স্থানীয় মুদ্রায় রূপান্তর করতে হয়েছিল, যা জোরপূর্বক ঋণ বা ফোর্স লোন নামে পরিচিত। এটাও ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে।

বেকার বেড়েছে তিন লাখ ৩০ হাজার

বিনিয়োগে স্থবিরতা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদের কারণে দেশে কর্মসংস্থানে বড় ধাক্কা লেগেছে। এতে বাড়ছে বেকার। চলতি অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে বেকার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ লাখ ৩০ হাজারে। এক বছরের ব্যবধানে এই সংখ্যা বেড়েছে তিন লাখ ৩০ হাজার।

পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব দীপংকর রায় কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আগের অর্থবছরের চেয়ে এই অর্থবছরে দুই প্রান্তিকে সেবা খাতে সবচেয়ে বেশি বেকার বেড়েছে। আর এর বড় অংশই মহিলা।’

করোনার পর গত পাঁচ বছরে সবচেয়ে কম রাজস্ব প্রবৃদ্ধি

এনবিআরের সর্বশেষ তথ্য মতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৩.২৪ শতাংশ, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। কভিডকালীন ২০১৯-২০ অর্থবছরে এই প্রবৃদ্ধি ছিল ১.৯৬ শতাংশ। করোনা মহামারির পর গত পাঁচ বছরে সবচেয়ে কম রাজস্ব প্রবৃদ্ধির মুখে পড়েছে বাংলাদেশ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা এই পরিস্থিতির জন্য সরকার ঘোষিত এনবিআর বিলুপ্তির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক আন্দোলনকে দায়ী করেছেন।

ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ বেড়েছে ৬০ শতাংশ

রাজস্ব আদায়ে দুর্বলতার কারণে ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ নেওয়া বেড়েছে। এর পরিমাণ প্রায় ৬০ শতাংশ। বেশি ঋণ নেওয়ার কারণে বেসরকারি খাতে ঋণ বিতরণ কমে গেছে। এতে আর্থিক খাতে চাপ তৈরি হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) প্রণীত সামষ্টিক অর্থনৈতিক আউটলুকে বলা হয়েছে, ‘২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ৯৮৫.৭৯ বিলিয়ন টাকা ঋণ নিয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৬০ শতাংশ বেশি। এই ঋণ প্রবৃদ্ধির হার গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। বিপরীতে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।’

আউটলুকে বলা হয়েছে, সরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির ধারা যদি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে বেসরকারি খাতের জন্য ব্যাংকঋণ আরো সীমিত হবে। ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম প্রধান উৎস বেসরকারি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যে পরিবেশ-পরিস্থিতিতে দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটে, বিনিয়োগ বাড়ে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়, সেটা বর্তমানে অনুপস্থিত। বিনিয়োগের জন্য পরিবেশ, সামাজিক শৃঙ্খলা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা জরুরি।’

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি এবং ঋণের সুদের হার বাড়ার ফলে শিল্প খাতে উৎপাদন ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে, যা সামগ্রিক ব্যাবসায়িক পরিবেশকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। এর ফলে বাজারে একটি অসম প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে, যা নতুন বিনিয়োগ নিরুৎসাহ করছে এবং শিল্পায়নের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করছে।’

পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গত ৯ মাসে ব্যালান্স অব পেমেন্টটাকে স্ট্যাবিলাইজ করা গেছে। পাশাপাশি ফরেন রিজার্ভের ধারাবাহিক পতন হচ্ছিল জুলাইয়ের আগ পর্যন্ত, সেটাকে রোধ করা গেছে। কিন্তু এর সঙ্গে সঙ্গে কিছু জায়গায় উদ্বেগ রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে নতুন করে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। মূল্যস্ফীতি গত দুই মাসে কমলেও তা এখনো উচ্চ মূল্যস্ফীতির পর্যায়েই আছে। সেটার একটি প্রভাব চাহিদার ওপর পড়েছে। চাহিদা কমার প্রভাবে ইন্ডাস্ট্রিয়াল আউটপুট কমে গেছে। বিনিয়োগ একেবারেই আসছে না। এর মূল কারণ হলো গত কয়েক বছর সামষ্টিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে ছিলাম আমরা।’

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে। নির্বাচন নিয়ে স্পষ্টতার অভাব রয়েছে। এর জন্য বিনিয়োগ কমে গেছে। আমাদের বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান, জ্বালানি ও এসএমই খাতকে ভালো করতে হবে। এই জায়গাগুলো ভালো নেই। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের আস্থায় নিতে হবে।’

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Articles

Back to top button
bacan4d toto
bacan4d toto
bacan4d
bacantoto4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d toto
slot toto
bacan4d
bacan4d
togel online
Toto Slot
saraslot88
Bacan4d Login
bacantoto
Bacan4d Login
bacan4d
bacan4drtp
bacan4drtp
situs bacan4d
Bacan4d
slot dana
slot maxwin
slot bacan4d
slot maxwin
bacan4d togel
bacan4d login
bacan4d login
bacan4d login
bacantoto 4d
slot gacor
bacansport
slot toto
bacan4d
bacansport
bacansport
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot77 gacor
JAVHD
Bacan4d Login
Bacan4d toto
Bacan4d
Bacansports
Slot Dana
situs toto
bacansports
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacan4d
slot gacor
bacan4d
bacan4d
bacansport
bacansport
gacor slot
slot gacor777
slot gacor bacan4d
bacan4d
bacansport
toto gacor
bacan4d
bacansports login
slot maxwin
slot dana
slot gacor
slot dana
slot gacor
bacansports
bacansport
bacansport
bacansport
bawan4d
bacansports
bacansport
slot gacor
judi bola
slot maxwin
slot maxwin
bacansport
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot demo
slot gacor
slot gacor
slot gacor
toto slot
slot gacor
demo slot gacor
slot maxwin
bacan4d
bacan4d
bacan4d
bacansport
slot gacor
slot toto